আজকের তাজা খবর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে মাশরাফি আউট, আশরাফুল ইন। তো যাইহোক, আমি এখন আপনাদের একটা গল্প বলবো (নেট থেকে প্রাপ্ত, কেউ আগে পড়ে থাকলে সরি), একটু পড়েন মন দিয়ে। গল্প শেষে আশরাফুল কেমন করে গল্পের একটা অংশ হয়ে গেল, তা নিজ চোখেই দেখেবেন।
কোরবান স্কুলে পড়ে। ক্লাসে তার পারফর্মেন্স খুবই ভাল। তবে একটা সমস্যা বার বার দেখা দেয়। বাংলা ক্লাসে শিক্ষক তাকে যে রচনাই লিখতে দিক না কেন, সে কুমিরের রচনা লিখে। তার মনে হয়, ঐ একটা রচনাই ভাল করে মুখস্ত আছে।
একদিন এর ঘটনা, স্যার ক্লাসে গরুর রচনা লিখতে দিয়েছে। কোরবান লিখেছেঃ
“গরু একটি উপকারী প্রানী। গরুর দুটি পা, দুটি লেজ আর একখান কান আছে। ঘাস গরুর প্রধান খাদ্য। তাই বলে কেউ গরুকে ঘাস খাওয়াতে নদীর তীরে বেধে রাখবেন না, কেননা, নদীতে কুমির আছে।
আর আমরা জানি, কুমির একটি হিংস্র প্রাণী। কুমিরের চারটি পা, একটি লেজ এবং মুখ ভর্তি অতি ধারালো দাত আছে। সারা শরীরে কাটা কাটা কাটা.........” ইত্যাদি ইত্যাদি।
যদি এইটুকুই ঘটনা হতো তাহলেও শিক্ষক হয়তো এতোটা বিরক্ত হতো না। কিন্তু আরেকদিন সেই শিক্ষক লিখতে দিয়েছে বাড়ির রচনা। কোরবান লিখলোঃ
“বাড়িতে আমরা মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে বসবাস করি। বাড়ি আমাদের নিরাপদ আশ্রয়। তাই নদী-নালার ধারে বাড়ী বানানো উচিত নয়। কেননা, নদীতে কুমির আছে।
আর আমরা জানি, কুমির একটি হিংস্র প্রাণী। কুমিরের চারটি পা, একটি লেজ এবং মুখ ভর্তি অতি ধারালো দাত আছে। সারা শরীরে কাটা কাটা কাটা.........” ইত্যাদি ইত্যাদি।
...........................
নিত্য কোরবানের এহেন আচরণে ক্লাস এর শিক্ষক খুবই ত্যক্ত বিরক্ত। তাই তিনি ঠিক করলেন কোরবান কে এমন একটি রচনা লিখতে দিবেন যেখানে সে কোনভাবেই কুমির প্রসংগ কান ধরে টেনে আনতে পারবে না। সেই অনুযায়ী, অনেক চিন্তা ভাবনা করে, একদিন তিনি ক্লাসে রচনা লিখতে দিলেন। বিষয়ঃ পলাশীর যুদ্ধ। কোরবান খুবি সোন্দর হস্তাক্ষরে রচনা লিখে নিয়ে আসলোঃ
রচনাঃ পলাশীর যুদ্ধ
ভূমিকাঃ পলাশীর যুদ্ধ বাংলার ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এই যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী ইংরেজ বাহিনীর নিকট পরাজিত হয় এবং বাংলা পরাধীন হয়ে পড়ে। বিশাল আকারের নবাব বাহিনীর জন্য এই যুদ্ধ জয় করা কোন ব্যাপারই ছিল না। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মীর জাফর কে বিশ্বাস করে যেন খাল কেটে কুমির ডেকে আনলেন।
আর আমরা জানি, কুমির একটি হিংস্র প্রাণী। কুমিরের চারটি পা, একটি লেজ এবং মুখ ভর্তি অতি ধারালো দাত আছে। সারা শরীরে কাটা কাটা কাটা......... ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই হল গল্প। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, আপ্নারা মনে হয় বুঝতে পারছেন। আমাদের নির্বাচক মন্ডলী এক একজন কোরবান। তাদের কে যে রচনাই লিখতে দেন, তারা কুমির মানে আশরাফুল কে নিয়ে আসেন। আর তাই, আমার খুব বলতে ইচ্ছা করে, নির্বাচক মন্ডলী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খাল কেটে কুমির (আশরাফুল) ডেকে নিয়ে আসলেন, আর তারফলে যা হবার তাই হবে এই বিশ্বকাপে, যেমনটি হয়েছিল, পলাশীর যুদ্ধে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:৪০