somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট মরিচের ঝাল বেশী :((:((:((.....(বান্দরবন ভ্রমন ৫মপর্ব )

১৩ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই......প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম.......চারদিকে ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডাও বেশ.....৭.৪৫ মিনিটে হোটেল থেকে বের হওয়ার পর তা উপলব্দি করতে পারলাম বেশ ভালো মতে....৮টার ১ম বাস ধরতে হবে ......সময় স্বল্প....তাই সামনে যে অটো রিকশা ছিলো তাকেই প্রশ্ন করলাম...রুমা বাজার যাওয়ার বাসস্ট্যান্ডে যাবে.....৬০ টাকা লাগবে এই মর্মে সম্মতি জানাতে ...আমরা দেরি করিনি...উঠে পড়লাম.....জোরে চালাও.....:D:D

(হোটেল মালিক ইউ চুপ্রুই...... ক্রিওক্রাডং থেকে সদ্য ফিরে আসা এক দম্পতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন....তাদের কাছ থেকে যাওয়ার পথের একটা ধারনা নিয়ে গিয়েছিলাম.....
বলে দিয়েছিলেন, বাসস্ট্যান্ডে আরো কয়েকটা গ্রুপ পেয়ে যেতে পারেন ভাগ্য ভালো থাকলে.....দশ বারো জনের একটা টিম হলে পিক আপ ভাড়া এবং একই গাইডের অধিনে যাওয়া যাবে....বেশ সুবিধাও পাওয়া যাবে.....;);))

১ম বাস ধরার আসা অনেকটা ছেড়েই দিয়েছিলাম....কারন আমরা পৌছতে পৌছতে ৮.১৫....কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন....যে বাসের শেষের দিকে ১০টি সিট খালি থাকায় বাস ছাড়তে দেরী করছে.....তাই দেরী না করে আগেই টিকেট কেটে নিলাম.....:):)আর সময় হাতে থাকাতে নাস্তাও সেরে নিলাম.....তবে নাস্তার সাথে সাথে চায়ের অর্ডার দিতে হয়েছে আগেই....কারন......স্বজিতে যে পরিনাম ঝাল দিয়েছে....তা নিবারন করার সে মুহুর্তে অন্য কোন উপায় দেখছিলামনা....:((:((:((

মুখে দারুন ঝালা নিয়ে ক্যাশিয়ারকে প্রশ্ন করলাম....ভাই কত কেজি মরিচ দিছেন....বেটা একটু ভ্যাবাচেকা:-*:-* খেয়ে বলল ....ভাইজান এই দেখেন ছোট ছোট এই পাহাড়ি মরিচ দিছি/:)/:)....ঝাল কি বেশী হইছে?:P:P

ভাই মুখ ঝলতাছে....ছোট মরিচের ঝাঁঝ বেশী আজ ভালোই টের পাচ্ছি..... :D :D :D :D

অবশেষে বাস যাত্রা শুরু হলো...ততক্ষনে ৮.৪০ মিনিট.....শরুতেই এবড়ো থেবড়ো রাস্তা রুক্ষ প্রকৃতির মাঝ দিয়ে বাস চলতে শুরু করলো...........তবে সেটা বেশীক্ষন স্থায়ী হয়নি...খুব অল্প সময়ের মাঝেই আমরা পাহাড়ি আঁকা বাঁকা পথে .... সবুজে ঘেরা পাহাড়ের এক পাশ দিয়ে এঁকে বেঁকে ছুটে চলছি আমরাও.....বাসের গতি খুব বেশী উঠছে না....কারন মুহুর্তেই মনে হচ্ছে রাস্তা শেষ....মোট কথা এই আঁকা বাঁকা পথে ক্ষনিক পর পরই ইউ টার্ন.....সেই সাথে আপ এন্ড ডাউন তো আছেই....পথে পথে শুকনো ঝরনা বা সামান্য পরিমানের পানি প্রবাহিত হচ্ছে এমন ঝরনাও চোখে পড়ছে বেশ কয়েকটি...........

এরই মাঝে আরো দুটি টিম পেয়ে গেছি ....যাদের ৫জনের একদল ক্রেওক্রাডং এবং ৪জনের অন্য দল তাজিংডং পর্যন্ত যাবে.....সত্যি বলতে ভীতি যতটুকু ছিলো টিমটা বড় হওয়াতে তা নিমিষেই হাওয়া হয়ে গেলো:D:D......এরা বেশির ভাগই ঢাকা থেকে আগত.......আর সাথে একজন দিদির সাথে পরিচিত হয়ে গেলাম....যিনি বগা লেকে থাকেন......তিনি সানন্দে আমাদের পথপদর্শক হিসেবে যেতে রাজি হলেন;);).....এবং একজন গাইড ঠিক করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করলেন......

৫০কিঃমিঃ এর মত রাস্তা ২.৩০ - ৩.০০ ঘন্টায় পার হয়ে অবশেষে বাস এর যাত্রা শেষ করলাম...এবার নৌকা পথের জন্য প্রস্তুতি নিলাম সবাই.....

বাস থেকে নামার পরপরই সিয়াম দিদি আমাদের বারো জনকে একসাথে থাকার জন্য বললেন এখন থেকেই....আর একজনকে গাইড থেকে শুরু করে সবার সাথে কথা বলার জন্য উপদেশ দিলেন....তবে ট্রলারভাড়া আলাদা বা একসাথেও দিতে পারেন....


