somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুগে যুগে বাংলা সংস্কৃতি ধ্বংসের পায়তারা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সর্বপ্রথম পহেলা বৈশাখ চালু করেন সম্রাট আকবর। তখন থেকেই পহেলা বৈশাখ বাংলার সকল সম্প্রদায়কে একই বন্ধনে আবদ্ধ করে। কিন্তু আইয়ুব খান ১৯৬৭ সালে পহেলা বৈশাখ পালনকে হিন্দু সংস্কৃতির প্রভাব বলে আখ্যা দেন। এর পিছনে কিছু কারন ছিল। আইয়ুব সরকার দেখতে থাকে এই উৎসব ক্রমে বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসবে পরিনত হচ্ছে, এর প্রভাবে বাঙ্গালীরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। আর যেহেতু সমগ্র পাকিস্তানে ইসলাম ধর্মের মানুষ বেশী ছিল তাই কৌশলে পহেলা বৈশাখ পালন কে হিন্দু সংস্কৃতি বলে, তা থেকে মুসলমানদের দূরে রাখরা চেষ্টা করেছেন। তিনি চিন্তা করেছিলেন এর ফলে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ সৃষ্টি হবে আর সে ফায়দা লুটবে। মূলত আইয়ুব খানের এরুপ ঘোষণা ছিল বাঙ্গালী জাতির শত বছরের সাংস্কৃতির মূলে কুঠারঘাত।
এরও আগে ১৯৪৯ সালে বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়। এর কারন হিসেবে দেখান হয় যে, বাংলা বর্ণমালার কতিপয় সংস্কৃত বর্ণ আছে যেগুলো হিন্দুরা ব্যবহার করে। তাই বাংলাকে সংস্কৃত মুক্ত তথা পবিত্র করার লক্ষ্যে এ ভাষার বর্ণমালার সংস্কারের প্রয়োজন। ভাষা সংস্কার কমিটি বাংলা বর্ণমালা থেকে ঈ,ঊ,ঐ,ঙ,ঞ,ম,ষ,ঢ়,ক্ষ,ৎ,ঃ বর্ণ বাদ দিয়ে অ্যা বর্ণ যুক্ত করার পরামর্শ দেয়। সচেতন বাঙ্গালীরা আইয়ুব সরকারের ফাদে পা দেয় নি। বাঙ্গালীরা এটা করতে দেয় নি। কিন্তু তা পরও যে আইয়ুর খান ষড়যন্ত্র থেকে পিছুহটেনি। ষড়যন্ত্র লেগেই ছিল। এই পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে আইয়ুব খান ১৯৫৯ সালে রোমান হরফে বাংলা ও উর্দূ লেখার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং একটি কমিটি গঠন করেন। তা ব্যর্থ হয়, ১৯৬৮ সালে আবার রোমান হরফে বাংলা লেখার উদ্যোগ গৃহীত হয়। আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের অপরাধে সরকার ১৯৬৬ সালে ইত্তেফাক সহ প্রগতিশীল বিভিন্ন প্রকাশনা নিষিদ্ধ ষোষণা করে। ১৯৬৯ সালের শেষের দিকে বাংলা ভাষার বিভিন্ন পুস্তুক বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং এগুলোর প্রকাশনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ গড়ে তোলার পিছনে রবীন্দ্রনাথের উৎসাহ অনুপ্রেরণা হিসবে কাজ করে বিধায় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগণ প্রথমে ১৯৬২ সালে পরবর্তিতে ১৯৬৭ সালে আবার রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তার পরও বাঙ্গালীদের দমিয়ে রাখা যার নি। বাঙ্গালীরা নিজস্ব গতিতে এগিয়ে গেছে কি হিন্দু কি মুসলমান, সবাই কাধে কাধ মিলিয়ে একসাথে সামনে এগিয়ে গেছে।
>
>
>
উপরক্ত কথা গুলো এজন্যই বলা হল যে, এই দেখুন আর কয়েক দিন পর বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব "পহেলা বৈশাখ"। আর এর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধবাদিরা এখনো সোচ্চার।,এখনো তারা বলে চলছে এটা হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি, বিজাতীয় সংস্কৃতি, ইসলামে এটাকে না জায়েজ বলা হয়েছে, ইত্যাদি বলে বাংলার মানুষকে আবার ও সাম্প্রদায়ীক মনেভাব গড়েতুলার পায়তারা করছে।
এ সব কিসের লক্ষণ? এদের সাথে আইয়ুব সরকারের কি কোন মিল খুজে পান? মূল কথা হচ্ছে এরা এখনো বাংলাকে মেনেনিতে পারে না, এরা অন্তরে এখনে পাকিস্তান ধারন করেন। এদেশকে এরা এখন বাংলাস্তান বানাতে চায়।
আশা করি আমারদের বাঙ্গালীরা আগের চেয়ে অসচেতন নয় বরং আগের চেয়ে অনেক অনেক গুন বেশী সচেতন। তারা কখনই আমাদের শত বছরের সংস্কৃতি ধ্বংস হতেদিবে না। এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে, ১৯৬৭ সালে আইয়ুব সরকার যা করতে পারেনি আজ ২০১৬ তে এসে কি ভাবে পারবে?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৬
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×