ছোটবেলা থেকেই একটা প্রশ্ন আমাকে প্রায়ই বিচলিত করত। আমি আগে কি? মানুষ, মুসলমান নাকি বাঙালি? বহুদিন এর সঠিক উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছি। হঠাৎ মনে হল কেন আমি এরকম বিভ্রান্তির পেছনে ছুটছি? সত্যিকারের মুসলমান হলে আমার কাছে সব পরিচয়ই এক। আল্লাহর সব সৃষ্টিই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক মুসলমান হচ্ছেন ইসলামের এক একজন প্রতিনিধি, আহবানকারী। গত কয়েকদিনে সারাদেশে জামাতের তান্ডব দেখে অনেক কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যে ওদের দলের নামের সাথে 'ইসলাম' শব্দটা যুক্ত আছে যা আচরণগত দিক দিয়ে ঠিক তাদের বিপরীত।
যারা ইসলামের ইতিহাসের সাথে পরিচিত, তারা জানেন জোর করে চাপিয়ে দেয়ার ধর্মের নাম ইসলাম না। ইসলাম দাওয়াতের ধর্ম, শান্তির ধর্ম। আর যারা এই ধর্মের লেবাস পরে ভন্ডামি করে তারা মুনাফিক। আল্লাহ নিজেই বলেছেন দুই প্রকার ইবাদাতের কথা- হাক্কুল্লাহ এবং হাক্কুল ইবাদ। একটি আল্লাহর ইবাদত এবং অপরটি আল্লাহের সৃষ্টিসমূহের প্রতি কর্তব্য। এবং আল্লাহ এও বলে দিয়েছেন, আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে কোন ভুলত্রুটি হলে আল্লাহ চাইলেই তা ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু তার বান্দার হক যদি কেউ নষ্ট করে তবে সেই মজলুম বান্দা না চাইলে আল্লাহ জালিমকে কোনদিন ক্ষমা করবেন না। দূর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে অধিকাংশ মুসলমান আল্লাহর ইবাদাত ষোল আনা পূরণ করলেও তার বান্দার হক আদায়ে ততটা গুরুত্ব দেয় না।
যেই দেশের ৯১% মানুষ মুসলমান সেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার চলা মানে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া- আমরা আমাদের ধর্ম থেকে কতটা পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েছি!! প্রতিবেশি যেই হোক, তার সুরক্ষার নিশ্চয়তা আমাদেরকেই দিতে হবে। সে কোন ধর্মের চেয়ে বড় কথা হচ্ছে সে মানুষ। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুক সঠিক পথে চলার। জামাত-শিবির নামক মুনাফিক দ্বারা আর কতবার ধর্ষিত হবে আমাদের দেশ?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



