somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঁশি থেকে স্টেনগান

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দু'দিন আগে পূর্ণিমা গেল।সে রাত্রি যেন ছিল নিসর্গ প্রেমিক কবি জীবনানন্দের কাব্যকল্পের উৎকৃষ্ট প্লটেরই মত।অবশ্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষই তো কবি।তাদের কাব্যের ভাষার নাম বাংলা ভাষা,তাদের একমাত্র ধর্মের নাম ভালবাসা।সে ভালবাসা কতই না বৈচিত্র্যময়! আজ রাতটিও সুন্দর।এখন আমি আপনাদেরকে যেখানে নিয়ে যাব সেখানকার সবারই আরেকটি পরিচয় আছে, তারা সবাই সঙ্গীতশিল্পী। চাঁদের আলো খানিকটা কম হওয়ায় আজ রাতটি তাদের সঙ্গীতের রাত। এদেরকে 'মুক্তিযোদ্ধা' নাম দেয়া হয়েছে। আর এদের অন্যতম বাদ্যযন্ত্রের নাম মেশিনগান।এরা যে গান গায় তার নাম মুক্তির গান। সাতকোটি মানুষ এদের গান শুনে উদ্বীপ্ত হচ্ছে।আমি চলমান মুক্তিযুদ্ধের একটি গেরিলা বাহিনীর সামনে আপনাদের নিয়ে এসেছি।সোনাপুর গ্রামের দক্ষিন-পশ্চিম কোনে একটি প্রাকৃতিক বন আছে।গ্রামের সে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রশস্ত একটি খালকে এই বনটি'ই যেন আড়াল করে রেখেছে।এ বনটির ভেতরে- যেখানে বাঁশ ঝাড়ের ছড়াছড়ি সেখানেই অস্থায়ী ক্যাম্প করেছে ওরা। জায়গাটি নির্জন তাই পাহারা বা টহল দেওয়ার ঝামেলাও নেই।আর সোনাপুর গ্রামটিও রাজাকারদের দ্বারা পাক-বাহিনীর আতিথেয়তার বলি হয়ে আজ এক মহাশ্মশানে পরিনত হয়েছে।

