somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুন্দরী থেকে দূরে থাকুন, নইলে বিপদ হতে পারে

২৬ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠার কথা ছিল আজ, কিন্তু যথারীতি অনেক রাত করে ঘুমানোর কারনে ভোরে ঊঠা হলো না। যখন উঠলাম তখন আকাশে গনগেনে সূর্য ঊঠে গেছে। পটাপট প্রস্তুত হয়ে নিলাম, এমনিতেই আমার বাইরে যাবার জন্য প্রস্তুত হতে হয় না, যেভাবে ঘুমাই সেভাবেই বাইরে যাই। তবে আজকে উপলক্ষ একটু ভিন্ন। মানিকগঞ্জ যেতে হবে মামার বাসায়, কয়েকদিন ধরেই যাবার কথা ছিল কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন কোনদিনই যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই আজকে পন করেছিলাম যেভাবেই হোক যাবই। মানিকগঞ্জ ঢাকার খুব কাছে হলেও পরিবহন ব্যাবস্থা তেমন ভালো না। বি আর টি সির বাস সার্ভিস তাই ভরসা। বি আর টি সি সাধারনত গুলিস্থান থেকে ছাড়ে, কিন্তু আমি সময় বাচানোর জন্য টেকনিক্যাল মোরে গিয়ে বাসে ওঠার সিদ্ধান্ত নিলাম। যথারীতি টেকনিক্যাল মোরে গিয়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলাম। যথারীতি বাস আসল অনেক দেরীতে, বাসে উঠলাম, এবং মজার ব্যাপার হলো, আমিই ছিলাম বাসের মাঝে সবচেয়ে হতভাগা, কারন আমার আগে যে ব্যাক্তিটি উঠেছেন তিনিই বাসে বেচে থাকা একমাত্র খালি ছিটটাতে বসলেন। আমি একাই দাঁড়িয়ে রইলাম, এমন অবস্থায় মেজাজ কার না খারাপ হয়। এমনিতেই বেশি ঘুম হয়নি রাতে, চিন্তা করেছিলাম বাসে বসে ঘুমাতে ঘুমাতে যাব, কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঝিমাতে লাগলাম। ঝিমাতে ঝিমাতে খেয়াল করলাম যে বাসের পেছনের দিকে একটা মেয়ে বসে আছে, মেয়েটি আহামরি সুন্দরী না হলেও খারাপ নয় একবারে, মোটামটি ১০ এর মাঝে ৭ দেবার মত। পুরো বাসের মধ্যে ঐ মেয়েটির দিকেই বারবার চোখ চলে যাচ্ছিল আমার। ইশ যদি মেয়েটির পাশে বসতে পারতাম কোনভাবে মনে হচ্ছিল বারবার। বাস চলছে মন্থর গতিতে, আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি, চোখাচোখি হলো কয়েকবার। ভালোই লাগছিল আমার। বাস যখন সাভারে চলে আসল তখন মেয়েটির পাশের ছিটের লোকটি নেমে গেলো। আমার তখন সুযোগ চলে আসল মেয়েটির পাশে বসার, কিন্তু আমি গিয়ে বসার আগেই অন্যছিট থেকে একজন উঠে গিয়ে মেয়েটির পাশে বসে পড়ল। এমন মেজাজ খারাপ হলো যে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। আমি গিয়ে বসলাম মেয়েটির কাছাকাছি অন্য একটি ছিটে। তবে এই ছিট থেকেও মেয়েটিকে ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে, তাই এতেই সন্তুস্ট থাকলাম। আমি খেয়াল করছিলাম মেয়েটা কি করে, দেখলাম মেয়েটা কি যেন একটা ম্যাগাজিন পড়ছে খুব মনযোগ দিয়ে। মেয়েটির পাশে যে লোকটি বসেছে সে