২৪শে মার্চ বিকাল ,একটি ফোন এল সূদুর আমেরিকা থেকে। আমার পরিচিত এক ভদ্রলোক । ভদ্রলোক ছয় বছর হোল আমেরিকাতে গিয়েছেন। ভদ্রলোকের গলা কাঁদ কাঁদ। তার প্রিয় পাপ্পি রোড এক্সিডেন্ট করেছে । তার পাপ্পির জন্য দোয়া করতে বলল। শুনে একটু ধাক্কা খেলাম বাঙ্গালী তো। কুকুরের জন্য দোয়া !!!!!। প্রবাসে ওরা তো বউ বাচ্চা নিয়ে একা থাকে তাই বোধ হয় ওদের পোষা প্রানীর জন্য একটু বেশি ভালবাসা। যাই হোক তাকে সান্তনা দিয়ে ফোন রাখলাম।
ঘন্টা দুই এক পরে আবার ও ঔ ভদ্রলোকের ফোন। এবার তিনি কাঁদছেন। তার ডিয়ার পাপ্পি ললি পাপ্পি ইজ নো মোর। (ইন্না লিল্লাহে ----------------)। আমার শুনে খুব মন খারাপ হল। তিনি বললেন যে তিনি তার সাধ্য মত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কিছুই হোল না। ওকে বাচাঁনো গেল না । তিনি প্রায় পঁচিশ হাজার ডলার খরচ করেছেন। পঁচিশ হাজার ডলার। চমকে উঠলাম। সৈয়দ মুজতোবা আলীর পন্ডিত মশাই গল্পটা মনে পরে গেল।
আমার মন এতো ছোট। তার কষ্টে শরিক না হয়ে কি ভাবছি। ছি, ছি ছি------------------
আমার এক পরিচিত রিক্সা ওয়ালা আছে নাম মশাররফ। তার দুই মায়ে এক ছেলে।ছেলে মেয়েগুলি অদম্য মেধাবী। ।
রাত দশটার দিকে আমি দোতালার বারান্দায় দাঁড়িয়ে। দেখি মশাররফ এসে দাঁড়িয়েছে নীচে। আমি বললাম এতরাতে কি চাও?
ও হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো। বলল ওর ছেলেটা আজ এই একটু আগে মারা গেছে। কি হয়েছিল ???। কাল রাত থেকে খুব জ্বর । ডাক্তারের কাছে নেবার মত পয়সা ছিল না। সে ভেবেছিল জ্বর ভাল হয়ে যাবে। বা আজ একটু পয়সা হলে ডাক্তার দেখাবে। এগারো বছরের একটা ছেলে।
আমার কাছে সে পাঁচশত টাকা চায় কাফোনের কাপড় কিনবে।
আমি খুঁজে পেলাম না কোন বেদোনার ভার বেশী। পাপ্পীর মৃত্যুর নাকি ছেলের মৃত্যুর।
আমি দূর আকাশের তারাদের দিকে তাকিয়ে রইলাম।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



