somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপ্ত জীবন কাহিনী [ প্রথম পর্ব ]

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দিন যাবত ভাবছি আমার এই অসমাপ্ত জীবন নিয়ে কিছু একটা লিখি কিন্তু কি লিখব কোথা থেকে শুরু করব ভেবে পাচ্ছি না । ভাবতে ভাবতে আমার মত আমার গল্পটাও অসমাপ্তই রয়ে যাবে মনে চচ্ছে । তারপর একদিন লিখতে বসলাম ঘড়ির কাটায় রাত তখন ২ টা বাজে । আমি ভাবছি কিভাবে শুরু করব । ভেবে না পেয়ে আমার নিজের সম্পর্কেই লিখা শুরু করলাম । ঢাকার কাছেই কোন এক গ্রামে বেড়ে উঠা । আমি আমার পরিবারে বড় , আমার ছোট দুইটা বোন আছে । সব মিলিয়ে ছোটবেলা অনেক ভালই কেটেছে সবার যেমন কাটে আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না । অনেক দুষ্টমি , খেলাধূলা , মজা , হইহুল্লর আনন্দ কোন কিছুই কমতি ছিল না যাকে বলে দুরন্ত শৈশব । কোন জিনিসের অভাব কোনদিন উপলব্দি করি নাই যখন যা চাইতাম তাই পাইতাম । তারপর প্রথম যখন স্কুলে ভর্তি হলাম তখন আমি হয়ে গেলাম নতুন এক আমি । স্কুলে অনেক চুপচাপ শান্ত একটা ছেলে , কিন্তু বাড়ীতে ঠিক তার উল্টা । কেউ বিশ্বাসই করে না স্কুলের স্যার / ম্যাডাম আমি যে এতটা দুষ্ট ছিলাম । ছোটবেলা থেকেই আমি প্রচণ্ড রাগী ও একঘেয়ামি টাইপের ছিলাম । আমার যা মন চাইত তাই করতাম কারো কোন বাধা মানতে রাজি না । যাইহোক এমনি কেটে যাচ্ছে আমার স্খুল জীবন ততদিনে আমি দ্বিতীয় শ্রেনি উঠে গেছি । তখন আমি তত একটা ভাল ছাত্র ছিলাম না ক্লাসে আমার রোল ছিল ১২ । আর একটা কথা আমার বাবা – মা কেউ তেমন শিক্ষিত ছিলেন না । এর কারণে অনেকে যে সুযোগটা পায় আমি তার কিছু পাই নাই কিন্তু আমি আজও বলি আমি যেটা পাইছি সেটা আর কেউ পায় নাই । আমার গোটা ফ্যামিলির কাছে আমি ছিলাম অনেক আদরের একজন কারন আমি ছিলাম একমাত্র ছোট ছেলে আর কোন কেউ ছোট ছিল না তাই আদরটা একটু বেশিই পেয়েছি। আর একটা কথা ভুলে গেছি আমার তিন কাকা ও দুই ফুফু ছিল । তাদের কারো কাছেই আমার ভালবাসার কমতি ছিল না । এক একজন যেন একজনের থেকে বেশি ভালবাসতেন । আমার আরও একটা নাম ছিল ‘ পাগলা’ । যেহেতু আমার বেড়ে উঠাটা গ্রামে আমকে নিয়ে আমার মা – বাবার অনেকের কথা শুনতে হয়েছে আর সব আমার দুষ্টামি ও দুরন্তপনার জন্য । লেখাপড়া করতে আমার তেমন ভাল লাগত না এখনও লাগে না । অনেকের মুখে এটাও শুনতে হয়েছে আমার মাকে যেমন বাবা তেমনই হবে এই ছেলের লেখাপড়া হবে না এই সেই । কারো গ্রাম সম্পর্কে ধারণা থাকলে বুজবেন । তখন থেকেই এইকথা গুলা আমার খুব খারাপ লাগত । মা আমাকে শুধু একটা কথাই বুজাতেন আমি যেন মানুষের কথার জবাবটা দিতে পারি , তাদের কথা যেন সত্যি না হয় । একদিন কোন এক কারনে হইত দুষ্টামি করার জন্যই আমাকে অনেক শসন করলেন এবং মারলেম আর সারারাত বুজালেন সেই অশ্রুসিক্ত কথাগুলো আমি কোন দিন ভুলব না । এর আগে আমি জীবনে কোন দিন কারো মার খাই নাই সে দিনই প্রথম এতে আমার খুব রাগ হল এবং মনে মনে সিধান্ত নিলাম না আমি এখন থেকে ঠিক মত পড়ালেখা করব এবং আমার মায়ের স্বপ্ন সত্যি করব দেখব কি আছে এই পড়ালেখায় । তারপর তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলাম এবং আমার রোল নং ০৪ হল , ৪র্থ শ্রেণীতে হল ০২ এবং ৫ম এ ও সে দুই । সেই দুই দিয়ে আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবন শেষ ।
