somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যর্জুবেদে মোহাম্মদ (সাঃ)- মুন্ডিত কেশ রুদ্র নেড়ে -১

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকাঃ

শুক্ল যর্জুবেদে ১৬শ অধ্যায়ে জনৈক রুদ্রের প্রতি শতাধিকবার নমস্কার জ্ঞাপন করা হইয়াছে । বিভিন্নভাবে বিভিন্ন গুনাবলী উল্লেখ করিয়া নমস্কার জ্ঞাপন করা হইয়াছে । তন্মধ্যে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে, কিছু বিশেষ লক্ষণ আছে । আমরা তাহার লক্ষণ গুলি এখানে উদ্বৃত করব, যাহাতে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় । এই ভাবে আরম্ভ করা হইয়াছেঃ

নমস্তে রুদ্র মনব্য উতো ত ইষবে নমঃ ।
বাহুভ্যামুত তে নমঃ ।।১
যা তে রুদ্র শিবা তনুরঘোরাহ পাপকাশিনী ।
তয়া নস্তরা শন্তময়া গিরিশন্তাভি চাকশীহি ।।২

অনুবাদঃ'
হে দুঃখনাশক জ্ঞানপ্রদ রুদ্র, তোমার ক্রোধের উদ্দেশ্যে নমস্কার,
তোমার বাণ ও বাহুযুগলকে নমস্কার।
হে রুদ্র ! তোমার যে মঙ্গলময় সৌম্য পুণ্যপদ শরীর আছে,
হে গিরিশ! সে সুখতম শরীরের দ্বারা আমাদের দিকে তাকাও ।

নমোহস্ত নীলগ্রীবায় সহস্রাক্ষায় মীঢুষে ।
অথো যো অস্য সত্বানোহহং তেভ্যোহ করং নমঃ ।। ৮

অনুবাদঃ
চিরতরুন সহস্রাক্ষ নীলকন্ঠের প্রতি আমার নমস্কার ।
তাহার যাহারা ভৃত্য তাহাদেরও আমি নমস্কার করি ।

বিশ্লেষণঃ

প্রথমতঃ

এখানে দুটি বিশেষ লক্ষণ হইলঃ

১. তিনি দুঃখনাশক,জ্ঞানপদ ও মঙ্গলময় হইবেন, কিন্তু তিনি ধর্মশত্রুদের প্রতি কঠোর হইবেন এবং
২. তাহার ভৃত্য তথা শিষ্য হইবে । ইহার দ্বারা প্রমাণ হয় যে, উক্ত রুদ্র উর্দ্ধালোকের দেবতাগণের মধ্যে কেহ নহেন বরং পৃথিবীস্হ মানবদের মধ্যে হইবেন । কারণ দেবতাগণের পূজক হয়, ভৃত্য নয় । ভৃত্য মালিকের সহচর্যে থাকে , তাহার সেবা করে । দেবতাদের ক্ষেত্রে ইহা সম্ভবপর নয় ।

আরো একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, অনেক মুণি ঋষি বনে জঙ্গলে তপস্যা করেন, আবার অনেক ঋষি পর্বতে তপস্যা করিয়া সিদ্ধিলাভ করেন । এখানে 'গিরিশ' শব্দ দ্বারা উক্ত ঋষি এমন হইবেন, যিনি পর্বতে সিদ্ধি লাভ করিবেন ।

আমরা দেখতে পাই যে, হযরত মোহাম্মদ সাহেব হেরা পর্বতে তপস্যা করিতেন এবং সেখানেই তিনি ঐশীবাণী লাভ করেন । খৃষ্টান ঐতিহাসিক প্রফেসর হিট্টি পর্যন্ত এই কথা স্বীকার করিয়া লিখিয়াছেন-

He was often noticed Secluding himself and engaing in meditation within a little cave (ghar) on a hill outside of Makkah called Hira----Mohammad heard in ghar Hira a voice Commanding Recite thou in the name of the Lord who created etc. This was his first revelation (History of the Arabs ch VIII page 112.)

দ্বিতীয়তঃ তিনি ধর্ম শত্রুদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর ছিলেন । তিনি তাহাদের সঙ্গে বহু যুদ্ধ করিয়াছেন । এই লক্ষণটি অন্য কোন ঋষির মধ্যে দৃষ্ট হয় না ।

তৃতীয়তঃ তাহার ভৃত্য তথা শিষ্য সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক ছিল । আজ পর্যন্ত যা কোন ঋষির ভাগ্যে তাহার জীবন কালে ঘটে নাই ।

নমঃ কপর্দিনে চ ব্যুপ্তকেশায় চ
নবঃ সহস্রাক্ষায় চ শতধন্বনে চ
নমো গিরিশয়ায় চ শিপিবিষ্টায় চ
নমো মীষ্টমায় চেষূমতে চ ।। ২৯

অনুবাদঃ
জটাজুটধারী ও মন্ডিত কেশ রুদ্রকে নমস্কার
সহস্রাক্ষ ও বহু ধনু ধারী রুদ্রকে নমস্কার
পর্বতশায়ী ও অর্ন্তযামী রুদ্রকে নমস্কার
বর্ষণকারী ও বানধারী রুদ্রকে নমস্কার । ২৯

গৌতম বুদ্ধ মুন্ডিত কেশ হইলেও তিনি ধনুর্ধারী ও পর্বতে সিদ্ধিলাভকারী নহেন । পক্ষান্তরে হযরত মোহাম্মদ সাহেবের দীর্ঘকেশ ছিল, যাকে মুসলিমগণ নবীর আদর্শরূপে বাবরী চুল বলে; আবার মুন্ডিত কেশ হইল তাহার বিশেষ পরিচয় । মুন্ডিত কেশ প্রথা তাহার শিষ্যগণ তথা মুসলিম জাতির মধ্যে এইরূপ প্রসার লাভ করিয়াছে যে, তাহারা আজো নেড়ে নামে সমধিক প্রসিদ্ধ হইয়া আছেন । আর্য ঋষির মধ্যে এই প্রথা প্রচলিত নাই । মন্ত্রের প্রত্যেকটি বিষয় হযরত মোহাম্মদ সাহেবের মধ্যেই বিদ্যমান, একাধারে দীর্ঘকেশী, মুন্ডিত কেশ, ধনুর্ধারী বাণধারী ও পর্বতাশায়ী অর্থাৎ পর্বতে তপস্যাকারী

-----চলবে ....


সূত্রঃ ---বেদ - পুরাণে আল্লাহ ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) - ধর্মাচার্য অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়, ইসলামী সাহিত্য প্রকাশনালয়, ৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০.
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৫
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×