ঘুরাফেরা A to Z এর সিলেটের সদস্যরা প্রায় প্রতি শুক্রবারই কোথাও না কোথাও ঘুরঘুরান্তি দেয়। গত শুক্রবারও ছিলো খাদিম জাতীয় উদ্যানে হাইকিং। দুপুর ২ টা। তখনও লাঞ্চ শেষ হয়নি। বিনয় ভদ্রের ফোন। " কই?" বাসভবনে। "যাবানা।" যাব। খেয়েই আসছি। "যাত্রা শুরু টিলাগড় পয়েন্ট থেকে। ২;৩০ টার ভেতরে চলে এসো।'' আমি তখনও সজল ছত্রী আর আলফ্রেড আমেনের সাথে আড্ডায় মশগুল। এরই মধ্যে কামরুজ্জামান আজাদের ফোন। আজাদকে বাসায় বসিয়ে চারটা পেঠে চালান দিয়েই দে দৌড়। ১৫ মিনিটে টিলাগড় পয়েন্টে গিয়ে দেখি রাজিব রাসেল আর রয়েল পাল ছাড়া আর কেউ আসেনি। স্লোশাটারে গতির ছবি তোলার প্রেক্টিস শুরু করে দিলাম আমি আর রয়েল দা। ততক্ষনে ওয়াহিদ, প্রিনন, সৌমেন, বিষন্ন বেদুইন সহ প্রায় ১২-১৪ জনের বিরাট দল হাজির। হাজির বিনয় ভদ্র আর জামান তাপাদারও।
টিলাগড় পয়েন্ট থেকে সি,এন,জি করে শাহপরান উপশহর আ/এ-র রোডের মুখে। এই পিচঢালা পথ ধরেই প্রায় ৭-৮ কি.মি. পথ পাড়ি দিলেই খাদিম জাতীয় উদ্যান। এখানে সি, এন, জি রিক্সায়ও যাওয়া যায়। আমরা কয়েকজন- সৈয়দ রাসেল, জামান তাপাদার, কামরুজ্জামান আজাদ, সৌমেন, ওয়াহিদ সহ প্রায় ১০-১২ জনের দল হেঁটে চললাম। প্রায় দুই কি.মি. হাটার পর জামান বললেন আর ১০ মিনিট হাঁটলে হবে। আমরা ১০ গুণন ২০ মিনিট হাটতে হলো। অবশ্য মন্দ লাগেনি। চারপাশে চা বাগানের অবারিত সবুজের বন্যা। চা কারখানা, চা শ্রমিকের শিল্পিত বাসস্থান দেখতে দেখতে গহীন অরণ্যের নির্জনাতার দিকে ঢুকে যাচ্ছিলাম আমরা। আমরা হই-হোল্লোড় বন্ধ করে দেই, কথা বলা বন্ধ করে দেই নির্জনতাকে উপলব্ধি করবো বলে। চা বাগানের মায়া কাটতে না কাটতেই বরজান কেন্দ্র।
আঁকাবাকা মাটির পথ পাড়ি দিতে দিতে দেখা মিলবে চম্পাফুল, ঢাকিজল, চিকরাশি, গর্জন, চাপালিশ, অর্জুন সহ হরেক রকমের গাছ। আমার মিশনটা ব্যর্থ বলার কারন আছে। বন দেখতে হলে সকালেই বনে ঢোকা উচিত। আর আমরা প্রায় শেষ বিকেলে ঢোকেছি বনে। লাইট লো শাটার স্লো কি আর তুলি ছবি। সাব্জেক্ট বলতে এই হাইকিলাররা ছাড়া আর কিছুই পাইনি।
যা যা দেখতে পারবেনঃ
চন্দন, আকাশ মনি, চম্পাফুল, ঢাকিজল, চিকরাশি, গর্জন, চাপালিশ, অর্জুন, মুখপুড়া বানর,প্রাক্রিতক ছড়া, বোনু অর্কিড, সেগুন বাগান, পশুপাখি, সমৃদ্ধ গাছপালা, ক্রান্তীয় বন, ঘন বাঁশবাগান, কিট পতঙ্গ, বনমোরগ, মথুরা, শ্যামা, কাঁকড়া, ময়না ইত্যাদি।
খাদিম রেইন ফরেস্ট সম্পর্কেঃ
এ বনের আয়তন ১৬৭৭ একর, একটি ট্রোর্পিকেল রেইন ফরেস্ট বা মিশ্রসবুজ বন, এবনে তাদের নিজ্বস্ব গাইড রয়েছে, ২০০৬ সালে এই বনকে সরকারি ভাবে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয়।
বন রক্ষার দায়িত্ব আমাদের তাই ময়লা ফেলবেন না, প্লাস্টিক বা পলিতিনের খালি প্যাকেটগুলু সঙ্গে নিয়ে আসুন। বনে ফেলবেন না। মাইক বাজানো থেকে বিরত থাকুন। বনে প্রবেশের আগে অবশ্যই কর্তিপক্ষের সাথে কথা বলে নেবেন। বাইনোকোলার, ক্যামেরা, সানস্কিন লোশন, ক্যাপ, খাবার পানি সঙ্গে রাখুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




