somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জাহিদুল হক শোভন
এই শহরে অনেক হাজার হাজার ছেলে আছে যারা চুপচাপ থাকে, কথা কম বলে। পৃথিবীতে তারা বোকা, লাজুক, হাঁদারাম নামে পরিচিত। আমাকে এর সাথে তুলনা করলে তেমন একটা ভুল হবে না। নিজের ব্যাপারে বলাটা অনেক কঠিন। তবে নিজেকে মাঝে মাঝে অনিকেত প্রান্তর ভাবি।

গল্প: ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“আমি কি চলে যাবো?”জেনিয়ার এমন কথা শুনে একটু অবাক হয়ে বললাম “হঠাৎ এই রকম কথা কেন বললে?” ও কিছুক্ষন চুপ করে থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো “আমি তো একটা বিরক্তিকর তাই না? আমি একটু হেসে ছাদের রেলিং এর কাছে গিয়ে বললাম ছাদটা দেখতে এখন সুন্দর লাগছে না?” ও আামার দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে হুম সূচক ইশারা দেয় যার অর্থ সব আপনার কল্যানেই হয়েছে। সাধারণত জেনিয়া এমন চুপচাপ টাইপের মেয়ে না। সৌন্দর্য বা মনোহর এইসব নিয়ে তার ভিতরে কোন অহংকার বোধ দেখি না আমি। কেমন একটা মোলায়েম আকৃতির মেয়ে। অন্য সময় ও আমার সাথে অনেক কথা বলে। আমি বলতে না চাইলেও সে নিজে থেকেই বলতে থাকে। মাঝে মাঝে আমি ওকে উম্মাদ মনে করি। উম্মাদ মানুষকে অন্য একটা স্থানে নিয়ে যায়। যেখানে সেই উম্মাদ ব্যক্তিটাকে অনেকে ভয় করে। তার কাছ থেক দুরে থাকে। যেটা আমার বেলায়ও বিদ্যামান। আমিও তার এমন পাগলামির কারনে দুরে দুরে থাকতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুরে থাকা কিংবা লুকিয়ে থাকার সফলতা অর্জন করতে পারিনি, ঠিকি সে আমার সন্নিকটে হাজির হয়ে যেত। তার আজকে এমন চুপচাপ বা শান্ত থাকার কারনে আমি বললাম “কিছু বলবে?” সে পুনরায় মাথা নেড়ে না সূচক ইশারা দিয়ে বুঝায় কিছু বলার নেই। আমি একটু হেসে বললাম “চুপচাপ থাকলে কিন্তু আমার বিরক্ত লাগে।” সে চোখগুলো বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে বলে “মানে কি? আমিই একটা বিরক্ত তাই না? আমিই আপনাকে বিরক্ত করছি। আপনার সাথে দেখছি কথা বললেও আপনার বিরক্ত লাগে আবার কথা না বললেও বিরক্ত লাগে। আপনার সাথে আর কোন কথাই বলবো না আমি। গেলাম, থাকেন আপনি।” আমি বলতে চেয়েছিলাম আরে কোথায় যাও? এভাবে রাগ করার কি আছে আশ্চর্য? কিন্তু কেন যেন বলিনি। ও ছাদ থেকে নামার সিড়ির কাছে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁতে কিড়কিড় করে বললো “আপনি একটা স্বার্থপর, আপনি কখনোই বুঝবেন না। আমি চলে যাচ্ছি একটুও আটকাননি। একটু আটকালে কি হতো? থাকেন আপনি আপনার ভাব নিয়ে।”

