somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি রং সাইড দিয়ে যাব, তুই আটকানোর কে?

০৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আ’লীগের নেতা বলে কি দেশটা তার পৈত্রিক সম্পত্তি নাকি? কোথায় একজন সৎ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে যেখানে তাকে পুরস্কৃত করার কথা সেখানে রমনা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোখলেসুর রহমানের গাড়ি আটকে দেয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে রমনা থানাকে। রং সাইড দিয়ে যেতে না দেয়ায় পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসআই খোরশেদকে বলেন, ‘এসআই হয়ে এত উত্তেজিত হইসো কেন? তুমি নিয়ম জানো না? তোমার জন্য অন্যদের কথা শুনতে হবে।’

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানীর ওয়ারলেস মোড় থেকে মগবাজার পথে উল্টো দিক থেকে আসতে দেখে একটি প্রাইভেটকার আটকে দেন সেখানে দায়িত্বরত এসআই খোরশেদ আলম।

তখন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট ছিল। রমনা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোখলেসুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে আসেন। শুরু করেন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। ‘আমি রং সাইড দিয়ে যাব। তুই আটকানোর কে? আমাকে চিনোস? তুই সাব-ইন্সপেক্টর কোথা থেকে আসছিস …’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এসআই খোরশেদের দিকে তেড়ে আসেন। তাকে মারার জন্য আশপাশে লাঠি খুঁজতে থাকেন। কিন্তু পিছপা হননি পুলিশের এ সদস্য। আত্মরক্ষায় নিজের অস্ত্র বের করেন। পরে অবশ্য সঙ্গে থাকা কনস্টেবলরা তাকে থানায় নিয়ে যান।

বুধবার একান্ত আলাপকালে ঘটনার বর্ণনা দেন এসআই খোরশেদ। নিজের ‘অসহায়ত্ব’ ও থানার ‘অসহযোগিতা’র কথাও ফুটে ওঠে তার কথায়। খোরশেদ বলেন, ‘২০১৪ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেই। সেই থেকে সেবা দিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত আদর্শ হারাইনি। রং সাইড দিয়ে যেই আসুক, আমি থাকা অবস্থায় কাউকে যেতে দেব না, সাধারণের ভোগান্তি বাড়াতে দেব না।’

‘গতকাল (মঙ্গলবার) ইফতারের ঠিক আগে রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট ছিল। গাড়িটি মগবাজার ওয়ারলেস হয়ে রং সাইড দিয়ে প্রবেশের সময় আমি বাধা দেই। প্রথমে গাড়িচালক এসে আমাকে অনুরোধ করেন কিন্তু আমি যেতে দেইনি। বলেছি, ইফতারের আগে কোনোভাবেই রং সাইড দিয়ে যাওয়া যাবে না। এরপর আওয়ামী লীগের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী এসে জোরপূর্বক গাড়িটি রং সাইড দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর ১৫-২০ জন এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তাদের একজন অপরজনকে আমাকে মারার জন্য লাঠি আনতে বলে। তারা এমনভাবে ঘিরে রেখেছিল যে, কাউকে ডাকব সেই সুযোগও ছিল না। আমি তখন আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র বের করি। পরে পাশে থাকা তিন কনস্টেবল আমাকে নিয়ে গাড়িতে থানায় আসেন।

এসআই খোরশেদ বলেন, ‘থানায় গিয়ে ওসি (মশিউর রহমান) স্যারকে পুরো ঘটনা বলি। ডিসি মারুফ হোসেন সরদার স্যারকেও (রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার) ফোনে সব ঘটনা বলি। ডিসি স্যার বলেন, ‘দেখছি’।

এ বিষয়ে জানতে রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদারকে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। আজ পত্রিকাও পড়িনি। পত্রিকা পড়ে বলতে পারব, আসলে কী হয়েছে?’

বিষয়টি সুরাহা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুপক্ষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তদন্তের পর দেখা যাবে কার কী দোষ ছিল।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতাকে রং সাইড দিয়ে যেতে না দিয়ে উল্টো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে রমনা থানাকে। রং সাইড দিয়ে যেতে না দেয়ায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এসআই খোরশেদকে বলেছেন, ‘এসআই হয়ে এত উত্তেজিত হইসো কেন? তুমি নিয়ম জানো না? তোমার জন্য অন্যদের কথা শুনতে হবে।’

এসআই খোরশেদ বলেন, ‘সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে পুলিশে কাজ করতে এসেছি। দেশ ও জনগণের স্বার্থে কখনোই কারও কাছে মাথা নত করব না। হতে পারে রং সাইড দিয়ে যেতে না দেয়ায় আমার পোস্টিং হবে। কিন্তু আমি এসব তোয়াক্কা করি না। এরপরও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’

এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও রমনা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোখলেসুর রহমানকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে একটি গণমাধ্যমকে তিনি জানান, ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে তার গাড়িটি রং সাইড দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ আটকালে তিনি নিজে নেমে যেতে দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ কোনো কথা না শুনলে সেখানে অনেক লোক জড়ো হয়। ওই পুলিশ সদস্যের ব্যবহারও খুব খারাপ ছিল।#

সূত্রঃ অনলাইন গণমাধ্যম।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×