শাসনের নামে শোষন, প্রতিপালনের নামে জুলুম নির্যাতনসহ এমন হাজারো অত্যাচারের প্রতিবাদের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। সেদিন গনতান্ত্রিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে দেশবাসী নেমে যায় মরনপণ যুদ্ধে। বিদেশী হায়নাদের হাত থেকে দেশকে বাঁচালো। কিন্ত বাঁচাতে পারছে না দেশীয় লুটেরাদের হাত থেকে।দলের ছত্রছায়ায় বা প্রশাসনের ক্ষমতায় থেকে কিংবা প্রশাসনকে হাত করে দেশের সম্পদ লুটে চলেছে এক দল মূখোশদারী। এদের থামাতে চেষ্টা করেও সম্মিলিত সহযোগীতার অভাবে পেরে উঠছে না শেখ হাসিনা সরকার। ইতোমধ্যে সময়ের তালে প্রযুক্তির উন্নয়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলেছে। এ প্রযুক্তিকে সরকারী সকল দপ্তরে ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও শতকরা ১০ভাগও ব্যবহার করা হয় না। কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে দূর্নীতির বড় অংশ কমে যেতো। প্রতিষ্ঠিত হতো গনমানুষের ন্যায্যতা,বেড়ে যেতো প্রাপ্তীর সূযোগ। বাংলাদেশকে দূর্নীতি মূক্ত করতে হলে দ্রুততম সময়ে কম্পিউটার প্রযুক্তি বাস্তবায়ন জরুরী। তবেই দেশের সকল উন্নয়ন কাজের বরাদ্ধ,আয় -ব্যায়ের হিসাব,সরকারের সকল সেবা মূলক কাজের গেজেট,নীতি-নিয়ম, নীতিমালা ইত্যাদি জন সাধারন জানার অবাধ সূযোগ তৈরী হবে। সাধারন মানুষের কাছে দায়িত্ববানরা জবাব দিহিতায় বাধ্য হবে। তবেই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।
সরকারী কোন্ কোন্ মন্ত্রনালয় ই-টেন্ডার(ই-মেইলে) চালু করেছে। ২/৪টি থানায় ই মেইলে জিডি করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্ত জেলা- উপজেলায় এখনো উন্নয়ন কাজের বরাদ্ধকৃত টাকার পরিমান, প্রকল্পের নাম তালিকা, পুলিশি সেবা, হিসাব বিভাগে চাকরীজীবিদের বেতন-ভাতা, স্কুল কলেজে কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহার নাই বললেই চলে।বিআরটিএ অফিস, পাসর্পোট অফিসে এখানো ঘুষের টাকা নিয়ে লাইন ধরে ঘুরাঘুরি করতে হয়। বিভিন্ন দপ্তর থেকে সাংবাদিকরা তথ্য পেতে চাইলে এখনো সরবরাহ করার সুব্যবস্থা গড়ে উঠে নাই। মন্ত্রনালয় ভিত্তিক বিভাগীয় অফিস সমূহের ওয়েব সাইট গুলো চালু করা হলে অনেক স্বচ্ছতা তৈরী হবে। সৎ এবং সততা অনেকটাই নির্ভর করে স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতার উপর। কিন্ত এক শ্রেনীর দূনীর্তিবাজরা ধরা পড়ার ভয়ে এ কাজে কোন আগ্রহ দেখান না।বরং কৌশলে ব্যস্ততার অজুহাতে এ ধারা থেকে দুরে থাকতে চাইছে। অবশ্য দক্ষতার অভাবে কিছু কর্মকর্তা এ কাজ থেকে সরে রয়েছে এমনও থাকতে পারে।
দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কম্পিউটার কার্যক্রমের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে। কিন্ত হাই স্কুল- কলেজ , দাখিল- আলিম-ফাজিল মাদ্রাসা গুলোতে এখনো এ আদেশ কার্যকর হয়নি।
দেশের সর্ব নিম্ম সরকারী প্রশাসনিক স্তর ইউনিয়ন পরিষদ।এখানে ১৭ টি মন্ত্রনালয়ের সরকারী বিভাগ কাজ করে। এখানে একটি তথ্য কেন্দ্র চালু করা আছে। যেখান সাধারন মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সকল সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকার কথা। কিন্ত বিভাগীয় কোন সেবাই সেখান পাওয়ার সূযোগ আজো তৈরী হয়নি।প্রজেক্টারের মাধ্যমে সরকারী সেবা সম্পর্কে অবহিত করার কোন উদ্যোগ নাই। সরকার ঘোষিত বিদেশ চাকরীর নিবন্ধন কাজ, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট, জন্ম মৃত্যু সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। তাও সাধারন জনগনকে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। স্বজন প্রীতির করে এ সব কেন্দ্রে অদক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়ায় লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হচ্ছে না।
যারা দায়িত্বে আছেন,আন্তরিকতার সহিত দেশকে ভালবাসেন, তারা যদি আর একটু তদারকি বাড়ান, পরিশ্রমী হন , তবেই আগামীরা সুফল পাবে। তাদের কথা মনে করবে।#
সাংবাদিক গোলাম মহিউদ্দিন নসু
দৈনিক ভোরের কাগজ
০১৭১৪৮৪০৮৯৪
তারিখঃ ১০.৬.১৫
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