এইটা বলেই সে চলে যায়। তার চলে যাবার কথা শুনে কেন যেন আমার হাসি আসলো। আসলে এই বিল্ডিং এ ভাড়াটিয়া হিসেবে আসছি চার মাস হয়ে গেছে। আাসার পর থেকেই মনে হলো একটা রঙ্গিন মোলাটে ঠাই পেয়েছি। যার প্রভাতের রোধে স্ব শরীরের বিষাদ ছায়াকে আড়াল করবো। মিথ্যা অনুভুতির মৃত কল্পনাগুলোকে জাগ্রত করে কবিতার মাঝে রুপ দিব। আমার সে কবিতায় ঘুমিয়ে থাকা পৃথিবীর সন্নিকটে একমুঠো আলো মেলে ধরবো। আমি অনুধাবন করি আমার অবচেতন ভাবনাগুলো উদ্ভট, যার কোন বাস্তবতা নেই। তবুও আমি ছুটে যাই, আশা দেখি অস্থিতার এই শহরে। আর এই অস্থিরতার শহরে জেনিয়াদের বিল্ডিং এর বাসাটা হুট করেই পছন্দ হয়ে যায়। প্রথম প্রথম যখন ছাদে উঠলাম দেখলাম ছাদের অবস্থা ভালো না। ছাদের কোনায় কোনায় শ্যাওলা জমেছে। ছাদের মাঝ খানে ইটের কংকর স্তুপ করা। বাড়ি নির্মান করার জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। দৃশ্যটা আমার কাছে বেমানান লাগে। ছাদে আসাটা যেন অনেক দুষ্কর। এক সপ্তাহ পরেই নিজ উদ্যেগে বিল্ডিং এর কেয়ার টেকার আমজাদ ভাইকে নিয়ে ছাদ পরিষ্কার করার জন্য কাজে লেগে পড়ি। কংকরের স্তুপ গুলো সিমেন্টের বস্তায় ভর্তি করত অপ্রয়োজনীয় জিনিস গুলো ডাস্টবিনে ফেলে দেই। তারপর যে স্থানে শ্যাওলা জমে ছিল তা পরিষ্কার করলাম। ছাদের দক্ষিন দিকে ইট, সিমেন্ট, বালির মাধ্যমে একটা বসার জায়গা তৈরি করলাম। এই বিল্ডিং এর দক্ষিন দিকে বাতাসটা ধেয়ে আসে। ছাদে এসে একটা শ্বাস ফেলার মোটামুটি স্থান করেছিলাম। আমার এমন কর্মকান্ডে ভেবেছিলাম জেনিয়ার বাবা অন্য কিছু মনে করবে। কিন্তু আমার ভাবনাকে ভুল প্রমানিত করে জেনিয়ার বাবা আমাকে পোলাও, মাংস খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিল। ঐ ভোজনের কথা আমার বেশ মনে থাকবে।

এর কয়েকদিন পরেই জেনিয়া আমাদের বাসায় আসে। আমি তখন টেলিভিশন দেখছিলাম। আমাকে বলে “ভাইয়া কি দেখেন?” আমি টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে থেকেই বললাম “রেসলিং দেখি।” জেনিয়া ও আচ্ছা এই শব্দটা উচ্চারন করে আমায় বলে “আমার এইগুলা পছন্দ না। এইগুলা দেখিনা।” আমি ওর দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবো তখনি আম্মা ভিতর থেকে এসে বলে “আরে আমাদের বাসায় এই কার আগমন। আমি ভুল দেখছি নাতো?” জেনিয়া বললো “কেন আন্টি আমার কি আসা নিষেধ? আম্মা হাসতে হাসতেই জেনিয়ার কাছে গিয়ে ওর চুলে হাত বুলিয়ে বলে “দুর পাগলি মেয়ে তোমাকে তো এই বাসায় উঠার পর থেকেই বলছি আমাদের বাসায় আসার জন্য।” আমি টিভিতে নজর দিয়ে রাখলেও ওদের কথা শুনছিলাম। এর একটু পরেই জেনিয়া বলে “বাহ ঘরটা অনেক সুন্দর করে গুছিয়েছেন।” আম্মা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে “সবি আমার এই ছেলেই করেছে বুঝছো” জেনিয়া বলে “তাই? আপনার ছেলে দেখছি অনেক গুছালো।

