somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জাদিদ
তুমি আমার রাতবন্দিনী। ধূসর স্বপ্নের অমসৃণ সুউচ্চ দেয়াল তুলে তোমাকে আমি বন্দী করেছি আমার প্রিয় কালোর রাজত্বে। ঘুটঘুটে কালোর এই রাজত্বে কোন আলো নেই। তোমার চোখ থেকে বের হওয়া তীব্র আলো, আমার হৃদয়ে প্রতিফলিত হয়ে সৃষ্টি করে এক অপার্থিব জ্যোৎস্না।

যাপিত জীবনঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভ্রম।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানিং কেন জানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করলেই মনটা এক অদ্ভুত বিক্ষিপ্ততায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এই মাধ্যম, যা একসময় ছিল যোগাযোগ আর বিনোদনের উপায়, এখন যেন চিন্তাভাবনাকে ভারাক্রান্ত করার নতুন এক হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনশেষে এর প্রধান 'বাই প্রোডাক্ট' হয়ে দাঁড়িয়েছে একগাদা অস্বস্তি আর বিরক্তি।

আমি অনেকবার মেজবান খেতে গিয়ে খালি পেটে ফেরত এসেছি কারন কারণ খাবার নিয়ে মানুষের দৃষ্টিকটু লড়াই আর অতি লোভাতুর আচরণে আমার খাওয়ার রুচিই হারিয়ে গিয়েছিলো। ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুকলে আমার সেই মেজবানের কথা মনে হয়। আমি জানি না, আপনাদের কারো এমন অনুভুতি হয় কি না।

গত কয়েকদিনে অবসর সময়ে যখনই মনে হয়েছে ফেসবুকে ঢুকব ততবারই নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে ভিন্ন কাজ করার চেষ্টা করেছি। শুরুতে বইয়ের তাক থেকে অনেক ভারী ভারী বই নামিয়ে দেখলাম ইহাতে বাসার লোকের কাছে ভাব নেয়া ছাড়া আদতে আমার কোন লাভ হচ্ছে না, কয়েক পৃষ্ঠার বেশি পড়তে পারছি না অভ্যাসহীনতার কারনে। শেষমেষ মাসুদ রানার একটি বই দিয়ে পড়া শুরু করলাম। বইয়ের নাম লেলিনগ্রাদ। সাবমেরিন নিয়ে নর্থপোলে একটি ওয়েদার গবেষণা স্টেশনে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে রাশিয়ান নেভির সঙ্গে মাসুদ রানার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান! আফসোস, এই গল্পে কোন নায়িকা না থাকায় শীতের রাতে প্রয়োজনীয় উষ্ণতা আহরন করতে সেই গৎবাঁধা গন্তব্যতেই ভরশা করতে হলো। বইটা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৮৩ সালে। সেই সময়ে যে সকল মানুষরা বা তারো আগে যারা সায়েন্সফিকশন লেখতেন, চিন্তা করতেন আমার কাছে তারা এলিয়েন সমতুল্য।

আমার বই পড়া দেখে আমার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে বলল, বাবা আমিও বই পড়তে চাই। বাসায় বাচ্চাদের উপযোগী বেশ অনেকগুলো বই আছে, কিন্তু তার সে সকল বই পড়ায় তেমন আগ্রহ নেই। তার মা যতই এই সব বই পড়তে দেয়, সে সেই সব বই পড়বে না। শেষমেষ মেয়ে তার অব্যর্থ অস্ত্র প্রয়োগ করলো। আমাকে জড়িয়ে ধরে নিরবে কান্নায় চোখের পানি ফেলতে লাগল। কিভাবে যেন আমার মেয়ে এই কৌশলটি রপ্ত করেছে এবং প্রয়োজনে একে সুনিপুনভাবে প্রয়োগ করতে পারে। তাই আমার পক্ষে আর ব্যাপারটা সহ্য করা সম্ভব হলো না। মেয়েদের প্রতি বাবাদের একটা অদ্ভুত ভালোবাসা কাজ করে, এই ভালোবাসার কাছে সকল সমীকরণ মিথ্যে হয়ে যায়। ফলে নিউমার্কেটে নিয়ে তার পছন্দমত কিছু বই কিনে দিলাম। সে নিজেই পছন্দ করে বই কিনে আনল। কিন্তু বাসায় আসা মাত্রই আমি ব্লগের আবহ টের পেলাম। আমার দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠলো। বলল, পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চা এই সব কমিক বই কিভাবে পড়বে?

