somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিগ ব্যাং এবং আমাদের পৃথিবী

১৩ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগ ব্যাং বিষয়টা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা আমাদের প্রায় সবারই আছে। সৃষ্টির শুরুটা হয় এখানে। বর্তমান দৃশ্যমান ও অদৃশ্য জগতের সবটাই শুরুতে একটি বিন্দুতে আটকে ছিল। হঠাৎ অকল্পনীয় গতিতে বিন্দু বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করল।
আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফে সৃষ্টির শুরুর ঘটনা ঠিক এভাবেই উল্লেখ করা আছে। সুরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছে_'অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে সব আকাশ এবং ভূমণ্ডল একটি একক ছিল এবং আমরা তাকে বিচ্ছিন্ন করলাম?' (২১:৩০)।
বিজ্ঞান একদিকে থাকুক, ধর্ম অন্যদিকে থাকুক। এ মুহূর্তে দুটিকে মেলানোর কিছু নেই। বিগ ব্যাং-এ ফিরে যাই। বিগ ব্যাং-এর পরপরই ফুটন্ত অগি্নগোলক কণার গতি ছিল আলোর গতির চেয়েও অনেক বেশি। তা কী করে সম্ভব? আমাদের আইনস্টাইন তো বলে গেছেন আলোর গতি ধ্রুবক। সেকেন্ডে এক লাখ ৮৬ হাজার মাইল থেকে বেশি কখনো হতে পারবে না। আইনস্টাইনের 'থিওরি অব রিলেটিভিটি' এবং 'স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি'র একটি আবশ্যকীয় শর্ত আলোর ধ্রুব গতি। সমস্যাটা কোথায়?
আইনস্টাইন এই সমস্যা জানতেন। পদার্থবিদ্যা যখন নিউটনকে ছাড়িয়ে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় চলে গেল, তখনই অতি অদ্ভুত কারণে আইনস্টাইন শঙ্কিত বোধ করলেন। সম্ভাবনার বিজ্ঞানে তাঁর আস্থা ছিল না। কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় যেকোনো ঘটনার জন্যই দর্শক লাগবে। ঙনংবৎাবৎ ছাড়া ঘটনা কী, নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। আইনস্টাইন এতে বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, আমি আকাশের চাঁদের দিকে না তাকালে কি আকাশে চাঁদ থাকবে না?
এই মহান বিজ্ঞানী ধরে নিয়েছিলেন কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় সর্বনাশের ঘণ্টা বাজতে বাধ্য। কারণ, কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা আলোর চেয়ে বেশি গতিশীল বস্তু/শক্তিতে বিশ্বাসী। তা হতে পারে না। কারণ, আলোর গতি ধ্রুব। হায়রে কপাল! আধুনিক ল্যাবরেটরিতে আলোর চেয়েও বেশি গতির সন্ধান পাওয়া গেল। ভুবনখ্যাত বাংলা ভাষাভাষী লেজার বিজ্ঞানী মণি ভৌমিকের ভাষ্য_'বিশেষ ধরনের ক্রিস্টালের উপর তীব্র লেজার বিম ফেলে বিজ্ঞানীরা তৈরি করলেন একজোড়া যমজ ফোটন। যমজ ফোটন বলা হয় এই কারণে যে এদের মধ্যে থাকে কিছু পারস্পরিক সাধারণ গুণ। বিজ্ঞানীরা এবার যমজ ফোটন দুটিকে বিপরীত দিকে পাঠিয়ে দিলেন। এই দুটি ফোটনের কোনো একটির মধ্যেও ছিল না এমন কোনো প্রোপার্টি বা প্রধান ধর্ম, যা তাদের নিজস্ব। ওদের প্রতিটি প্রোপার্টি যুগপৎ সহবাস করছে দুটির মধ্যেই। অত্যন্ত আশ্চর্যের কথা হলো, যেই আমরা ওই যমজের একটির মধ্যে কোনো বিশেষ প্রোপার্টি মাপছি, যমজের অন্যটি মুহূর্তেই সাড়া দিচ্ছে কমপ্লিমেন্টারি প্রপার্টি দেখিয়ে। মহাবিশ্বের দুই বিপরীত দিকে যত দূরেই পাঠানো হোক, ওই যমজ ফোটনকে তারা মুহূর্তেই পরস্পরের প্রতি এভাবে সাড়া দিবে। এবং সাড়া দিবে মহাজাগতিক স্পিড লিমিট আলোর গতির চেয়েও অসামান্য গতিতে। বহু পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবারই পাওয়া গেছে এই ফল।'
এই দুটি ফোটন কণা কোনো না কোনোভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত। কিভাবে যুক্ত? মনে করা যাক যমজ ফোটন কণার একটি পৃথিবীতে অন্যটি এনড্রোমিডা ছায়াপথে। এদের ভেতরের দূরত্ব ২.৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। কিন্তু তারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত।

কল্পনাকে আরো ছড়িয়ে দিয়ে কি বলতে পারি যে আমরা সমগ্র মহাবিশ্বের সঙ্গে যুক্ত? শুধু যে এখন যুক্ত তা-ই নয়, অতীতেও যুক্ত ছিলাম, ভবিষ্যতেও যুক্ত থাকব। বিজ্ঞানে সময় বলে তো কিছু নেই।

বিদ্রঃ বিগ ব্যাং নিয়ে আমাদের সবার মাঝেই রয়েছে সীমাহীন কৌতুহল। এই লেখাটি হুমায়ুন আহমেদের একটা লেখার চৌম্বুক অংশবিশেষ ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:৩৯
২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×