এরপর শুরু হাই স্কুল মানে মাধ্যমিক এর জীবন । ক্লাস সিক্স এ ভর্তি হলাম একটা সেন্টার স্কুলে । সেখানে কোন ভর্তি পরীক্ষা দিতে হত না যে আগে ভর্তি হবে তার রোল আগে হবে পরে পরীক্ষার মাধ্যমে রোল ঠিক করা হয় । এতে আমার রোল হয়ে যায় ক শাখায় ০৯ । তারপর আবার সে যুদ্ধ পড়ালেখার যুদ্ধ সে যুদ্ধে আমি ৪র্থ । এবাবে যুদ্ধ করে ক্লাস নাইনে এসে সে প্রথম হওয়ার স্বপ্ন পূরন হল । বলতে বলতে স্কুল জীবন শেষ করে ফেললাম অনেক কথা ভুলেই গেছি । আমাদের স্কুলে ছেলেমেয়ে আলাদা ছিল কারো সাথে কারো কোন দেখা হত না । আর আমি আবার একটু অন্য রকমের ছিলাম সবার মত না । বাইরের জগতের সাথে আমার তেমন কোন পরিচয় ছিল না । আমার জগৎ জুড়ে ছিল শুধু পড়ালেখা আর গান শোনা ও খেলা । গান আমার খুব পছন্দের গান শুনতে খুব ভাল লাগত । দুনিয়া সম্পর্কে আমি এতই অজ্ঞ ছিলাম যে কে আমার চাচাত , মামাত, ফুফাত ভাই / বোন এসব আমার মাথায়ই আসত না । আমি শুধু জানতাম যে সে আমার ভাই এবং সে আমার বোন । তবে এটা অবশ্য আমার দোষ ছিল না আমার ফ্যামিলি কখন ও কাউকে আলাদা করে শিখায় নি সবাইকে আপন করতে শিখিয়েছে । ওহ যেই কথাই ছিলাম ছেলে মেয়ে আলাদা । আমার কখনও মেয়েদের সাথে মিশা হয়ে উঠে নাই আর মিশতে আমার ভালও লাগত না । এ দিক দিয়ে ছিলাম অনেক লাজুক স্বভাবের । মেয়েদের সাথে কথাও বলতাম না কিন্তু আমার স্কুলের বন্ধুরা তখন এসব নিয়ে অনেক মজা করত কারো কারো আবার গার্লফ্রেন্ড ছিল । তাদের মুখে অনেক কথা শুনতাম , প্রথম ভাল লাগত না পরে শুনতে ভালই লাগত ।কি যেন কোন কারণে ক্লাস নাইন থেকে ছেলে মেয়ে একসাথে ক্লাস
তখনতো আরেক জামেলা । তখনও কোন মেয়ের সাথে কোন রকমের কথাই বলতাম না এটা নিয়ে বন্ধুরা অনেক মজা করত । একটা মজার ঘটনা ঘটে একদিন সকালে স্যার এর বাসায় পড়তে গেছি গিয়ে দেখি স্যার নাই । আমরা সবাই মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় আমাদের ক্লসের এক মেয়ের সাথে আমার নাম লাগিয়ে দিল আড্ডা তখন আরও জমে উঠল । এরপর থেকে সেটা নিয়ে অনেক মজা করত সবাই এখনও করে । দুঃখিত আমি কারো নামটা বলতে চাইছি না কিন্তু যাকে নিয়ে লিখছি সে নিশ্চয়ই বুজবে এবং আমার পরিচিত জনরাও জানে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল আমি কোন দিন তারসাথে কথাই বলি নি এখন ও বলি না । জানি না সে লেখাটা পরবে কিনা পড়লে পড়তেও পারে কারণ সে আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিষ্টে আছে । এভাবে দেখতে দেখতে এস এস সি পরীক্ষা চলে আসলো । পরীক্ষা দিলাম ভালই ফল লাভ করলাম । এরপর আর সেই মেয়ের সাথে দেখা হয় নাই । জীবনের এই পর্বে কোন রাজকন্যার দেখা পাই নাই আর আসেও নাই । কিন্তু কে জানত কোন একজনের মনে আমি তখন থেকেই ছিলাম । যাইহোক পরে আসছি আমি আমার সেই রাজকন্যার গল্পে ।
জীবনের বাকি গল্প নিয়ে আসছি আগামি পর্বে । এটা আমার প্রথম লেখা কিছু ভুল হলে ক্ষমা করবেন ভালমত সাজিয়ে লিখতে পাই নাই তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করছি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×