চমৎকার সকাল, বেশ চনমনে রোদ উঠেছে, তেমন কোনো তাড়া নেই, বিকালে ঘুরতে বের হবো তবে এই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিজস্ব। নিজের মতো করে কাটানো যাবে, অবশ্য সকাল বলতে কিছু অবশিষ্ট আছে কি নেই এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, হোটেলটা আবার দেখলাম, বেশ রাজকীয় ব্যাপার, রুমগুলোও বেশ বড়, লুকুকে অবশেষে শান্ত করা গেছে, মাথায় হাত বুলিয়ে রাগ কমানো হয়েছে, ও ব্যাগসহ 12টার আগেই হিজরত করবে বলেছে, কোন রুমে এখনও জানে না, তবে আমাদের সুজন সমাজে আসলে এটা বড় কোনো সমস্যা না, একটা রুমে বিছানায় ভাগাভাগি করতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
সবাই আলাদা চাদরের তলায় থাকলেই হলো, সুন্নাহ হিসাবে একই চাদরের নীচে 2 জন পুরুষ থাকা নিষিদ্ধ, তবে বালক হলে আলাদা হিসাব। আমাদের ভেতরে কোনো বালক নেই, হোটেলে পর্যাপ্ত লেপ-কম্বল আছে, সবার জন্য আলাদা কম্বলের ব্যাবস্থা হয়ে যাবে। লিটু ভাই সকাল বেলা বাইরে থেকে এক চককর দিয়ে এসেছে, এখানের মিষ্টির কদর আছে, ভালো মিষ্টি বানায় এরা। এমন কারনেই সকাল বেলা এক মিষ্টির দোকানে সামনে দাঁড়িয়ে অযথা মিষ্টি কিনে ফেললাম। অবশ্য এমন কাজে উৎসাহি মানুষ কম, এই মিষ্টি খাওয়ার বিষয়টা নিয়ে আমরা যতটা আগ্রহী ততটা আর কাউকে দেখা গেলো না, মিষ্টি খেয়ে আবার হোটেলে ফিরলাম। দুপুরে খেয়ে ঘুরতে যাবো, কি করবো না করবো তা ঠিক করা নেই, আশে পাশের দ্্রষ্টব্য সম্পর্কেও কোনো ধারনা নেই। শহরটা অন্যরকম, এটা বুঝতে পারলাম দেয়ালগুলো গোলাপি, বেশীর ভাগই দোতালা বাসা, তবে ওদের অধিকাংশই মনে হয় মাটির। মেয়েরা রংচংএ ঘাঘড়াজাতীয় পোশাক পড়েছে, ছেলেদের মাথায় পাগড়ী, ছেলেরা যেমন পোশাক পড়ে ওটা নিয়ে কথা বলা ঠিক না, তবে কেউ একজন এসে তথ্য দিলো এখানের মেয়েরা সারাজীবনে একটা ঘাঘড়াই বানায়, এই ঘাঘড়া বানানো হতে থাকে আশৈশব কাল, এবং বিবাহের পরে ওটা দিয়ে দেওয়া হয় তার সাথে, একেবারে হতদরিদ্্র না হলে কেউ এক পোশাকে জীবন যাপন করতে পারে না।
হয়তো মিথ্যা এই তথ্য, তবে তখন এটাতে চমৎকৃত হয়েছিলাম নিঃসন্দেহে, এদের ধুতিও নাকি বিশাল বহরের একটা জিনিষ, শ্বশুড় বাড়ীর উপহার, ওটাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যাবহার করে ছেলেরা। উদ্দেশ্য বিহীন ঘুরছি আমরা সবাই, ঠিক উদ্দেশ্য বিহীন বলা যায় না, যন্তর মন্তর বলে একটা জিনিষের নাম শুনেছি, গিয়ে দেখে আসবো। রাস্তায় মানুষের ভীড় আছে, আর সবগুলো বাসার সামনেই দোকান, কিংবা ওরা বাজারের ভেতরেই বসবাস করে, ছাদে ঘুমায়, নীচ তলায় ব্যাবসা করে, এসব দোকানেও হানা দিচ্ছি।
