somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোলস

০৬ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘জামাতি-রাজাকার দেখলেই গদাম। ঐ হালার পুত জঙ্গির বাচ্চা জঙ্গিরা, খবরদার, কেউ আমার সামনে পড়বি না। পড়লে একদম ভর্তা বানাইয়া খাইয়া ফালামু।’ দেশে যেন আর একজনও রাজাকার-জঙ্গি-বিদ্বেষী নাই, তার মতো এত সাচ্চা দেশপ্রেমিকও যেন এই বঙ্গের মাটিতে আর কেউ জন্মায় নি, সর্বকালের এমন সেরা স্টান্টবাজি দিয়ে নিজের অকথ্য অপকর্ম ও অপরাধ ঢেকে ফেলার নিখুঁত এক পরিকল্পনা আঁটলো ৭১-এর কুখ্যাত রাজাকারের বংশধর জামালুদ্দিন লাগাম, যার নিত্যদিনের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছিল চরমভাবে অতীষ্ঠ। সে জানতো, নিজে চুরি করে বড়ো গলায় অন্যদের চোর বলতে হবে, নিজে খুন করে অন্যকে সেই খুনি বলে রাষ্ট্র করতে হবে, যেমন নিজে জারজ হয়ে অন্যকে ‘জাওরা’ বলে ঢোল পেটালে নিজের ‘জারত্বের’ ব্যাপারে কেউ সন্দেহ করবে না, তেমনি অন্যদেরকে জঙ্গি বা রাজাকার বললে কারো মনেই কোনো সন্দেহ হবে না যে, তার চৌদ্দ গুষ্টি রাজাকার ছিল এবং সে নিজে একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী।

নিজের এলাকা ছেড়েছিল সে অনেক অনেক আগে। অত কুকীর্তির পর নিজের এলাকায় টিকে থাকা বা বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। সম্পূর্ণ নতুন, অপরিচিত জায়গায় এসে দীর্ঘদিন লো-প্রোফাইলে থেকে মোটামুটি নির্জীব জীবন যাপন করার পর হঠাৎ হুড়মুড় করে একটা শক্ত ঝাড়া দিয়ে শরীর থেকে বহু-পুরোনো, আদি ও আসল খোলসটা ফেলে দিল জামালুদ্দিন লাগাম। ইতিমধ্যে তার গ্রাউন্ড-ওয়ার্কের অনেকখানিই এগিয়ে গেছে। নিজের বুদ্ধি ও প্রতিভা দিয়ে বাকিটা সে অনায়াসেই করে ফেলতে পারবে বলে সে বড্ড আশাবাদী। আগের আমলে যে কবীরা গুনাহ করেছে, জীবিত থাকতে সেইগুলো থেকে কেউ তাকে মাফ করবে না। এ নতুন পরিবেশে কেউ তাকে চিনবে না। এটা তাকে সবচাইতে বড়ো সুবিধা দিবে। এ মোক্ষম সুবিধাটা কাজে লাগিয়ে প্রথমত পাপ-মোচন, দ্বিতীয়ত একটা শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান গড়ে তুলে নিজের আখেরটাকে গুছিয়ে নিতে হবে বৈকি।

সেই জন্মের পাপকার্যের ফিরিস্তি করতে গেলে কয়েকজন দক্ষ দলিল লেখকের কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে। শুধু এক-কথায় বলা যায়- সে ছিল সরকারী দলের এক দুর্ধ্বর্ষ খুনি, ধর্ষক ও স্বার্থলোভী ছাত্রনেতা। বাপ-চাচারা ছিল রাজাকার, আর সে নিজে বাপ-চাচাদের আদর্শকে মনেপ্রাণে ধারণ করে তাদের কাজের গতিকে সদা বেগবান করেছে। সেই সাথে, রাজাকার পাকড়াও অভিযানে সুকৌশলে নিজেদের চামড়া রক্ষা করেছে; শুধু চামড়া রক্ষা করাই না, নানাবিধ হঠকারী বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে সরকারি দলের চামচা পরিষদেও নিজের একটা স্থায়ী সদস্যপদ বাগিয়ে নিয়েছে। কতজনকে সে বুড়িগঙ্গার জলে ফেলে দিয়েছে, ক’টা মেয়ের ভার্জিনিটি নষ্ট করেছে, এ হিসাব তার নিজের কাছেও নাই। আরো কত কুৎসিত কাজ যে সে করেছে, তা শুধু সে নিজেই জানে।

