আজ শুরুটা একটা গল্প দিয়ে করতে চাই। এক দেশে এক চোর ছিল। এ চোরের বৈশিষ্ট্য ছিল সে শুধু মুর্দার (মৃত ব্যক্তির) কাফনের কাপড় চুরি করতো। তার এধরনের চুরির কারণে ঐ সমাজের লোকজন অতিষ্ঠ ছিল। ঐ সমাজের লোকজন চুরির হাত থেকে বাঁচতে ঐ চোরের মৃত্যু কামনা করে দো'য়া করতো। মৃত্যুর আগে একদিন এ চোর তার তিন ছেলেকে ডেকে বললো বাবারে আমি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে তোমাদের একটা অছিয়ত করে যেতে চাই। আর তা হলো আমি মারা গেলে তোমরা আমার চুরি পেশা চালিয়ে যাবে। তবে এমনভাবে চুরি করবে যেন সমাজের লোকেরা আমার প্রশংসা করে। আমাকে ভাল বলে। বৃদ্ধ চোরের মৃত্যু হলো। চোরের তিন ছেলেসহ সকলে মৃত চোরের দাফন করে এলো। রাতে চোরের তিন ছেলে কবরস্থানে গিয়ে সকল মৃত ব্যক্তির কাফনের কাপড় চুরি করে আনলো। এমন সময় এক ছেলে তার বাবার অছিয়তের কথা স্মরণ করে অন্য ভাইদের তা মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করলো। তারা পরামর্শ করে কাফনের কাপড় চুরির পর লাশ গাছে বেঁধে রেখে দিল। জনগণ চোরের তিন ছেলের এ ধরনের অদ্ভূত চুরির কান্ড দেখে বলাবলি করতে শুরু করলো তিন চোরের চেয়ে তাদের বাবাই ভাল ছিল। কারণ সেতো কেবল কাফনের কাপড় চুরি করতো আর তার ছেলেরা তো কাফনের কাপড় চুরি করে আবার লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে। এরাতো তার বাবার চেয়ে নিষ্ঠুর চোর। এদের চেয়ে তো তাদের বাবাই ভাল ছিল। সে চুরি করতো, কোন লাশ তো আর গাছে ঝুলিয়ে রাখতো না!!!
প্রথম শুরুটা গল্প দিয়ে হলেও অনেকের এখনও গল্পের মর্মকথা ও শানে নুযুল হয়ত বুঝতে কষ্ট হবে। আপনাদের সুবিধার্থে কিছু ঘটনা তুলে ধরছি- তবে আগেই বলে রাখি এ গল্পের কোন ঘটনা বা চরিত্রের সাথে কারও চরিত্র মিলে গেলে তা নিতান্তই কাকতালীয় ব্যাপার।
(ক) কাজী জেসিন আজকের গণমাধ্যম জগতে মেধাবী মুখ। চমৎকার উপস্থাপনা, নান্দনিক বাচনভঙ্গি এর চেয়ে আরো আকর্ষণীয় তার সাবজেক্ট চয়েজ! বাংলা ভিশনের টকশো অনুষ্ঠান ‘পয়েন্ট অব অর্ডার' তার জনপ্রিয় অন্যতম একটি অনুষ্ঠানের নাম। সাম্প্রতিক সময়ের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সাজানো লাইভ অনুষ্ঠান। যা সরকারী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র তুখোর তার্কিকদের নিয়ে সাজানো। হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হলো। বাংলা ভিশন ও প্রচার মাধ্যমের মার্ফতে জানা গেছে এই লাইভ অনুষ্ঠানটি প্রচারের ফলে জনমত সরকারের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় তা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এও জানা গেছে এ অনুষ্ঠানে লাইভ অংশ গ্রহণ করতে আসা অতিথিদেরকে পথিমধ্যে ফোন করে ফেরত যাওয়ার জন্য বাংলা ভিশন কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেছেন .........।
(খ) রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ। নতুন কিছু নয়। এর আগেও খুলনা, সিলেট ও চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ হয়েছে। প্রায় সকল স্যাটেলাইট বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য লাইভ সম্প্রচার করেছে। জনগণেরও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। সরকার অসহিষ্ণু হয়ে হঠাৎ রাজশাহী মহাসমাবেশের অনুষ্ঠান যেন চ্যানেলগুলো লাইভ সম্প্রচার না করে তার মৌখিক নির্দেশ জারি করে। এমনকি কয়েকটি টিভি চ্যানেল তাদের লাইভ সম্প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেললেও তা আবার গুটিয়ে নেয়। খবরে দেখলাম একটি টিভি চ্যানেল-এর কলাকুশলী ও সিনিয়র সাংবাদিকরা এ ধরনের নির্দেশনার কারণে টাংগাইল থেকে ঢাকা ফেরৎ এসেছেন। অবশেষে তাই হলো, স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো রাজশাহীর মহাসমাবেশ লাইভ সম্প্রচার থেকে বিরত থাকলো।
