somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এক নিরুদ্দেশ পথিক
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

আসেন বাজেটের ভালো ২টা দিক নিয়ে কথা বলি!

০৩ রা জুন, ২০২৩ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি।

বাজেটে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৭.০১ লাখ থেকে ৫৮.০১ লাখ, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতাভোগী ২৪.৭৫ লাখ থেকে ২৫.৭৫ লাখ, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩.৬৫ লাখ থেকে ২৯ লাখ, হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতাভোগী ৪,৮১৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৬,৮৮০ জন করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ কিছু ভাতায় টাকার পরিমাণ ১৫০, ১০০ এবং ৫০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে৷ ভাতাভোগীর এই সংখ্যা এবং টাকার পরিমাণের এই বৃদ্ধিকে আমি স্বাগত জানাই, তবে এটা নগণ্য।

আপনি যদি আগের দুই দশকের বাজেট দেখেন, তাইলে দেখবেন প্রতি বছর সংখ্যা গুলো বাড়ে। এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু এখানে একটা পলিসিগত বৈপরীত্য আছে।

ক। মাত্র এক মাস আগে, সরকার দেখিয়েছে দারিদ্র্য কমেছে। বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, দেশে এখন অতি দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ছয় বছর আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। যদি দারিদ্র্য কমেই থাকেই তাইলে আপনি সামান্য ৫০০/৬০০/৯০০ টাকার ভাতা ভোগীর সংখ্যা বাড়ালেন কেন? জরিপ ঠিক হলে ভাতা ভোগীর সংখ্যা তো কমার কথা?

খ। একবছরে জ্বালানির দাম বাড়ালেন ৪৫ থেকে ৬০ শতাংশ। মাত্র ৫০, ১০০ বা ১৫০ টাকা মাসিক ভাতা বৃদ্ধি কি 'উচ্চ মূল্যস্ফীতি, উচ্চ জ্বালানি এবং নিন্ম ক্রয়ক্ষমতার' বিপরীতে দারিদ্র্য বিমোচনে সক্ষম?

সরকার পরিসংখ্যান জালিয়াতি করে পদে পদে ধরা খায়। সব খানেই আমি পরিসংখ্যানের সাথে পলিসিগত কনফ্লিক্ট খুঁজে পাই।


গ। মূলত নতুন ভর্তি হওয়া ভাতা ভোগীরা সরকারী দলের মাঠের কর্মী যাদের কার্ডের বিনিময়ে দলীয় মিছিলে/মিটিং/কর্মসূচীতে যাওয়া লাগে। নির্বাচন উপলক্ষে তাঁদের খুশি করতে ভাতা বাড়ান হয়েছে।

তথাপি এটা ভাল উদ্যোগ, লুট ও পাচারের তুলনায় কোটি ভাগের এক ভাগ হলেও।

ঘ। পেনশন না দিতে পেরে বয়স্ক ভাতা বিএনপি অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের কনসেপ্ট। সেটা আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশ্তেহারে না থাকলেও ১৯৯৬-২০০১ মেয়ারদের অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া সাহেব গ্রহণ করেছেন। সাচ এ নাইস এক্সামপল অফ ফলোয়িং ইচ আদার। শিক্ষা উপবৃত্তির ১৯০১ সালে বৃটেনের কনসেপ্ট, বাংলাদেশে এই ভাতা বেগম খালেদা জিয়া সরকার ৯১-৯৬ মেয়াদে চালু করেছেন।


৫। অতি দারিদ্য জিরোতে নামা এবং সাধারণ দারিদ্র্য ৩% এর নিচে নামা পর্যন্ত একটা দেশকে দরকারি ভাতা, দরকারি ভর্তুকি দিতে হবে, বাংলাদেশ ভর্তুকি কমানোর অযুহাত হিসেবে বিবিএসকে দিয়ে দারিদ্র্যের সংখ্যা কমানোর জালিয়াতি করছে।
তবে হ্যাঁ ভাতা টেকসই নয়। টেকসই হচ্ছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করে ভবিষ্যৎ আয় বাড়ানোর এবং ভবিষ্যৎ আয় খোয়ানো বন্ধ। টেকসই হচ্ছে গরিবের জন্য সর্বজনীন পেনশন। এখানেও বৈষম্য দেখি, সর্বজনীন পেনশনের নামে ধনীর নামে বীমা স্কীম খুলেছে সরকার।

৬০০-৯০০ টাকা ভাতা দারিদ্র্য বিমোচন ভ্যালু বলতে গেলে নেই, এটা ভিক্ষার মত, ইট হ্যাজ নো লাইফ সাইকেল। এটা দিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ১ বেলা আমিষ কেনা যায় বলে, পুষ্টির সংকটও কমে না। তাছাড়া এটা মাত্র একবা দুই দিনের শিশু শ্রমের সমান, ফলে স্কুলিং কে এট্রাক্ট করে না।

সরকারকে ভাতার বিকল্প হিসেবে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল নিয়ে হাজির হতে হবে। বিদ্যমান কৌশলে 'নিউ পভার্টি' মোকাবেলা অসম্ভব।


২। দ্বিতীয় গাড়িতে কার্বন কর।
একই ব্যক্তির ২য় গাড়িতে কার্বন কর ২৫ হাজার থেকে সাড়ে তিন লাখ পর্যন্ত করা হয়েছে।

আমি কার্বন করকে সমর্থন করি, তবে আপনাকে কার্বন করের নামে তোলা অর্থটা পরিবেশ সংরক্ষণ ও বনায়নের প্রকল্পে ব্যয় করতে হবে। এটা তুলে ঘাটতি বাজেটের খরচ মেটানো নন সেন্স।

সমস্যা হচ্ছে-
ক। এটা ব্যক্তির নামে করার ধনীরা এই কর থেকে পালাতে পারবে, বাবা নিজের নামে না কিনে মা ছেলে মেয়ে আত্মীয়ের নামে ২য় গাড়ি কিনবে। এটা এড্রেস কেন্দ্রিক করা যেতে পারে কিংবা পরিবার কেন্দ্রিক।

খ। তবে সাধারণভাবে এটা করার রাইট পলিসি হচ্ছে, যে যে রুটে মেট্রো রেল, ট্রাম, বিয়ারটির মত মানসম্পন্ন গণমাধ্যম থাকবে, সেখানের কয়েক কিলো র‍্যাডীয়াসের ঠিকানায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিরুৎসাহিত করতে এটা করা যেতে পারে।

গ। যেখানে সরকার আমলাদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আর আনলিমিটেড এমাউন্ট তেল দেয়, সেখানে ধনীদের দ্বিতীয় গাড়িতে কার্বন কর কতটা যৌক্তিক? পরিবেশ নিয়ে চিন্তিত থাকলে আগে প্রশাসনের কার্বন এমিশন কমান।


আমাদের সরকারের লোকেরা কার্বন করের কথা শুনেছে, কিন্তু এর প্রয়োগ পলিসি জানেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×