সরকারের বদল হয়েছে। কিন্তু নিহত ও ধর্ষিতাদের স্বজনেরা কি বুকের ক্ষত ভুলতে পেরেছে? তাদের বুকে প্রতিশোধের আগুন লেলিহান হিংস্রতায় জ্বলছে।
জামালুদ্দিন লাগাম জানে, তার প্রাণ এখন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতাদের হাতে। তাদের হাত থেকে তাকে বাঁচতে হবে। আর ঐ যে, ক্ষমতার একটা দুর্দান্ত সুখ আছে না- হ্যাঁ, সেই সুখটাও তার চাই।

জামালুদ্দিন লাগামের কুটিল মনে বুদ্ধির অন্ত নাই- শয়তানরা বিপদে পড়লে তার কাছ থেকে বুদ্ধি ধার নেয়। সে এবার সাহায্য নিল ডিজিটাল মিডিয়ার। সে সুচতুর এক স্ট্যান্টবাজির ছক ফাঁদলো। আপনি ঘন ঘন মুখে বুলি আওড়ান – অমুক ব্যক্তি গরীবের ভিটেমাটি জোর করে দখল করেছে, ভিক্ষুকের মুখের গ্রাস কেড়ে খেয়েছে, তমুক ব্যক্তি নারী-লিপ্সু, ধর্ষক। তাহলে আপনার কোটি কোটি টাকার আত্মসাৎ, কয়েক হালি ধর্ষণের ব্যাপারে কারো সন্দেহই হবে না, ভাববে আপনি জনহিতৈশী, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। আপনি ‘সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদণ্ডে’র বিপক্ষে জনমত গড়ে তুলুন, তারপর একদিন টুপ করে আপনার বিশ্বাসঘাতকিনী প্রেমিকাকে খুন করে নদীতে ফেলে আসুন; আপনি খুনি, কারো মাথায়ই এ চিন্তা ঢুকবে না।

জামালুদ্দিন লাগামের মিশনও এরকমই। তুই রাজাকার, তুই জামাতি। আমি রাজাকারের রক্ত চাই। জামাতিদের নিস্তার নাই। এ কথা যত বেশি আওড়ানো যাবে, পাবলিক এগুলো তত খাবে, আর তাকে ততই ৭১-এর চেতনায় উদবুদ্ধ একেবারে নিখাদ, খাঁটি, সাচ্চা, অদৃষ্টপূর্ব দেশপ্রেমিক বান্দা হিসাবে বিশ্বাস করবে। কারণে, অকারণে, প্রাসঙ্গকি, অপ্রাসঙ্গিক নির্বিশেষে রাজাকার-জামাতি বিষোদ্গার দিয়ে কথা শুরু করতে হবে। ঢিশুম-ঢাশুম লম্ফনে সবাই অবাক হয়ে যাতে বলে ওঠে – ভাভা গো ভাভা, এতদিনে দেশ একটা আসল মুক্তিযোদ্ধা পাইছে!

আরেকটা ধান্ধাবাজ গোষ্ঠী আছে। সারাজীবন ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষে। এ দেশকে আজও মনেপ্রাণে নিজের দেশ বলে মেনে নিতে পারে নাই। কোনোদিন বঙ্গবন্ধু, ১৯৭১-এর নামও শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করে নাই। তারা এখন রাতারাতি বনে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু সৈনিক। স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি। বঙ্গবন্ধু বলতে এতই পাগল যে, এই সেদিনও বোধহয় লুঙ্গিপরা বঙ্গবন্ধু ওকে হাত ধরে টেনে নিয়ে পাশে বসিয়ে লাঞ্চ করিয়েছেন। ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ এলে তাদের কাজ-কারবার দেখে মনে হয়, ৭১-এর মুক্তিযোদ্ধা কেবল ওরাই। ওদের ধান্ধার শেষ নাই। বঙ্গবন্ধুর নামে বই প্রকাশ করা, বঙ্গবন্ধুর নামে নতুন দল গঠন করা, বঙ্গবন্ধুর নামে জায়গা দখল করে দলীয় ঘর তৈরি করা – এহেন কোনো ধান্ধা নাই, যা তারা করে না। মূল উদ্দেশ্য, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, আঙুল ফুলিয়ে বটগাছ বানানোর ফিকির করা, আর নিজেদের অতীত ইতিহাস যাতে সমূলে মুছে যায়, সেই চেষ্টা করা।

