somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বগা ভাইয়ের প্রেম নিবেদন ঃ পার্ট ২ ( শেষ পর্ব ) :P :P :P

০৩ রা মে, ২০১১ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বগা ভাইয়ের প্রেম নিবেদন ;) ;) ( পার্ট ১ )
আম গাছের ছায়ার নিচে বসে মোবাইলে ফেসবুক গুতাচ্ছিলাম । মেজাজ ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে । 'ধুর এই বগা ভাই আসবে কখন ? কি এক ছেমড়িরে দেইখা কেউ এতো পাগলা হয় নাকি ? ' মনে মনে বগা ভাইয়ের চৌদ্দ গুস্টি কে গালাইলাম ।
হঠাত ডান দিক থেকে ফাটা বাশের মত গলায় বগা ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পেলাম , ' হাসিব , দৌড়া । ' আররে আজিব তোহ আমি দৌড়াবো ক্যান ? আমার কি দোষ ? এই সময় রাস্তার ওই মাথায় মোল্লাপাড়ার কাদের কে দেখতে পেলাম । দেখেই আমার জান শুকিয়ে গেল । যতবার এই কাদের কে দেখি ততবার আমার চোখের সামনে বাংলার ছুপার হিরু থুক্কু ভিলেন ডিপজল এর চেহারা ঘুরাঘুরি করে ।তো সেই কাদের একটা গাছের ডাল নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসছে । এরপর কি হল ঠিক মনে নেই । শুধু মনে আছে যে আমি দৌড়াচ্ছি ।
প্রায় ১৫ মিনিট এই গলি ওই গলি , এর বাড়ির ছাদ ওর বাড়ির বারান্দা , বেডরুম ( ছরি মিশঠেক ;) কারো বেডরুম এ যাই নাই ) টানা দৌড়ানোর পর আমারা থামলাম । হাপাতে হাপাতে রাগত চেহারায় বগা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম , ' মিয়া তুমি গেছিলা মাইয়া পটাইবার । এই মোইষ রে পটাইলা ক্যাম্নে ?? '
' আর কইস না । গেলাম রাহার বাড়ির সামনে ... '
' মানে ওই মাইয়ার নাম রাহা '
'কাহিনীর মধ্যে ডিশটাব খাটাইলে থাবড়া দিমু । '
' অহ ছরি । আর হইবো না । '
' হুম যেইডা কইতেছিলাম , রাহার বাড়ির সামনে গেলাম । সেখানে দেখি আশে পাশের পাড়ার বেবাক পুলাপাইন দাঁড়ায়ে আছে । আমি ভাবলাম যে হয়ত কোন স্যার এর বাড়ি আশে পাশে তাই হয়ত এত পুলাপাইন । তারপর দেহি না , কাহিনী তে ঝামেলা আছে । সবাই হাতে কার্ড না হইলে ফুল নিয়া খারায় আছে । একডা কার্ড এর উপর নাম দেখালাম রাহা । দিয়া আমি তো নাম জাইনা গেলাম ।এই সময় রাহা বাড়ি থেকে বাইর হইলো । আমি ভাবলাম পুলাপাইন রে দেহাই যে আসল খেলোয়ার মাঠে নামসে । আমি রাহার দিকে আগায় গেলাম । হঠাত দেহি কেডা জানি আমার শার্ট এর কলার টাইনা ধরসে । পিছে ঘুইরা তাকাইতেই , " দুম " । দেহি কাদের আমার দিকে দাত কেলায়া হাসতেছে । '
আমি মিচকা একটা হাসি দিয়ে বললাম , ' তাইতো কই , তোমার নাকডা দেইখা মনে হইতেসে কেউ একডা ব্যাঙ চিপকায় দিসে । ' সাথে সাথে বগা ভাই আমার পেটে একটা মোক্ষম ঘুসি মারলেন ।
' রাহার ব্যাপারে হেল্প চাওয়ার পর থেকেই দেখতেসি তোমার পাখা বাড়সে । হিসাব কইরা কথা কইবা । '
আমি কোঁ কোঁ শব্দ করে তাকে সম্মতি দিলাম ।