পায়ে হেঁটে ঘুরতে খারাপ লাগছে না এখন। আসলে প্রকৃত পর্যটনের স্বাদ পাওয়া যায় পায়ে হেঁটে ঘুরলে। গাড়ীতে চড়ে অনেক তাড়াতাড়ী স্থানবদল করা গেলেও ওটাতে এলাকার সাথে টান বাড়ে না মোটেও। পায়ে হেঁতে লোকালয়ের হৃদয়স্পন্দন ছোঁয়া যায়। যন্তরমন্তর নাকি একেবারে উপমহাদেশীয় নক্ষত্র দেখবার ঘর, এখানের সূর্যঘড়ি নাকি এখনও সময় দেয় ঠিকঠাক মতো। আরও কিছি বিজ্ঞানজনিত বিষয়াসয় আছে এখানে, তবে এখানের স্থাপত্যনৈপুন্য অসাধারন। এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেনো গরমের সময় শীতলবাতাসের পরশ পাওয়া যায় আবার শীতের সময় ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করবে, প্রাচীন কালে তেমন ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের ব্যাবস্থা ছিলো না বলেই এমন ভাবে ব্যাবস্থা করতে হয়েছে, এটা একটা নির্মান কৌশল, প্রাকৃতিক উপযোগের ব্যাবহার করে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করে নেওয়া।
ইচ্ছা ছিলো আরও কিছু দুর হাঁটবো, তবে আবার কোনো এক চুলায় যেতে হবে, একটা বাজারের ভেতর ঢুকে পড়লাম, রাজস্থানী বাজার, সবাই বিভিন্ন জিনিষ কিনছে, আমি গরীর মানুষ, কোথাও কেনাকাটা করার সামর্থ্য নেই, আমি বিভিন্ন মানুষের কেনাকাটা দেখে বিরক্ত হতে পারি। এমন এক বাজারের ভেতরে একটা কাপড়ের দোকানে দেখলাম 2টা বাচ্চা আপন মনে খেলছে, তাদের মায়েরাও বাংলাদেশ থেকে এসেছে এখানে, তবে অদ্ভুত সুন্দর বাচ্চা 2টা। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি, শমিকের কাছে ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুললাম, বাচ্চারা অদ্ভুত সৃষ্টি ওদের কোনো স্থান-কালের বিচারে পৃথক করে রাখা যায় না, ওরা ওদের মতোই আচরন করতে থাকে, বড়রা বিব্রত হয়,সাংস্কৃতিক সংকটে পড়ে, ছোটোদের সংস্কৃতি বৈশ্বিক, ওদের বিশ্বায়ন ঘটেছে অনেক আগেই। মাদাগস্কারের এক বাচ্চার সাথে বলিভিয়ার বাচ্চার বন্ধুত্ব হতে সময় লাগে না, ভারতের এক শিশুর সাথে বন্ধুত্ব হতে বাংলাদেশের শিশুর কোনো সময় লাগে না, তবে বয়েস বাড়ার সাথে সাথে এরা ঘৃনা করতে শেখে, আমাদের রাজনীতি-অর্থনীতি আমাদের বৈশ্বিক শৈশবকে পৃথাকন্ন করে, আমাদের ঘৃনা এবং সংঘাত শেখায়, তাদের আদর্শ অনুযায়ী আমাদের অস্তিত্বকে কেটে জুড়ে নিজেদের মনমতো করে, আমরা অবশেষে আমরা হয়ে থাকতে পারি না। আমাদের শৈশবের অনায়সলব্ধ বিশ্বায়নের বোধটা ভুলে গিয়ে আমরা জাতীয়তাবাদী পশু হয়ে যাই, ভারতের যুবক ভাবে বাংলাদেশের যুবক অবৈধ্য প্রবেশ করবে তাদের দেশে, তাদের প্রাপ্য সুযোগ কেড়ে নিবে, বাংলাদেশের যুবকেরাও ভারতবিদ্্বেষে ভুগবে, শালার বোয়াল মাছের দেশ, ওরা আমাদের আকাশ দখল করেছে, আমাদের বাজার দখল করেছে, আমাদের ভাবনাকে নিয়ন্ত্রন করছে, আমাদের রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করছে। আমি কোথাও মানুষে মানুষে পার্থক্য কখুঁজে পেলাম না, অমানুষের প্রকারভেদ আছে, অনেক পদের অমানুষ পাওয়া যাবে তবে বিশ্বজুড়ে মানুষের মতবাদ একটাই, শান্তিপূর্ন সহাবস্থানের ধারনা নিয়ে চলে মানুষেরা। অমানুষেরা অবশ্য এই জ্ঞানটা অর্জন করতে পারে না।
