একদিন ছেলেটা দাদুকে বলছে, "দাদু, আমি তোমার মতো কোরান পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু কিছুই বুঝিনা। যেটুকু বুঝি সেটাও একটু পরে ভুলে যাই। কোরান পড়ে তাহলে কি লাভ, দাদু?" চুলায় কয়লা দিচ্ছিলেন বৃদ্ধ। কয়লার খালি ঝুড়িটা নাতিকে দিয়ে বললেন, "এটা নিয়ে যাও। নদী থেকে এক ঝুড়ি পানি নিয়ে আসো।"
পানি আনতে চলে গেলে ছেলেটি। কিন্তু পানি নিয়ে বাড়ি পেঁৗছানোর আগেই পড়ে গেলো সবটুকু পানি। দাদু হেসে বললেন, "আরো জোড়ে দৌঁড়াতে হবে। আবার যাও।" ছেলেটা আগের চেয়ে জোড়ে দেঁৗড়ালো কিন্তু এবারও সুবিধা করতে পারলোনা। হাপাতে হাপাতে বললো, "ঝুড়িতে পানি আনা অসম্ভব।" একটা বালতি আনতে যাচ্ছিল সে। দাদু বললেন "আমিতো বালতির পানি চাইনি, আমার দরকার ঝুড়ি ভরা জল। তুমি ঠিক মতো চেষ্টা করছোনা মনে হয়।" আবার রওনা হলো নাতি।
ছেলেটা কিন্তু জেনে গেছে কোনভাবেই ঝুড়িতে পানি নেয়া সম্ভব না। সে দাদুকে দেখাতে চাচ্ছিল, প্রাণপণ চেষ্টা করলেও লাভ নেই। বাড়ি পর্যন্ত আসার আগেই পানি সব পড়ে যায়। আবারও নদীতে ঝুড়ি ডুবিয়ে পানি ভর্তি করলো ছেলেটি। এরপর জোরসে দৌড়। দাদুর কাছে পেঁৗছতে পেঁৗছতেই যথারীতি ঝুড়ি ফাঁকা।
হাপাতে হাপাতে ছেলেটা বললো, "দেখছো দাদু, কোন লাভ নেই।"
"তোমার তাই মনে হচ্ছে?" দাদু বললেন। "ঝুড়িটা দেখো।"
ঝুড়ির দিকে তাকিয়ে প্রথমবারের মতো ছেলেটা টের পেলো ঝুড়িটা অন্যরকম লাগছে। কয়লার সব ময়লা, কালো ধুয়ে মুছে ঝুড়িটা ভেতরে বাহিরে ঝকঝক করছে।
"তুমি যখন কোরান পড়ো এটাই ঘটে।" বললেন দাদু। "হয়তো সবকিছু বুঝতে পারছোনা বা মনেও থাকছেনা। কিন্তু একবার যখন পড়া শুরু করেছো, ভেতর আর বাহিরটা দারুণ বদলে যাচ্ছে তোমার।"
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