গেরিলা দলটি আজ একটি অপারেশনের পরিকল্পনা ঘেঁটে দেখছে।দুদিন যাবৎ এরা এখানে সার্বিক পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে। খালটির ওপারে পাক-সেনাদের একটি মাঝারী আকারের ঘাটি।এই জেলার অন্যতম শক্ত ঘাটি। জনা-পচিশেক সেনা।কিন্তু এপারে গেরিলারা সংখ্যায় মাত্র বারোজন। সেটার চেয়েও বড় সমস্যা হচ্ছে পাকসেনাদের ঐ ঘাটির বাইরে তিন-চারজন রাজাকার ঘুরঘুর করে।ঘাটিতে আঘাত হানার আগে এদের কাঁটতে হবে।কমান্ডার সাখাওয়াত শরীফ এসব বিষয় নিয়েই এখন কথা বলছেন।দলের সর্ব কনিষ্ঠ সদ্স্যটি বাদে সবাই তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনছে।অন্যমনস্ক ছেলেটির নাম রতন।বয়স একুশ বছর।সে কি এমন ভাবছে অমন করে? আসুন আমরা তার মনোজগৎ-এ একটু ঘুরে আসি।
-মা!তোমার মনে পরে, এমন চাঁদনী রাতে আমি বাঁশি বাঁজাতাম? তুমি সারাদিন খাটাখাটি করে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পরতে।খুকু'কে নিয়ে।আমি তোমায় ফাঁকি দিয়ে দূরের হিজলের ভিটেটিতে চলে যেতাম।পরানকাকা'র খড়ের পালায় আমি গা এলিয়ে দিতাম।তুমি আমায় বারন করতে,দেখাতে সাপের ভয়।যদি কামড়ে দেয়?আমি তবুও যেতাম।মাঝেমধ্যে নৌকায় করে সেই ঘুটঘুটে অন্ধকারেও কোথায় কোথায় যে হারিয়ে যেতাম! বাঁশি বাজাতাম। ভাবতাম তুমি হয়ত শুনতে পাবে না। পেতে কি মা? আজ কি পাও? মা! তুমি আমায় বাঁশি বাজাতে কখনও না করনি। শুধু একদিন বলেছিলে,-দেখিস, আদুরীকে আবার কখনও আবার বাঁশি শোনাতে যাস নে।আমি তোমার কথা বুঝি নি।আদুরীকে আমার ভাল লাগত, সেটা বুঝি তুমি জানতে? ওকে যখন খুব দেখতে ইচ্ছে করত তখনই আমার বাঁশি বেঁজে উঠত। ও বুঝত না জানি, তুমি কি বুঝতে মা? খুকুকে নিয়ে তুমি আজ কোথায় আছ?
রতন এসব ভাবছে। তার কষ্ট হচ্ছে, তবুও ভাবছে। চোখ ভিজে যাচ্ছে জলে।সে মুছবার চেষ্টাও করছে না।ভেজা চোখেই সে মায়াবী চাঁদের দিকে তাকায়। মেঘমুক্ত আকাশে কাকে কাকে যেন সে খুঁজে ফেরে। চাঁদটি পুর্ণ চাঁদ নেই। খানিকটা বাঁকা আজ। সে বাঁকা চাঁদের ছবি-ই তার চোখের জলে প্রতিসরিত হয়ে দৃশ্যমান হয়। চাঁদটিকে হঠাৎ পূর্ণচন্দ্র মনে হয়।
-রতন! কমান্ডার শরীফের ডাকে ঘোর কাটে রতনের।সে গলাটা খাকারী দিয়ে কি যেন বলতে যায় কিন্তু পারে না। কন্ঠ সাড়া দেয় না।
-তোমরা সবাই ঘন্টাখানেকের ভেতরে ব্যক্তিগত কাজগুলো করে ফেল।গেরিলাদের বললেন শরীফ। আমরা রাত দেড়'টায় খাল ক্রস করব।তারপর দরকার মত ক্রলিং করে এগুবো। আড়াইটায় ঘাটি উড়িয়ে দেব। নিজেরা শেষ হব, তবু ওদের একটাকেও আগামী দিনের সুর্য্য দেখতে দেব না।বলে শেষ করেন শরীফ। তার কথা শুনে রতনও ব্যস্ত হবার চেষ্টা করে। শরীফ রতনের কাধে হাত রাখেন।
-ওরা তোমার বিধবা মাকে মেরেছে।ছোট্ট বোনটিকে মেরেছে।তোমার প্রিয় সবাইকে মেরেছে।তুমি মামাবাড়িতে ছিলে।বেঁচে গেছ।তাই প্রতিশোধ নিতে যুদ্ধ করছ। আজ তোমার কি হয়েছে রতন? ভাঙ্গা'র অপারেশন-এ আমি যে সাহসী রতনকে দেখেছি সে কি তুমি? আমি এই অপারেশনে তোমাকেই বিশেষভাবে বেছে নিয়েছি।তারপর রতনের সুঠাম শরীরটা ঝাঁকিয়ে,-কি হয়েছে রতন? তুমি পারবে না ওদের শেষ করতে?
-পারব শরীফ ভাই।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার স্টেনগান বাজবে।ওদের মারতেই আমি বাঁশি ছেড়ে স্টেনগান হাতে নিয়েছি। বলেই স্টেনগানটি দিয়ে বুকে কয়েকবার চাপড় মারে রতন।দেখে কমান্ডার শরীফ আপ্লুত হন।

প্রথমে এই খালটি পার হতে হবে।এক হাতে বন্দুক নিয়ে সবাই ঐ পাড়ে যাবে। প্রস্তুতি শেষ। রতন কোন এক ফাঁকে কলাগাছের একটি ছোট ভেলা তৈরি করে ফেলেছে।এই ভেলায় অস্ত্র-সস্ত্র যাবে ঐ পাড়ে।এই খালে নৌকা চলাচল সন্দেহজনক তাই এই ভেলা। রতন নিজ থেকেই কাজটির ভার নিয়েছে। দু'মিনিটের মাথায় সবাই জলে নামল। রতন ভেলা ভাসাল।এটিকে সাঁতরিয়ে সাঁতরিয়ে ঐ পাড়ে নিতে হবে। হাল্কা স্রোত বইছে খালে। সাঁতরানো কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে।এমন সময়ই অদ্ভূত এক অনুভুতির আবেশ ঘিরে ধরল তাকে।তার মনে হল সে একই সাথে অতীত আর বর্তমানের কোন এক সরু সরলরেখা বরাবর অগ্রসর হচ্ছে।সে ভাবল এভাবে সে আগেও সাঁতরে খাল-নদী পারি দিয়েছে।রতন অগ্রসর হতে থাক। চলুন আমরা ওর ভাবতে থাকা অতীত হতে একটু ঘুরে আসি।