আরো চমকবাজ একটা গুষ্টি আছে। এরা আগে ছিল নিতান্তই নির্বোধ; ছাত্রজীবনে কোনোদিন পলিটিক্সের ধারেকাছে তারা ঘেঁষে নি; আরামের সাথে মিলেমিশে লেখাপড়ার বৈতরণী পার হয়ে এসেছে। কিন্তু কীভাবে যেন তারাও চতুর হয়ে উঠলো। ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প বানানো শুরু করলো তারা, ছাত্রহলে থাকা অবস্থায় ক্ষমতাসীন ছাত্রশক্তির দ্বারা তারা অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। আজ দিন পালটেছে। সেই নির্যাতক ছাত্রদের আজ লেশচিহ্নও দেখা যাছে না; অথচ তাদের নির্যাতনের ঘা এখনো শরীরে দগদ্গ করছে। এই ভণ্ডগুষ্টিকে কী বলা যায়? মিছকা শয়তান। ভয়ঙ্কর সুবিধাবাধী। বাতাস দেখে পাল তোলে। এরা ফেইসবুক যোদ্ধা। ফেইসবুকে এই গল্প ফাঁদে, আর আজকের ক্ষমতাসীন ছাত্রশক্তি এদেরকে বুকে তুলে নেয়।

যেই ভাবা, সেই কাজ। ২৬ মার্চের রাত ১২০১ মিনিটে সে ফেইসবুকে এক জ্বালাময়ী স্টেটাস লিখলো। এমন স্টেটাস হাজারে একটা; নাহ, লাখেও একটা হয় না, এমন তেজোদ্দীপ্ত, অনলবর্ষী স্টেটাস সে লিখে ফেললো। মুহূর্তে লাইক, কমেন্ট আর শেয়ারের সুনামি বয়ে গেলো তার স্টেটাসের উপর দিয়ে। এমনও হতে পারে, কিছু সময়ের জন্য পুরো ফেইসবুক দুনিয়া হ্যাং হয়ে গেল তার স্টেটাসে উপর্যুপরি লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের বন্যায়।

জামালুদ্দিন লাগাম ভীষণ খুশিতে ঘরময় লাফাতে লাগলো। ‘বুদ্ধিমান হইলে কেউ নিজের বাড়িতে ঘর-জামাই থাকে না।’ স্বরচিত বিখ্যাত, ঐতিহাসিক, রহস্যময় ও দুর্বোধ্য এ প্রবাদটি জামালুদ্দিন লাগাম যে-কোনো খুশি বা বিষাদের সময় মন্ত্রের মতো মুখ দিয়ে বর্ষণ করতে থাকে। এখনো তাই করছে। তবে, এটা বিষাদের না, আনন্দের। যা প্ল্যান করেছিল, সব যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাচ্ছে, যেন সে ছায়াছবির চিত্রনাট্য লিখেছিল, এখন তারই বানানো ছবিটি চোখের সামনে দেখছে। আহ! কী অনবদ্য ছবিরে বাবা! জামালুদ্দিন লাগাম আত্মপ্রসাদে গদগদ হয়। পূর্ব-জনমের কীর্তিকাহিনি সে নানা ছলনায় এতদিন ঢেকে রেখেছিল; ধীরে ধীরে তার উপর এখন অচ্ছেদ্য আচ্ছাদন পড়ে গেছে নিঃসন্দেহে। ‘কেউ কিছু জানে না। কেউ কিছু দেখে নাই। আমি এক ধোয়া তুলশীপাতা।’ বলে সে বিকট অট্টহাসি দেয়।