এইটা আমাদের সেই নৌযান.....

আমাদের সিয়াম দিদি এবং তার বেবী....

নদীর পাড়ে এসে প্রথমেই যা নজর কাড়লো সেটা হলো পানি....একদম স্বচ্ছ...আর এর বয়ে চলা........তবে গভীরতা কমই মনে হচ্ছে.......একে একে সবাই ট্রলারে উঠে পড়লাম......শুরু হলো নদী পথের যাত্রা.....স্বচ্ছ পানি দেখে হাত না দিয়ে কি থাকতে পারা যায়...আমি পারিনি...শুধু আমি না...সবাই পানিতে হাত দিতে ভুল করেনি....

পানি এতটাই স্বচ্ছ...নিচের ছোট ছোট পাথর, বালিকনা সব পরিস্কার দেখা যাচ্ছে.........তলার দৃশ্য দেখা বাদ দিয়ে এবার চোখ ফেললাম আশে পাশে....দুই ধারে সারি সারি পাহাড়.....তারই মাঝে বয়ে চলছে এই নদী......এঁকে বেঁকে.....কখনো কখনো শ্যাওলা ধরা সবুজ শৈর পাথর এর পাহাড়...কখনো কখনো...নদীর পাড়ে চাষের সবুজ জমি....সত্যি অসাধারন...এরই মাঝে আমাদের ছুটে চলা.....


বাঁশের ভেলা...

হঠাৎ করেই চোখে পড়লো এক লোক নদী পার হচ্ছে......আমরা সবাই তাকিয়ে রইলাম...পানির গভীরতা দেখার জন্য....হাঁটু জলের নদীর দেখা মিললো অবশেষে:P:P....শুধু যে পথে ট্রলার চলছে সে পথে কোমরের চেয়েও খানিকটা নিচে পানির অবস্থান.....:P:P

সাঙ্গু নদী আর নদী পার হওয়া লোক....




নদীর পাড় দিয়ে পাহাড়ী মেয়েদের ছুটে চলা.....নদীর পাড়ের জমিতে কাজ করা....





নদীর পাড়...

ছবির মানুষের পিছনটা দেখেন...নদী পাড়ের শিলা মাটি..

চারপাশটা মন্ত্র মুগ্ধের মত দেখেতে দেখতে আমরা....১.৪৫মিনিটের নৌপথের যাত্রা শেষ করলাম...অবশেষে পৌছে গেলাম...."রুমা বাজার" ........

এখানে এসেই আমাদের যাত্রার ভাটা পড়লো.....আমরা থানচির সেই দূর্ঘটনার কথা জানতে পারলাম/:)/:)....এও জানতে পারলাম মুগ্ধ আর রাসেল নেই(তখনও জানিনা এরা আমাদের ব্লগ পরিবারেই সদস্য ছিলেন)/:)/:)....আমরাও ছিলাম নেটওয়ার্কের বাহিরে...এখানে আসার পর ফোন আসতে শুরু হলো....সবাই তখন ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম খবর জানাতে যে আমরা ভালো আছি......

সিয়াম দিদির মনটাই খারাপ হয়ে গেলো....তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন দূর্ঘটনার আপটেড নেওয়ার জন্য.....তিনি এও জানালেন ওরা অনেক দিন ধরে ওনার ওখানেই ছিলেন এবং ওদেরকে বেশ পছন্দ করতেন.......সবারই মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলো....উদ্দিপনার মাঝে কিছুটা হলেও ভাটা পড়লো....

ক্ষনিক বিরতির পর আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম....আমাদের গাইড হিসেবে নিযুক্ত হলো একজন, যার নাম সুমন.....

নাম শুনার পর ভাইগনা মজা করে বলেই ফেললো ....এই ট্যুরে সুমন আমাদের ছাড়বে না মনে হচ্ছে....:P:P:P:P

বড় একটা পাহাড়ের উপর আর্মি ক্যাম্প এ সবাই নিজের খোমা দেখিয়ে আর নাম, ঠিকানা, মোবাইল নং, স্বাক্ষর শেষ করে নেমে আসলাম....

এরই মাঝে ২০০০ টাকায় চাঁদরে গাড়ি ভাড়া হয়ে গেছে ......গন্তব্য বকা লেক পর্যন্ত ....সবাই উঠে গেলাম নির্দিষ্ট গাঁড়িতে.......

এই সেই গাড়ি উপরে বসা গাইড আর তার সহযোগী....

ধুলোবালি মাড়িয়ে চললাম ছুটে ......হ্যা আমাদের যাত্রা শুরু....লোকালয়ের মাঝ দিয়ে.....আধা ঘন্টা না যেতেই গাড়ি থেমে গেলো....সবাই সমস্বরে বলে উঠলাম....কি ব্যাপার???

নামতে হবে ....পুলিশ চেকপোস্ট.....সবার নাম ঠিকানা এন্ট্রি করতে হবে আবার...এবার একটু বিরক্তই হলাম সবাই....আবার আধা ঘন্টার ধাক্কা...../:)/:)/:)



পুলিশ চেকপোস্টের পাশেই একটা লেক....

(চলবে)
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×