সীমান্তে বিএসএফ এর হত্যকান্ড শীর্ষক ছাত্র গণমঞ্চ (জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের ছাত্র বিভাগ) এর আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের ২য় তলায় শনিবার বিকাল ৪.৩০ টার সময় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে পাঠচক্রে উপস্থিত সকল সদস্যকে ডাকসু ভবনের গেটে তালা লাগিয়ে ব্যাপক মারধর করে। হামলার নেতৃত্ব দেয় ঢাবি-র জহুরুল হক হলের সভাপতি সুমন।
উল্লেখ্য, গত বৃহঃস্পতিবার ২০ জানুয়ারী ডাকসুর সামনে জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের ছাত্র বিভাগ “ছাত্র গণমঞ্চ” সীমান্তে বিএসএফ-এর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে একটি স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। উক্ত প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয় এবং বিএসএফের ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ড ও সরকারের নির্লিপ্ততার প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। পরবর্তীতে ছাত্র গণমঞ্চ-এর আয়োজনে “সীমান্তে বিএসএফ এর হত্যকান্ড” শীর্ষক একটি পাঠচক্রের আয়োজন করা হয়। পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মাসুদ খান, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক আহমেদ স্যামুয়েল সাঈদ ও ছাত্র গণমঞ্চের কর্মী ও আগ্রহী শিক্ষার্থীবৃন্দ। পাঠচক্র চলাকালীন সময়ে ডাকসু-র ২য় তলায় গোয়েন্দা বিভাগের দু’জন সদস্য গিয়ে পাঠচেক্র ও সংগঠনের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়। তারা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১০/১২ জন কর্মী পাঠচক্রে উপস্থিত সকলকে মারধর শুরু করে। তারা বলতে থাকে, “সরকার বিরোধী কথা-বার্তা বলিস কেন?” এছাড়াও তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা প্রত্যেককে একে একে বের করে মারধর করে। প্রত্যেকের আইডি কার্ড নিয়ে নেয়। ঢাবি-র মাস্টার্সে অধ্যয়নরত এক ছাত্রে অনার্সের সনদপত্র কেড়ে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা এক ছাত্রের প্রবেশপত্র নিয়ে নেয়। এছাড়াও প্রক্টর অফিসে জমা দেওয়ার কথা বলে সংগঠনের কাগজপত্র আটক করে। তারা পাঠচক্রের কর্মীদের দুই ঘন্টার মত অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশ ডেকে আনে তাদেরকে গ্রেপ্তার করানোর জন্য। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংগঠন, ডাকসু সংগ্রহশালার গোপাল চন্দ্র, মধুর ক্যান্টিনের অরুন দে প্রমুখের হস্তক্ষেপে তাদেরকে মুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, হামলা ও তার পরবর্তী সময়ে বন্দীদের উদ্ধারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এই হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের গণতন্ত্রমনা সংগঠনসমূহ একটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে সমাপ্ত হয়। এসময় তারা উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র পেশ করে। উপাচার্য এই ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন এবং বর্তমান সরকারকে পূর্বের সরকারের চেয়ে অধিকতর গণতান্ত্রিক বলে মন্তব্য করেন।
পাঠচক্রে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রোববার (আজ) সকাল ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী সোমবার সকাল ১১ টার সময় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-সংস্কৃতিকর্মীদের ছাত্রলীগের এই ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত সমাবেশে সকল গণতন্ত্রমনা, দেশপ্রেমিক, প্রগতিশীল ব্যক্তিদের উপস্থিতি থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




