ব্লগে মাঝে মাঝেই দেখি পোস্টের শিরোনামে লেখা, '১৮+'। এত সংখ্যা থাকতে ১৮ কেন? নিশ্চয়ই ১৮ বছরের উপরের মানুষেরা প্রাপ্ত বয়স্ক এবং যথেষ্ট পরিমান বুদ্ধিমান। এজন্য আমিও এতদিন পর একটা ১৮+ পোস্ট লিখতে বসলাম।
সাধারনত বাংলাদেশে ১৮ বছরের কোন শিক্ষার্থী কমপক্ষে এইচ এস সি-র গন্ডি পার করে ফেলে। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করে এইচ এস সি পর্যন্ত বারটি (১২) বছর আমাদেরকে পড়াশোনা করতে হয় উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার জন্য প্রস্তুত হতে। এই বার বছর আমরা বাংলা মাধ্যমে পড়ি বা ইংলিশ মাধ্যমেই পড়ি, স্নাতক পর্যায়ে আমাদেরকে ইংরেজি মাধ্যমেই পড়তে হয়। আর কর্মক্ষেত্রে যার ইংরেজির দক্ষতা ভাল তাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
যেহেতু অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে থাকে তাই তাদের ব্যাপারেই কথাটা বলছি। বাংলা মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজিতে ১০০ নম্বর আর ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে এইচ এস সি পর্যন্ত ২০০ নম্বরের গৎবাধা পড়াশোনাই হল আমাদের ইংরেজির দৌড়।
এই গৎবাধা পড়াশোনা বলতে আমরা সবাই জানি আমাদেরকে কিছু এপ্লাইড গ্রামার, কমপ্রিহেনশন, প্যারাগ্রাফ, লেটার, এপ্লিকেশন, কমপজিশন ইত্যাদি টপিকস-মুখস্থ (গ্রামার ছাড়া) করে তার উপর লিখিত পরীক্ষা দিয়ে নম্বর পেতে হয়। ব্যাপারটা এমন হয়ে গেছে যে, যে যত বেশি নম্বর পাবে, সে ইংরেজিতে তত ভাল!! কিন্তু আমার কথা হল এর মাধ্যমে আমরা আসলে ইংরেজি কতটুকু শিখতে পারছি? আমরা বাংলাদেশী হয়েও ইংরেজি পড়ছি, এর উদ্দেশ্যটা কি? আমি বলব, অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষ হওয়ার জন্য। আর আমরা সবাই জানি ভাষার দুইটি রুপ রয়েছে, একটি হল কথ্যরুপ এবং অপরটি লেখ্যরুপ। ইংরেজিতে অনেক ভাল নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীও ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না। তাহলে আমাদের এই বার বছর ইংরেজি পড়ার সার্থকতা কোথায়? আমরা কষ্ট করে কেবল ভাষার একটি রুপ শেখার চেষ্টা করছি। অপরটি অর্থাৎ কথ্যরুপটি আয়ত্ত করার জন্য আমাদের কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। যার কারনে অনেক শিক্ষার্থীকে আলাদা ইংলিশ স্পোকেন কোর্স বা অন্যান্য কোর্স করে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করতে দেখা যায়।
দেখূন, তাহলে কোন শিক্ষার্থী যদি আলাদা কোর্স করে ইংরেজিতে কথা বলা আয়ত্ত করতে পারে, তাহলে আমাদের বার বছরের ইংরেজি সাধনার কারিকুলামে কেন কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না যার মাধ্যমে আমরা একই সাথে ইংরেজির দুইটি দিকেই সমান দক্ষ হয়ে উঠতে পারি। অর্থাৎ ইংরেজিতে কথাও বলতে পারি এবং লেখালেখিও করতে পারি।
হয়তো এই কারিকুলামটি অনেক আগের আর এখনকার চালকের আসনে বসা লোকজনও সেই কারিকুলামে পড়াশোনা করে এসেছেন তাই তারা বর্তমানের চাহিদা বুঝছেন না। কিন্তু আমরা যদি কোন গঠনমূলক কোন আলোচনার মাধ্যমে এই ব্লগ থেকেই তাদের কাছে কোন নতুন পদ্ধতি পৌছে দিতে পারি যার মাধ্যমে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বারটি বছর ইংরেজি পড়েও আফসোস করে না বলে, "কিছুই শিখলাম না!!!" তাহলে সেটা কি আমাদের সার্থকতা নয়?
আমার মাথায় এরকম একটি আইডিয়া এসেছে। আমরা যদি একদম ক্লাস ওয়ান থেকেই ইংরেজি বিষয়টাকে দুইভাগে ভাগ করে দিয়ে পড়াই তাহলে কেমন হয়? মানে, আমি বলতে চাচ্ছি ৫০ নম্বর থাকবে খাতায় লিখে পরীক্ষা দেয়ার জন্য আর ৫০ নম্বর থাকবে ইংরেজীতে কথা বলে অর্থাৎ টিচারের সাথে ইংরেজিতে কথা বলে পরীক্ষা দেয়ার জন্য। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী একই সাথে বলা ও লেখা দুটিতেই সমান দক্ষ হয়ে উঠবে আশা করা যায়। এর উপর ভিত্তি করে কারিকুলাম প্রনয়ন করে বার বছর কোন শিক্ষার্থীকে ইংরেজি অধ্যয়ন করতে দিলে আশা করা যায় সে একেবারে বিফলে যাবে না। আমি অবশ্যই আশা করি, এই আইডিয়া থেকেও অনেক ভাল আইডিয়া আপনারা দিতে পারবেন কারন আপনারা ১৮+। আর এই ব্লগে অনেকেই আছেন যারা হয়ত এই পোস্টে ও কমেন্টস-এ আলোচিত গুরুত্বপূর্ন কথাগুলো হয়ত এমন কাউকে জানাতে পারবেন, যে কিনা আমাদের এই গতানুগতিক পাঠ্যসূচিকে পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে বা ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই নতুন প্রজন্মের কথা ভেবে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহন ও মতামত আশা করছি।
বি: দ্র: গতানুগতিক ধারার ১৮+ পোস্ট দিতে পারলাম না বলে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমার পোস্টের শিরোনামের জন্য কেউ দুঃখ পেলে আমিও দুঃখিত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