সেদিনের পর থেকেই ও প্রায় আমাদের বাসায় আসে। আম্মার সাথে কথা বলে, টুকটাক কাজে হেল্প করে, নিজে চা বানিয়ে খায়, আম্মাকে আর আমাকেও দেয়। আমাদের বাসার সবার সাথে যেন খুব তাড়াতাড়ি মিশে গিয়েছিল। যেন ঘুম ভাঙ্গা শহরে ভোরের আলো দেখার একটা সজীবতা প্রতিটা দেয়ালে আশ্রয় নেয়। সময়ের বিষন্নতা মিলেমিশে তার ছায়ার আলো আমাদের নিকট মেলে ধরে। একদিন আমাকে বলে “জাহেদ ভাইয়া আপনি কি জানেন, যে আপনার বউ হবে সে অনেক ভাগ্যবতী হবে।” আমি একটু অবাক হয়ে বলি “যেমন” সে একটা হাসি দেয়। আমি তার হাসির দিকে তাকিয়ে থাকি। সেই হাসির মাঝে অমাবশ্যার ছায়া দুর করার আবাশ আমাকে ছুয়ে যায়। সে হাসতে হাসতেই বলে “এমা ভাগ্যবতীই তো হবে।আপনার বউকে তেমন কাজ করতে হবে না, বিশেষ করে গুছানোর দিকটা। ইশ আমি কত অগোছালো। দোয়া করেন আমার কপালে যেন এমন একটা গুছালো ছেলে জুটে।” তার কথা শুনে আমি হাসতে থাকি। আমার কি বলার উচিৎ ছিল তা আমি অনুধাবন করে বুঝতে পারিনি।

সময়ের কাটা পার হয়ে দিন অতিক্রম হতে থাকে। দিন অতিক্রমের রেশ ধরেই আমার ভাবনার জগতে ছাদের পরিবেশটা কিভাবে আরো মনোহর করা যায় সেই চিন্তা প্রবেশ করে। মনস্থ করে তার দুদিন পরেই ছাদে কিছু ফুলের টব কিনে এনেছিলাম। বিকাল বেলায় যখন ছাদে উঠতাম ফুল গাছে পানি দিয়ে পরিবেশটাকে একটা সুরের মাঝে নিয়ে যাওয়ার কমতি ছিলনা আমার। এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখে সে আমায় একদিন বলে “ফুলকে যে কেউ গ্রহণ করতে পারে না। যারা এমন পরিপাটি গুছালো কিংবা ফুলের প্রতি আকর্ষন থাকে তাদের কবিতার শব্দ গুলো নিখুত হয়। পবিত্র হয় তাদের ভালোবাসার যে কোন বিষয়।” তার কথা শুনে থমকে গিয়েছিলাম। সে কি বললো আর তা দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছিল আমি কিছুই বুঝিনি। আমার মাথার উপর দিয়ে গিয়েছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে হাসতে হাসতেই বলে দেয় “কিছু না” কিন্তু এই “কিছু না” বাক্যটা আমি বুঝতে পারি তার একমাস পর। সেদিন আকাশটা কেমন যেন নিরব হয়েছিল। যেন কারো কাছ থেকে কোন কিছু শোনার অপেক্ষায় ছিল নীল গগনটা। সে যখন ইতস্ততার সহিত আকাশের দিকে তাকিয়ে ছাদের রেলিং ধরে আমায় বলেছিল “আপনি যদি কিছু মনে না করেনে আমি কিছু কথা বলতে চাই।” আমি গাছে পানি ঢালতে ঢালতেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলাম “হুম বলো” সে কিছুক্ষন চুপ করে ছিল। যেন কথাগুলো মনের ভিতর থেকে ঠিক করে নিচ্ছিল। আমি যেই বলবো কি ব্যাপার চুপ হয়ে গেলা যে? কিন্তু তার আগেই সে বলে “আমি কি আপনাকে নিয়ে ভাবতে পারি?” আমি ওর দিকে তাকালাম। সে তখনো আকাশের দিকে তাকিয়েছিল। আমি বললাম “মানে কি” ও আমার দিকে ফিরে বলে “মানে আমি আপনাকে নিয়ে ভাবতে চাই। যারা পরিপাটি, গুছালো, যাদের ফুলের প্রতি একটা নেশা থাকে তারা আর যাই হোক তাদের ভালো লাগায় কোন ধুলো জমা পড়তে দেয় না। তারা তাদের আশেপাশের সব মানুষদের অলওয়েজ এইভাবে গুছিয়ে, পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখে।” আমি