------------------------ পরদিন -------------------------
'এখন আমাদের কাজ হইবো কিভাবে রাহা আপুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় । ' আইন্সটাইন মার্কা ভাব নিয়ে আমি বললাম বগা ভাইকে ।
' হুম '
' কিন্তু সমস্যা হইলো কাদের । '
' হুম '
' আমাদের একটা প্ল্যান লাগবে '
' হুম '
' আর একবার হুম হুম বললে আমি নাই । '
' হুম । কি ?? !! আররে নাহ । আমি তো প্ল্যান বানাইতেছিলাম । '
' কিছু প্ল্যান পাইলা ?? '
' হুম ।
' কাদেররে ফাসাইতে হইবো । আর তাও আবার রাহার কাছে । '
' মাগার ক্যামনে ? '
' শুনছি যে রাহার একডা বড় ভাই আছে । আমরা রাইতের বেলা ওর ভাইয়ের শার্ট আর প্যান্ট চুরি করুম । তারপর ওই শার্ট প্যান্ট কাদেররে দিমু আর ওই কাপড় পইড়া রাহার সামনে গেলেই কেল্লা ফতে । :D :D :D '
' তোমার কথা শুইনা মনে হইতেসে যে তোমার আর কাদেরের গলায় গলায় পিরিত । তুমি ওরে আদর কইরা কাপড় দিবা আর ওই ব্যাডা তোমারে চুম্মা দিয়া কাপড় পিন্দা রাহা আপুর সামনে যাইব । '
' অইডাও চিন্তা করছি । কাদের এর পাড়ার মতি আছে না ?? ওই ব্যাডা সেইরাম কামের জিনিস । পকেটে ৫০ টাকা ধরায় দিলে ওই ব্যাডা কাদেররে জামা কাপড় পড়াইয়া ঠোঁটে লিপিশটিক লাগায়ে রাহার সামনে হাজির করব । '
' তারমানে তোমার লাইগা চুরি করন লাগবো ? '
বগা ভাই আমার দিকে চোখ পাকালেন । আমি চি চি করে বললাম , ' তোমার জন্য শুধু চুরি করবো ?? খুন টুন করতে বললে তাও করতে রাজি আছি । '
' গুড বয় । :D আজ রাত ১০ টায় । মনে থাকে যেন । '
' রাত ১০ টায় বাইর হমু কাম্নে ?? '
' কিছু একটা বইলা বাইর হইবি । কইবি যে ফুন এ ফ্লেক্সি দিতে যাবি । '
আমি আর কথা বাড়ালাম না । কিছু একটা বলে বের হতে হবে । কোন উপায় নাই । :'(

