
গত বছর কুরবানি ঈদের কিছুদিন পর ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যাচ্ছিলাম। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার আগে ওই রোডে তেমন ভালো কোন বাস সার্ভিস ছিলা না, কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর যাত্রাবাড়ী টু শরীয়তপুর রোডে বেশকিছু বড় বাসের চলাচল শুরু হয়, এর মধ্যে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের সবগুলো বাসে এসি আছে। যাত্রাবাড়ী থেকে এমন একটি বাসে চড়ে বসলাম শরীয়তপুরের উদ্দেশে। বাম পাশের সারিতে বাসের প্রায় পিছনের দিকে জানালার পাশের সিটে বসে ছিলাম। বাসে উঠেই আমি এক ফ্রেন্ডের সাথে চ্যাটিং এ ব্যস্ত হয়ে পরলাম। একটু পর বাস চলতে শুরু করলে আমি যাত্রাবাড়ী মাওয়া রোডের পাশের মনোরম দৃশ্যগুলো ভিডিও করতে শুরু করলাম। বাস চলছে তো চলছেই.... ভিডিও করা বন্ধ করে আমি তখন কানে ইয়ার ফোন গুজে দিয়ে মিউজিকে ডুব মারলাম; চলন্ত বাসে মিউজিক শুনতে শুনতে রাস্তার ধারের দৃশ্যগুলো উপভোগ করা আমার কাছে এক স্বর্গীয় অনুভূতি।

কিছুক্ষণ পর মনে হলো; বাসের ভিতর কেউ হয়তো ঝগড়া করছে তাই ডান কানের হেড-ফোনটা খুলে ডান দিকে ঘার ঘুরিয়ে দেখি আমার সিট বরাবর বাসের অপর পাশের সারিতে এক বয়স্ক চাচা টাইপের এক লোক ফোনে উচ্চ স্বরে কারো সাথে কথা বলছেন; এতটাই উচ্চ স্বরে কথা বলছেন যে, তার কথা বাসের সবাই শুনতে পাচ্ছে। চাচার দিকে তাকাতে গিয়ে লক্ষ করলাম আমার পাশেই (ডান পাশের সিটে) মুখে কালো মাস্ক পরিহিতা এবং সানগ্লাস মাথায় তুলে রাখা এক মেয়ে বসে রয়েছে, তার সাথে একবার চোখাচোখি হলো। ( বলে রাখা প্রয়োজন যে, বাসে উঠেই আমি ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম, চ্যাট এবং ভিডিও করা নিয়ে, তাই আমার পাশে কে, কখন বসেছে তা আমি লক্ষ করিনি ) আমি আবার বা দিকে তাকিয়ে রাস্তার ধারের দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে থাকলাম, কিন্তু ডান কানের হেড-ফোনটা খুলাই থাকলো, চাচার চেঁচামেচি আর থামছে না, সে বিভিন্ন মানুষের সাথে ফোনে কথা বলছে যা কিছুটা এরকম ছিল-
চাচা- হ্যালো মামুন তুই কই ব্যাডা? আমি ঢাকা থেকে রওনা দিসি এসি বাসে চইড়া, তুই কিন্তু কালকের বিচারে আমারে কোন দোষ দিতে পারবি না, আমি কিন্তু বিচারে হক কথা কমু, আমি কিন্তু এবার ন্যায্য কথার বাইরে একটা কথাও কমু না। আর আমি এসি বাস থেকে নাইমা তোরে একটা ফোন দিমু, তুই হক্কলে আমার সাথে দেহা করবি, তা না হলে কিন্তু এই বিপদ থেকে তোরে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। এ কথা বলে চাচা ফোন রেখে দিয়ে আবার তার গিন্নিকে ফোন দিলো।
হ্যালো- মনুর মা, কি করতিয়াসো? আমি কিন্তু এসি বাসে করে বাড়ি আইতাসি, আর হুনো আমি এসি বাস থেকে মামুনকে ফোন দিসিলাম, আমি ওরে যা বলার সব বলে দিসি, তুমি তো জানো আমি ন্যায্য কথার লুক, অন্যায় একদম সহ্য করতে পারি না, ও রহিম ব্যাপারীর পোলা হোক আর যে-ই হোক, আমি বিচারে অন্যায্য কথা কইত পারুম না...ইত্যাদি।