তার আরো একটা জিনিস চাই, তবেই তার ষোলোকলা পূর্ণ হবে। আজকের স্টেটাসই তাকে ওটা পাইয়ে দিবে। এসব কোনো ব্যাপারই না। কত সচিব, রাজনীতিক, বড়ো বড়ো হোমড়া-চোমড়ারা এগুলো করে নিয়েছে, তার কোনো ঠিক-ঠিকানা আছে নাকি? ধরা পড়বে, পত্রপত্রিকায় সমালোচনা হবে, তদন্ত হবে, তদন্তে ওটা জায়েজ হয়ে যাবে। ততদিনে সবাই ওটা ভুলে যাবে। তখন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা গোঁফে তা দিয়া ঘুরে বেড়াবে, আর যার-তার সামনে গিয়ে ছড়ি ঘুরিয়ে বলবে, ‘তুই ব্যাটা রাজাকার। তোর বাপ-দাদা জামাতি।’

জামালুদ্দিন লাগাম বিশ্বাস করে, সরকার কোনোদিন সঠিক তালিকা বানাইতে পারবো না। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ঢুকে যাবে রাজাকার, আর রাজাকারদের তালিকায় থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম। এই তো, বেশিদিন হয় নাই, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয় রাজাকার, আলবদর, আল-শামসসহ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা। কিন্তু সেই তালিকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকায় সৃষ্টি হয় দেশ জুড়ে তীব্র বিতর্ক, ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড়। অবশেষে তিনদিন পরই সেই তালিকা স্থগিত করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযোদ্ধাদেরও পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা নেই। স্বাধীনতার পর ছয়-ছয়বার তালিকা বানানো হয়েছে। সর্বশেষ, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাসহ এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রথম তালিকা প্রকাশ করেন, যেটিকে খসড়া তালিকা বলা হচ্ছে। তারপর যাচাই বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক লাখ ৭৭ হাজার ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হয়। আরও ৪০ হাজার আবেদন যাচাই বাছাই চলছে।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সরকারের আমলে এ পর্যন্ত ছয়বার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রথম তালিকা করা হয় ১৯৮৬ সালে। তখন জাতীয় কমিটির তৈরি এক লাখ দুই হাজার ৪৫৮জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম পাঁচটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়। তবে ওই তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয় নি। ১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা তালিকায় সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২। এর মধ্যে বেসামরিক বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৫১ হাজার ৫২৬ এবং বিশেষ তালিকায় ছিলেন ১৯ হাজার ৩৬৬ জন। পরে ১৯৯৪ সালে ৮৬ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এক লাখ ৮৬ হাজার ৭৯০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে দুই লাখ ১০ হাজার ৫৮১ জনকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং পরে এক লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৯ জনের নাম গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ২০১১ সালে ওই তালিকা সংশোধনসহ নতুন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে আবেদন গ্রহণ করে সরকার। এর আলোকে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইন ও সরাসরি প্রায় এক লাখ ৩৯ হাজার আবেদন জমা নেওয়া হয়। এরপর ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেটা ২০২২-এর ২৬ মার্চ প্রকাশ করার কথা ছিল।
মজার ব্যাপার হলো, ২০১০ সাল পর্যন্ত গেজেটভুক্ত ১০ হাজার ‘অ-মুক্তিযোদ্ধার' সনদ বাতিল হয়েছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ায় ২০১৪ সালে সাবেক স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক সচিব এ কে এম আমির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানসহ ৪০ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ বাতিল করে মন্ত্রণালয়। আলোচিত এ ঘটনা প্রকাশ্যে এলে স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সাবেক সচিব এ কে এম আমির হোসেন ও মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার। সম্প্রতি একজন মন্ত্রী ও দুই জন সংসদ সদস্যের আবেদন পরীক্ষার পর বাতিল করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, জামুকা।

