জোস্নায় ভেসে যাচ্ছে আমার শহর। জোস্নার স্নিগ্ধ আভা আঁচড়ে পড়ছে গাছের মাথায়, বিল্ডিং এর টাওয়ারে, বাড়ির ছাদে এবং ছাদের উপর হেঁটে বেড়ানো আমার মত নি:সঙ্গ মানুষের উপর। ভেবে অবাক হই - দেশের এই চরম দু:সময়েও এত সুন্দর জোসনা কি করে নদীর ঢেউয়ের সাথে খেলা করে! এই ফকফকে জোস্নায় আমার ভাইয়ের বুক ফেড়ে ইট বেধে নদীতে ফেলে দেয় এদেশের সোনার ছেলেরা। জোস্না রাতের কি আশ্চর্য্য ব্যবহার!
চারিদিকে এখন আবার সব 'সরকারি' হবার হিড়িক পড়েছে। চাকুরী হচ্ছে? সেতো সরকারি লোকের। টেন্ডার পাচ্ছে? সেতো সরকারি লোক। খুন করছে? ওতো সরকারি লোক। গুম করেছে? ওতো সরকারি লোক। আদালতে পার পেয়ে গেল? দু:শ্চিন্তা হয়! ওযে সরকারি লোক। সবকিছুই তো সরকারের। জণগন! সরকারের। প্রশাসন! সরকারের। নির্বাচন কমিশন! সরকারের্। আইন বিভাগ! সরকারের্। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা! সরকারের্। সংবিধান! সরকারের্। সর্বপরি দেশটাই তো সরকারের। তাই আমাদের এত চিন্তা করবার কোন কারণ নেই। আমাদের জন্য চিন্তা তো সরকারের্। তবু আমরা চিন্তিত হই। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার পরিবর্তন হলে আমাদের কারও কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কারও ঠোটের কোণে হাসির ঝিলিক দেখা যায়। এ কেবল এদেশেই সম্ভব। সাপ এবং ব্যাঙ্গের গলায় উভয় চুমু যে কেবল আমরাই খেতে পারি তা নয়! চা ব্যাবসায়ীরাও তাদের দোকানে হালখাতার নিমন্ত্রণ দেবেন কোন আশায় সেটা শুভ নাকি অশুভ ইঙ্গিত তা বোঝা দায়। ছোটবেলায় মা মারলে পাশের বাড়ীর চাচী এলে আমরা আরও জোরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতাম। আজ আমাদের কারও কারও অবস্থা হয়েছে এরকম। কারও আবার পিঠে ফোঁড়া আর পাছায় ঘা। আসলে সময়টাই তো যাচ্ছে খারাপ। সব সময়ই কি আর বসন্ত হয়! তবু আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় কবিরা বৈশাখ এলে দিশেহারা হয়ে পড়েন!! বুড়ো বয়সে আত্মহত্যার হুমকি পর্যন্ত দেন। সাধারন মানুষ তাই বিপাকে পড়ে যায়। কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা। এসবই যে সরকারি ব্যাপার! আমরা প্রতিবেশী সরকারের জয় পরাজয় নিয়ে মাথা ঘামাই, কিন্তু নিজের দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও কিছুই করবার থাকেনা। শুকিয়ে যাওয়া তিস্তার চর রাতারাতি পানিতে ভেসে যায়। সেখানেও নামে নির্লজ্জ জোস্নার ঢল। সেই জোস্নার পানিতে ভেসে যায় RAB নামক কালো দলটি। যারা জোস্নার আলোয় নদীতে মানুষ ভাসায়। প্রয়োজনীয় বস্তু সর্বদাই সরকারের্। নৌকা সরকারের্। RAB সরকারের্। এমনকি জোস্নাও আজ সরকারের অধিকারে চলে গেছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



