কয়েক লাখ বছর পুর্বে বঙ্গদেশে কিছু ফাঁকিবাজ ছাত্র ছিল। ভযাবহ ফাঁকিবাজ। উহারা রাজ্যে কেবল গোল করিত। তাহারা শাস্ত্র পড়িত না। টোলে যাইতো না। কাদচ পাঠ্যপুস্তক স্পর্শ করিত না। পরীক্ষার সময় নকল করিত।
একদা সকালে গুরু মাশাই ঘোষণা করিলেন- ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখে পরীক্ষা হইবেক!
গুরুমহাশয়ের ঘোষণা শুনিয়া ফাঁকিবাজ ছাত্রদের মাথায় যেন বাজ পড়িল।
কেননা, উহার সারা বছর কেবলই ফাঁকি দিয়া ঘুরিয়া বেড়াইয়াছেন। অধ্যয়ন করেন না। বিড়ি ফুকিয়া মেয়েদের স্কুল ও কলেজের সামনের চায়ের দোকানে আড্ডা মারিয়াছেন। উহাতে তাহাদের দারুণ আনন্দময় সময় কাটিয়াছে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা আসিয়াই পড়িল। অগত্যা উহারা গুরুমশাইয়ের পাঠশালায় ছুটিল। গুরু মহাশয় প্রশ্ন প্রনয়নে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু উহাদের চিৎকারে বাইরে আসিলেন।
- বটে এখানে এতো গোল কিসের?
- গুরুমহাশয়, পরীক্ষা পিছাইতে হইবেক!
-কি কারণ, শুনি?
-আমরা প্রস্তুতি নিবার সময় পাই নাই। এখন আমাদের প্রস্তুতি নিতে হইবেক। সারা বছর অধ্যয়ন করিতে পারি নাই।
- সবাই তো সারা বছর পড়িয়াছে। তোমরা পড়িলে না কেন? তোমাদের কি সমস্যা ছিল?
-গুরু মহাশয়, আমরা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। পড়িবার সময় পাই নাই। আমাদের অনেক কাজ থাকে । পড়াশোনা তো আমাদের প্রধান কাজ নহে। সমাজে আমাদেরকে প্রচুর দায়িত্ব পালন করতে হয়।
-তোমাদের কাজই তো পড়াশোনা করা। অন্য কাজ আবার কি? তোমাদের পিতামাতা কি তোমাদিগকে শাসন করেন না?
- কাজ আছে , গুরুমহাশয়। আমাদিগের অনেক কাজ আছে।
- সবাই পড়িয়াছে। অত এব পরীক্ষা হইবে। আর ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা হইবে ইহা তো সকলেই জানা। সব পাঠশালাতেই এই নিয়ম। এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানোর কোন উপায় নাই। ৩০শে ডিসেম্বর পরীক্ষা হইবেই। কেননা, ১লা জানুয়ারিতে নতুন ক্লাস শুরু করিতে হইবে। সুতরা্ং পরীক্ষা পিছানো সম্ভব হইবে না। আগে তো পরীক্ষার তারিখ ছিল ২৩ ডিসেম্বর। এখন উহা ৩০ শে ডিসেম্বর করা হইয়াছে।
তোমাদের উচিত ছিল পড়াশোনা করা। তোমরা কি জাননা- ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ।
গুরু মহাশয়ের যুক্তি ছাত্ররা মানিল না। উহারা সিদ্ধান্ত নিল পরীক্ষার দিন সকালে গুরু মহাশয়ের পাঠশালা অবরোধ করিবে। দেখি - উনি কি প্রকারে পরীক্ষা গ্রহণ করেন!