পুরাতন ঢাকার বাস্তবতা বুঝতে হলে আপনাকে পুরাতন ঢাকার বাস্তব পরিপ্রেক্ষিত বুঝতে হবে। পুরাতন ঢাকার বাস্তবতা বুঝতে হলে আপনার শেকড় এখানে প্রোথিত থাকতে হবে... জানি, গতকালের অগ্নিকান্ডের দোষ পুরাতন ঢাকার বাড়িওয়ালাদের, দায় কিন্তু রাষ্ট্রের।
বুকের ভেতর গুমরে থাকা কান্নাগুলো শব্দ হয়ে ঝরতে পারছে না, ঝরাতে পারছে না হৃদয়ের নোনা বিষাদ, অশ্রু হয়ে। টুকরো টুকরো কিছু অনুভূতি, গতকাল রাত থেকে...
======================================================
২০শে ফেব্রুয়ারী রাত ১১ঃ০০
পুরাতন ঢাকার চুড়িহাট্টায় স্মরণকালের ভয়াবহ আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ৩৬টি ইউনিট কাজ করছে। পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুন এর সুত্রপাত, উপরের তিনটি তলায় আবাসিক লোকজন বাস করতো। হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায় নাই। ঢাকা মেডিক্যাল এ ৪০ জনের মত আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য পৌছেছে। কমপক্ষে ১০ জনের ৪০-৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী রাত ০১ঃ৩০
চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়েছিল, তিনটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, যে ভবন থেকে সুত্রপাত, তার আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলছে। ২/৩ জন থেকে ৬/৭ জন (মতভেদে) স্পট ডেড, হসপিটালাইজড ৫০+
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী রাত ০২ঃ৩০
নির্বাক টেলিভিশন সেটের সামনে বসে থাকা, দুইজনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী রাত ০৩ঃ৩০
দুঃস্বপ্নের জগতে তলিয়ে যাওয়া।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী সকালবেলা
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৬১ জন পুরুষ, ০৫ জন নারী এবং ০৪ জন শিশু সহ মোট মৃতের সংখ্যা ৭০ এ দাঁড়িয়েছে।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ঃ০০
আজকের চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের দায় রাষ্ট্রের। কেননা পরিকল্পনাহীন অনিরাপদ ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ঢাকাকে একপ্রকার মৃত্যুর জনপদ হিসেবে গড়ে উঠতে যুগের পর যুগ রাষ্ট্র অবহেলা করে এসেছে। প্রশাসনের কোন বাস্তবিক এবং প্রায়োগিক কোন উদ্যোগ কোন কালেই নেয়া হয় নাই। নীমতলি ট্রাজেডির পরও পুরাতন ঢাকার অলিতে গলিতে মৃত্যুকূপ বাড়িগুলোতে কারখানা গুদাম ভাড়া দেয়া বন্ধ হয় নাই কেন? এর জবাবদিহিতা কে দিবে?
ভাড়া কি সরকার দেয়? অতি ভাড়ার লোভ কেনো সংযত করতে পারছি না আমরা - জনৈক বন্ধু!
এটা আমাদের মজ্জাগত দোষ। তাই দরকার কঠোর আইনী পদক্ষেপ। আমি নিজে এই এলাকায় যেহেতু থাকি, আমার উপলব্ধি আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া এই অবস্থার উন্নতি সম্ভব না। আবাসিক এলাকা যখন শিল্প কারখানার জনপদের পরিণত হয়, তখন রাষ্ট্রের মনিটরিং নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। যারা ভাড়া দিচ্ছে, দুর্ঘটনায় তারাও শিকার হচ্ছে। পুরাতন ঢাকার বেশীরভাগ বাড়িওয়ালা অশিক্ষিত/অল্প শিক্ষিত, অসচেতন। কিন্তু যারা এখানে বসবাস করে তারা সবাই কিন্তু এর ভুক্তভোগী। গতকালের ঘটনায় রাস্তার পথচারী বহু মানুষ আহত-নিহত হয়েছে। ঢাকা শহরের কত শতাংশ ভবনে ইমার্জেন্সি এক্সিট আছে? আছে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং এর প্রাথমিক ইকুইপমেন্ট। যে দেশে জনগন সচেতন নয়, সেখানে রাষ্ট্রকে কঠোর হতেই হবে। নইলে এমন ঘটন ঘটতেই থাকবে।
জানি, দোষ পুরাতন ঢাকার বাড়িওয়ালাদের, দায় কিন্তু রাষ্ট্রের।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২ঃ০০
সাবাশ বাংলাদেশ...
