somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরব সংস্কৃত: বহুবিবাহ ও র্ববরতা; প্রাক-ইসলাম, মুহম্মদ থেকে র্বতমান সমাজ

২৩ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি মানুষকে যে জিনিসগুলি সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করে তাদের মধ্যে ধর্ম এবং সংস্কৃতি সবচেয়ে জোরালো। ধর্ম ও সংস্কৃতি কখনো কখনো একে অপরের হাত ধরে চলে। আবার কখনো কখনো এই দুই শক্তির মাঝে দেখা দেয় প্রবল বিরোধ। যেমন বাঙালি সংস্কৃতি ধর্মের হাত ধরে চলতে পারেনি। ইসলাম ধর্মে একজন পুরুষ একসাথে চারজন স্ত্রী রাখতে পারে। চারজন থেকে মাঝে মাঝে ২/১ জনকে তালাক দিয়ে ইচ্ছেমত অনেক বিয়ে করা যায়।

অন্য দিকে হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী একজন পুরুষ অসংখ্য বিয়ে করতে পারে। তাদের কোন সংখ্যা নির্দষ্ট করে দেওয়া নেই। কিন্তু কোন স্ত্রী স্বামী পরিত্যক্তা বা বিধাব হলে পুনরায় বিয়ে করতে পারে না। হিন্দুদের মাঝে একসময় সতীদাহ নামক এক ভয়ংকর বর্বও পৈশাচিক প্রথা প্রচলিত ছিল।

কিন্তু বাঙালি সমাজ ধর্মের হাত ধরে চলেনি। বাঙালিরা তাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। বেরিয়ে এসছে ধর্মান্ধতা থেকে। বাঙালি সমাজে কোন পুরুষ সে মুসলিম হোক আর হিন্দুই হোক স্ত্রী থাকা অবস্থায় আরেকটি বিয়ে করলে পরিবারে এবং সমাজে নিন্দিত হন। অবশ্য কিছু নেতিবাচক ধনী লোক টাকার জোরে একাধিক বিয়ে করেও টাকার জোরেই সমাজ নিয়ন্ত্রণ করে। একজন বাঙালি সন্তানরা চিন্তাই করতে পারে না তাদের মা বর্তমান থাকতে তাদের বাবা আর একটি বিয়ে করবে। তারা কল্পনা করতে পারে না তাদের মায়ের সাথে বাবা ছাড়া অন্য কোন পুরুষের সাথে সম্পর্ক হবে। তাই আমাদের সমাজে বহুবিবাহ, তালাক, হিল্লাহ বিয়ে ইত্যাদি খুব কম। অবশ্য সংস্কৃতি যখন যেখানে পরাজিত হচ্ছে তখন সেখানে হিল্লা বিয়ের মত বর্বরতা ঘটানো হচ্ছে। আর ঘটাচ্ছে কিছু পশু যারা নিজেকে বাঙালি বলে স্বীকার করে না, যদিও তারা বাংলায় কথা বলে, বাঙালির খাবার খায়।

আরব সমাজ প্রাচীনকাল থেকে বর্বর, তারা এখনও বর্বর। প্রাক-ইসলামী পুরুষ আরবরা যতগুলি খুশি বিয়ে করতে পারত। তারা যখন তখন তালাকও দিতে পারত। মুহম্মদ এই নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আনলেন। তিনি নিজের জন্য প্রাক-ইসলামী প্রথা বহাল রাখলেন; অর্থাৎ তিনি যতগুলি খুশী ততগুলি বিয়ে করবেন। করেছেনও তাই। তার স্ত্রীর সংখ্যা ছিল ১২ জন (মতান্তওে ১৩জন) এবং দাসী ও যুদ্ধবন্দীনি ছিল অসংখ্য। তিনি অন্যদেও জন্য নিয়ম করে দিলেন একসাথে চারজনের বেশি স্ত্রী রাখা যাবে না। অর্তাৎ আরবের বহুবিবাহের সংস্কৃতি এবং ইসলাম ধর্মে বহাল থাকল। শুধু তাই নয় মতাধর ব্যক্তিরা মুহম্মদের বাতলে দেওয়া নিয়মকে অনুসরণ না করে তার কৃতকর্মকে অনুসরণ করে। যেমন বর্তমান সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আব্দুল আজিজ। তার স্ত্রীর সংখ্যা ২২। Click This Link বর্তমান বাদশাহ আবদুল্লাহর রয়েছে ৩০ জন স্ত্রী। Click This Link


নির্দয় আরবীয় বর্বরতা:

