somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রামীন বিরোধীদের অভিযোগগুলো এবং, ডঃ ইউনুস আমরা গ্রামীন ব্যাংকে'র পাশেই ছিলাম, আছি এবং থাকবো!!!

২৭ শে আগস্ট, ২০১২ ভোর ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামীন ব্যাংক ইস্যুতে শুধু সমগ্র বাংলাদেশই নয়, বরং সারাবিশ্বের মানুষের ধারনা এবং বিবেচনা পরিষ্কার। আমরা সবাই জানি, নোবেল জয়ী গ্রামীন ব্যাংক ইতিমধ্যেই মৌলিকত্ব হারিয়ে সরকারী ক্রীড়ানকে পরিনতে হবার পথে। কিন্তু এরও মাঝে, একদল মানুষ আজ সরকার ও সরকারী দল সমর্থকদের প্রচারনায় বিভ্রান্ত! সরকারের সিদ্ধান্তগুলোর সমর্থকেরা অনেক কিছুই দেখছে কিন্তু বুঝতে পারছে না আসল ব্যাপারটিই!

ভুল পথে চলা পথিকদের স্বদেশবাসী হিসেবে পথ দেখানোর দায়িত্ববোধ থেকেই এই পোস্ট।

সরকারী সিদ্বান্তের সমর্থকদের মূলত ২টি অভিযোগ,

১ম অভিযোগ, ডঃ ইউনুস'কে তো আজ না হয় কাল গ্রামীন ব্যাংক ছেড়ে যেতেই হবে, তবে সে কেন থাকতে চায়?

-দুঃখজনক বিষয় হলো যে, তারা বুঝতে চাচ্ছে না অথবা পারছে না যে, ডঃ ইউনুস তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটিতে পদ ধরে রাখতে চাইছেন না, বরং গ্রামীন ব্যাংক'কে আর দশটি সরকারী ব্যাংকের মত অচল করে দেবার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করছে।

সহজভাবে বললে, সরকার গ্রামীনের পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা খর্ব করে সেটির চেয়ারম্যানের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকটা আর দশটা সরকারী ব্যাংকের মত হয়ে যাবে। এবং ৮৩ লক্ষ ঋনগ্রহীতা নারী, যারা বর্তমানে ব্যাংকের মালিকানা ভোগ করে, তারা অধিকার হারাবে। ৩% শেয়ারের মালিক সরকারের চেয়ে ব্যাংকটির ৯৭% এর মালিক ৮৩ ঋনগ্রহীতা নারীদের ভেতর থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রনে থাকা বেশি যৌক্তিক ও ন্যায্য!

২য় অভিযোগ, কেন পশ্চিমারা এ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে? নিশ্চয়ই ইউনুস বাইরের লোক এনে আমাদের অপমান করছে!

- এটাও ভুল! এখানে ব্যাক্তি ডঃ ইউনুসের জন্য আমাদের সিংহভাগ জনগণের বা পশ্চিমাদের মাথা ব্যাথা'র নেই বরং মাথা ব্যাথা রয়েছে একটি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের প্রায় সব সেক্টরে ব্যার্থ সরকারের মর্জিমাফিক একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের ঘটনায়! বাংলাদেশের সরকারী দক্ষতা সম্পর্কে সারা বিশ্বেরই ধারনা রয়েছে বিধায়, সারা বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা দেখে যে কোন ব্যাক্তি বা সরকারই চুপ থাকতে পারে না। দলীয় দালালদের সহায়তায় আমাদের ১৬ কোটি মানুষের জীবন নিয়ে সরকারী ছিনিমিনি খেলা চলে, কারন এই ১৬ কোটি বাংলাদেশির অভিবাবক বাংলাদেশ সরকার, কিন্তু গ্রামীন তা নয়! সভ্য সমাজে এমন ছিনিমিনি খেলা অগ্রহনযোগ্য বিধায়, এবং সারা বিশ্বে'র কল্যাণে দৃষ্টান্তমূলক হওয়ায় গ্রামীন ব্যাংক সম্পর্কে আফ্রিকা-আমেরিকা-আরব-চীন-জাপানে'র মত পশ্চিমারা নিজ থেকেই এ সম্পর্কে আগ্রহী।

কেন ওরা এত আগ্রহী, সেটাই বলবো এখন,

--বিশ্বের আধুনিক ইতিহাসে দারিদ্রতাই সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা। এরই ফলে সব অশুভ ঘটনা ঘটে। মানুষদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যাংকিং সিস্টেম হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের সন্তান ডঃ ইউনুসের আগে কেউই ব্যাংকিং সেক্টরকে সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র গোষ্ঠি'র জন্য কার্যকর করে দেখাতে পারে নাই।

৮৩ লক্ষ মানুষকে বিনা মর্টগেজে ঋন প্রদান করা শুধুমাত্র একটি দৃষ্টান্তমূলক সফল ব্যাংকিংই নয় বরং এটা তার চেয়ে অনেক বৃহৎ একটি কনসেপ্ট। বিশেষ করে যখন, নারী মুক্তি'র মত মানবজাতি'র আরেকটি বৃহৎ জনসেপ্টও এর সাথে জড়িত, তখন এর মহত্ব বুঝতে না পারাটাই এক বিস্ময়!!!

পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগে একমাত্র সমাজতন্ত্রই কাগজে-কলমে দারিদ্রতা বিমোচনে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বাস্তবে চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে। মার্ক্স-এ্যাঙ্গেলরা ব্যার্থ হলেও, আমাদের দেশের ডঃ ইউনুস কিন্তু চলতি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতর থেকেই মানব ইতিহাসের অন্যতম মহৎ ও প্রয়োজনীয় পদ্ধতি আবিষ্কার ও প্রয়োগ করে দেখিয়ে দিয়েছেন! যাদের নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা ছিল না, তাদের জন্যই তিনি সারা জীবন পরিশ্রম করে, বেঁচে থাকতেই সকলের সন্মান ও স্বীকৃতি পর্যন্ত অর্জন করে সফলতার চুড়ান্ত স্পর্ষ করেছেন।

বিষয়টার মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেই আমাদের মতই সারা বিশ্ব এই ইস্যুটিতে এতটা আগ্রহী। এখানে জুজু'র কোন স্থান নেই, হবেও না!

সারা বিশ্ব আজ ক্ষুদ্ধ, আমরাও, সাথে বাংলাদেশি হিসেবে পাই কিছুটা বোনাস লজ্জা! যাকে নিয়া মানবজাতি গর্বিত সেই মানুষটিকেই এ দেশে এভাবে অপমানিত হতে হয়! যেই সরকার আমাদের অভিবাবকের দায়িত্ব পালনের কথা, তাদেরই হাতে ডঃ ইউনুস'কে হতে হয় নিগৃহীত!



-------------------------------------------

যাইহোক, আমরা বাংগালী জাতি সুবিচারের সাথে কোনদিনই আপোষ করি নাই। ইতিহাস তার সাক্ষী। আমরা তরুন প্রজন্ম চোখের সামনেই দেখলাম কিভাবে আমাদের আন্তর্জাতিক গর্বে'র জায়গাটি আভ্যন্তরীন প্রতিহিংসা'র আগুনে পুড়লো। আমরা তরুনেরা নিকট অদুর ভবিষ্যতে যখনই সুযোগ পাবো, আমরা এই ভুল শুধরে নেবই নেব!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:১৩
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×