(গ) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষককে সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের কথা বলার অপরাধে ছাত্রলীগ নামধারী ক্যাডার ছাত্ররা ঐ শিক্ষককে কান ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছিল, এ খবর প্রচার করার অপরাধে ৬ জন সাংবাদিককে হত্যার হুমকি নতুন কিছু নয়। সাংবাদিকদের আন্দোলনের ফলে যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঐ ক্যাডারদের বিচার করেন।- ‘‘৩০ দিনের সামার ভ্যাকেশনের আগের দিন অভিযুক্তকে এক মাসের জন্য বহিষ্কার করে’’। যা প্রহসন ও লজ্জা বটে।
(ঘ) দিগন্ত টিভির জনপ্রিয় টকশো সবার আগে দেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি বলা হয়েছে টকশো থাকলেও সেখানে টকার হিসেবে কাকে রাখবেন তা ঠিক করবে সরকার। এমনিভাবে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করার মধ্য দিয়ে সরকার চ্যনেলের টকশোগুলোকে সেন্সর করছে। নিজেদের পছন্দের লোকদের উপরও তাদের ভরসা নেই, তারা বলছেন তাদের ঘরানার যে সমস্ত সাংবাদিক, কলামিস্ট বাগ্মীতায় পটু নয় তাদেরকে নাকি কয়েকটা টিভি চ্যানেল আমন্ত্রণ জানিয়ে সরকারের বিপক্ষে ভুল চিত্র তুলে ধরছেন। ১৪ মে ২০১০ তারিখে বিয়াম মিলনায়তনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে মাহফুজউল্লাহকে উদ্দেশ করে আর এক সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেছেন, সরকার গতকাল রাতে ৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন যাদের মধ্যে রয়েছেন মাহফুজউল্লাহ, মাহমুদুর রহমান (সম্পাদক, আমার দেশ), সাংবাদিক নূরুল কবির (সম্পাদক, নিউ এইজ), কলামিস্ট আসাফউদ্দৌলা।
(ঙ) সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যা দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলছে। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মহাসমাবেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের খন্ড চিত্র ফুটে উঠেছে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সরকারের দুর্নীতি, অনিয়মের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে ৩ ডজন মামলা দিয়েছে এমনকি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাঁড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েক বার। এ সময়ের সাহসী পুরুষ, অকুতোভয় সাংবাদিক নূরুল কবিরের (সম্পাদক, নিউ এইজ) ভূমিকার কারণে সহ্য করতে পারছে না ফলে তাকেও হত্যার নানা চেষ্টা আমরা লক্ষ্য করছি। এমনকি তার গাড়িতে মটর সাইকেল আরোহী সন্ত্রাসীরা হকিস্টিক দিয়ে পথিমধ্যে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস ছিল ৩ মে। এ দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এক বিবৃতিতে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক মানবাধিকার। তিনি তার বক্তব্যে গত বছর (২০০৯) বিশ্বে ৭৭ জন সাংবাদিক হত্যার কথা উল্লেখ করেন। এক বছরে সারা বিশ্বে গত বছর ৭৭ জন সাংবাদিক হত্যা হলেও উল্লেখ্য যে, শুধু বাংলাদেশেই গত ষোল মাসে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
(চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতা আহবান করায় যখন সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠেছে। আলেম সমাজ যখন এর বিচার ও ফেস বুক বন্ধ করার দাবী জানিয়ে আসছিল তখনও ফেস বুক বন্ধের কোন উদ্যোগ নেয়া হলো না অথচ খবরে প্রকাশ যখন ঐ ফেস বুকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশ করা হলো তখন হঠাৎই সুপার গতিতে বন্ধ করে দিল সরকার ফেইস বুক। রাতেই RAB গ্রেফতার করলো এই অপকর্মের দায়ে পুরান ঢাকা থেকে সিডি, ল্যাপটপসহ একজনকে।
প্রসঙ্গ CSB-
