somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চীনের সামরিক উপস্থিতি ঠেকানোই লক্ষ্য : উদ্বিগ্ন ভারত : চট্টগ্রামে ঘাঁটি গাড়ছে আমেরিকান সপ্তম নৌ বহর!

০৩ রা জুন, ২০১২ সকাল ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উদীয়মান সুপার পাওয়ার চীন দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতি ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছে। আর এর প্রভাব ঠেকাতে বিশ্বের প্রধানতম পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে সপ্তম নৌ-বহর মোতায়েন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সপ্তম নৌবহরকে তারা বঙ্গোপসাগরে রাখার বিষয়টি ইতোমধ্যেই চুড়ান্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনা গ্রহণ করায় ভারতের সাথে তাদের সম্পর্ক এখন অনেকটাই শীতল হয়ে পড়েছে। ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যম বলেছে, চট্টগ্রামেই ঘাঁটি গাড়ছে মার্কিন সপ্তম নৌবহর।
আমেরিকার ৭ম নৌবহর চট্টগ্রামে ঘাঁটি গাড়ছে বলে দাবি করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া (অনলাইন)। গত বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি এক্সক্লুসিভ ভিডিও চিত্রে এ দাবি করা হয়। বাংলাদেশে আমেরিকান রণতরীর ঘাঁটি গাড়ার পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে চীনকে। ভিডিও ফুটেজে বলা হয়, গত মাসে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বাংলাদেশ সফরের সময় উভয় পক্ষ এ বিষয়ে কৌশলগত বিভিন্ন কথাবার্তা সেরে রেখেছিলো। কারণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নৌঘাঁটি গঠন সংক্রান্ত খবরে পেন্টাগণের ওই অঞ্চলে কর্তৃত্ব হারানোর উদ্বেগ বাড়ছে। তাই তারা চীনকে রুখতে কাছাকাছি অঞ্চলে নিজেদের সামরিক শক্তি মজুদ রাখতে চায়। এছাড়া আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহার শুরু হলে তারা দক্ষিণ এশিয়ায় কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চাইবে। তাই এ শক্তি মজুদের জন্য বঙ্গোপসাগরই উপযুক্ত স্থান। রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদিও হিলারির সফরের সময় ৭ম নৌ বহর বা সামরিক কোনো বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করেছে আমেরিকান প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে তারা পরিষ্কার করে কিছু জানায়ওনি। এমনকি বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়টিতে মুখ বন্ধ রেখেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়ে একটি প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নটি হলো- যদি আমেরিকা চট্টগ্রামে তাদের নৌ ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি চায়, আপনি কি তাতে মত দেবেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না এমন কোনো অনুরোধ এসেছে কি-না।’ এছাড়া এ বিষয়ে একটি চীনা মিলিটারি ওয়েবসাইট জানায়, টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টটিতে বাংলাদেশে হিলারির সফরকে যতোটা না বন্ধুত্বের তার চেয়ে বেশি কৌশলগত বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ চট্টগ্রামে আমেরিকান নৌবহর ঘাঁটি গাড়লে ভারতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তাদের ধারণা। কারণ তখন ভারতের সকল নিরাপত্তা স্থাপনা আমেরিকার নজরদারির আওতায় থাকবে। তাছাড়া নতুন এ ঘটনায় ভারতও বিস্মিত হয়েছে, কারণ চট্টগ্রামের প্রতি ভারতেরও কৌশলগত আগ্রহ রয়েছে বলে ওয়েবসাইটটি দাবি করে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট সত্য হলে তা হবে গত ৪১ বছরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে আমেরিকার নৌবহরের প্রথম প্রবেশ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সাহায্য করার জন্য আমেরিকান ৭ম নৌবহর বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলো। তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের পাল্টা হুমকির মুখে তা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। আন্তর্জাতিক সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ চীন সাগরের নৌ-ঘাঁটিতে চীন তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। চীনের পাল্টা কৌশল হিসেবে এশিয়ায় সার্বক্ষণিক সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কৌশলগত কারণে তারা বঙ্গোপসাগরে তাদের সপ্তম নৌবহর মোতায়েনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ কারণে জাপান থেকে দিয়াগো গার্সিয়া ঘাঁটি পর্যন্ত ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় তারা সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে চাইছে। যার মাধ্যমে চীনের ওপর নজর রাখা যাবে আবার আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর এশিয়ায় কৌশলগত স্বার্থও বজায় থাকবে। সম্প্রতি পেন্টাগনের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দক্ষিণ চীন সাগরের নৌ-ঘাঁটিতে চীনের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের শঙ্কার কথা প্রকাশ পেয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে পুরো এশিয়ায় চীনের নৌ আধিপত্য বিস্তার হতে পারে। এ অঞ্চলে মার্কিন সপ্তম নৌবহর রাখলে ভারতের নিরাপত্তা স্থাপনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির মধ্যে চলে আসবে। যার ফলে ভারতের কৌশলগত স্বার্থ হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যেই উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে ভারত।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×