কিছুক্ষণ পরে- হ্যালো মেম্বার সাপ কথা সব ঠিক আছে তো, আমি কিন্তু এসি বাসে করে বাড়ি আইতিয়াসি, কাল বিচারে কিন্তু তুমি আমার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারবা না আমি একদম ন্যায্য বিচার কইরা দিমুনি, তুমি চেয়ারম্যানকে বলে দিও, আমি এসি বাসে করে বাড়ি আইতিয়াসি, বিচারে যা যা করা দরকার আমি সব ব্যবস্থা করমুনে কুনু সমিস্যা নাই, এ ব্যাপারে তাকে একদম টেনশন নিতে বইলোনা।
একটু পরে- হ্যালো সবুজের আব্বা, কি করতাসো আমারে চিনসো নি, আমি মনুর বাপ, কাল কিন্তু তোমার বিচারে থাকতে হবে, আমি এসি বাসে কাইরা ঢাকাত্থন আইতিয়াসি, সন্ধ্যায় এসি বাসে থেকে নেমে আমি তোমাকে ফোন করমুনে জরুরি আলাপ আছে।
একটু পর- হ্যালো মাস্টার সাপ, শরীরডা ভালানি, আমি অমুকের আব্বা আমারে চিনবার পারসো? কতদিন তোমার সাথে কথা হয় না, তয় একদিন আমাগো বাড়ি বেড়াইতে আইসো গ্যাদার মারে নিয়ে, আর হুনো আমি এখন এসি বাসে আছি, ঢাকাত্থন আইতিয়াসি, আমারে কতুবালী ফোন দিসিলো আমি ওরে কইছি আমি এসি বাস থেকে নাইম্যা তারপর তার সাথে দেহা করুম, হ হ এসি বাস, এখন তাইলে রাখলাম, আমি এহন এসি বাসে আছি।
একটু পর আবার- হ্যালো ছগির উদ্দিন, আমি তো এসি বাসে, ঢাকা গেসিলাম জরুরি একটা কাজে...হ্যালো করিমুদ্দিন, আমি তো এসি বাসে, এসি বাস।
হ্যালো অমুক- আমি এসি বাসে, হ্যালো তমুক- আমি ঢাকাত্থন এসি বাসে চাইড়া আইতিয়াসি... বিচার... হক কথা.. ন্যায্য কথা.. এসি বাস... এসি বাস...এসি বাস....ব্লা...ব্লা...ব্লাহহ......
চাচার ফোন কনভারসেশনের শানে নুযূল হচ্ছে- তিনি যে একজন বিরাট মাপের মাতাব্বর তা বাসের সবাইকে বুঝানো আর তিনি যে এসি বাসে চড়ে বাড়ি যাচ্ছেন তা ফোনের মাধ্যমে দুনিয়ার সবাইকে জানান দেওয়া। সত্যিই বাসের মধ্যে চাচা ছিলেন এক জটিল বিনুদুন
আমি মনে মনে- করোনা বিদায় নিয়েছে সেই কবে আর সে এখনো বাসে মাস্ক পরে বসে আছে, হুহ!! আসলে মাস্ক পরাটা ইদনিং একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে!! আর চোখের গ্লাস কেন মাথায় তুলে রাখতে হবে? কিয়্যাক্টা ঢং আজকাল ছেলে মেয়েদের, হাহ!! (মুখ বাঁকা করার ইমু হবে)
সে যাই হোক তবে আপনাদের কানে কানে একটা কথা বলে রাখি মাস্ক কিন্তু মেয়েদের রূপ আরও শতগুণ বাড়িয়ে দেয়। আর হ্যাঁ কোন মেয়ে ঠিক কতটা সুন্দরী তা নিয়ে গবেষণা করা আমার কম্ম নহে তাই সে মাস্ক পরে আছে মাস্ক পরেই থাকুক তাতে আমার কি? বাট আই মাস্ট সে, সী ইজ ড্যম স্মার্ট!! অন্তত তার ভাইবস সে কথাই বলে।
বাস ততক্ষণে পদ্মা সেতু পার হয়ে গিয়েছে, সেতুতে বাস উঠার সাথে সাথে বাসের মধ্যে একটা হুলস্থূল কান্ড ঘটে গিয়েছিল, সবাই ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল ভিডিও করার জন্য, এবং বাসের চালকও বেশ ধীরে ধীরে বাস চালিয়েছিলো, আমিও বসে থাকিনি, শত হলেও প্রথম বার পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ভ্রমণ!! আর এ তো শুধুই এক সেতু নয়, এ হচ্ছে ১৮ কোটি জনগণের দীর্ঘদিনের এক স্বপ্ন; আমি যেন সে স্বপ্নের মধ্য দিয়েই উড়ে যাচ্ছিলাম।

