somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট খোলা চিঠি ৪

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আস সালামু আলাইকুম। এ অধম গোলাম আপনাকে আজ একটু বিরক্ত করতে চাই। আপনি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, আমার মনের কিছু দুঃখের কথা আপনাকে জানাতে চাই। দয়া করে এ অধম গোলামকে ক্ষমা করবেন। আমাদের দেশের অবস্থা বেশী ভাল না। প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে ডাক্তার, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও RAB ইত্যাদি সকলের ওপর চাপ ও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। করোনা রোগীদের সেবায় যদি কোন ডাক্তার, নার্স, সেনা, পুলিশ ও RAB এর মৃত্যু হয় তাহলে তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে নগদ ৫০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ও জাতীয় একটি খেতাব দেওয়া যায় কিনা দয়া করে ভেবে দেখবেন। যারা কোরনা বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা কিন্তু মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে । তাদের এ লড়াই স্বাধীনতার যুদ্ধের চেয়ে কম নয়। এতে বড় জোর দুই শত কোটি টাকাই যাবে। কিন্তু তাদের দ্বারা যে কাজ হবে তা টাকায় মূল্যায়ন করা যাবে না। এটা করলে তাদের মনোবল বেড়ে যাবে। দিন দিন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী ডাক্তার, নার্স, সেনা, পুলিশ, ও RAB এর সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছে। এদের কর্মকান্ডের জন্য অনুপ্রেরণা দরকার। তাই আমার প্রস্তাবটা ভেবে দেখার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। এবার ধর্ম প্রসংগে কিছু কথা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ইসলাম ধর্মের এক আধ্যাত্মিক( inspired) ধর্মগুরু বলেছেন, " যাকে মানতে হয়, তাকে আগে জানতে হয়, না জেনে মানা, না মানারই সামিল।" আমি আগেই বলেছি বর্তমান আলেম ওলামাদের কথিত ইসলাম, ও শেষ নবী এবং সাহাবায়ে কেরামগনের ইসলাম এক ইসলাম নয়। কারণ, নবী ও সাহাবায়ে কেরামগনের সময় এক ইসলামের মধ্যে এক নেতা(নবী) ও একদল ছিল। ফলে তারা ইসলামকে এক সুমহান মর্যদায় উন্নীত করতে পেরেছিলেন। আজ সেই ইসলাম শত শত ভাগে বিভক্ত। অনৈক্যের কারণে মুসলমানগণ প্রতিনিয়ত ধংস হয়ে ছাই ভষ্মে পরিনত হচ্ছে । ছাই ভষ্মের মত যা কিছু আছে তাও নিঃশেষ হতে চলেছে। ভয় হয় কখন না জানি এটুকুও বিলীন হয়ে নিশ্চিহ্ন যায়। মুসলমানদের আত্মকোন্দল শেষ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নবী ও তার সাহাবীগনের ন্যায় একমত, একদল ও একনেতা প্রতিষ্ঠা যেমন অসম্ভব তেমনি ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনাও অসম্ভব। আজ মুসলমান সমাজের দিকে একটু নিবিড়ভাবে খেয়াল করলে তাদের কলক্ঙিত রূপ দেখা যায়। মুসলমানদের মধ্যে প্রধান দুটি ভাগ- একটি শিয়া এবং অপরটি সুন্নি। প্রত্যেক দল‌‌‌ কোরআন হাদিসের আলোকে নিজেদের সঠিক ও অপরকে কাফের বেদ্বীন বলছে । তাদের কন্দোলের ভয়াবহ পরিণতি পুরোপুরি মাত্রায় ভোগ করছে পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, লেবানন, ফিলিস্তিন। এ ছাড়া শিয়াপন্থি ইরান ও সুন্নিপন্থী সৌদি আরব তো পরষ্পর আজন্ম শত্রু। ইয়ামনের যুদ্ধ মূলত ইরান আর সৌদি আরবের যুদ্ধ। শিয়া সম্প্রদায় বহু দল, শাখাদল ও উপদলে বিভক্ত। সুন্নি মুসলমানগণও বহু দল, শাখাদল ও উপদলে