অবাক হয়ে হাসতে হাসতে তাকে বলি “তুমি দুপুরে ভাত খেয়েছো? ভার্সিটি থেকে আসার পর নিশ্চয় কিছু খাওয়া হয়নি। ক্ষুধায় উল্টা পাল্টা বকছো বুঝেলে মেয়ে?” সে আমাকে বলে “আমি মোটেই উল্টা পাল্টা বকছি না। আমার মাথা ঠিকি আছে।” আমি কি বলবো বুঝতে পারিনি। এই রকম ভাবে ও আমার নিকট এমন একটা অনুভুতি পেশ করবে আমার ধারনাই ছিল না। তার এপ্লিকেশন এপ্রোভ করার মানসিকতা তৈরি হয়নি। কারন এই এপ্লিকেশন কিংবা তার অনুভুতি নিয়ে আমি কখনো ভাবি নি। আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই একটু হেসে তাকে বললাম “আমার একটা কাজ আছে বুঝছো? আমি এখন যাই। তুমি আপাতত আমাকে নিয়ে না ভেবে এই ফুল গাছকে নিয়ে ভাবো। এই ধরো পানির লত, ফুল গাছে পানি দাও। এইটা বলেই চলে যাই। তারপর থেকে ওকে দেখলেই আমি চুপ করে সরে যেতাম। আমার কাজ আছে, একটু বাহিরে যাচ্ছি এগুলা বলে এড়িয়ে চলতাম। মাঝে মাঝে অনেকটা রেগে বলতাম তুমি কি জানো তুমি একটা বিরক্ত ছাড়া আর কিছু না। সে মুখ গোমড়া করে রাখতো। তারপর চলে যেত। কিন্তু খানিক বাদে কিংবা এর পরের দিন আমার সামনে এসে চুপ করে ঠিকি আবার দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলতো। যার উদাহরণ একটু আগের অভিমান নিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনাটাই।

আমি যখন জি.ই.ছি মোড় থেকে রাত সাড়ে নয়টার নাগাত আড্ডা মেরে বাসায় ফিরলাম ব্যস্ত শহরের কমলা/হলুদ রং এর আলো আর শৈত প্রবাহের মাঝে একটা উচ্ছলতা নিজেকে ছুয়ে দেয়। এই শহরের রাতের বেলা প্রকৃতি একটা বোবার রুপ ধরে। চারপাশে নিশ্চুপতার আবাশ তৈরি হয়। মানুষগুলো সারাদিনের ক্লান্তির জন্য নিদ্রাকে আমন্ত্রন জানায়। রাত্রি শেষে আলোর ছটা ছড়িয়ে পড়লেই হুড়মুড়ি খেয়ে দৌড়ে ছুটে। বাসায় ফিরে অনুধাবন করি মেয়েটা কি চায়? আমার প্রতি ওর তীব্র আলোড়নের কারন কি? আমার শহরে ঘুম আসে না। এই বিল্ডিং এ আসার দুমাস পর থেকে তার অনুভুতি যখন আমার নিকট পেশ করতে শুরু করে আমি উদ্বেগপূর্ণ হয়ে দিশেহারা হয়ে যাই। আর এইসব নিয়ে ভাবতে আর দিন অতিক্রম করতেই চার মাসের গন্ডি পেরই। আমি এখনো বুঝে উঠতে পারিনি তাকে কি বলা উচিৎ আমার।

ছাদে আসতেও এখন কেমন যেন নিজের প্রতি উদাসীনতা তৈরি হয়। যদিও এই বিল্ডিং, বিল্ডিং এর ছাদ আমার না তবু এই ছাদের দিকে আগমন বা পা বাড়াতে উদাসীনতা তৈরি হওয়ার পরও মনের ভিতর ইচ্ছা শক্তি জাগে। ছাদে এসেই যখন একটা স্বস্থির নিশ্বাস নিলাম। তার পরেই দেখলাম জেনিয়া ফুল গাছগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবলাম চলে যাই। কিন্তু এইভাবে এসে আবার হুট করে চলে যাওয়াটা সুন্দর দেখায় না। আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা সামনে হেটে তাকে বললাম “কি খবর? আজকাল তো দেখাই যায় না তোমায়।” সে নিরব সুরে বলে “লুকিয়ে