সেতু পার হবার পর আমি আবার ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, এতক্ষণ যে ভিডিওগুলো করেছি এগুলো সব দেশ বিদেশে পাঠিয়ে দিতে হবে না? নেট ছিলো স্লো তাই ভিডিওগুলো আপলোড হতে বেশ সময় নিচ্ছিল, সেই ফাঁকে আমি আবার দুই কানে হেড-ফোন গুজে দিয়ে মিউজিকে মত্ত হলাম, বাস চলেছে তো চলছেই... । একটু পর মনে হলো মেয়েটি আমাকে কিছু একটা বলছে, সে আমার দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে কিছু একটা বলছে, আমি শুধু তার চোখই দেখতে পাচ্ছি, আর তার চোখ পড়ে নিশ্চিত হলাম সে আমাকেই কিছু একটা বলছে, তখন আমি ডান কানের হেড-ফোন খুলে তাকে বললাম -"কিছু বলছেন আমাকে?" সে কিছু একটা বললো কিন্তু চলন্ত বাসের শব্দ এবং তার মুখে মাস্ক থাকার কারণে আমি ঠিক বুঝে উঠে পারলাম না যে সে আসলে আমাকে কি বলছে, আমি তখন- "সরি, আমি ঠিক বুঝতে পারিনি?" মেয়েটি তখন মুখের মাস্ক খুলে ফেলে বললো "কন্ডাক্টরকে একটু ডেকে দিতে পারবেন?
আমি- হ্যাঁ অবশ্যই, কিন্তু কেন?
মেয়ে- টিকেট কাটার সময় ভাংতি টাকা ছিলো না তাই বাকি টাকা কন্ডাক্টরের কাছ থেকে নিতে বলেছে টিকিটের গায়ে বাকি টাকা লিখা আছে।
আমি- ও আচ্ছা, ঠিক আছে ডেকে দিচ্ছি।
এই বলে আমি দাঁড়িয়ে বাসের সামনের দিকে নজর বুলালাম কন্ডাক্টর ঠিক কোথায় আছে তা বুঝার চেষ্টা করছি, কিন্তু কে যে কন্ডাক্টর তাই ঠিক বুঝতে পারছি না।
আমি বাসের সামনের দিকে তাকিয়ে- "এই কন্ডাক্টর একটু এদিকে আসেন," কিন্তু কারো কোন সাড়া শব্দ নেই।
এবার একটু জোড়ে-"অ্যই যে কন্ডাক্টর সাব একটু এদিকে আসেন।" এবার তিনি শুনতে পেলেন এবং পেছনের দিকে আসলেন।
আমরা বসে ছিলাম বাসের প্রায় পিছনের দিকে আর কন্ডাক্টর ছিল বাসের সামনে, চলন্ত বাসে এতদূর থেকে ডাক দিলে কন্ডাক্টর না'ও শুনতে পারে তাই বেশ জোড়ে জোড়ে দুইবার কন্ডাক্টরকে ডাক দিতে হলো, যা আমার জন্য কিছুটা বিব্রতকর ছিলও বটে। কন্ডাক্টর এসে টিকিটের গায়ের লিখার পরিমাণ টাকা ওই মেয়েকে ফেরত দিয়ে তাকে বললো - "আপনি কোথায় নামবেন?" মেয়ে বললো; সে নড়িয়া যাবে তাই তাকে যেন নড়িয়ার বাস পাওয়া যায় সেখানে নামিয়ে দেওয়া হয়। কন্ডাক্টর বললো- "তাহলে আপনাকে 'প্রেম তলা' নামতে হবে সেখান থেকে নড়িয়ার বাস পাওয়া যায়।" এই বলে কন্ডাক্টর বাসের সমনের দিকে চলে গেলো।
বাস চলছে.. এর মধ্যে মেয়েটি ফোনে তার বড় আপুর সাথে কথা বললো, (সে মূলত নড়িয়ায় তার বড় আপুর বাসায় যাচ্ছিল) তার আপু তাকে জানালো সে যেন 'প্রেম তলায়' না গিয়ে "টি এন্ডটি'র" মোড়ে নামে কারণ 'প্রেম তলা' থেকে সন্ধ্যার দিকে বাস পাওয়া যায় না। ফোন রেখে দিয়ে মেয়েটি তখন আমাকে বললো- ভাইয়্যা "টি এন্ডটি'র" মোড় আর কতদূর?