প্রায় মিনিট দশেক ওয়াজি হুজুরদের স্টাইলে চিৎকার করে শান্তি আর জ্ঞান বিতরনের পর চারিদিক শান্ত হয়ে এলো। ইতিমধ্যে মেয়েকে দেখলাম, আমার বিছানার ওপর বসে বই খুলে দেখছে আর পড়ার চেষ্টা করছে। আমি বললাম, “মা, আমি পড়ে শোনাই।” সে বলল, “না, আমি পারি।” প্রচণ্ড বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করলাম, সে বইয়ের ছবি দেখে দেখে প্রায় কাহিনী বর্ণনা করতে পারছে—এটা প্রায় লেখার মতোই। শিশুর কল্পনাশক্তি যে কী অদ্ভুত শক্তিশালী, তা ভাবতে ভাবতে আমি সত্যিই শিহরিত হয়ে পড়লাম।

এরপর বাসার লোকের দিকে তাকালাম, তিনি এমন একটি ভাব করলেন যেন তিনি এই ব্যাপারটি প্রত্যাশা করেছিলেন এবং এখানে মুল অপরাধী আমিই। মনে মনে বললাম, ফ্যাসিস্ট!!

যাইহোক, মুল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আমি কথা বলছিলাম মানসিক শান্তির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দুরে থাকা নিয়ে। কেন আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাম্প্রতিক সময় এত অস্থির হয়ে উঠেছে? কেন মানসিক শান্তির জন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে দুরে থাকছে অনেকে?

সত্যি বলতে এক লাইনে আপনি কোন কারনকে সুনির্দিষ্ট করতে পারবেন না বরং বেশ কয়েকটি কারন নিয়ে আমরা সমন্বিতভাবে আলোচনা করতে পারি। যেখানে প্রথমেই আসবে সোশ্যাল মিডিয়াতে আয়ের সুযোগ, সেলফ সেন্সরশীপের অভাব, রাজনীতি এবং ব্যক্তিগত নীতি নৈতিকতার অভাব।

গত দুই দশকে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাসের যে ক্ষয় হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আমাদের সাংস্কৃতিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একটি বিশাল ক্ষতি। যার প্রভাব আমরা ইতিমধ্যে লক্ষ করেছি। একসময় মফস্বল শহরগুলোতে বিভিন্ন লাইব্রেরি ছিল, যেখানে দেশ-বিদেশের লেখকদের গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কিত বই পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে সেই লাইব্রেরিগুলোর সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায়। ২০১০ সালে আমার নিজের মফস্বল শহরে যে দোকানগুলোতে পত্রিকা, ম্যাগাজিন দেখা যেত, সেগুলো এখন বন্ধ। যে কয়টি বইয়ের দোকান এখনো টিকে আছে, সেখানেও গল্পের বই বা সাধারণ ম্যাগাজিনের দেখা মেলে না। পাওয়া যায় মূলত হাদিসের বই, স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য নিয়ে বই, কিংবা ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে লেখা।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন। ধর্ম আমাদের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, এবং ধর্মীয় বই পড়ায় কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যাটি অন্য জায়গায়। আমাদের সমাজে ধর্মীয় বিষয়কে অতিরিক্ত স্পর্শকাতর করে তোলার সুযোগ নিয়ে এটিকে একটি বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, কিংবা সংস্কৃতির বইয়ের জায়গা দখল করে নিচ্ছে একঘেয়ে বা অপ্রাসঙ্গিক ধর্মীয় বই যার কোন ইতিবাচক প্রভাব আপনি সমাজে দেখছেন না।