লুকিয়ে থাকলে স্বাক্ষাত হওয়ার কথা না তাই না?” আমি বেশ বুঝতে পারছিলাম তার এইভাবে কথা বলার ধরন। আমি বললাম “তাই নাকি? তা কি করছো এখানে?” সে চোখ বড় করে আমাকে বলে “আপনি চোখে কম দেখেন নাকি? মরার প্ল্যান করি, ছাদ থেকে লাফ দিব। আমাকে ধাক্কা দিয়ে একটু হেল্প করবেন?” আমি একটু হেসে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলি “আচ্ছা বলো তো একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে কেন ভাবতে চায় কিংবা একটা মানুষের ভাবনা/চিন্তায় কেন আরেকটা মানুষকে আমন্ত্রন জানায়?” সে আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে এক কথায় উত্তর দিলো “মৃত উষ্ণতাকে নতুন জীবন দিতে” আমি উদ্বেগপূর্ণের সহিত ওর দিকে তাকিয়ে ওর চারপাশে পায়চারি করতে থাকি। ও আমার এমন পায়চারি দেখে বলে “কি এতো বিম্রতি করেন কেন? আমি তাকে বললাম “তুমি আমাকে কতটুকু চেনো? সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে “আমি চিনতে চাই না, আমি আপনাকে বুঝতে চাই, আপনাকে পড়তে চাই।” আমি একটা অট্টহাসি দিয়ে বলি “আমাকে নিয়ে পড়তে চাইলে তো আমাকে জানতে হবে, চিনতে হবে। পড়তে চাওয়া কিংবা চেনা/বুঝা একই কথা।” সে চুপ করে থাকে। আমিও ওর দিকে তাকিয়ে চুপ করে থাকি। তার চুপ করে থাকা দেখে বললাম “তোমাকে একটা গানের কয়েকটা লাইন শোনাই……
মুখোশে যাকে তুমি চেন
চেন না যাকে মুখোশবিহীন
আমরা দুজন সত্য পুরুষ
নিজের ভিতর দুজনেই পরাধীন…..

সে গানের কথা গুলা কিছু বুঝলো কিনা জানি না। সে একটু অবাক হয়ে বলে কেমন গান এটা? কার গান? আমি কিছুক্ষন চুপ করে পুনরায় রেলিং এর কাছে এসে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম “এটা আর্টসেলের “মুখোশ” গান। আমাকে না তুমি বুঝতে চাও, পড়তে চাও, গানটা শুনিও অনেকটা হেল্প করবে তোমাকে।” এইটা বলেই আমি চলে আসি। চলে আাসার আগে ও আমাকে ডাক দিয়ে বলে “শোনেন, আমি যখন বলেছি আপনাকে নিয়ে আমি ভাবতে চাই, পড়তে চাই তখন সেটা আমি করবোই। নিশ্চিত থাকেন এবং আপনার ভাবনার জগতেও আমি রাজ করবো” আমি কিছু না বলে মাথা চুলকিয়ে চলে আসি। আমি অনুধাবন করি- আমাকে এখন যে রকম পরিপাটি, গুছানো দেখা যায় তার বিপরীতেও আমার আরেকটা ছায়া আছে। আর এই দুইটা আকৃতি যুক্ত ব্যক্তিই আমি। দুইটা ছায়া ভিন্ন হলেও ছায়া দুইটা এক। একেক সময় একেক ছায়ার আকৃতির ধরন। দুইটা আকৃতিই নিজের ভিতর লুকিয়ে আছে। তবে তার কথাটা আমাকে ভাবায়। সে আস্থার সহিত আমাকে বলেছে আমার ভাবনার জগতে সে রাজ করতে আসবে। আমাকে তার করে নিবে। দেখা যাক, আমার এই ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট জীবনে জেনিয়ার উক্তি কতটা বাস্তবমুখী হয় আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম…
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×