আমি- আপনি কি ওখানে নামবেন?
মেয়ে- হু, আমার আপু তো সেখানেই নামতে বললো।
আমি- হয়তো খুব কাছাকাছি, আমিও এই রোডে প্রায় নতুন।
মেয়ে- ভাইয়্যা, আরেকবার কষ্ট করে কন্ডাক্টরকে একটু বলে দিতে পারবেন আমাকে যেন "টি এন্ডটি'র" মোড়ে নামিয়ে দেয়?
আমি- ঠিক আছে, কন্ডাক্টর এদিকে আসুক বলে দিচ্ছি।
এই বলে আমি সামনের দিকে তাকাচ্ছি কন্ডাক্টরের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য, কিন্তু সে আবারও সমানের দিকে গিয়ে বসে রয়েছে।
আমি সামনের দিকে তাকিয়ে- অ্যই যে কন্ডাক্টর "টি এন্ডটি'র" মোড়ে বাস থামাইয়েন।
কিন্তু শুনলো না,
আমি আবারও- হ্যালো কন্ডাক্টর সাব 'টি এন্ডটি'র" মোড়ে লোক নামবে।
কিন্তু এবারও কোন সাড়া শব্দ নেই..
আমি তো পড়ে গেলাম বিপদে, এতগুলো মানুষের সামনে বাসের ভিতর চিল্যা চিল্লি করার অভ্যাস আমার একদমই নেই তাছাড়া আমি সিটের বাম পাশে বসা তাই সিট থেকে উঠে গিয়ে কন্ডাক্টরকে ডাকতে গেলে মেয়েটিকেও উঠে দাঁড়াতে হবে, বিষয়টা ভালো দেখায় কি না এসব ভাবছি, মেয়েটিও কেমন যেন উসখুস করছে। ( সে ভাবছে সে হয়তো "টি এন্ডটি'র" মোড় পার করে চলে এসেছে, আসলে নতুন রাস্তায় ভ্রমণে এমনটি সবারই হয় )
এবার সে একটু অধিকারের সুরে- ভাইয়্যা, একটু জোড়ে ডাক দেন না, আমাকে নামতে হবে তো!!