গত দুই দশকে দেশের বেকারত্ব দুর করার জন্য তেমন কোন সুপরিকল্পিত উদ্যোগ আমার চোখে পড়ে নি বরং একে কেন্দ্র করে যে সকল লুটপাট হয়েছে সেই সকল লুটপাটের ফিরিস্তি দেয়া শুরু করলে আশা করি এবার তারা অন্তত লজ্জা পেয়ে ক্ষমা চাইবেন। যদিও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকরা 'তালগাছ আমার' তত্বে বিশ্বাস করে ফলে ক্ষমা চাওয়ার মত একটি বেসিক বিষয়ে তারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।

গত কয়েক বছরে ফেসবুকের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের বিষয়টি তুলনামূলক সহজ হয়ে এসেছে, যা দেশের হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণীকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত করেছে। যদিও একটি ক্ষুদ্র অংশ এই প্ল্যাটফর্মকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করে সৃজনশীল কাজ এবং অর্থ উপার্জন করছে, তবে অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনীতি, দেশপ্রেম, ধর্ম, নগ্নতা, উগ্র জাতীয়তাবোধ, এবং হলুদ সাংবাদিকতাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। এ ধরনের কনটেন্ট একদিকে যেমন সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তেমনি তরুনদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও সৃজনশীল প্রতিভাকে ধ্বংস করছে।

বিশেষ করে, মনোযোগ আকর্ষণের লড়াইয়ে এখন অনেকেই শিরোনামে চমক আনতে ভুয়া খবর, বিভাজনমূলক বক্তব্য, এবং চটকদার উপস্থাপনাকে ব্যবহার করছে। এতে তরুণরা গঠনমূলক ও ইতিবাচক চিন্তার বিকাশ থেকে দূরে সরে গিয়ে আবেগপ্রবণ ও অন্ধ সমর্থনে জড়িয়ে পড়ছে।

ব্লগেও লক্ষ্য করা যায়, অনেকে ফেসবুকের মতো একইভাবে ফেব্রিকেটেড তথ্য বা ভুয়া ছবি ব্যবহার করে পোস্ট করছে। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তুলনায় ব্লগে এই ধরনের ভুয়া সংবাদের বিরুদ্ধে পাঠক ও সহলেখকদের প্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয়। ব্লগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে লেখালেখির একটি কমিউনিটি-ভিত্তিক পরিবেশ রয়েছে, যেখানে সহলেখকরা তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সচেতন ভূমিকা পালন করেন। অনেক পাঠকও মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে মতামত দিয়ে লেখকের ভুল ধরিয়ে দিতে পছন্দ করেন। তবে, এই সচেতনতা থাকা সত্ত্বেও, ব্লগেও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা বন্ধ হয়নি। কারণ, কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে পাঠকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। এই ক্ষেত্রে ব্লগারদের সম্মিলিত অরাজনৈতিক প্রচেষ্টা ভীষন প্রয়োজন।

অরাজনৈতিক শব্দটি আমি সচেতনভাবেই ব্যবহার করেছি, কারণ বাংলাদেশে রাজনৈতিক শক্তি বরাবরই নেতিবাচকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিঃসন্দেহে, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিগত কয়েক বছরের অপশাসন, দুর্নীতি, এবং অব্যবস্থাপনা দেশের মানুষের ভবিষ্যৎকে লুণ্ঠিত করেছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ আত্মবিশ্বাসহীনতা এবং হীনমন্যতায় ভুগছে। এই সময়ে বিভিন্ন ইতিবাচক ও নেতিবাচক মতাদর্শের বীজ আন্তর্জাতিক ভুরাজনীতির কৌশল হিসাবে এই দেশে রোপিত হয়েছে। এরা সবাই একযোগে বিশৃংখলভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বক্রিয় হয়ে অন্যদের মতামত খারিজ করে দেশের প্রতি নিজস্ব মালিকানার দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে এবং নিজেদের দাবিকেই চুড়ান্ত সঠিক বলে দাবি করছে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একধরনের অসহনশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যা সকলের মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিমুখ করেছে।