বাদশাহ আব্দুল আজিজের পুত্র মুহম্মদের কন্যা রাজকুমারী মিশা বাবার কাছে বায়না ধরেন লেবাননে পড়তে যাবেন। বাবা রাজি হয়ে তাকে লেবাননে পাঠিয়ে দেন। সেখানে তিনি সৌদি রাষ্ট্রদূতের ভাইপোর সাথে তার প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্যেদি আরবে প্রেম করা, এমনকি আলাদভাবে কোন ছেলে-মেয়ে দেখা করলে তা ব্যাভিচারের আওতায় পড়ে। রাজকুমারী মিশা এবং তার প্রেমিক সৌদিতে ফিরে আলাদা করে করেছে এই বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাভিচারের অভিযোগ আনা হল। তারা সৌদি থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ধরা পড়ল। কিন্তু ব্যাভিচার এবং ধর্ষণের অভিযোগ শরিয়া আইন অনুযায়ী প্রমাণ করা বেশ জটিল। বাংলায় লেখা সম্ভব নয় তাই ইংরেজিতে লিখলাম Under Sharia law, a person can only be convicted of adultery by the testimony of four adult male witnesses to the actual sexual penetration. অথবা কেউ যদি কোর্টে তিনবার বলে, ‘‘আমি ব্যাভিচার করেছি”। মিশাকে বলা হল তিনি যেন ব্যাভিচারের অভিযোগ স্বীকার না করেন। তবে তাকে শর্ত দেওয়া হল তিনি আর কখনো তার প্রেমিকের সাথে দেখা করতে পারবেন না। মিশা শর্তে রাজি হলেন না। তিনি আদালতে তিন বার বললেন, ‘‘আমি ব্যাভিচার করেছি”। তাকে গুলি করে হত্যা করা হল এবং তার প্রেমিককে শিরচ্ছেদ করা হল। আমাদের দেশের ধর্মান্ধ পশুগুলি কখনো আমাদের দেশে এই বর্বরত আমদানি করতে পাবে না। Click This Link

ইসলামে বৈধ হওয়া সত্ত্বেও বাঙালি সমাজে চাচাতো,মামাতো, খালাতো ভাইবোনের মধ্যে বিবাহকে উৎসাহিত করা হয়না। তাই আমাদের সমাজে এ ধরণের বিয়ে খুব কম হয়। বাঙালি সমাজে কাজিনকে নিজের ভাই-বোন হিসেবে দেখা হয়। আরবের প্রাক-ইসলামী যুগে দত্তক পুত্র-কন্যাকে নিজের পুত্র-কন্যা হিসেবে মনে করা হত। এটাই তো মানবতা। জন্ম না দিয়েও কারো বাবা-মা হওয়া। কিন্তু বহুগামী মুহম্মদের লালসার স্বীকার বর্বও আরবের অনেক বর্বও প্রথার মাঝে একটি মানবতাবাদী প্রথা। তিনি পালিত পুত্রের স্ত্রীকে পুত্রবধূর মর্যাদা না দিয়ে তাকে তার হেরেমখানায় নিয়ে এলেন। চারিদিকে সমালোচনা উঠলে বললেন স্বয়ং আল্লাহ তাদের বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছে।ধর্ম ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের কত বড় হাতিয়ার হতে পারে এটাই বোধ হয় তার উৎকৃষ্টতম (নাকি নির্কষ্টতম?) উদাহরণ। বাঙালিরা দত্তক সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে মনে করে।

আমার সাবেক অফিসের বন্ধুপ্রতিম এক পুরুষ কলিগের কোন সন্তান নেই। সমস্যা তার স্ত্রীর শরীরে। অনেক চিকিৎসার পরও তাদের কোন সন্তান হল না। কিন্তু তারা পরষ্পরকে অনেক ভালবাসে। তার একটি সন্তান দরকার হলেও আমার সেই কলিগ দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। তিনি দত্তক নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। হঠাৎ এক মওলানা তাকে ফতোয়া দিল সন্তান দত্তক নেওয়া হারাম, কেননা স্বয়ং রাসূল তার পালিত পুত্রের স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী করে নিয়েছেন। অর্থাৎ পালিত পালিত পুত্রের স্ত্রীকে বিয়ে করা যাবে এবং পালিত কন্যাকেও বিয়ে করা যাবে। বর্বরতা কাকে বলে! এরা নিজেদেরকে পশুই মনে করে। যাহোক আমরা বোঝানোর পর তিনি একটি কন্যা সন্তান দত্তক নিয়েছেন। কন্যা সন্তানটি তাকে আব্বা এবং তার স্ত্রীকে আম্মা বলে ডাকে।

সুতরাং আরবীয় বর্বরতা এবং বাঙালি সংস্কৃতির লড়াই চলতে থাকবে এবং এ লড়াইয়ে বাঙালি সংস্কৃতিই জয়ী হবে।


২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×