যুদ্ধ এবং যুদ্ধবাজদের ঘৃনা করা এই সাধারন মানুষ সমাজকে নিয়ে আলোচনা করা যায়, এই রাজস্থানের সেই মায়ের কথা যে তার বাচ্চার জন্য মাথায় টুকরি নিয়ে বাজারে এসেছে- সেই একই মা বাংলাদশের হাটে যায় শিশুর নিরাপদভবিষ্যত কামনায়। এখানে মাথায় পানি নিয়ে ঘরে ফেরা মহিলার সাথে বাংলাদেশের কলসি নিয়ে ঘরে ফেরা মেয়ের কোনো পার্থক্য নেই, পোষাকের পার্থক্যের বাইরে আসলে মানুষে মানুষে তফাত সামান্য।
অনেক উচ্চমরাগিয় ভাবনা চিন্তা সার্বক্ষনিক সঙ্গি হয়ে যাচ্ছে। ভয়ংকর রকম আবদ্ধ মনে হচ্ছে নিজেকে, চায়ের কথা বলা, সিগারেটের কথা বলা এমন ছোটোখাটো লেনদেনও করতে হচ্ছে ইংরেজিতে কিংবা হিন্দিতে। মনটা বিষিয়ে যাচ্ছে, সত্যি বলতে, হোমসিক ফিল করার কিছু হয় নি, তবে কদিন আগে রাতে জসিম যখন হঠাৎ জীপের মধ্যে কান্নাকাঁটির সুচনা করলো তখন বড় আশ্চর্য লাগছিলো, আমরা প্রায় 48 জন মানুষ আছি, এই জীপের ভেতরেই আছে 9 জন মানুষ, অথচ সে আলগা মুখে আমার ভাইরে, তোরে কতদিন দেখি না, এইবার গিয়া আর ঝগড়া করবো না তোর সাথে, কথা কমু, এইসব বলছে, আমরা বিরক্ত হয়েছি, কি ন্যাকামি রে বাপ, তোরে তো বিয়া দিয়ে শ্বশুড়বাড়ী পাঠায় নাই, তুই আর কয়দিন সবুর কর, দেশে ফিরবো তো।
জসিম আর ওর বড় ভাই বোরহান এক অদ্ভুত জুটি, তারা কোনো এক কারনে পরস্পরের সাথে সরাসরি কথা বলে না- ওদের ভাববিনিময় ভাববাচ্যে কিংবা দেয়ালকে উদ্দেশ্য করে চলে।
হ্যায় কি জানে হ্যার লাইগ্যা ঘরে খাবার রইছে।
ওর যদি মনে চায় ঈ যেনো জানালার পিছ থেকে সিগারেট লয়া লয়, রাখা আছে।
হ্যায় কি সিগারেট কিন্যা দিতে পারবো, পয়সায় কমতি আছে।
ও যেনো শার্টের পকেট থেকে টাকা লয়, ঐখানে আছে।
এই রকম কথা শুনতে প্রথম বার অদ্ভুত লাগলেও আসলে আলোচনাটা মজার। লুকুও এটা শিখেছে, বেশ ভালো মতোই।
হ্যায় কি মনে করে হ্যার মন খারাপ হইলে আমার কষ্ট হয় না? হ্যারে কেউ য্যান বলে হ্যায় মন খারাপ না করতো।
কিছুক্ষন এমন আলাপের পর জসিম সামান্য ক্ষেপে যায়, একটু গালি দেয়। আমরা হাসি, আমাদের সব স্বাভাবিক মনে হয়,
এখন নিজেকে দিয়ে বিচার করে দেখছি আসলে ভাষা ভাববিনিময় করতে না পারাটা বিশাল এক সমস্যা জীবনের। গলার কাছে কথা আটকে থাকে। শিশুদের এই সমস্যা নেই মোটেও, ওরা নিজের ভাষায় কথা বললেও সবাই বুঝে যায়।
আমি পিচ্চিদ্্বয়ের সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করি। সেই দোকানের ঢুকে যাই অনাহুতের মতো। হাত নাড়ি, কিছুক্ষন পর দয়াপরবশ হয়ে মহাত্বনা প্রতু্যত্ত্বর দেয়। আমাদের ইশারার আলাপ জমে উঠে, এবং যেমনটা সব সময় জীবনের বিষয়ে সত্য, যখনই কিছু উপভোগ্য হয়ে উঠে তখনই কোনো না কোনো একটা অঘটন ঘটবে, এক্ষেত্রে সেই মেয়েদের কেনাকাটা শেষ হয়ে যায়। অলক্ষ্যে আলোচনা থেকে বুঝতে পারি মেয়েগুলোর মা দুই জন, একজনের বাসা মীরপুর আরেক জনের চাঁটগা। অবশ্যই খুঁজে বের করা যাবে, তবে এতটা পরিশ্রম করা হবে না কোনো দিনও। আমি আশায় আশায় রাস্তা হেঁটেছি, বেশ অনেক দিন, যদি হঠাৎ করেই দেখা হয়ে যায় তাদের সাথে, সেই কথষনিক পরিচয়ের আনন্দ, সেই বিনিময়ের আনন্দ হয়তো পরিচিত পরিবেশে থাকবে না। ফিরে আসার পর আমি যেই 3টা ছবি নিয়েছিলাম তার 2টা এই পিচ্চির ছবি, কখনই দেখা হয় নি ওদের সাথে, আমার ডায়েরীর ভাঁজে সেই ছবি ছিলো অনেক দিন।