আমি মনে মনে- খাইসেরে!! এই মেয়ের জন্য আমাকে এখন বাসে চিৎকার চেঁচামেচি করতে হবে যা আমার সাথে একদমই যায় না, আর মেয়েটি আমার সাথে এমনভাবে কথা বলছে যেন আমি তার দীর্ঘ দিনের পরিচিত। খুব সম্ভবত নতুন রাস্তায় এসে মেয়েটি নার্ভাসনেস থেকেই এমনটি করছে, তাকে প্রথমে যতটা স্মার্ট ভেবেছিলাম এখন আর তা মনে হচ্ছে না..ইত্যাদি ভাবছি।
কন্ডাক্টর ব্যাটায় মনে হয় ঘুমাইসে, তাই এবার ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে বেশ জোড়ের সহিত- এই যে ডেরাইভার ভাই আমাদের "টি এন্ডটি'র" মোড়ে একটু নামিয়ে দিয়েন।
আমার চিৎকার শুনে অপর পাশে বসা সেই চাচা বলে উঠলো, "আরে আপনারা "টি এন্ডটি'র" মোড়ে নামবেন এত অস্থির হচ্ছেন কেন, চুপ করে বসে থাকেন "টি এন্ডটি'র" মোড় আরও ম্যালা দূর, আমরাও টি এন্ডটি'র মোড়ে নামবো, ওখানে এমনিতেই বাস থামায়।"
আমি মনে মনে- যাক এবার বাঁচা গেলো, অন্তত মেয়েটিকে ঠিক জায়গায় নামিয়ে দিতে পারবো ভেবে আমি তখন মেয়েটিকে বললাম- আপনি আগে কখনো এ রোডে আসেন নি?
মেয়ে- না, তবে জাজিরাতে আমার নানু বাড়ি ছোট সময় আমি ওখানে অনেক এসেছি কিন্তু এদিকে আসা হয় নি।
আমি- ও আচ্ছা, তাহলে নড়িয়াতে কোথায় যাচ্ছেন?
মেয়ে- ওখানে আমার বড় আপু থাকে তার বাসায় যাচ্ছি।
আমি- আচ্ছা বুঝতে পেরেছি।
মেয়ে- আপনিও তাহলে "টি এন্ডটি'র" মোড়ে নামবেন?
আমি- মানেহ??
মেয়ে- আপনিই তো বললেন, ড্রাইভারকে?
আমি- কি বললাম?
মেয়ে- আপনিই তো ড্রাইভারের উদ্দেশে বললেন আমাদের "টি এন্ডটি'র মোড়ে" নামিয়ে দিয়েন।
আমি- (মনে মনে- মাথাডা ভরা শুধু প্যাঁচ) আরে না.. আমি শরীয়তপুর নামবো, ও কথা তো আমি আপনার জন্য বলেছি, বাস থামানোর জন্য।
মেয়ে- আপনিও তাহলে আমার মত এই রোডে নতুন?
আমি- না, ঠিক আপনার মত একেবারে নতুন বলা ঠিক হবে না, আগেও কয়েকবার এই রোডে আশা যাওয়া করেছি।
মেয়ে- আপনি শরীয়তপুর কেন যাচ্ছেন? কোথায় থাকেন, কি করেন? নাম কি আপনার, নড়িয়াতে গিয়েছেন কখনো? এই রোডের এত বাজে অবস্থা কেন.. ইত্যাদি?
আমি- এক, দুই, দিন, দিস এন্ড দিস, জ্যাক স্মিথ। (ব্লগের নাম)
আমি মনে মনে- মেয়ের মুখে দেখি খই ফুটেছে, বড় আপুর বাড়ির কাছাকাছি এসে এখন দেখি তার সাহস বেড়ে গিয়েছে, কত্ত বড় সাহস!! আমার ইন্টার্ভিউ নেয়!!
কিন্তু আমি তার খুব বেশি ইন্টার্ভিউ নিলাম না, শুধু নাম আর দুইডা প্রশ্ন করলাম
সে উত্তর দিলো- দিস এন্ড দ্যাট, বেলা স্মিথ ( আমার দেয়া নাম LOL
এভাবে টুকটাক আলাপ চারিতায় বাস এক সময় "টি এন্ডটি'র" মোড়ে এসে থামলো, সে তখন আমাকে বিদায় জানিয়ে নেমে পড়লো, আর আমি তখন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম!! অতঃপর বাকিটা পথ একা একা সুখে শান্তিতেই পারি দিলাম শরীয়তপুর পর্যন্ত। আর এভাবেই আমার প্রথম পদ্মা সেতুর ভ্রমণ কাহিনী শেষ হইলো।
সবাইকে জ্যৈষ্ঠ মাসের ভ্যাপসা গরমের ভুঁড়ি ভুঁড়ি শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



