প্রথমতঃ কার্যকারন- বিধির আইন অথবা কারনতাঃ (Cosmological Argument) কার্যকারণ বিধির স্রষ্টা কে ?
একজন মানুষ কিংবা একটি বিড়ালের কথা বিবেচনা করি। এরা প্রত্যেকেই নিজস্ব কার্যকারণ বিধির অধীন। যেমন, মানুষ কলম দিয়ে লিখতে পারে, বিড়াল তা পারে না। মানুষ তরমুজ খেলেও বিড়াল তরমুজ খায় না। ইত্যাদি। প্রশ্ন হলো, এই নিয়মগুলো তৈরী করেছেন কে ? মানুষের জন্য কার্যকারণ বিধি তৈরী করেছেন কে ?
মানুষের জন্য কার্যকারণ বিধিকে তিনিই তৈরী করেছেন, যিনি মানুষকে তৈরী করেছেন। এবং এটিই যুক্তিযুক্ত। কারণ যিনি মানুষকে তৈরী করেছেন, তিনিই মানুষের সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। সুতরাং, মানুষের জন্য বিধি তৈরী করাও কেবল তাঁর পক্ষেই সম্ভব।
অতএব, মানুষের স্রষ্টা ও তার (মানুষ) কার্যকারণ বিধির স্রষ্টাকে একই হতে হবে। [The creator of human and the creator of cause and effect law (for human) must be the same existence.]
এখন আসি আর্গুমেন্টএ
কোন কিছু ঘটার জন্য অবশ্যই সেখানে একটি কারন থাকতে হবে । আমরা যাই দেখি না কেন তা অস্তিত্তে এসেছে কারন এরা সৃষ্টি হয়েছে অথবা কিছু ঘটনা ঘটেছে যার কারনে এটি অস্তিত্তে এসেছে ।
আর সবকিছুর জন্য ultimate কারণই হল এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা
নাস্তিকরা প্রশ্ন করে বসে থাকতে পারে যে এই ঈশ্বর বা স্রষ্টা কে সৃষ্টি করেছে?
এর উত্তর সহজ
আপনি এখন ঐসকল নাস্তিকদের কে প্রশ্ন করবেন আমাদের মহাবিশ্ব Finite or infinite?
এর তিনি সম্ভবত বলবে আমাদের মহাবিশ্ব Finite বা সসীম
ঠিক আমাদের মহাবিশ্ব সসীম। অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন আমাদের মহাবিশ্ব সসীম এটি বিগ ব্যাং দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং এর এখন সম্প্রসারণ ঘটেছে।
বিজ্ঞানীরা একমত যে এটা শুধুমাত্র বস্তু ছিল না এমন কি এটা ছিল মহাবিশ্বের আইন ( The Laws of The Universe) যা অস্তিত্তে এসেছে ।
সেইজন্য মহাবিশ্বের আইন ছিল সসীম মহাবিশ্বের মধ্যে যা একটি স্থান-কাল continuum সাথে গঠিত হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায় যে স্থান কাল এই মহাবিশ্বের মধ্যে একত্রে যুক্ত। অধিকাংশ বিজ্ঞানীই এতে একমত হয়েছেন । স্রষ্টা এই মহাবিশ্বের মধ্যে নেই অর্থাৎ তিনি স্থান কালের উর্ধ্বে।সেইজন্য তিনি স্থান ও কাল দ্বারা বাধ্য নন বা সীমাবদ্ধ নন , তাঁর কোন শুরু হয়নি এবং ফলাফল স্বরূপ তাঁর জন্য কোন স্রষ্টার প্রয়োজন হয় না।যেহেতু তিনি সবরকম সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত)। সুতরাং তাঁর পক্ষে সময়ের উর্ধ্বে থাকা সম্ভব, এবং এটা হতেই হবে।
সুতরাং, অপরিহার্য সত্তা সৃষ্টি, ধ্বংস ও সময় থেকে মুক্ত।
অর্থাৎ, সৃষ্টি, ধ্বংস, উৎস, সময়, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ – এই কথাগুলো তাঁর জন্য প্রযোজ্য নয়।
অতএব –
১. তাঁর সৃষ্টি হয় নি, কিন্তু তিনি অস্তিত্বমান
২. তাঁর ধ্বংস হবে না, তিনি সদা অস্তিত্বমান
৩. "তাঁর আগে" বলে কিছু থাকতে পারে না
৪. “তাঁর পরে” বলে কিছু থাকতে পারে না
৫. "তাঁর উৎস" বলে কিছু থাকতে পারে না
দ্বিতীয়তঃ যথার্থতা এবং মহাবিশ্বের মধ্যে ডিজাইনঃ (Teleological Argument): স্রষ্টার অস্তিত্তের দ্বিতীয় প্রমান হল মহাবিশ্বের জটিল, যথার্থ ডিজাইন । একে আমরা ‘intelligence’ ডিজাইন বলে ব্যখ্যা করতে পারি। আর এই ‘intelligence’ একজন ‘intelligent' কে ইঙ্গিত বা নিয়ে আসে;আর তিনি হলেন স্রষ্টা।
তৃতীয়ত; পৃথিবীতে কিছু ভাল মানুষ এসেছিল যারা দাবি করেছে তারা স্রষ্টার মেসেঞ্জার আর স্রস্টার পক্ষ হতে প্রেরিতঃ এরা ছিল স্রষ্টার মেসেঞ্জারঃ নূহ, ইব্রাহিম,মুসা, ডেভিড বা দাউদ, সোলমান,জসেপ,জেকব, জেসাস এবং সর্বশেষ মুহাম্মাদ{ শান্তি বর্ষিত হোক সবার উপরে}
তারা কি স্বাভাবিক,পাগল,ছিল? তারা ছিল অবিশ্বাস্য ভাবে ভাল লোক ও সত্যবাদী।। তাদের মধ্যে যদি একজনও সত্যবাদী হয় তাহলেই স্রষ্টা আছে।
এখন আলোচনা করব উলিয়াম লেন ক্রেগ এর বিখ্যাত kalam cosmological Argument:
১.যার শুরু আছে,তার পিছনে একটি কারন রয়েছে।
২. আমাদের আজকের এই মহাবিশ্বের একটি উৎপত্তি আছে।
৩. সুতারাং এই মহাবিশ্বের পেছনে একটি কারন আছে।
৪. সেই কারটিই হল “ঈশ্বর’’