
সাধারণত রমজানে আমি সারারাত জেগে থাকি| সেহেরি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাই। দিনে ঈদের শ্যুট থাকে।সারারাত জেগে ছবি এডিট করি। সিনেমাটোগ্রাফি বানাই। সেহেরির আগে তাহাজ্জুদ পড়ে সেহেরি শেষ করে পাড়ার সমবয়সী পোলাপানের সাথে আজানের আগে শেষ বারের মতো বিড়ি খাই।
সালটা ২০০৭/২০০৮। সবে গ্রাজুয়েশন শেষ করছি। মহল্লায় একটি মেয়ে থাকতো। ধরে নেই ওর নাম পান্না। তখন বাসার ছাদে উঠতাম। কয়েক বিল্ডিং পরেই পান্নাদের ছাদ। প্রতিদিন রোজ করে ওকে দেখার জন্য ছাদে ওঠতাম। সে হয়তো এনজয় করত। তাই সেও কখনো ছাদে যাওয়া মিস করতোনা। ৪ বছর আমাদের মহল্লায় ছিল। কখনো বলা হয়নি ভালোবাসি তোমায়। সেহেরির সময় বিড়ি খাওয়ার জন্য এ যখন বের হতাম মেয়েটি কলসিতে পানি নেয়ার জন্য বের হত।
একদিন সাহস করে প্রপোজ করলাম তাও চিঠি দিয়ে। চিঠির উত্তর এসেছিল আমার বয় ফ্রেন্ড আছে। দুবাই থাকে। সে আসলে ওদের বিয়ে। এরপর থেকে আর কখনো ছাদে যাইনি। সেহরির সময় বের হইনি। আজ ১৫ বছর পার হয়েছে। চার পাঁচদিন আগে আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠিয়েছে। আমি চিনতে পারিনি। অনেক্ষন চ্যাট করে ফোনে কথা বলার পর চিনলাম।
যার জন্য আমাকে রেসপন্স করেনি ওর সাথে ৫ বছর সংসার করার পর ডিভোর্স। পান্না তখন ক্লাস এইটে পড়ত। ক্রাশ খাওয়া সে এইটে পড়া ছোট মেয়েটি এখন একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ায়। ঢাকায় বড় বোনের সাথে থাকে। ১ম রমজান থেকে ওর সাথে প্রতিদিন কথা হচ্ছে। যে ছেলেটিকে বিয়ে করছে সে ড্রাগ এডিকটেড। ওকে সময় দিতোনা। ৮ দিন ধরে শুধু কষ্ট গুলো শেয়ার করছে।
আমার তাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে। চোখের পানি মুছে চুমা দিয়ে বলতে ইচ্ছা করে কেঁদোনা আমি তো আছি। কিন্তু পারিনা।
আমাদের সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো আমাদের জীবনে ভুল সময়ে ফিরে আসে। এমন সময়ে আসে যে সময়ে ইচ্ছাও সুযোগ থাকা স্বত্বেও আমরা গ্রহণ করতে পারিনা।
কানে হেড ফোন লাগিয়ে ফুল ভলিউমে গান শুনতে শুনতে চোখ থেকে কয়েক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। গাইতে ইচ্ছা করে -
" ফুল নেবে না অশ্রু নেবে বন্ধু? যদি ফুল ফিরিয়ে দাও তবে দিতে পারি তোমায় এই দুচোখে জমে থাকা জল ধারা "
শিরোনাম গুরু জেমসের এই গান থেকে। গানটি শুনুন। ভালো লাগবে। ছবিতে পান্না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১২:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