তাহলে এটা পরিষ্কার, ‘পূর্ণাঙ্গ’, বস্তুনিষ্ঠ, ও ত্রুটিহীন রাজাকার তালিকা করা যেমন দুঃসাধ্য, সর্বজনগ্রহণযোগ্য, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করাও মুখের কথাটি নয়। মহান ইবলিশ শয়তানই গোপনে এই কলকাঠি নাড়াইয়া গণ্ডগোল পাকাইয়া দেন। ‘মাঝখান থেকে আমার মতো রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়া দিব্যি ভাষণ দিয়া বেড়াইব – হাউমাউ খাও, রাজাকার ধইরা খাও। যেইখানে দেখবা জামাতি, গলায় মারবা চাপাতি।’ এই বলেই ওহহো হো হো করে হেসে ওঠে জামালুদ্দিন লাগাম- তার মাথাও যেন আজ খুলে গেছে। মুখে মুখে মুহূর্তের মধ্যে সে কত সুন্দর শ্লোগান বানাইয়া ফালাইল। নিজের প্রতিভায় মুগ্ধ হইয়া আয়নার সামনে যাইয়া নিজের ঠোঁটে ঠোঁট লাগাইয়া গভীর একখানি চুমো খায়।

গত কয়েকদিন ধরে অভিনন্দন, ধন্যবাদ, ফাটাইয়া ফালাইছো ওস্তাদ – ইত্যাদি কুশলে জামালুদ্দিন লাগামকে এলাকার মানুষ আনন্দ-বন্যায় ভাসিয়ে দিল। সে রাস্তা দিয়ে বের হলে তার সাঙ্গপাঙ্গও জোটে বেশ। অতএব, জামালুদ্দিন লাগামের নতুন বেশ দেখে এখন যে-কেউ তাকে নির্দ্বিধায় একজন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসাবেই সাব্যস্ত করবে। সাব্যস্ত করবে মানে কী, সে যে-ভাবে চোখ রাঙিয়ে, দাঁত খিঁচিয়ে, আত্মবিশ্বাসের সাথে বলা শুরু করে – ‘জামাতি ধরো, জামাতি খাও, রাজাকার ধরো, রাজাকার খাও’ কারো মনে কি ঘুণাক্ষরেও এতটুকু সন্দেহের উদ্রেক হবে যে, এই হালার পুতের চৌদ্দ গুষ্টি হলো রাজাকার-জামাতির দল, আর ও নিজেও একজন জামাতি!! এটা হলো ক্রিমিনালদের এক ধরনের কূটকৌশল বা স্ট্র্যাটেজি।

৯০-এর দশকে কিংবদন্তী নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের একটা তাৎপর্যপূর্ণ নাটক প্রচারিত হয়েছিল বাংলাদেশ টেলিভিশনে – ‘শঙ্কিত পদধ্বনি’। গৃহিণীর ছোটো ভাই থাকেন তাদের বাসায়। এই ভাইয়ের একটা পিকিউলিয়র অভ্যাস আছে। বাসার ভৃত্যটাকে সামনে পেলেই বলে বসেন – ‘তুই চোর। ঐ ব্যাটা, তুই চোর।’ কিন্তু ভৃত্যটা সরল ও নির্দোষ, সে চোর নয়। কিন্তু, বারংবার এ মিথ্যা অপবাদ শুনতে শুনতে সে বেশ অতীষ্ঠ হয়ে উঠলো। উপায়ান্তর না পেয়ে সে বাড়ির কর্তার শরণাপন্ন হলে কর্তা তাকে কিছু বুদ্ধি শিখিয়ে দেন।

পরের দিন সেই ভাই যথারীতি ভৃত্যকে দেখেই বলে উঠলেন, ‘ঐ ব্যাটা, তুই চোর।’ আর অমনি মুখের উপর ঠাস করে ভৃত্য বলে বসলো, ‘চোর আমি না, আপনি চোর। আপনি চোর।’ পুরাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন গৃহিনীর ভাই। কিংবলতব্যবিমূঢ়! তিনি হাঁ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেন, ছেলেটা কী সাবলীল ভঙ্গিতে বুক উঁচু করে উন্নত শিরে তার নিজের কাজে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তখন গভীর ভাবে ভাবতে লাগলেন- আমি যে দুলাভাইয়ের টাকা চুরি করি, এটা ঐ ব্যাটা চাকর তাহলে জেনে গেছে?