২০০৭ সাল তখন দেশে চলছে মঈন উদ্দিন- ফখরুদ্দিনের জরুরী সরকার। তিতুমির কলেজের ছাত্ররা তৎকালীন সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে রাজপথে নামলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি নতুন প্রতিবাদের মাত্রা দিল তিতুমিরের স্মৃতি বিজড়িত কলেজের ছাত্ররা। সড়ক অবরোধ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য বিক্ষোভ গণবিস্ফোরণে রূপ লাভ করলো। আর সে বিক্ষোভ, প্রতিবাদের সচিত্র প্রতিবেদন সরাসরি প্রচার করছিল তখনকার একমাত্র সংবাদ নির্ভর টিভি চ্যানেল CBS। সরকারের রোষানলে পড়তে হলো তাকে হঠাৎই বন্ধ করে দেয়া হলো এ জনপ্রিয় চ্যানেল CSB। সে সময় জরুরী সরকারের এ পদক্ষেপের স্বল্প পরিসরে প্রতিবাদ হলো বটে কিন্তু আজও CBS তার সম্প্রচার ফিরে পেল না। সে থাক জরুরী সরকারের কথা। জরুরী সরকারের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা যদিও!!! ছিল না!
এবার আসা যাক যমুনা টিভির প্রসঙ্গ-
বর্তমান আওয়ামী সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। গণতন্ত্রের লেবাস পরিধান করে এ সরকার আজও ক্ষমতায়। জনগণের ম্যান্ডেট সে আর এক প্রসঙ্গে। ২০ মে ২০১০ আদালত যমুনা টিভি সম্প্রচার বন্ধের চূড়ান্ত নির্দেশ দেয়। রাতেই আদালতের নির্দেশের পরপরই বিশাল পুলিশ বাহিনী যুদ্ধাংদেহী সাজে সজ্জিত হয়ে যমুনা টিভির কার্যালয় সিল করে দেয়। দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছিল অন্য চ্যানেলগুলোর সুবাদে পুলিশের গুন্ডামী আচরণ। সরকার বাহাদুর অবশ্য মুচকি হেসে নীরব থেকেছে। সরকারের তথ্যমন্ত্রী মহোদয় অবশ্য বলেছেন আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আদালতের রায় বাস্তবায়ন করেছি মাত্র।
অথচ আমরা কী লক্ষ্য করছি-
অ্যাটর্নি জেনারেলের একের পর এক টালবাহানা, অযথা সময়ক্ষেপণ, শুনানির জন্য নির্দিষ্ট দিনে হাজির না হওয়া এবং আদালতের শুনানি সাড়ে ৫ মাসেও শেষ হচ্ছে না। নানা জটিলতা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ২৬ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু হলেও আদালতের ধার্য করে দেয়া দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল উপস্থিত না হওয়ায় এ শুনানি আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। অবশেষে সোমবার শুনানির কথা থাকলেও অন্য একটি মামলার কারণে এ শুনানি হয়নি। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানিয়ে দিয়েছেন, মঙ্গলবার তিনি শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন না। গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিটিআরসি কোন ধরনের আগাম নোটিশ না দিয়ে আকস্মিক যমুনা টিভির পরীক্ষামূলক সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।
রিট আবেদনের পর রুল জারির ৫ মাস পর এ বেঞ্চে ২৬ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়। ২৭ এপ্রিল শুনানি শেষে আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে রোববার আদালতে উপস্থিত থাকতে বলেন। কিন্তু রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে অনুপস্থিত থাকেন। তাই পরবর্তী দিন শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এ প্রসঙ্গ টেনে একজন সিনিয়র আইনজীবী জানান, অথচ সরকার সমর্থক কতিপয় টিভি চ্যানেল মাসের পর মাস পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চালালেও বিটিআরসি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অতি সম্প্রতিও দু'একটি চ্যানেল পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু করছে। অথচ তাদের অবৈধ অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারের উচিত আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা।
ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেন, খবরের কাগজ এবং টিভি চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে। সরকার যদি এগুলোর গলা টিপে ধরে, তাহলে একের পর এক সব বন্ধ হয়ে যাবে। চ্যানেলগুলো নিয়ন্ত্রণের আইন এমনভাবে করা যে, এর অর্ডার অতিক্রম করলে তার বিরুদ্ধে আপিল করার ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। তিনি আরও বলেন, যে সরকার সব সময় ট্রান্সপারেন্সি, ফ্রিডম অফ স্পিস এবং হিউম্যান রাইটস-এর কথা বলছে অথচ সেই সরকারের আমলেই একটি টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হলো।
এই সরকারের আমলে যেসব চ্যানেলের অনুমতি দেয়া হয়েছে সেটার সঠিক প্রক্রিয়া নিয়েও প্রথম আলোর সম্পাদক সমালোচনা করেন। তিনি আরও বলেন, এভাবে গণতন্ত্র বিকশিত হয় না, বরং বাধাগ্রস্ত হয় (সূত্র: যুগান্তর ০৪.০৫.২০১০)।
এরপর এলো চ্যানেল ওয়ান
বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের এক ধরনের মুখপাত্রই বলা চলে। চ্যানেলটির সাম্প্রতিক সময়ের জোরালো ভূমিকা সরকারের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেল। অনেকদিন ধরেই চলছিল বন্ধ করার উদ্যোগ। হঠাৎ ছুঁতো অজুহাতে রাতের আঁধারে বন্ধ করে দেয়া হলো বিরোধী দলের মুখপাত্র বলে খ্যাত চ্যানেল ওয়ান। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। মানববন্ধন, র্যা লী, বক্তৃতা, বিবৃতি ইত্যাদি।
‘সম্ভাবনার কথা বলে' এই শ্লোগানকে ধারণ করে ২০০৬ সালের ২৪ জনুয়ারি চ্যানেল ওয়ান যাত্রা শুরু করে। কিন্তু চার বছরের মাথায় এসে হোঁচট খেতে হলো চ্যানেলটিকে। ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে বিটিআরসি আনুষ্ঠানিকভাবে এই চ্যানেলটির তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল করে দিয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। চ্যানেলটি বন্ধে সরকারের হাত কতটুকু আছে বা নেই তা জনগণই বিচার করবে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার ‘‘বন্ধই থাকবে’’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেছেন, সম্পূর্ণ আইনগতভাবেই চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা এ নিয়ে আদালতে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের মধ্য দিয়ে জনগণ চ্যানেল ওয়ান বন্দের মূল কারণ খুঁজে বেরুবে। (সূত্রঃ আমার দেশ ০৪.০৫.২০১০)
প্রসংঙ্গ আমার দেশ
সরকার ৩১.০৫.২০১০ -০১.০৬.২০১০ রাতেই বন্ধ করে দেয় আমার দেশ।
ঐ দিন তাৎক্ষণিকভাবে আমার দেশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকার তার ফ্যাসিবাদী আচরণের মাধ্যমে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতে চায়। ইতোমধ্যে তারা দু'টি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করেছে। এখন দৈনিক পত্রিকা আমার দেশ বন্ধ করে আমাকে গ্রেফতার করার ষড়যন্ত্র করছে। গতকাল (৩১.০৫.২০১০) আমার দেশের প্রকাশক আলহাজ্ব হাসমত আলীকে এনএসআইয়ের গোয়েন্দারা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। দুপুর ২টা পর্যন্ত তাকে এনএসআইয়ের দপ্তরে বসিয়ে রাখা হয়। গোয়েন্দারা তাকে দু'টি কাগজে আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা লিখে স্বাক্ষর করতে চাপ দেয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি স্বাক্ষর করেননি, ততক্ষণ তাকে বসিয়ে রাখা হয়। পরে হাসমত আলী দু'টো কাগজে স্বাক্ষর করে দীর্ঘ প্রায় ৫ ঘন্টার বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান।
আমার দেশের প্রকাশক আলহাজ্ব হাসমত আলীকে গতকাল সকাল ৯টার দিকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫ ঘন্টা তাকে আটক রাখা হয়।
এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে আমার দেশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে আমার দেশের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের অংশ হিসেবে আমার দেশ বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে। আমি অতি দুর্দিনে এই পত্রিকার দায়িত্বভার গ্রহণ করি। এই পত্রিকার দায়িত্বভার গ্রহণের সময় ৪০০ সংবাদকর্মী প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বেতনভাতা পাচ্ছিল না। তখন সাংবাদিকদের অনুরোধেই আমি এই পত্রিকার দায়িত্ব নেই। এর আগে সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে আমার কোন পরিচয় ছিল না। আমি ছিলাম একজন কলাম লেখক।
এই পত্রিকার একটি ধারা আছে। তাহলো স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলা। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরা। কিন্তু এই পত্রিকার অনেক সংবাদই সরকারের অনুকুলে যাচ্ছে না এবং তাদের জন্য সুখকর হচ্ছে না। তাই আমি এখন ৩১টি মামলার আসামী হয়ে গ্রেফতারের জন্য অপেক্ষা করছি।
মাহমুদুর রহমান নথিপত্র তুলে ধরে বলেন, গত ২৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে ঢাকার জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘আমি মাহমুদুর রহমান, চেয়ারম্যান আমার দেশ পাবলিকেশন লিমিটেড কোম্পানীর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক নিযুক্ত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। উপরোক্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে বাধিত করবেন।'
১৬ জুন ২০০৯ তারিখে বিশেষ পুলিশ সুপার আমাদেরকে অনাপত্তি পত্র দেন। এতে লেখা হয় সংশ্লিষ্ট থানা, নগর বিশেষ শাখা, ঢাকা ও অত্রাফিসের রেকর্ডে তার বিরুদ্ধে কোন বিরূপ তথ্য পাওয়া যায়নি।'
গত ৩ সেপেম্বর ২০০৯ তারিখে ছাপাখানার রক্ষক ও মুদ্রাকরের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয়। এতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে জানানো হয়, ‘আমি মাহমুদুর রহমান আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড নামক ছাপাখানার রক্ষক ও মুদ্রাকর নিযুক্ত হয়েছি; এবিষযে ব্যবস্থা নিয়ে বাধিত করবেন।' অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকার ১৯৭৩ সালের ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ডিক্লারেশন ও রেজিস্ট্রেশন) আইনের ৪(২) মোতাবেক ছাপাখানার ঘোষণাপত্র দেয়া হয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ আমার দেশের প্রকাশকের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয়। এতে বলা হয়, ‘আমি মাহমুদুর রহমান, চেয়ারম্যান আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড কোম্পানীর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রকাশক নিযুক্ত হয়েছি।'
গত ৫ নভেম্বর ২০০৯ দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেয়া হয়। উপ-পরিচালক মাসুদা খাতুন স্বাক্ষরিত ওই পত্রে বলা হয়, ‘আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক আলহাজ্ব মোঃ হাসমত আলীর পরিবর্তে জনাব মাহমুদুর রহমানের নাম প্রতিস্থাপন করার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।
এরপরও জেলাপ্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। আমরা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেও সেটা নিতে পারিনি। বলা হয়েছে ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছে।
