ইরাকের ঐতিহ্যবাহী শহর মাদাইন। প্রাচীন এই নগরীতে আছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রত্ননিদর্শন। কিন্তু ইরাকে মার্কিন সামরিক অভিযানের পর মাদাইন যেন পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত জনপদে। আজ থেকে দুই হাজার বছরেরও আগের কথা। তখনও খ্রিস্টের জন্ম হয়নি। তখনও অতটা উজ্জ্বল নয় বাকি দুনিয়ার ইতিহাস। সে সময় মাদাইন ছিল এক সমৃদ্ধ নগর। ছিল স্বর্ণোজ্জ্বল এক রাজধানী।
বর্তমান ইরাকের যুদ্ধবিধ্বস্ত মাদাইন শহরটি বাগদাদ থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। শ্রীহীন, ঐশ্বর্যহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে এ শহর। অথচ একদিন মাদাইনই ছিল প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতার বিরাট জনপদ। ছিল পারস্য সাম্রাজ্যের সাসানিড গোত্রের রাজধানী। এখানেই আছে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ‘আর্চ অব এক্টেসিফন’। ধনুকের মতো বাঁকা খিলানওয়ালা এই প্রাসাদটি গুরুত্বপূর্ণ এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ১২২ ফুট চওড়া এবং ১৫৮ ফুট উঁচু এই খিলানটি আজও বিশ্বের সবচেয়ে বড় খিলান। এখানেই রয়েছে হজরত মুহম্মদ (স.)-এর অন্যতম সঙ্গী সালমান পাকের সমাধিস্থল।
টাইগ্রিস নদীর উত্তর-পূর্ব পাড়ে অবস্থিত ছোট্ট এ শহরটির সৌন্দর্য ও গৌরবকে নষ্ট করেছে ইরাক- ইরানের যুদ্ধ। তবুও যা বাকি ছিল, সেটুকুও একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে মার্কিন সামরিক অভিযান। এখনও মাদাইনে ধর্মীয় উগ্রপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম আছে সন্দেহে সে এলাকায় চলে নিয়মিত সামরিক টহল। জাদুঘর থেকে লুট হয়েছে অসংখ্য প্রত্নসম্পদ। বাকি যা আছে, তারও নেই কোনো যত্নআত্তি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় খিলান আর্চ অব এক্টেসিফনকে আজও ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বঐতিহ্যের অংশ হিসেবে। আর এটিকে বিশ্বঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দেয়ার জন্য ইউনেস্কোর কাছে এখনও আবেদন করেনি সেদেশের সরকার।
থমথমে মাদাইনে এখন আর নেই পর্যটকের কলরব। নেই পর্যটনকে ঘিরে বাণিজ্যিক প্রসার। মাদাইন যেন আজ এক ভূতুড়ে নগর; পরিত্যক্ত জনপদ। সূত্র : ডিডব্লিউ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




