মূলত দুটো বিষয়ে নিশ্চিত হতে শ্রীলঙ্কায় শল্যচিকিত্সক ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন মাশরাফি।
প্রথম বিষয় : হাঁটুর ইনজুরি সারাতে এখনই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন আছে কিনা সেটা জানতে।
দ্বিতীয় বিষয় : ফিটনেস ফিরে পেলে এখনই খেলার মাঠে নামা নিয়ে কোনো সংশয় আছে কিনা।
দুটি বিষয়েই অস্ট্রেলিয়ার শল্যচিকিত্সাবিদ ডেভিড ইয়াং যা বলেছেন সেটা মাশরাফি এবং তার ভক্তদের স্বস্তি দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরে কাল মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে এসে সেই স্বস্তিটা মিলল মাশরাফির কণ্ঠেও—‘দারুণ আত্মবিশ্বাস আছে আমার। আমি খুব শিগগিরই ফিটনেস ফিরে পাবো।’
—ইনজুরির কি অবস্থা আপনার?
মাশরাফি এই লড়াইয়েও জিততে চাইলেন, ‘কয়েক দিনের একটা টুর্নামেন্ট খেলে দেয়ার জন্য এই ইনজুরিটা আমার জন্য কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। নিজেকে আমি সেভাবেই প্রস্তুত করছি। তাই এখন আমি যে কোনো সুযোগই নিতে চাই।’
অস্ট্রেলিয়ান শল্যচিকিত্সক ডেভিড ইয়াং কলম্বোতে মাশরাফির ইনজুরিগ্রস্ত হাঁটু এবং তার রিপোর্ট দেখে জানিয়েছেন, মাশরাফির ডান হাঁটুতে চোটের যে অবস্থা সেটা নিয়ে এখন কিছু সময়ের জন্য ক্রিকেট খেলা তার জন্য তেমন কোনো সমস্যা তৈরি করবে না। তবে এই চোট নিয়ে তিনি যদি দীর্ঘসময় খেলতে থাকেন তাহলে ঝুঁকিটা তার অনেক বেড়ে যাবে। আর তাই মাশরাফিকে এখন দীর্ঘ সময়জুড়ে চলা কোনো টুর্নামেন্টে খেলা উচিত নয়। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে মাশরাফি এখন অতিরিক্ত তালিকার খেলোয়াড় হিসেবে দলের সঙ্গে ফিটনেস ফিরে পেতে লড়ছেন। ড. ইয়াং তার এই ফিটনেস ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হাঁটুর এই চোট থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে তাকে বিশ্বকাপের পর অস্ত্রোপচারের জন্য রায় দিয়েছেন। মূলত অস্ত্রোপচার ছাড়া মাশরাফি তার চোট পাওয়া হাঁটুতে আগের সেই পুরো শক্তি পাবেন না।
হাঁটুতে অস্ত্রোপচার মাশরাফির জন্য মোটেও নতুন কোনো বিষয় নয়। দুই হাঁটুতে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ছয়বার অস্ত্রোপচার করিয়েছেন মাশরাফি। হাঁটুতে সম্ভাব্য সপ্তম অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে মাশরাফি বলছিলেন, ‘আমিও জানি আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করা লাগবে। তবে সেটা যে এখনই করতে হবে—এমন কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আপাতত এই অস্ত্রোপচার নিয়ে আমি বিশ্বকাপের পরে চিন্তা ভাবনা করতে চাই।’
ডা. ইয়াং জানিয়েছেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর মাশরাফি আরও অন্তত পাঁচ বছর ক্রিকেট খেলতে পারবে।’
যুদ্ধে জয়ের আগাম উচ্ছ্বাস লুকানোর কোনো চেষ্টা না করে মাশরাফি বলেছেন--, ‘ডা. ইয়াংয়ের সঙ্গে আমার এই সাক্ষাত্ আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সবকিছু পরীক্ষা করে তিনি আমার ফিটনেস ফিরে পাওয়ার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ও অগ্রগতি দেখে অনেক সন্তুষ্ট।’
—ফিটনেস। ম্যাচ ফিটনেস! এই শব্দটা এখন মাশরাফি কাছে সবচেয়ে আরাধ্য বিষয়। নিজের ম্যাচ ফিটনেস প্রমাণ করার জন্য পরবর্তী পরিকল্পনাও ঠিক করে ফেলেছেন মাশরাফি।
আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের সুপার লিগ। এই লিগের শেষ দুটো ম্যাচে খেলে মাশরাফি নিজের ফিটনেস পরীক্ষা দিতে চান, ‘আমি ঠিক করেছি প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগের শেষ দুটো ম্যাচ খেলব। তাতে নিজের ম্যাচ ফিটনেসের পরীক্ষাটা ঝালাই হয়ে যাবে।’
২১ ডিসেম্বর এই প্রিমিয়ার ক্রিকেটের এক ম্যাচে খেলতে গিয়ে হাঁটুতে চোট নিয়ে মাশরাফির বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্বপ্নটা এখন ধূসর। সেই প্রিমিয়ার ক্রিকেটের শেষ দুটি ম্যাচে খেলে মাশরাফি নিজের বিশ্বকাপ স্বপ্নকে রঙিন করতে চান।
ইনজুরির সঙ্গে মাশরাফির লড়াই বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন কোনো কাহিনী নয়। প্রতিবারই সেই লড়াইয়ে জয়ীর নাম মাশরাফি।
আরেকবার না হয় জিতুন মাশরাফি এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। গুডলাক ম্যাশ!
সূত্র: আজকের দৈনিক পত্রিতা সমূহ এবং টেলিভিশন সংবাদ----
মাশরাফি ইনজুড়ি লড়াইয়ে জয়ি হয়েই মূল একাদশে জায়গা করে নিবে এবং দেশের জন্য বয়ে আনবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্য।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট
পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:
وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন
মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)
ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)
০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।
ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।