পাঁচ বছর আগের অতীত। গ্রামের প্রায় সবাই রতনকে রাখাল বলে ডাকে। সে সেই সকালে গরু নিয়ে বন্ধুদের সাথে বের হয়।নতুন নতুন চারন ক্ষেত্রে ঘুরে বেড়ায়। ডানপিটে হওয়ায় তার শরীরও শক্ত-সমর্থ, সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়। সে খেলতে পারে-ক্ষেতে কাজ করতে পারে-গরু চরাতে পারে। তবে গাঁয়ের মানুষ তার বাঁশি বাজানোর গুনটিকে খুব সাদরে প্রশংসা করে। কেউ শুনতে চাইলে সে নির্দ্বিধায় বাজিয়ে শোনায়। যখন সে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে তখন সে তার বাঁশিটি মাজায় গামছা দিয়ে বেধে রাখে।গরু নিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায় যায়। সে জন্যে দরকার পড়লে সে খালও ঝাপায়। এক পাল গরু আর একটি ক্ষুদে ছেলের এই খাল সাঁতরিয়ে পারি দেয়ার দৃশ্য সবার কাছেই দারুন উপভোগ্য। এরকমই একদিনে। সে গরু সমেত সাঁতরে একটি চওড়া খাল পারি দিচ্ছে।ওপারের মানুষ মজা নিচ্ছে। গরুগুলোও প্রাণপণে সাঁতরাচ্ছে।রতন মাঝেমধ্যে কোন কোন গরুর গলা জড়িয়ে ধরছে।অবশেষে সে অপর তীরে পৌছায়।তারপর সে সাথের গামছা নিঙ্গড়ে নেয়, গা মুছে ফেলে সে গামছা দিয়ে।তারপর সে গামছাটি পাশের একটি ঢোল-কুমড়ী গাছের ব্যাড়ায় মেলে রাখে।রোদে শুকাবে বলে।তারপর গরুগুলো জায়গা মত ছেড়ে দিয়ে সে খালের পাড় ঘেষে হেলে থাকা একটি ডুমুর গাছের গুড়িতে বসে। গাছটির শিকড় খালের জল ছুয়ে আছে।রতন গাছের ছায়ায় বসে। রতনের এসব কর্মকান্ড কয়েকদিন যাবৎ পর্যবেক্ষন করছিল একটি কিশোরী মেয়ে।আজকেও। রতন গাছের গুড়িতে পিঠ এলিয়ে দেবে; এমন সময় সে নূপূরের ধ্বনি শুনতে পেল। আশেপাশে তাকিয়ে কাউকেই দেখতে পারল না সে।পরিবেশ স্বাভাবিক করতেই যেন সে বাঁশি হাতে নিল। মনের সুখে অনেকখন বাজাল। হঠাৎ তার কোলের উপর একটি রক্ত-গন্ধা ফুল এসে পড়ল। রতন উঠে দাড়াল।তারপর দিক ঠিক রেখে সেদিকে ছুটল। দেখল একটি মেয়ে। ভয় পেয়ে মেয়েটিও নিজেকে লুকাতে বিপরীতমুখে ছুটল। রতন মেয়েটিকে দেখতে পারল না।চপলা মেয়েটি থামল কিছু একটা ভেবে।ঘুরে রতনকে একটু দেখে নিল সলাজ চোখে। তারপর আবার দৌড়ালো। এবার তার ভেতর ভয় নয়, লজ্জা কাজ করল।রতন প্রথমবারের মত শ্যামা মেয়ে আদুরীকে দেখতে পারল। সেদিনের পর থেকে তার বাঁশিও উদাসী হল।

তিনজন রাজাকারকে মারার পর পাক-ঘাটিতে অতর্কিত আক্রমণ করেছে কমান্ডার শরীফের গেরিলারা। গুপ্ত গ্রেনেড-হামলার মাধ্যমে শুরু। প্রথমেই দু'পাশের বাংকার উড়ে গেছে। ঘাটির প্রধানের শীতনিদ্রা আর ভাঙ্গে নি। প্রথম ধাক্কাতেই পাক সেনারা ঘাবড়ে গেছে। রতনের স্টেনগান কাঁপছে। সাবলীল ভঙ্গীতে। ভীষন তার শব্দ। ভয়াবহ তার সুর। বাঁশির সুর আর স্টেনগানের শব্দের একটি মিল খুঁজে পায় রতন। বাঁশি বাজানোর মত এখনও তার কেন জানি আনন্দ-বেদনা মিলে এক বিশেষ মানবিক অনুভুতির আবেশ হচ্ছে। গুলির ঝলকানিতে থেকে থেকে আলোকিত হচ্ছে তার মুখমন্ডল। সে মুখের বিজয়োল্লাস দেখার সুযোগ অবশ্য কোন পাক সেনার হয়নি।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬


আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×