লাশ শনাক্তের আগেই ক্ষতিপূরণ ঘোষণা। আমরা চিৎকার করে বলতে চাই, "সরকার বাহাদুর, আমরা পুরাতন ঢাকায় একটিও কারখানা-গুদাম দেখতে চাই না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত 'জিরো টলারেন্স' পুরাতন ঢাকা হতে কারখানা-গুদাম উচ্ছেদে দেখতে চাই। ভ্যাট গোয়েন্দাদের মত লোকবল নিয়োগ করে হলেও সকল কারখানা-গুদাম খুঁজে বের করুন। পুরাতন ঢাকায় প্রায় ৮০% বাড়িতেই আবাসিক ভাড়াটিয়ার সাথে কারখানা-গুদাম ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। আল্লাহর ওয়াস্তে এগুলো কঠোরভাবে উচ্ছেদ করুন।"
======================================================
২১ শে ফেব্রুয়ারী দুপুর ০১ঃ০০
পুরান ঢাকার হাজীসাব বাড়িওয়ালারা অনেক অনেক ক্ষমতাবান, সরকার তাদের ইশারায় উঠে বসে এতই তাদের টাকা৷ "নিয়ম নাই আবাসিক বাড়িতে ক্যামিকেল গোডাউন ভাড়া দেয়ার " -- পুরান ঢাকার বাড়িওয়ালারা ওইসব লিটারেলি *দে না। উনার দরকার অনেক টাকা, মাসে মাসে ভাড়া৷ এইরকম ৫/৭ বছর পর পর গরীব মরলে উনাদের কিচ্ছু যায় আসে না এখন আবাসিক এলাকায় গ্যাসের সিলিন্ডার, ফোমের কারখানা, ক্যামিকেল এর আড়ত থাকবে কি থাকবে না এটা নির্ভর করতেছে - কার ক্ষমতা বেশী তার উপর! - জনৈক বন্ধু
তাহলে পুরান ঢাকা হতে সরকারি সব কার্যক্রম উঠায়া নেয়া হোক, হাজী সাবেরা পুরাতন ঢাকার সব কিছু চালাতে থাক। এসব কারখানা গুদাম এর ট্রেড লাইসেন্স কে দেয়? ট্যাক্স ভ্যাট আদায় করে কারা? বাড়িওয়ালারা তো বাড়ি না হয় ভাড়া দিয়েছে, এসব ব্যবসাকে বৈধতা দিচ্ছে সরকারী দপ্তরগুলোই। আর শুধু পুরাতন ঢাকা কিন্তু নয়, ধানমন্ডি, বনানী সহ অনেক আবাসিক এলাকা কিন্তু আজ বাণিজ্যিক এলাকায় পরিনত হয়েছে। ঢাকা শহরের বেশীরভাগ কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ের ইমার্জেন্সি এক্সিট সহ অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা খুব বেশী নাজুক। সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুনের পর রিপোর্ট অনুযায়ী ঢাকার প্রায় ৪৫০ সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকের নেই পর্যাপ্ত অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা। একটি রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা কেন থাকে? এসব বিষয়ে আইন প্রণয়ন, মনিটরিং এসবের জন্যই তো? আর পুরাতন ঢাকার মোট জনসংখ্যার কত ভাগ হাজী সাহেব বাড়িওয়ালারা? বেশীরভাগ বাড়ী ভাড়া দিয়ে এখন শিফট হয়ে গেছেন নতুন ঢাকায়। বহু বাড়ি বিক্রয় হয়ে গেছে পুরাতন ঢাকার স্থানীয় অধিবাসী নন এমন মালিকানায়। তাই সরকারের কঠোর ভুমিকা ছাড়া এই অবস্থার কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়।
স্থানীয়দের চাইতে বেশী দোষ সরকারের। হাজারীবাগ হতে চামড়া শিল্প সরকার সরিয়ে নিতে পারলে এগুলো কেন পারে না? যেখানে আগুন লেগেছে সেখান হতে সাবেক সাংসদ এবং বর্তমান সাংসদ সাহেবের বাসা হতে ঘটনাস্থল ১৫০-৩০০ মিটার হবে বড়জোর। প্রতিদিন উনারা এই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করেন, চোখে পড়ে নাই এসব? আমি বলতে চাই, এরকম প্রতিটি দুর্ঘটনার দায় সরকার এড়াতে পারে না।
======================================================
২১ শে ফেব্রুয়ারি, দুপুর ০২ঃ৩০
পুরাতন ঢাকার বাস্তবতা বুঝতে হলে আপনাকে পুরাতন ঢাকার বাস্তব পরিপ্রেক্ষিত বুঝতে হবে। পুরাতন ঢাকার বাস্তবতা বুঝতে হলে আপনার শেকড় এখানে প্রোথিত থাকতে হবে...