বিভক্ত। সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে একদল মাযহাবপন্থী আর অপর একটা দল মাযহাবের ঘোর বিরোধী (আহলে হাদিস), একদল তরিকাপন্থী আর একদল তরীকা বিরোধী, কেউ আছে শরীয়তপন্থী আবার কেউ শরীয়ত বিরোধী (মারেফতপন্থী), কেউ আছে মাজারপন্থী আবার কেউবা মাজার বিরোধী, কেউ আছে বাউলপন্থী আবার কেউ বাউল বিরোধী, কেউ আছে পীরপন্থী আবার কেউবা পীরের ঘোর বিরোধী, কেউ আছে তাবলীগপন্থী কেউবা আছে তাবলীগ বিরোধী, কেউ আছে জামায়াতপন্থী আবার কেউবা আছে জামায়াত বিরোধী, ইত্যাদি । ইসলামের শিক্ষা ব্যবস্থাও প্রধান দুটি ভাগে বিভক্ত। একদল কওমী মাদ্রাসাপন্থী আর একদল আলিয়া মাদ্রাসাপন্থী। কওমী আলেম ওলামাদের দাবি তারাই একমাত্র সঠিক আর আলিয়া মাদ্রাসার আলেমগণ ভ্রান্ত। পক্ষান্তরে আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ুয়া আলেম ওলামাদের দাবি তারাই সঠিক কওমীরা ভ্রান্থ। আমাদের শেষ নবী ( সঃ) সম্পর্কেও আলেম ওলামাগণ একমতে নাই। কোন কোন আলেম ওলামাগণ মনে করে নবীজী নূরের তৈরি, কেউ আবার এই বিশ্বাসের ঘোর বিরোধী। তাদের বিশ্বাস হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদের মত মাটির তৈরি। কোন কোন আলেম ওলামাগণ বিশ্বাস করে নবীজী মরেন‌ নাই । তিনি কবরে জীবিত আছেন, তিনি সালামের জবাব দেন। কেউবা এই বিশ্বাসের ঘোর বিরোধী। তারা মনে করেন নবীজীর মৃত্যু হয়েছে। কোন কোন আলেম ওলামাদের অভিমত নবীর (সঃ) শরীরের ঘাম ও প্রসাব থেকে মেশক আম্বোরের সুঘ্রাণ আসত, আবার কেউ এই বিশ্বাসের ঘোর বিরোধী, কেউ মীলাদপন্থী, কেউ মিলাদের বিরোধী, কেউ কেয়ামপন্থী, কেউ কেয়াম বিরোধী, কেউ দোয়াল্লিনপন্থী, কেউ দোয়াল্লিন বিরোধী একদল মনে করে মাইকে আজান দেওয়া হারাম, আর একদল এ বিশ্বাসের ঘোর বিরোধী, একদল কাদিয়ানিপন্থী, আর একদল কাদিয়ানি বিরোধী ইত্যাদি। পীরে পীরে আছে দ্বন্ধ ও শত্রুতা। চরমোনাইপন্থী আলেম ওলামাদের অভিমত তারাই সঠিক দেওয়ানবাগীরা কাফের ও ভ্রান্ত। তদ্রুপ দেওয়ানবাগীরা বিশ্বাস করে তারা ঠিকই আছে চরমোনাইর পীর ভ্রান্ত। মানিকগঞ্জের পীর আজহার সিদ্দিকী এর ভক্তরা বিশ্বাস করে তারা ঠিকই আছে চরমোনাইর পীর ও তার ভক্তরা ভ্রান্ত । দেওয়ানবাগীর শ্যালকপীর মনে করে সে-ই সঠিক, দেওয়ানবাগীরা ভ্রান্ত ইত্যাদি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এক ইসলামকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে এর শক্তি ও সৌন্দর্য নষ্ট করছে কারা? ইসলাম ধর্মেকে খন্ড বিখন্ড করেছে কারা? কোন চাষী, তাঁতী, শ্রমিক, কেরানী, অফিসার, রাজনৈতিক নেতা, স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাকি আলেম ওলামাগণ? ইসলামকে খন্ড বিখন্ড করেছে কেতাবধারী অর্জিত জ্ঞানের আলেম ওলামাগণ। এতগুলো দলের মধ্যে কে সঠিক আর কে অঠিক তা নির্ণয়ের কোন ব্যবস্থা আছে কি? সুতরাং ধর্ম পথে চলার আগে জেনে নিতে হবে কোন দলটি সঠিক। এ বিষয়ে আল্লাহ পাক চাইলে আরো কিছু আলোচনা করব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে আজ আর কষ্ট দিতে চাই না। আমার এই লেখার মধ্যে কোন ত্রুটি বিচ্যুতি পেলে নিজ দয়াগুনে ক্ষমা করে দিবেন। সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন ও ঈমান আমানের সাথে থাকুন, আমিন

ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন
সেক্রেটারি
বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি আহবায়ক সমিতি

খোলা চিঠি ১

খোলা চিঠি ২

খোলা চিঠি ৩
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×