ঢাকা থেকে বাসায় আসার পথে সময় লেগেছে ১০ ঘন্টা! সাধারন অবস্থায় যেখানে ৪/৫ ঘন্টা সর্বচ্চ লাগে!
বিষয় এটা না বিষয়টা অন্য! আজ পাশের সিটে যদি কোন মেয়ে বসত নির্ঘাত গণপিটুনি দিয়ে বাস থেকে নামিয়েই দিত!!
খুলেই বলি।
বোরিং জার্নি ১০ ঘন্টার, বসে বসে সৈয়দ মুজতবা আলীর ''শবনম" উপন্যাস টা পড়ছিলাম! উফ কি এক অনবদ্য সৃস্টি এই ''শবনম''! এর প্রতিটা লাইনে তিলোত্তমার জন্য আমার যে ভালবাসার অনুভূতি তারই কাব্যিক প্রতিফলন হয়েছে! হারিয়ে গিয়েছিলাম উপন্যাসের লাইনের মাঝে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম টের পাই নি!
হঠাত করেই মনে হল তিলোত্তমা আমার সাথে যাচ্ছে! আমরা একসাথে! অন্য রকম এক ভাললাগা। আমি স্বপ্নের ভেতরেই ভাবছিলাম এটা যদি স্বপ্ন হয় তাহলে যেন এই স্বপ্নের শেষ না হয় কখনো!
আমি দেখলাম আমি বসে আছি আর তিলোত্তমা কিছু একটা খাচ্ছিল! হঠাত করেই ড্রাইভার মহাশয় খুব জোড়ে ব্রেক কষে দিলেন! সব তো পরে যাবে এমন অবস্থা, তিলোত্তমার ও তাই আমি ওকে ধরে ফেললাম, ফলে বেচারি বেচে গেল সামনের সিটের সাথে সংঘর্ষের হাত থেকে। ও ভয় পেয়েছে খুব তাই আমি ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেছি!!!
হঠাত স্বশব্দে আবার বাস ব্রেক করেছে! এবার সত্যি সত্যি! ঝাকিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়!
ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে যে অবস্থায় আবিষ্কার করলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না! দেখলাম আমি আমার পাশের সিটে বসা আংকেল কে জড়িয়ে ধরে আছি!! ঘুম ভেঙ্গে এই দেখে তো আম পুরো থ!! কি হল এইটা!!! কি একটা লজ্জার ব্যাপার!! আংকেল তো আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,আমিও আংকেলের দিকে! সারা রাস্তা একবার উনি আমাকে দেখেন আরেকবার আমি উনাকে দেখি! এভাবেই বাকি পথ খুব ধৈর্যের সাথে পাড়ি দিলাম!
দিতে দিতে ভাবলাম কোন ভাবে পাশের সিট টাতে কোন মেয়ে বসত তাহলে আমার কি অবস্থা হত!!! ভাবলেই আমার গা শিহরিত হয়ে হয়ে উঠে!!!
আল্লাহই জানে কখন কি করে ফেলি!! যদি কেলেংকারি হয়েই থাকে তাহলে অবশ্য - "আমি ঘুমে থাকি, আমার হুশ থাকে না" এই অমর লাইনটা বলে দেওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না