আপনারা নিশ্চয়ই এইচ. জি. ওয়েলসের বিখ্যাত বই "দ্য ইনভিজিবল ম্যান"-এর নাম শুনেছেন। এই কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে। এমনই একটি সিনেমা হলো "দ্য হলো ম্যান"। সিনেমাটির গল্পে দেখা যায়, একজন বিজ্ঞানী অদৃশ্য হওয়ার একটি মেডিসিন আবিষ্কার করেন এবং সেটি নিজের ওপর প্রয়োগ করেন। প্রথমে এটি একটি বৈজ্ঞানিক সাফল্য বলে মনে হলেও অদৃশ্য হওয়ার পর তার মধ্যে ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক ও অমানবিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে। অদৃশ্য অবস্থায় সে নিজের সীমা ভুলে যায় এবং ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। পাশের বাসার এক মহিলার রুমে প্রবেশ করা, বাচ্চাদের ভয় দেখানো, এমনকি তার মহিলা সহকর্মীর ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়। এই সিনেমাটি মুলত আমাদেরকে হিউম্যান সাইকোলজি এবং নিজেকে আড়াল করার ক্ষমতা পেলে মানুষ কতটা ভয়াবহ হতে পারে সেটাই তুলে ধরে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কিছু মানুষ একটি আড়াল বা মুখোশ খুঁজে পায়। এই মুখোশ তাদের ভেতরের অবচেতন সত্তাকে প্রকাশ করার সুযোগ করে দেয়। বাস্তব জীবনে শান্ত ও শিষ্ট স্বভাবের মানুষও অনলাইনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়ে ওঠে অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। বিশেষত, যারা অন্যকে হেয় করে কথা বলতে বা আক্রমণ করতে পছন্দ করে, তাদের বেশিরভাগই এই আড়ালের সুবিধা নিয়ে নিজের আসল পরিচয় গোপন রাখতে চায়। এই আচরণের মাধ্যমে তারা নিজেদের শক্তিশালী বা ক্ষমতাধর মনে করে। অন্যকে নিচু দেখানোর মধ্যে দিয়ে তারা নিজেদের হীনমন্যতা ঢাকতে বা ক্ষমতার মিথ্যা অনুভূতি উপভোগ করতে চায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই "গোপনীয়তা" বা 'মুখোস' তাদের সাহস যোগায় এমন কিছু বলতে বা করতে, যা তারা বাস্তব জীবনে করতে দ্বিধা করত।

গত কয়েক সাপ্তাহে আমি প্রায় হাজার খানেক বন্ধু ডিলিট করেছি ফেসবুক থেকে। সর্বোচ্চ ডিলিট করেছি জুলাই মাসে- নির্লজ্জ নির্লিপ্ততার সমর্থন দেখে আর কিছু ডিলিট করেছি গত দেড় মাসে উগ্র আর ছাগল মানসিকতার কারনে। আমি ব্যক্তিগতভাবে যাকেই আমার ছাগল টাইপ মানসিকতার বলে মনে হয় আমি তার থেকেই দুরে থাকি। আমি চাই যারা আমাকে তাদের দৃষ্টিতে ছাগল ভাবেন, তারাও আমাকে বিদায় করে দিয়ে নিরাপদ দুরত্বে আনন্দে থাকবেন। জগতের সবাই সুখী হোক - একটাই তো জীবন।

ঢাকা শহরে সত্যি বলতে ঘোরার জায়গা বা অবসরে বসে সময় কাটাবার মত তেমন কোন মাধ্যম নেই। রেস্টুরেন্টে আর কাহাতক খানাদানা করা যায়। কিছুদিন আগে সবাই মিলে জাতীয় জাদুঘরে যেতে গিয়ে মহা যন্ত্রনায় পড়লাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা বন্ধ। সেখান দিয়ে যেতে দেয়া হবে না। আমি জানি না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাদের হঠাৎ এমন নিরাপত্তার প্রয়োজন হলো! এমন কি অনেক ছেলেপেলেদের ভাষা আচার আচরনও প্রচন্ড দুঃখজনক। যাইহোক, দুনিয়া ঘুরে গেলাম জাদুঘরে। গিয়ে দেখি সেখানে বিশাল জটলা। সমাবেশ চলছে। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি বলে রমনায় যাবার চেষ্টা করলাম, সেখানেও বেশ কাঠখড় পুড়িয়ে ঢুকতে হলো। বাচ্চার কথা বলে মিনিট বিশেক সময় পেলাম। কারন পাশেই সরকারের প্রধান সহ আরো গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বাস করেন। একদিন ডঃ ইউনুস সাহেবকে দেখলাম নিরাপত্তা প্রটোকল নিয়ে যমুনায় ঢুকতে। আশেপাশে নিরাপত্তা কর্মীরা অনেক সর্তক। ডঃ ইউনুসকে এর আগের বার যখন দেখেছিলাম তখন তিনি আমাদের মতই আম জনতা না হলেও আমরা তাঁকে আম জনতাই ভাবতাম। তাঁর সাথে হাত মেলাবার সুযোগ হয়েছিলো একবার ২০০৭ সালে সম্ভবত, ব্র্যাকের কোন একটি অনুষ্ঠানে। আগে জানলে ছবিখানা তুলে বাঁধাই করে রাখতাম, এখন হয়ত বাড়তি পরিচয় পত্র হিসাবে কাজে আসত। অবশ্য কয়েক বছর আগে সাকিব আল হাসানের সাথেও ছবি তোলার সৌভাগ্য হয়েছিলো, এখন দাবার গুটি পালটে গেছে। ফলে সেই ছবির কোন মুল্য নাই বরং উল্টো বিপদ।