বাস্তবতার নিরিখে আপনাদের সমাধানের রাস্তা কি? কোন প্রস্তাবনা? যাতে আমাদের পুরান ঢাকা বাচে? - জনৈক বন্ধু
এজন্য নগর-পরিকল্পনাবিদ, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক এবং পুরাতন ঢাকার ব্যবসায়ী নেতাদের একসাথে বসে সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। আমাদের মত সাধারণ অধিবাসীদের প্রস্তাবনা কে শুনবে বলেন? যে প্লাস্টিক দানা'র ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এত কথা, সেই ব্যবসায়ীক সংগঠন এর প্রতিনিধিদের এফবিসিসিআই সহ সরকারের নানান সংগঠন এ রয়েছে। উর্দুরোডের এই প্লাস্টিক ব্যবসা কয়েক দশকে ব্যপ্তি লাভ করেছে। অনেক আগেই সরকারিভাবে এগুলো নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। পুরাতন ঢাকাকে বাঁচাতে হলে যৌথ উদ্যোগ দরকার, সরকার এবং স্থানীয়দের সমন্বয়ে। ত্যাগ স্বীকার এবং ছাড় উভয় পক্ষকেই দিতে হবে। অন্যথায় পুরাতন ঢাকা কালের অতল গহবরে ক্রমেই হারিয়ে যাবে।
======================================================
২১ শে ফেব্রুয়ারি, বিকেল ০৪ঃ০০
সরকার তথা প্রশাসন'কে শক্ত হতে হবে, জিরো টলারেন্স এর সাথে। নিমতলিতে গেলে নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, কোন পরিবর্তন হয় নাই পরিস্থিতির। আর এই কারণেই আমি বারংবার বলবো, "সরকারের অবহেলা বা অনিয়ম" যাই বলি এসবের জন্য দায়ী থাকবে।
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারি, সন্ধ্যা ০৭ঃ০০
মাথার ভেতর কতকগুলো দৃশ্যপট ভেসে আসছে, আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া প্রতিটি মানুষের জায়গায় নিজেকে দেখতে পাই যেনঃ
- একটি ফার্মেসী'তে ডাক্তার দেখাতে গেছি, দুদিন ধরে সর্দি জ্বর। ডাক্তার সাহেব স্টেথোস্কোপ দিয়ে বুক পরীক্ষা করছেন। প্রচন্ড শব্দের সাথে একটা আগুনের গোলা এসে যন্ত্রণার সাগরে আমাকে ডুবিয়ে দিয়ে গেল।
- আজ ভাবছি তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে দিব, এমনিতে আমাদের এখানে রাত বারোটায় দোকান বন্ধ হয়। কিন্তু কাল ভোরে আমার বউ আর জমজ বাচ্চা দুটোকে নিয়ে শহীদ মিনার যাওয়ার প্ল্যান আছে। তাড়াতাড়ি দোকানবন্ধ করে দিব, ডাক্তার সাহেবের আর তিন চারজন বুঝি রোগী দেখা বাকী আছে। এমন সময় বিকট শব্দে কাছেই কোথাও বোমা ফেটেছে, আগুনের হলকা দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেই তো নির্বাচন গেল; আমি দ্রুত উঠে গিয়ে দোকানের শাটার নামিয়ে দিলাম ভেতর থেকে। কিন্তু মুহুর্তে বুঝতে পারলাম কি ভুলটাই না করে ফেললাম। বেঁচে ফেরার দরজা যে বন্ধ করে দিলাম নিজেই।
- আমি চা বানাচ্ছিলাম আমার সোনা বউয়ের জন্য। হুট করে প্রচন্ড শব্দে আগুন চারিদিকে। সোনাজান পাখীটাকে জড়িয়ে ধরে সবটুকু উত্তাপ নিজে শুষে নিয়ে বাঁচাতে ব্যাকুল সোনাপাখী আর তার ভেতরের আমাদের ভালবাসাকে।
- প্রতিদিনের মতই আড্ডা দিচ্ছিলাম চার বন্ধু। হঠাত আশেপাশেই মনে হল গন্ডগোল শুরু হয়েছে, বোমা ফুটছে। দ্রুত দোকানের সাটার নামিয়ে দিলাম। এরপর এক "হিট চেম্বারে" আমাদের এই দেহ পুড়তে পুড়তে ছাই হয়ে যেতে লাগলো।
- মা আমাকে বকা দিচ্ছেন জামা নোংরা করে ফেললাম কেন? বিয়ে বাড়িত যাচ্ছি দাওয়াত খেতে। মায়ের বকা খেয়ে কান্না চলে আসছে যে। হাত দিয়ে চোখ মুছতে গিয়ে হঠাত অনুভূত হল সারা দেহ প্রচন্ড যন্ত্রণায় পুড়ে যাচ্ছে। মা... মা গো...
