ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হঠাৎ করে ইনজুরিতে পরে গেলেন নব নিযুক্ত অধিনায়ক মাশরাফী । তখন দলে এমন অবস্থা ছিল যে কাউকেও নেতা হিসেবে দাড়াতে পারবে এমন মনে হয় নি । ছোট্ট একটা ছেলে দায়িত্ব নিয়ে পুরু দলের বোঝা কাধে তুলে নিয়েছিল । এবং এমনভাবে দাড়িয়েছিল যেভাবে সত্যিকারের নেতাদেরই দাড়ানো মানায় । এরকম কেউ বাংলাদেশে আগে কখনও আসে নি । কাউকে ছোট করার জন্য বলছি না,তবে এই কথার বিরোধীতা করার মতো অকাট্ট প্রমান কেউ দিতে পারবেন না ।
তার নেত্রীত্বেই টাইগারদের সত্যিকারের টাইগার মনে হয়েছিল । অনেকেই হয়ত বলবেন দূর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে এটা এমন আর কি ! কিন্তু একথা ভুলে গেলে চলবে না ওই সিরিজে বাংলাদেশ কিন্তু প্রত্বেক্ ম্যাচই হারতে হারতে জিতেছিল আর জিতিয়েছিল ওই বিষ্ময় বালকটিই । এর পর সে এভাবে একা হাতে ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে ধবল-ধুলাই,শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ধরে ফেলা,অল্রাউন্ডারের র্যাং কিং্যে এক নাম্বার পজিশনটা এক সময় মনে হত তার ব্যাক্তিগত সম্পত্বি ।এত লম্বা সময় আর কেই এই পজিশনে ছিল না এটা সবাই জানে । এই ছেলেটির জন্ম বাংলাদেশে এটা ভাবতেই বুক্ গর্বে ভরে উঠত । এরকম আরও অনেক ক্রীতিত্ব আছে এসব বলে বাহুল্যতা বারাতে চাই না । আর সূর্য উঠলে সবাই দেখতে পায় ।
এবার আসি বাংলাদেশের ভুইফুর সাংবাদিকতা নিয়ে । বাংলাদেশে কাগজ কিনতে পাওয়া যায় না লেখাপড়া করার জন্য কিন্তু ৩ থেকে ৮ টাকার মধ্যে রংচঙ্গা নিউজপেপারের ওজন দেখলে মনে হয় কাগজ বোধয় এখানে গাছের ডালে ডালে ফলন হয় ।প্রত্যেক বছর নতুন কয়েক্টা পেপার আর টিভি চ্যানেল বের না হলে বাঙ্গালী বুদ্ধিজিবীদের বেচে থাকা কষ্টকর হয়ে পরত ।এসব চ্যানেলে রাতজাগা পতীতার মতো বুদ্ধিজীবিরা জেগে থাকেন,আর দেশের আশমান সেলাই করেন । এখন কথা হলো এসব পত্রিকায় কি ছাপা হয় আর চ্যানেলে টক শো এবং ঘন্টায় ঘন্টায় সংবাদেই বা কি প্রচার হয়? ওই যে কথায় আছে না বোবার শত্রু নেই । ঠিক তেমনি বাচাল,নিউজপেপার,টেলিভিশন বক বক না করে থাকতে পারে না । পুরনো কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া এখন অধিকাংশই ওই একি কাজ করে…ছিদ্রান্বেশন আর প্রপাগান্ডা । এদের খবর সংগ্রহে কোন অসুবিধা হয় না বরং বলা যায় এদের বার্তাবাহকের কোন অভাব নেই ।প্রত্যেক যায়গায় এদের জীবন্ত টাকাখাওয়া আড়িপাতা মেশিন ফিট করা আছে । না হলে বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে কি নিয়ে আলোচনা হয় সেটা সংবাদপত্রে আসে কিভাবে?