জামালুদ্দিন লাগাম এখন বেশ সুগঠিত। ভিত্তি খুব শক্ত হয়েছে তার। কনসলিডেটেড। রাজাকার-নিধন মিশন তাকে রাতারাতি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। যে-কোনো আড্ডায় আলাপ-আলোচনা, অর্থনীতি হোক, আর বাজারদরই হোক, কিংবা সাধারণ কোনো বিষয়-আশয়, একেবারে অপ্রাসঙ্গিকভাবেই শুরুতে একটা ধুমধামাক্কা বচন দিয়ে নেয় সে – ‘সব শালার রাজাকার-জামাতিগো কইস্যা গদাম। ওগো আমি দুই চক্ষে দেখতে পারি না। ওরা হইল জঙ্গি। রাজাকার-জামাতিগো আগে দেশছাড়া করতে হবে, ওদের হাড়গোড় চিবাইয়া খাইতে পারলে আমার শান্তি হইতো।’ জামালুদ্দিন লাগামের দৃঢ় বিশ্বাস, যে-কারো মুখের উপর দমাদম, ঠাস ঠাস করে ‘তুই রাজাকার, তুই জামাতি, তুই জঙ্গি’ বলে দিতে পারলেই কেল্লা ফতেহ, কেউ কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না যে জামালুদ্দিন লাগামের চৌদ্দগুষ্টিই ছিল ৭১-এর রাজাকার। সে ঠিক এই চালটাই দেধারছে চালতে শুরু করলো।

জামালুদ্দিন লাগামের এই রাজাকার-জামাতি-নিধন মিশন ও স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি হিসাবে প্রসার লাভ নিশ্চয়ই এতদিনে নিজের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে- সে মনে মনে ভাবে, বিশ্বাসও করে। নিজ এলাকার দু-একজন লোকের সাথে মাঝে মাঝেই তার দেখাসাক্ষাৎ হয়, বিভিন্ন সভা-সঙ্ঘে তার উপস্থিতি, ঝাড়িঝুড়ি, বলিষ্ঠ বক্তব্যে তারা প্রীত ও গর্বিত। এলাকার ছেলে বলে কথা! তারা নিশ্চয়ই জামালুদ্দিন লাগামের এই হাই-প্রোফাইল উত্থানের কথা গ্রামময় ছড়িয়ে থাকবে। মনে মনে ভাবে আর বিশ্বাস করে পুলকিত ও উদ্বেলিত হয়। গা থেকে পূর্বজনমের দাগ আর গন্ধ এখন আর কেউ পাবে না; পাবে শুধু স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তির খোশবু।

একদিন নিজের এলাকায় ফিরে এলো জামালুদ্দিন লাগাম। বাহ! কী সুন্দর আমার গ্রাম। সুজলা সুফলা, কাঁঠাল-কমলা, আরো ফলমূল কত। রাজাকার-জামাতি কচুকাটা করে সেইদিন হবো শান্ত। জীবনে নানান জায়গায় ছিঁটেফোঁটা কবিতা সে পড়েছে। জোড়াতালি দিয়ে নিজের কবিতা সৃষ্টি করতেও তার বিশেষ পারদর্শিতা লক্ষণীয়।

এখানে সেখানে সে জমায়েত হয়। চলতে চলতে লোকজন দেখলে দাঁড় করায়। তাদের সাথে আলাপ করে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাষণ দেয়। জামালুদ্দিন লাগাম একসময় ভুলে গেল যে, সে এই গ্রামেরই লোক। তার বংশলতিকার শেকড় এই গ্রামের মাটিতেই প্রোথিত। সে ভুলে গেল যে, তার বংশ যে রাজাকার আর জামাতির বংশ, এটা গ্রামের লোকজন জানে। এ গ্রামটাতে বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যাও যে অনেক, শুধু এই কথাটা বোধহয় জামালুদ্দিন লাগাম জানে না, কিংবা মনেই রাখে নি।

হুমায়ূন আহমদের ‘শঙ্কিত পদধ্বনি’ ঠিক নয়, অনুরূপ একটা নাট্যাংশের স্ক্রিপ্ট কে বা কারা অনেক আগেই লিখে রেখেছিল, তা জামালুদ্দিন লাগাম, কিংবা আর কারো জানা ছিল না।

প্রায় সত্তরোর্ধ দুই সৌম্য পুরুষ – জনাব রজব মোল্লা ও গেদা মিয়া, প্রাণের দোস্ত বলা যায় – চাঁন খা সাহেবের বাড়ির মসজিদে নামাজ পড়ে আলাপ করতে করতে বাড়ি ফিরছিলেন। জামালুদ্দিন লাগাম তখন ঐদিকেই যাচ্ছিল। সাথে ছিল তারও দু-চারজন পাইক-পেয়াদা।

‘থামো!’