মেয়েটির সাথে কথা বলা শুরু করেছে ইতিমধ্যেই, তাদের কথপকথন আমি শুনছিলাম মনযোগ দিয়ে। তাদের কথপকথন থেকে যা বুঝতে পারলাম তা হল, মেয়েটি কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে (বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটা খেয়াল করিনি) তার বাড়ি পাবনায়, ছুটি পেয়ে সে পাবনায় যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে একটু খটকা লাগলো যে পাবনায় সাধারনত কেউ আরিচা হয়ে লঞ্চ দিয়ে যায় না, এখন সবাই যমুনা সেতু হয়েই যায়, আর মেয়ে হলে তো কথাই নেই। কিন্তু ঐ সময় এই খটকাটাকে পাত্তাই দিলাম না। লোকটার প্রতি আমার অনেক হিংসা হচ্ছিল আর মেয়েটির প্রতি হচ্ছিল চরম রাগ। ভাবছিলাম এখানে আমার মত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটা স্মার্ট, লম্বা, সুন্দর ছেলেকে রেখে সে একটা আবাল গোছের একটা লোকের সাথে গল্প করছে। একটু পরে আরো অবাক হলাম যখন দেখলাম মেয়েটি তার ব্যাগ থেকে পাউরুটি বের করে ঐ লোকটিকে খেতে দিচ্ছে, লোকটিও চরম তৃপ্তির সাথে মজা করে খাচ্ছে। আমি সকালে বের হবার সময় এতো তারাহুরা করেছি যে সকালে নাস্তাই করি নাই। চরম ক্ষুধা লেগেছে, ঐ লোকটার খাওয়া দেখে আমার ক্ষুধা আরও চাঙ্গা হয়ে গেলো। ভাবলাম এমন মেয়েই তো চাই, যে কিনা ক্ষুধার্থকে খাদ্য দেয়, আমি একবার মনে করেছিলাম মেয়েটির পাউরুটিতে ঐ লোকটির সাথে আমিও ভাগ বসাই। কিন্তু কিছুই করার ক্ষমতা হচ্ছিল না আমার। মেয়েটি ফোনে মাঝে মাঝেই কি যেন কথা বলছিল, কথাগুলো বোঝা যাচ্ছিল না। বাস চলছে, এর মাঝে আমার চরম ঘুম পাচ্ছে, কিছুতেই ঝিমানি ঠেকাতে পারছি না তাই ভাবলাম একটু ঘুমিয়ে নেই, এখনো অনেক পথ বাকি।
ঘুম থেকে যখন ঊঠেছি তখন প্রায় মানিকগঞ্জ চলে এসেছি। কিন্তু ওঠার পর চরম একটা টাশকি খেলাম। তাকিয়ে দেখি মেয়েটি বাসে নেই, মেয়েটির না এই বাসে করেই আরিচা পর্যন্ত যাবার কথা ছিল, তাহলে সে কই গেলো, নাকি আমি ঘুমাতে ঘুমাতে আরিচা পার করে চলে এসেছি, নাহ আমি পার হইনি, মেয়েটা আগেই নেমে গেছে। মেয়েটির পাশের ছিটে যে লোকটি ছিল সে মরার মত ঘুমাচ্ছে, তাকিয়ে দেখি লোকটির হাতে যে ব্যাগটি ছিল সেই ব্যাগটি নেই, হয়ত লোকটির পকেটের মোবাইল মানিব্যাগও নেই। এতক্ষনে বুঝতে পারলাম মেয়েটি আসলে ছিল অজ্ঞান পার্টির সদস্য। আমি মনে মনে চরম ভয় পেলাম। আমার ভাগ্য কতটাই ভালো যে এত তালবাহানা করার পরেও আমি মেয়েটির পাশে বসতে পারি নাই। বসলয়ে তো ঐ লোকটির মত আমার অবস্থা হতে পারত।

আমি না হয় বেচে আসলাম, আপনি কি পারবেন বাচতে? তাই সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ভাব জমানোর চেস্টা করবেন না। এক কথায় অপরিচিত সুন্দরী থেকে দূরে থাকুন।
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×