---------------- রাত ১০ ঃ ০২ --------------
আমি কোন রকমে একটা কাহিনি বলে বাড়ি থেকে বের হলাম । বাড়ির নিচে দেখি বগা ভাই দাড়িয়ে আছে । আমি তাগাদা দিয়ে বললাম , তাড়াতাড়ি কর । আধা ঘন্টার মধ্যে বাড়িতে ঢুকতে হবে ।
' ভয় পাইস না । পুরা প্ল্যানিং হয়ে গ্যাসে । রাহাদের বাড়ির পিছে একটা বারান্দা আছে । নিচতলা বাড়ি । কোন লাঠি কিংবা বাঁশ দিয়ে টান দিলেই চুরি কমপ্লিট । :D '
' প্ল্যান তো ভালই । '
' দেখতে হবে না কে বানাইছে ? '
আমরা ঝরের বেগে দৌড় দিয়ে রাহা আপুদের বাড়ির পিছনে আসলাম । দেখি বারান্দায় কোন লাইট নাই । মানে আমাদের কাজ একটু সহজ হয়ে গেল ।
' মনে রাখিস , চুরি করার পর আওয়াজ করতে হবে যেন মনে হয় যে চোর আইছিল বারিতে । '
' কাজডা একটু বেশি রিস্কি না ? '
' হুম '
' ওকে , ব্যাপার না । '
' আমি চুরি করবো আর তুই পাহারা দিবি । ঠিক হ্যায় ? '
' ইয়েস ক্যাপ্টেন । :D '
আমি পাহারা দিতে থাকলাম । আর বগা ভাই চুরি করতে লাগলেন । তার কর্ম নৈপুণ্য আমি মুগ্ধ । প্রফেশনাল চোররাও মনে হয় এত তাড়াতাড়ি চুরি করতে পারে না ।
' একটা চেক শার্ট আর জিন্স এর প্যান্ট চুরি করছি । '
'দেখি । '
' ধুর মিয়া এইডা কি ? এইডা তো শার্ট এর বদলে চেক চেক লুঙ্গি চুরি করস । '
' কস কি ? '
' এই দ্যাহো '
' হুম । ব্যাপার না । আরেকবার ট্রাই মারি । '
' সাবধানে । কেউ যেন টের না পায় । '
' হুম '
কিছুখন চেষ্টা সাধনের পর বগা ভাই চুরিতে সাকসেস খাইলেন । আমরা ঝাইরা দৌড় ।
বাড়ি ফিরে বগা ভাই বললেন , ' আজ রাইতে শান্তি মত ঘুমা । কাইল দেখবি " মেরা হি জালওয়া " ।


---------------- পরদিন সকাল ১১ টা ----------------
আমি আর বগা ভাই রাহা আপুদের বাড়ির সামনে জারুল গাছের পিছে লুকিয়ে আছি । কিছুখন পর দেখলাম কাদের রাহা আপুদের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল । পরনে ওই সেই কাপড় যেটা আমরা চুরি করেছিলাম । আর কিছুখন পর রাহা আপু বাড়ি থেকে বের হল । কাদেরের পোশাক দেখে তিনি মনে বিরাট শক খেলেন । হতভম্ভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাক্লেন কাদেরের দিকে । কাদের এগিয়ে গেল । হাতে গোলাপ ফুল । মুখে একটা গদ গদ ভাব এনে কি জানি একটা বলছে । মুহুরতের মধ্যে রাহা আপুর চেহারাতে বিরক্তির ছাপ দেখা দিল ।
' এইটাই চান্স । ৩ , ২ , ১ বলার সাথে সাথে " চোর চোর " বলে চিৎকার দিবি '
আমি কাহিনী বুঝে গেলাম ।



আমি গলার ভলিউম ফুল করে চিৎকার দিলাম , চোর ।চোর ।
রাস্তায় যত মানুষ ছিল সবাই ঘুরে তাকাল । কিছু বুঝে উঠার আগেই কাদের দৌড় দিল । আমরাও কাদেরের পিছে দৌড় , সাথে পাব্লিক ।
এবার পরের দিনের কাহিনীতে আসি । পরের দিন বগা ভাই এর প্ল্যান হল রাহা আপুকে প্রোপোজ করবেন । আমরা অনেক প্রস্তুতি নিয়ে রাহা আপুর বাড়ির সামনে যেতেই দেখি রাহা আপু কার সাথে যেন রিক্সায় করে কোথায় গেল । বগা ভাইএর তো মাথায় হাত ।
প্রায় ১ সপ্তাহ পর জানতে পারলাম যে ওই বান্দা হল রাহা আপুর বয়ফ্রেন্ড । বুয়েটে পরে । :(
এর পর আমাদের বিখ্যাত বগা ভাই আর কোন মেয়ের দিকে তাকাননি ।

বেচারা বগা ভাই ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১১ রাত ১১:৪৩
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×