জামালুদ্দিন লাগামের এই রূঢ়, অসৌজন্য বচনে বিস্মিত ও রুষ্ট হয়ে থামলেন দুজনেই। তাদের বিরক্তিপূর্ণ চোখে আশ্চর্য জিজ্ঞাসা! কে এই অর্বাচীন! এই গ্রামের সর্বজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি দুজনকে এ চেনে না, জানেও না এরা কারা।! ‘আপনি’ না বলার দুঃসাহসই ও পেল কোথায়?

‘আমি এই গ্রামের সব কটা জামাতিগো ধইরা ধইরা পাকিগো দেশে পাঠামু।’

রজব মোল্লা সাহেব ঘাড় সোজা করে ভ্রূ আর কপাল কুঞ্চিত করে লাগামের চোখের মণির দিকে কড়া দৃষ্টি ছুঁড়ে দিয়ে তাকান।
‘আইচ্ছা বাপু, তোমার বাবার নামডা কী? কার পুলা তুমি?’

জামালুদ্দিন লাগাম হঠাৎ একটু থতমত খায়, কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, ‘বাবার নাম পরে কমু। তোমরা জামাতি-রাজাকার। তোমাগো এই দেশে থাকার কোনো অধিকার নাই।’

রজব মোল্লাদের আশ্চর্যের সীমা থাকে না। ভিতরে ভিতরে ফুসলে উঠছেন তিনি। তারপরও যথাসাধ্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বললেন, ‘আইচ্ছা বাপু, ‘আমাগো চিনো?’
ইতিমিধ্যে বেশ লোকের সমাগম হয়েছে। ‘মামা, কী হইছে? দাদা কী হইছে বলেন। উনি কেডা?’
মহান ৭১-এ এ গ্রাম থেকে যারা সর্বপ্রথম যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, মুক্তিবাহিনী অর্গানাইজ করেছিল, রজব মোল্লা আর গেদা মিয়া হলো তাদের প্রধান। আর সেই মহান মুক্তিযোদ্ধাদের মুহূর্তের মধ্যে ওরা বানিয়ে ফেললো ‘জামাতি-রাজাকার’?

রজব মোল্লা আবার বলেন, ‘তুমি কেডা? তোমার বাবার নাম কী?’
হঠাৎ কে যেন ভিড়ের মধ্যে থেকে বলে উঠলো, ‘ঐ, আমি চিনছি রে! ওরে আমি চিনছি! তুই জইল্যা রাজাকারের পুলা হারু চুরা না?’
জামালুদ্দিন লাগামের প্রাণ কেঁপে উঠলো। ওরে চিনে ফেলছে! হায় আল্লাহ! ইতিহাস দেখি সবাই জানে! কিছুই তো মানুষ ভোলে নাই!’
মুহূর্তে শোরগোল শুরু হলো। ধর শালারে। ধর শালার বেটা শালারে।
জামালুদ্দিন লাগাম দৌড়ে পালাচ্ছে। ওর পেছনে একদঙ্গল উত্তেজিত গ্রামবাসী।

এই বজ্জাতের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। পরের দিন মাঠের মাঝখানে সভা বসলো। থই থই করছে মানুষ। এতক্ষণে জামালুদ্দিন লাগামের কীর্তিকলাপ সবার জানা হয়ে গেছে। সে একবার রজব মোল্লা, আরেকবার গেদা মিয়া, কখনো বা অন্যান্য মুরুব্বিদের পায়ের উপর আছাড় খেয়ে পড়ে মাফ চাইছে। এই মহান ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ মাহাত্ম্য দ্বারাই ক্ষমা করে দিতে উদ্যত হচ্ছেন, আর তখনই বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের থামিয়ে দিচ্ছেন।
এ গ্রামের অনেকের হাঁসমুরগি, গরু-ছাগল চুরি করেছে। সিঁদ কেটেছে। কেউ কেউ সেগুলো ফেরত চাইছে।