- আজ দোকান থেকে ফিরতে দেরী হয়ে গেল। আজ দোকানে মাল নেমেছে, মালিক নিজেও দশটা পর্যন্ত ছিল। সব মাল নামানো শেষ হলে পরে আমাকে পাঁচশো টাকা দিলেন, আগামীকাল একুশে ফেব্রুয়ারি কি না; তাই হাত খরচের জন্য। এম্নিতেও যেদিন মাল নামে দোকানে, সেদিন দুই'একশ টাকা দেন, আজ পুরো পাঁচশো দিছেন। রাত তো বেশী হয়ে গেছে, নইলে মা'র জন্য কিছু কিনে নিয়ে যেতাম। এসব ভাবতে ভাবতে চুড়িহাট্টা মোড় পার হচ্ছি, তখনই প্রচন্ড শব্দে কয়েকটি বিস্ফোরণ হল, ট্রান্সফরমার হতে একদলা আগুনের গোলা আমার উপর এসে পড়তেই আমি অসহ্য যন্ত্রণায় জ্ঞান হারালাম।
- দুই বন্ধু আজ বিজনেস ডিলটা সেরেই ফেললাম। আমানিয়া হতে ভরপেট খাওয়া দাওয়া করে বাসায় যাওয়ার পথে এই চুড়িহাট্টা মোড়ে এসে রিকশা পড়ল জ্যামে। উফ, রাতের বেলা একি যন্ত্রণা। সামনে একটি প্রাইভেট গাড়ী একপাশে, আরেকপাশে পিকআপ ভ্যান। মাঝখানে রিকশাগুলো জটলা পাকিয়ে ফেলেছে। হুট করে প্রচন্ড এক বিস্ফোরণ হল কোথাও। আমি ছিটকে পড়লাম রাস্তার একপাশে, বন্ধু আমার অন্যপাশে। সবকিছু কেমন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে, কোন গভীর অতলে হারিয়ে যাচ্ছি। হারাতে হারাতে হুট করেই ভেসে উঠলাম, তপ্ত লাল কোন পুকুরের নীচে। সারাটা দেহ জ্বলে যাচ্ছে...
- চারিদিকে প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরণ হচ্ছে। আমরা দুই ভাই সাথে আমার ভায়ের একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে আটকে আছি এই ভবনে। আগুন আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। বের হওয়ার কোন পথ নেই। ভাতিজাকে বুকের মাঝে লুকিয়ে আমরা দুই ভাই তাকে ঘিরে ধরলাম। হে খোদা, রক্ষা কর এই ছোট্ট শিশুটিকে।
- আগামীকাল ২১শে ফেব্রুয়ারীর ছুটি, পরের দিন শুক্রবার। প্ল্যান করলাম অনেকদিন বাড়ি যাওয়া হয় না। এই ফাঁকে ঘুরে আসি। বউটা আমার আশায় পথ চেয়ে থাকে জানি, যদিও দুজনেরই বয়স হয়েছে; ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেছে। কিন্তু ভালবাসা কি আর আগের চেয়ে কম আছে? ভাত খেতে হোটেলে এসেছি। খাওয়া শেষ করে রওনা হব; আজকের ডালটা বেশ স্বাদের হয়েছে। আয়েশ করে চুমুক দিতে না দিতেই হট্টগোল। বাইরে বোমা ফুটছে, আগুন দিয়েছে নাকি কোন দোকানে। দ্রুত হোটেলের সাটার নামিয়ে দেয়া হল। এরপর আর বের হতে পারছি না হোটেল থেকে। আগুন যে হোটেলেও দিয়ে দিল কারা যেন। ও আল্লাহ্, কেউ আমাদের বাঁচাও!
======================================================
২১শে ফেব্রুয়ারি, রাত ১০ঃ০০
মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। অনুভূতিরা সব প্যারালাইজড হয়ে গেছে মনে হয়। আর কিছুই ভাল লাগছে না, খুব বেশী অস্থির লাগছে। ঘটনার সময় আমিও তো ঐখানে থাকতে পারতাম। প্রায় দিনই তো যাতায়াত করি সেখান দিয়ে। উফ... আর পারছি না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:২০