তিনি বলেন, আজ জুন মাসের ১ তারিখ। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র ৪টি সংবাদপত্র রেখে সবগুলো সংবাদপত্র বন্ধ করে দেন। তখন সাংবাদিকরা অনেকেই আত্মহত্যা করেছিলেন, অনেকে মুদি দোকান দেন, কেউ কেউ হকারি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সেই তথ্য জানেন না। আমি আপনাদের মাধ্যমে সেই তথ্য তরুণ প্রজন্মকে জানাতে চাই। এই সরকার ক্ষমতায় এসে ২টি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দিয়ে ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা জাতীয় দৈনিক বন্ধের চক্রান্ত শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে আমার দেশের প্রকাশককে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সকল সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের উচিত এর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসা। আমরা আইনের মধ্যে থেকে বস্তুনিষ্ঠভাবে আমাদের মত প্রকাশ করবো। সরকার এখন আমার দেশ বন্ধের চেষ্টা করছে, কাল অন্য পত্রিকা বন্ধের ষড়যন্ত্র করবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দিয়ে শুরু, আপনাদের দিয়ে শেষ হবে। তাই সকলের উচিত সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এর প্রতিবাদ জানানো। (সূত্র : আমার দেশ ০১.০৬.২০১০)
চ্যানেল ওয়ান, যমুনা টিভি ও আমার দেশ যদি সরকার বন্ধ করে দিয়ে না থাকেন। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে প্রধানমন্ত্রী কেনইবা মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে মন্তব্য করলেন চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার বন্ধই থাকবে (০৪.০৫.১০ তারিখের সকল সংবাদ মাধ্যম সূত্রে)। আর আদালতে বিচারাধীন একটি মামলার যখন দেশের নির্বাহী জায়গা থেকে এ ধরনের মন্তব্য সম্বলিত আদেশ প্রকাশ্যে আসে তবে অপ্রকাশ্যে আরও কত আদেশ দেয়া হয় তা আমরা জানি না। এ আদেশের পর আদালত কি পারে তার স্বাধীন অবস্থান থেকে রায় দিতে। এ প্রসঙ্গে নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির বাংলা ভিশন চ্যানেলের সংবাদ সারাদিন অনুষ্ঠানে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন ‘‘প্রধানমন্ত্রী যদি পত্রিকা বন্ধ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত না-ই থাকেন তাহলে জেলা প্রশাসক কেনই বা বললেন আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে’’ । তাহলে উনি কি এখন ঢাকার ডিসির দায়িত্বটাও কাঁধে নিয়ে নিলেন।
আওয়ামী রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোজাম্মেল বাবু ১৯ মে আর টিভি'র রোড টু ডেমোক্রেসি সরাসরি প্রচারিত অনুষ্ঠানে অনেক তথ্য তুলে ধরে বলেছেন বিএনপির আমলে সাংবাদিক বালু হত্যাসহ অন্তত দশ জন বড় মাপের সাংবাদিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তার এ বক্তব্য যদি সত্য হয় তবে বর্তমান সরকারের মাত্র ১৬ মাসেই হত্যা করা হয়েছে ৫ জন সাংবাদিককে । এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে। ৫ বছর পূর্ণ হতে এই সংখ্যা কততে গিয়ে ঠেকে দেখ যাক। মোজাম্মেল বাবুর ভাষায় বিএনপি জামায়াত ১০ জন সাংবাদিক হত্যা করেছে এর প্রতিকার হিসেবে এই সরকারের সময়ে মাত্র ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এটা তেমন কোন ঘটনা নয়। আসলেও তেমন কোন ঘটনা নয়।
কারণ দেশ স্বাধীনের পর দুর্ভিক্ষের সময় সন্তানের মাথায় ‘‘সোনার মুকুট পরিয়ে বিয়ে দেয়ার ঘটনা বাংলার বানী পত্রিকায় সচিত্র সংবাদ যখন ছাপা হয়েছিল তখন ঐ পত্রিকার কি অবস্থা হয়েছিল সচেতন মহলের তা অজানা নয়। শেখ মুজিবের শাসনামলে (বাবা'র শাসনামলে) আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় গণকন্ঠ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয় তার পোষ্য মুজিব বাহিনীর ক্যাডাররা গণকন্ঠ অফিসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে, আগুনদিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল গণকন্ঠের সম্পাদক আল মাহমুদকে। আর '৭২, '৭৪, '৭৫-এর ১৬ জুন মাত্র ৪টি পত্রিকা (২টি দৈনিক, ১টি সাপ্তাহিক, ১টি মাসিক) এর মধ্যে ২টি বাংলা ও ২টি ইংরেজী পত্রিকা রেখে বাকী ২২২ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। এ হলো মিডিয়াবান্ধব দল আওয়ামী লীগের চিত্র!!
