somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাদেন : হলিউড ভার্সন

০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'মোস্ট ওয়ান্টেড' ঘোষিত হওয়ার পুরো ৯ বছর আট মাস ২০ দিন মার্কিন সেনাবাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে থাকতে সক্ষম হয়েছিলেন সৌদি প্রকৌশলী থেকে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেওয়া ওসামা বিন লাদেন। কিন্তু মার্কিন অভিযানে লাদেনের মৃত্যু আবারও প্রমাণ করল কেউই সারাজীবন লুকিয়ে থাকতে পারে না। এই মৃত্যুর পরে কি? আর কিছু হোক বা না হোক হলিউড যে ছবির জন্য চমৎকার একটি প্লট পেয়ে গেছে তার আর বলতে হবে না।এর আগে ইরাক, আফগানিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে হলিউডি ছবির প্লট ছিল গতানুগতিক। সাধারণ বেসামরিক মানুষের মৃত্যু, সেনাদের সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগ। যার বেশির ভাগই বঙ্ অফিসে ভরাডুবির সম্মুখীন হওয়া ছাড়া দর্শক মনে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি। এ তালিকায় মাত্র এক কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করা অস্কার পাওয়া 'হার্ট লকার'ও রয়েছে। কিন্তু এখন লাদেনের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে। যে মার্কিনিরা এতদিন লাদেনকে 'কোনো এক জুজু' হিসেবেই মনে করে আসছিল, তার লাশের ছবি দেখার পর মার্কিন সেনাদের প্রতি এর জনগণের আস্থা অনেকটাই ফিরে এসেছে। আর হলিউডও সুযোগ পেয়েছে আবারও র‌্যাম্বোর পর 'রিয়েল মার্কিন হিরো' তৈরির। যার লক্ষ্য হবে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধীকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া।যদি জন ওয়েন বেঁচে থাকতেন অথবা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারের বয়স ১৫ বছরও কম থাকত, তবে বলা যেত পাকিস্তানের অভিজাত এলাকা অ্যাবোটাবাদে নেভি সিল সদস্যদের 'লাদেন' অভিযানের নেতৃত্বে তাঁদেরই দেখা যেত। এমন এক ছবি যা হবে মধুর সমাপ্তির 'ব্ল্যাক হক ডাউন'র মতো ট্যাগ লাইন হবে ইসলামাবাদের 'ডাই হার্ড'। 'হার্ট লকার' ছবির ব্যর্থতায় হতাশ এর পরিচালক ক্যাথরিন বিগোলো হয়তো এবার 'কিল বিন লাদেন' নাম দিয়ে তাঁর ছবির একটি ফলোআপ নির্মাণ করে আগের সেই ক্ষতিও পুশিয়ে নিতে চাইবেন। বিষয়টিকে ঠাট্টা মনে করার আগেই বলে দেওয়া উচিত, বিনোদনের খবরভিত্তিক ওয়েবসাইট 'ডেডলাইন' জানিয়েছে, ক্যাথরিন ও তার 'হার্ট লকার' ছবির অস্কারজয়ী চিত্রনাট্যকার মার্ক বোয়াল বেশ কিছুদিন যাবত লাদেনকে ধরার ব্যর্থ একটি অভিযান নিয়ে চিত্রনাট্য তৈরির কাজে ব্যস্ত। ছবির সম্পর্কে খুব বেশি বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও যানা গেছে, লাদেনের হত্যা সফল হওয়ায় এখন তাঁরা চিত্রনাট্যে বেশ পরিবর্তন আনছেন। যদিও এ সম্পর্কে ক্যাথরিনের মুখপাত্র এখনই কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান।টেলিভিশনের ইতিহাসের দিকে যদি তাকানো যায় তবে দেখা যাবে। এ ধরনের সফল সেনা অভিযানের ওপর ভিত্তি করে 'বোকা বাঙ্'ই এগিয়ে আসে ছবি নির্মাণে। ১৯৭৬ সালে উগান্ডায় বন্দি উদ্ধারে ইসরায়েলের কমান্ডোদের সফল অভিযানের ওপর দুটি টেলি ছবি নির্মিত হয়েছিল ঘটনার ছয় মাসের মধ্যে। ইরাকি বিদ্রোহীদের হাতে আটক মার্কিন নারী সেরা জেসিকা লিঞ্চের উদ্ধার অভিযান নিয়ে নির্মিত টেলি ছবি টেলিভিশনে সম্প্রচার হয়েছে সেই ২০০৩ সালেই।মার্কিন সেনাদের বিশেষ দল নেভি সিলদের (এসইএএল : নৌ, বিমান ও স্থল) বীরগাথা নিয়ে চার্লি শিনকে নায়ক করে ১৯৯০ সালেই হলিউডে 'নেভি সিল' নামের ছবি নির্মাণ হয়েছে। সেই ছবির পরিচালক লুইস টিগ বলেছেন তেমন কিছু যদি আবারও নির্মাণের সুযোগ হয়, তবে তা হওয়া উচিত 'ইউনাইটেড ৯৩'-এর মতো। ৯/১১-এর সেই দুটি বিমানের একটি নিয়ে সত্যি ঘটনা, সত্যি চরিত্রের সঙ্গে সামান্য কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে 'ইউনাইটেড ৯৩' নির্মাণ করা হয়। আর যদি তাই হয় এ অভিযানের ওপর নির্মিতব্য যেকোনো ছবি নির্মাণে অবশ্যই নেভি সিলের সাহায্য নেওয়া উচিত। কারণ তারা তাদের প্রতিটি অভিযান ভিডিও করে। লুইস বলেছেন, যদি করতেই হবে তবে তাতে কমেডির মিশ্রণ থাকতে হবে। কারণ নেভি সিল হওয়ার জন্য যে বিশেষ গুণগুলো দরকার তা হলো সাহস, শক্তি, পরিশ্রম করার ধৈর্য এবং রসবোধ। যা শারীরিক সামর্থ্যের পাশাপাশি এক সফল যোদ্ধার মানসিক শক্তিকেই প্রকাশ করে।
তাহলে কি আমরা অচিরেই 'লাদেন হত্যা অভিযান' নিয়ে কোনো ছবি পাচ্ছি? আসল কথা হলো, এখনো কিছুই নিশ্চিত নয়। তবে এতটুকু নিশ্চিত যে ছবি হবেই। কারণ লাদেনকে হত্যার জন্য অভিযান শুরুর পরই স্টিভেন স্পিলবার্গ ঘোষণা দিয়েছিলেন, অভিযান সফল হলেই তা নিয়ে তিনি ছবি করবেন এবং এর জন্য অগ্রিম তিনি স্বত্বও কিনে রেখেছেন। এমনকি ছবির নায়কও তিনি ঠিক করে রেখেছেন। নেভি সিলের এই অভিযানগুলোর নেতা হিসেবে স্পিলবার্গের ছবিতে থাকবেন ম্যাট ডেমন।আর যদি শেষ পর্যন্ত ছবি নাও হয়, কমপক্ষে বই আকারে যে অভিযানটি পাওয়া যাবে তা একরকম বলে দেওয়া যায়। কারণ নেভি সিলের অনেক অভিযান তাদের সদস্যদের কল্যাণে বই আকারে বাজারে চলে এসেছে। আর একবার যদি বই আকারে বাজারে আসতে সক্ষম হয় তা ছবি হতে আর কত সময় নেবে?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×