দিন শেষে আপনার পছন্দমত বন্ধু তালিকা ও নিউজফিড তৈরী করুন। মানসিক স্বাস্থ্য ভীষন গুরুত্বপুর্ন। নিজের যত্ন নিন।

ফাও কিছু ছবিঃ


এক শীতের দুপুরে!


লালবাগ কেল্লায় পরিবিবির মাজারে আমার মেয়ের কৌতুহলী হয়ে 'প্রিন্সেস' অনুসন্ধান।


শীতের পিঠা! - আপনাদের অঞ্চলে এই পিঠার নাম কি?


চকবাজারের বিখ্যাত নিয়াজের জিলাপী।


শীতের সকাল - আমার গ্রামের বাড়ি।


শেফ জাদিদের সামান্য সৃষ্টি। !:#P
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:০৩
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা.....

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭


হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে এমন মন্তব্য করেছেন কলকাতার সাংবাদিক ও লন্ডন ভিত্তিক একটিভিস্ট অর্ক ভাদুড়ী। ফাইনালি কলিকাতার একজন দাদা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যে হারে কলিকাতার ফাটাকেস্ট শুভেন্দু ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা জনমত জরিপ....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৩১

একটা জনমত জরিপ....

নিজ উদ্যোগে একটা জরিপ কাজে গত কয়েক দিন বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষদের সাথে কথা বলেছি। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান থাকলেও নিরপেক্ষ মতামত জানতে, বুঝতে নিজেকে শতভাগ নিরপেক্ষ রেখেছিলাম। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাষা (বাংলা) তুমি কার? (বাঙ্গালী কে তবে আর কাহার বা বাংলা ভাষা ??)

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭


'পতিত ও পতিতা' নিয়ে ব্লগার 'ভুয়া মফিজ' বেশ ক্যাচালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। খানদানী ভাষাবিদেরা তাকে ভাষা নিয়ে অনেক পাঠ দিয়েছিলেন। একথা মানতে দ্বিধা নেই যে, খানদানী ভাষাবিদেরা মনে করে শুদ্ধভাষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

উপন্যাস 'কৃষ্ণকান্তের উইল' পড়েছেন?

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৬



রবীন্দ্রনাথ যখন বাচ্চা পোলাপান-
তখন বঙ্কিমচন্দ্র পুরোদমে লেখালেখি করে যাচ্ছিলেন। সেই সাথে করতেন চাকরি। রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের বই আগ্রহ নিয়ে পড়তেন এবং হয়তোবা মনে মনে ভাবতেন, আরে এরকম গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আপনি আমন্ত্রিত....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৯

প্রিয় সুহৃদ,

আচ্ছালামুয়ালাইকুম।
আমার গুম জীবন এবং গুম পরবর্তী সত্য ঘটনাবলী নিয়ে লেখা 'গুম এবং অতঃপর' এবং 'দ্যা আনটোল্ড স্টোরি' (২০২০-২০২১ সালে সিএনএন, আল-জাজিরা এবং বিবিসি চ্যানেলে আমার নাম/পরিচয় গোপন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×