দুই তিন দিন যাবত নুরুল হোসেনের পেটে কোন দানা পানি পরে নি।
ক্ষিদার জ্বালাটা এখন খুব ভালো ভাবেই তাকে পেয়ে বসেছে।
তাই পেটের জ্বালা মেটাবার জন্য সে কিছু একটা করার জন্য উঠে দাড়ানোর
চেষ্টা করে।
কিন্তু খাবারের অভাবে তার শরীরে উঠে দাড়ানোর মত সে শক্তিটাও পাচ্ছে না।
দোকানের সাটার ধরে উঠে দাড়িয়ে দুরের কোন কিছু একটা লক্ষ করার চেষ্টা করলেন।
কিন্তু কিছু দেখা সম্ভব হোলনা তার পক্ষে।চশমাটাও হারিয়ে ফেলেছে সে।
৩-৪ মাস আগে তার স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়।
নুরুল হোসেনের সব কিছুই তার স্ত্রী তাসফিয়ার নামে ছিল।
তাই আর তার কিছুই করার ছিল না।
ব্যাবসার কাজে নুরুল হোসেনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে।
আর এই অনুপুস্থিতির কারনটাই যে তাকে বাকিটা জীবন ভোগাবে তা সে পরিস্কার বুঝতে পারছে।
তাসফিয়া আরেক জনের সাথে ঘর সংসার করছে।
আর সে এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
অনেক দিন ধরে রাস্তায় থাকার ফলে গায়ের কাপর আর চেহারার ভেসে সবাই তাকে পাগল বলেই পরিচয় দিয়েছে।
এখন সে পাগল, যার কাছে এক সময়
টাকা ছিল শুধুই কিছু সময়ের বেপার মাত্র, তার কাছে যেন এখন দুটি টাকাও মহামূল্য বান হয়ে উঠেছে।
রাস্তার ধারে শুয়ে বসে কাটানোর সময় দু একজন দয়ার দৃষ্টি ভঙ্গিতে তার দিকে দু-এক টাকা ছুরে দিয়েছে।
প্রথম প্রথম টাকা গুলো দেখে সে তাতে হাতও দিত না।খুচরা ছোট আকারের নোট গুলো বাতাসের সাথে সাথে ধিরে
অনেকটা দুরে চলে যেত।
তার দৃষ্টি শক্তি কম থাকায় তা কিছুটা দুরে গেলেই ঘোলাটে হয়ে যেত।
আজ দু দিন যাব তাকে আর কেও দয়া করে কিছুই দেয় না।
তাই সে বুঝে গেছে যে কেন রাস্তাঘাটে ফকির গুলো এক জায়গায় কেন সব সময় থাকেনা।
তাই আজ সে অন্য কোথাও যাওর উদ্দেশ্যে উঠে দাড়িয়েছে।
অন্য মনস্ক ভাবে হাটার ফলে কাওকে লক্ষ করছিল না।
কিন্তু এক সময় নুরুল হোসন পেন্টের নিচে টান অনুভব করে নিচে তাকায়।
কিছুটা আপছা বুঝা গেলেও চিনতে পারছেনা কে সে।
ভাই আমারে চিনছেন্নি আমি কিডা।আনিস বললো।
আনিস এই রাস্তাতেই বসে ভিক্ষা করে।
এক্সিডেন্টে তার দুই পা হারিয়েছে।
এর আগে রিক্সা চালাতো।
নুরুল হোসেন এক সময় আনিসের রিক্সাদিয়ে যাওয়ার সময় একটা ট্রাক পিছন থেকে এসে ধাক্কা দেয়। তখন ভাগ্য জোরে নুরুল হোসেনের তেমন কিছু না হলেও রিক্সা চালক আনিসের দুটি পা ই হারাতে হয়।
একদম মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছে বললেই চলে। অানিসের চিকিৎসার সব খরচ নুরুল হোসেন দেয়। কিন্তু পরে কাজের চাপে তার আর খোজ খবর নেওয়া হয় না।হয়তো কাজের চাপে ভুলেও গিয়েছিল।
কিন্তু এখন চিনতে পেরেছে।
ও স্যার কিছু দিন কননা, আমারে চিনসেন আমি আনিস।
আপনের এই অবস্তা হইলো কেমনে।
দেইখ্খা তো মনে হয় পেঠে কয়েক দিন যাবত কিছ্ছুই পরে নাই।
সবই নিয়তিরে আনিস। মানুষের মুখসে ঢেকে থাকা মানুষ গুলো কখন যে তাদের পশুত্ত প্রকাশ করে দেয় বুঝা বড়ই দায়।
মানুষ এখন আর মানুষ নেইরে।
কি কন না কন আপনেরা হইলেন শিক্ষিত মানু আপনেগো এত ভারি কতা বুজবার পারি না।
আমি শিক্ষিত হলেও এখন কেও না।
হইছে পরে সব হুনুমনে এহন বাইত্তে লন। আমার লগে খাইবেন।বউ রাইন্দা রাখছে।
এই বলে আনিস তার হুইল চেয়ার ঠেলে আগাতে থাকে আর নুরুএ হোসেন তার পিছে পিছে অগ্রসর হয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