ড্রেসিংরুম হচ্ছে খেলয়ারদের রিফ্রেশমেন্টের যায়গা । ছোট একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হয় । পরিক্ষার আগের রাতে যদি স্যার এসে গার্ড দেওয়া শুরু করেন যে ছাত্ররা পড়াশোনা করছে নাকি গল্প করছে নাকি একে অন্যেরতা দেখে দেখে শিখছে তাহলে তো রিজাল্টের ১২ বাজতে দেরি হবে না । এখন ড্রেসিং রুমে যদি ম্যানেজমেন্টের কেউ সারাদিন বসে থাকে আর খবরধারী করে খেলোয়ারদের মানসিক অবস্থা কি হবে তা যে কোন বিবেকবান মানুষেরই বুঝে ফেলা উচিত ।আবার নির্বাচক বানানো হয়েছে এমন একজন ব্যাক্তিকে যিনি কিছুদিন আগেও দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে নিষিদ্ধ ছিলেন । কারন যাই হোক ওই সিদ্ধান্তও বোর্ডের ছিল এবং এরকম একজন বিতর্কিত মানুষের এই পদে নিয়োগটাও আইসিএল না যাওয়া অধিনায়ক-সহধিনায়কের মনপুত না হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয় । উনি যে বর্তমানে একজন নির্বাচক এবং উনার যে অভিভাবক সুলভ একটা ভাবমুর্তি দরকার তা বোধহয় উনার বুধগম্য হয় নি । ওরা সবাই সমবয়েসি,সমবয়েসি কিছু ছেলে একসাথে থাকলে অনেকধরনের ঠাট্টা,রসিকতা করা হয়ে থাকে যা তাদের মাইন্ড ফ্রেশ রাখতে সহায়ওতা করে ।
একজন সম্মানিত সাবেক অধীনায়ক এবং হেড অফ ডেলিগেশন’এর দায়িত্ব না ড্রেসিংরুম পাহারা দেওয়া এই কথাটি যে কোন বাচ্চাও বুঝবে আশা করি । কিন্তু আমাদের দেশের বাচ্চা-কচ্চারা যা বুঝে তা হর্তা-কর্তারা একটুও বুঝেন বলে মনে হয় না । অথবা বুঝেও না বুঝার ভান করেন কিনা সেটাও একটা প্রশ্নের বিষয় । যেহেতু উনারা আবার ওই সমস্থ টিভি-খবরের কাগজেরও সম্মানিত ম্যাসেঞ্জার । ড্রেসিংরুমের খুনসুটি গুলো যদি রঙ মিশিয়ে পাঠানও যায় তাহলে তো বাড়তি কিছু ইনকামও হয় । কে চায় বল ঘরের লষ্কী পায়ে ঠেলতে,এখানে এককালে টাকার জন্য নিজের দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন কামরুপ-কামাক্ষার দেশে । সেখানে কর্মক্ষেত্রেই এতো সুন্দর পশার সাজানো । আর জনাব হেড অফ ডেলিগেশন মুন্না সাহেব ! উনার টীমে যে আসলে কি কাজ তা উনি নিজেও বলতে পারবেন কিনা সন্দেহ । এর জন্য এসব আলতু ফালতু বিষয় নিয়ে পরে থাকেন । ইদুরের দাঁত লম্বা হয়ে যায় খুব তারাতারি তাই সে সারাক্ষন কিছু না কিছু কাঁটতে তাকে । জনাব মুন্না হচ্ছেন সেই ইদুর টাইপ মানুষ যে কাজ দেখানোর জন্য রিপোর্টে এসব উল্টা-পাল্টা বানোয়াট কথা-বার্তা লিখেছে ।
সেদিনের বাচ্চা ছেলে সে কিনা আজ তাকে ড্রেসিংরুমে থাকতে দিতে চায় না । খুব ভাল করেছেন বিচার দিয়েছেন,এবং আরো ভাল হয়েছে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । এখন যে আসবে সে ভয়ে ভয়ে থাকবে একথা ভেবে- যে দলে সাকিব-তামীমরা অরক্ষিত সেখানে সে কোন লাট সাহেব । সাকিবকে কঠিন শাস্তি দেওয়ার অনেক সুযোগ অনেক আগেই এসেছিল । তখন দেওয়া হয় নি আর এখন যখন সে টীমের পাশে দাড়ালো তখন তাকে অপসারন করা হলো । একবার কি কেউ ভেবে দেখেছিলেন এদের বিকল্প কেউ কি আছে ??? শাস্তিটা কি আর একটু হাল্কা হতে পারতো না ???কিংবা আদৌ কি কোন শাস্তির এখানে দরকার ছিল???শাস্তি তো দেওয়া উচিত সে সব কর্তা ব্যক্তিদের যারা টীমের ভেতরের খবর বাইরে ছরিয়ে দিচ্ছে এমন কি সেটা বোর্ডকে জানানোরও আগে ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