শেখ মুজিবের সুযোগ্য কন্যাও অবশ্য কম যায়নি। অবশ্যই তার সাথে অসংখ্য সংবাদপত্র ব্যবসায়ী আছেন। আরো আছেন টেলিভিশন চ্যানেলের ব্যবসায়ী। কাজেই নিঃসন্দেহে তিনি মিডিয়াবান্ধব। মিডিয়াবান্ধব হওয়ার কারণে তিনি তার চার পাশে যাদেরকে পেয়েছেন, তাদের মধ্যে দশজনকে টিভি স্টেশনের লাইসেন্স দিয়েছেন। তার আরও বেশি লোককে লাইসেন্স দেয়া উচিত ছিল। যদিও বাদ পড়া আওয়ামী এ বি এম মূসা বাদ পড়ে গেছেন বলে কলাম লিখে রাগ প্রকাশ করেছেন।
এবার আসুন দেখা যাক আওয়ামী চ্যানেল দখলে কেমন পটু -
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১১ অক্টোবর ১০টি এবং এই বছর ফেব্রুয়ারী- এপ্রিল মাসে আরো ২টিসহ মোট ১২টি চ্যানেল দলীয় লোকদের নামে অনুমোদন দেয়। মোজাম্মেল হক বাবুর '৭১ টেলিভিশন, মুন্নি সাহার এটিএন নিউজ, সালমান এফ রহমানের ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুলের ভাই মোর্শেদুল ইসলামের সময় টিভি, দৈনিক সমকাল গ্রুপের চ্যানেল-২৪, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিজয় টিভি, কামাল আহমেদ মজুমদার এমপির মোহনা টেলিভিশন, আওয়ামী এমপি গোলাম দস্তগীরের ছেলের গোলাম আসরিয়া গাজীর জি টিভি (গাজী টেলিভিশন)।
এখানেই শেষ নয়
আবার আসুন দেখি আওয়ামী লীগের মিডিয়া দখলের চিত্র-
ইনকিলাব কিনে নিয়েছেন লোটাস কামাল এমপি, শফিক রেহমানের যায়যায় দিনের বর্তমান মালিক সাবের চৌধুরীর বড় ভাই ঢাকার মেয়র প্রার্থী আওয়ামী নেতা সাইদ হোসেন চৌধুরী। মোসাদ্দেক আলী ফালু'র এন টিভি, আরটিভি এখন আওয়ামী বেঙ্গল গ্রুপের মালিক লিটু আনামের। সাদেক হোসেন খোকা ও মান্নান ভূঁইয়ার বৈশাখী এখন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সেক্রেটারী লে. জে. (অবঃ) হারুন এর ডেসটিনি গ্রুপের। আর অন্যদিকে আগের থেকে চালু থাকা ইটিভি, চ্যানেল আই, সেতো কারও বলার অপেক্ষা রাখে না। এই লেখা থেকে স্পষ্ট হয় যে, আওয়ামী লীগ তাদের '৭২, '৭৪-এর অভিজ্ঞতা থেকে শেখ মুজিবকে ভালো মানুষ হিসেবে তুলে ধরতে এই আর কি সামান্য উদ্যোগ মাত্র!! এই কয়েকটা চ্যানেল, পত্রিকার মালিক, কৌশলে অন্যের চ্যানেল দখল আর বিরোধী চ্যানেল বন্ধসহ সেন্সরের নামে সাংবাদিক সমাজের খেদমত চালিয়ে যাওয়া। জনগণ আওয়ামী সত্য! বস্তুনিষ্ঠ ! সংবাদ খাবে না। কিলিয়ে খাওয়াবো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



