এক গ্রামে ওয়াজ হবে। ওয়াজ শুনবার জন্য দূর দুরান্ত থেকে লোক জন আসছে। গ্রামের বেশিরভাগ ছেলে বুড়ো ওয়াজ নিয়ে মহাব্যাস্ত। মহিলাদের মধ্যেও বেশ সাড়া পরে গেছে। তারাও ওয়াজ শুনতে যাবে। বড় নামকরা মৌলবী ওয়াজ করবেন। এমন দিন কি আর আসবে? মৃত্যুর আগে একবারের জন্য হলেও যদি তার ওয়াজ শোনা যায় তা হলেও বেহেশ্তের পথ আনেকটা খোলা পাওয়া যাবে। অতএব এই সুযোগ হাত ছাড়া করা যাবে না।
গ্রামের বৃদ্ধা কলিমন বেওয়া কানে একেবারেই শোনে না। তার সামনে হাত পা নেড়ে কথা বললে সে কথা বুঝে। সেও যাবে ওয়াজ শুনতে। গ্রামের সবাই তাকে জিজ্ঞাস করে--- তুই কিসক যাবু তুই তো কালা কানে শুনবারে পাইস না?
সে বলে ---তোরা সউকগুলা বেহেশ্তেত যাবার পথ খোলাসা করছিস আর মুই পাছত পরি থাকিম। মোর বুঝি বেহেশ্তেত যাওয়া লাগবার নয়!!!!
সবাই হাসে, তাকে আর ঘাটায় না। ঠিক আছে সবাই যখন যাবে ঐ বা বাদ যাবে কেন???
রাতে ওয়াজ হচ্ছে। সবাই খুব মন দিয়ে শুনছে। হঠাৎ একজন খেয়াল করে করিমন বেওয়া ওয়াজ শুনতে শুনতে আকুল হয়ে কাঁদছে। তাকে তার পড়শি জিজ্ঞাস করে ---ও আম্মা তুই তো কানত কিছুই শুনিস না, তে এঙ্কা করি কান্দিবার লাগছিস ক্যান??? ওয়াজত কি কইল, যে তুই কানতে কানতে এক্কেরে বেঁহুশ হয়া গেলু।
কলিমন বেওয়া তখন জবাব দিলো-- আর কইসনারে জামালের মাও-- মুই কি ওয়াজ শুনি কান্দোছোম? মুই কান্দোছোম ওই হুজুরটাক দেখিয়া। ঐ হুজুরটার যে সুন্দর দাড়ি। আহারে কি সুন্দর!!! ঠিক ঐঙ্কা দাড়ি আছিল মোর খাসিটার। যেটাক মুই গত ঈদের চান্দের রাইত থাকি আর খুঁজি পাওম নাই। তুই তো জানিস মুই ওটাক কত ভালবাসছিনু। এক্কেরে ঐ রকমই আছিল দাড়িটা। তুই ক জামালের মা ঠিক ঐঙ্কা আছিল না মোর ছাগলটার দাড়ি কোনা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