সবচাইতে ভয়ানক অভিযোগটা তুললো মতিমিয়া। মোল্লা সাব। এইটা একটা খচ্চরের বাচ্চা। এই ভরা সভায় আর কী কমু! রাইতের বেলা ও আমাগো গোয়াইল ঘরে ঢুইক্যা গাভীর সাথে আকাম করতো। তারে আমি তিনদিন দাবড়ানি দিছি। এ কথা বলার সাথে সাথে ‘ছিঃ ছিঃ, ওয়াক-থু’ ধ্বনিতে মাঠ কেঁপে উঠলো।

রজব মোল্লা সাহেবের বিচক্ষণতায় পরে সভা সাঙ্গ হলো। এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যে, উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে মেরেই ফেলবে। রজব মোল্লার বিশেষ পরামর্শে সে সবার কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইল, জীবনেও আর কোনো অন্যায় করবে না মর্মে সে শপথ কাটলো। আপাতত এ যাত্রায় সে রক্ষা পেলেও অতীতের অপরাধ থেকে কিন্তু তার দায়মুক্তি জোটে নি। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না, প্রতিটা অপরাধেরই বিচার হবে। জামালুদ্দিন লাগামের বিচারের ভার সময়ের কাঠগড়ায় ন্যস্ত থাকলো।

জামালুদ্দিন লাগাম কী লিখেছিল স্টেটাসে? এটা এক কথায়ই বলা যায়- নাহ্‌ থাক, পুরো কাহিনি পড়ার পর আপনারাই এখন আন্দাজ করুন, আর এই ভোল-পাল্টানো, সুবিধালোভী ধূর্ত শেয়ালদের চিনে রাখুন, যারা সব সরকারের আমলেই ‘সরকারি দল’ করে আর দেশ ও জনগণের হুগা মাইরা হগ্‌গলের জান তেজপাতা কইরা ছাড়ে। শুধু তাই না, নিজে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে, নিজ বংশের জামাতি-রাজাকার দুর্নাম ঢেকে রাখার উদ্দেশ্যে অন্যদেরকে ‘রাজাকার-জামাতি’ বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ঠোঁটের কোণা ঘা করে ফেলে।

২৭ মার্চ ২০১৯ / ০৪ জুলাই ২০২২






ফুটনোট-১

রজব মোল্লা
গেদা মিয়া
চাঁন খাঁ

প্রথম দুজন আমাদের গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তৃতীয় জন, গ্রামের একজন বয়োবৃদ্ধ মুরুব্বি (নিহত হয়েছেন অনেক আগে)। তাঁদের প্রতি সম্মানার্থে এ গল্পে তাঁদের চরিত্র সন্নিবেশ করা হয়েছে।

ফুটনোট-২

‘শঙ্কিত পদধ্বনি’র গল্পটায় সামান্য তারতম্য থাকতে পারে। ৯০/৯১ সালে দেখা নাটক, কিছু তথ্য ভুলে গেছি নিশ্চয়ই। তবে, থিম ঠিক আছে।

ফুটনোট-৩

এটা আগে সংক্ষিপ্ত আকারে ফেইসবুক আর ব্লগে পোস্ট করা হয়েছিল। ওটা ছোটো ছিল বলে কয়েকজন পাঠকের বেশ আক্ষেপ ছিল। তাদের আক্ষেপ আমার অনুপ্রেরণা। আজ বড়ো করলাম।


তথ্যসূত্র :

১। রাজাকারের তালিকা তৈরির বিধান রেখে সংসদে বিল। প্রথম আলো, ০৫ জুন ২০২২। Click This Link

২। মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা: কথা পাল্টালেন মন্ত্রী। ডয়চে ভেলে, সমীর কুমার দাস, ২৬ মার্চ ২০২২। Click This Link

৩। রাজাকারের তালিকা নিয়ে সংসদে প্রশ্নের মুখে মন্ত্রী। প্রথম আলো, ২১ জানুয়ারি ২০২০। Click This Link


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৯
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×