তারা চলে যাওয়ার পর বাজারের আকর্ষন কমে যায় 90%। লোকজন কিনছেও, চুনরি কিনছে, চুড়ি কিনছে, জুতা কিনছে, উটের চামড়ার জুতা, স্যান্ডেল কিনছে, মানুষ যখন কেনার মুডে থাকে তখন কোনো চিন্তা করে না। অবশ্য ভালোই হয়েছে, আমি আমার মতো হাঁটতে পারছি আশেপাশে। কেউ খবরদারি করার নেই।
তানভীরকে দেখে রাখার দায়িত্ব পালন করছি একাগ্রচিত্তে, সে আমার সাথেই ঘুরছে, আমরা রাস্তায় হাঁটি, তানভীরের ব্যাগ মদের বোতল, আমার পকেটে সিগারেটের পয়াকেট, একটা সময় সেটাও শেষ হয়, তখন তানভীর ভরসা, ওরে হুমকি দেই, ধমক দিয়ে সিগারেট আদায় করি। অবশ্য মাঝে মাঝে নরম করে বললেও সিগারেট পাওয়া যায় ওর কাছে। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে একটা কোনায় দেখি এক মন্দির, কিছুই করার নেই তাই মন্দিরে চলে যাই, তানভীর ইশ্বর ভক্ত, ও মন্দিরে ঢুকবে না। আমি ঢুকি, যুঁথিও ঢুকে যায়, পুরোহিত আসে, এসে বলে তোমরা প্রার্থনা করো। আমার মনে কোনো ভাষা আসে না, নিজের মতো কল্যান কামনা করি সেখানে দাঁড়িয়ে, অবশেষে মাথার উপরে ঝুলানো ঘন্টা বাজাই হাত দিয়ে( হিন্দি ফিল্মের এই একটা বিষয় কাজে লেগেছে, )ঘন্টা বাজানোর পর পুরোহিত আবির্ভুত হয়ে ভেতরে থেকে চরনামৃত নিয়ে, আসলে মুর্তির পা ধোয়া পানি, যুঁথি বিভ্রান্ত তাকিয়ে থাকে এই পানির দিকে শংকিত চোখে, আশ্বাস দেই চুক করে গিলে ফেলো সমস্যা নাই, সাধারন পানিই, শুধু পাথর ধোয়া,
চরনামৃত খাই হাত জড়ো করে, সেই জড়ো করা হাতের উপর প্রাসাদ পড়ে, বাতাসা কিংবা চিনির দানা, ভেতরে মটর, সেই দানা মুখে দিয়ে ভালো লাগ, হাঁটাহাঁটি করে অনেক ক্ষুধার্ত। তানভীয় চিকন চোখে তাকায়, আমাকে আর যুঁথিকে দেখে, বিরস মুখে আমাকে সিগারেট দেয়, আমি টানতে টানতে গান ধরি, হাসতে দেখো, গাইতে দেখো, অনেক কথায় মুখর আমার দেখো-
আবার বাজারে ফেরত আসি, আরও কিছু হাঁটাহাঁটি শেষ করে দুপুরের খাওয়ার জন্য হোটেলে প্রত্যাবর্তন। সেই বিরক্তিকর রান্না, মনটা বিষন্ন হয়ে যায় এমন রান্না খেলে, পেট পোড়ায়, বিকালে একটু ঘুরতে যাওয়া হবে, কোথায় যাওয়া হবে নির্দিষ্ট নয়, আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আমাদের জন্য একটা গবেষনাগারে কথা বলে রেখেছিলেন, সেখানে যাওয়া হয়ে উঠে নাই, যাওয়া হবে এমন কোনো নিদর্শন দেখছি না, তবে স্যারকে তুষ্ট করতে সদাপ্রস্তুত কিছু মানুষ স্যারের সাথে প্রকৃত শিক্ষা ভ্রমনে গেলো। আমরা যেযার মতো পরিকল্পনা করলাম কি করবো, কি করা যায় আসলে। শহরটা পায়ে হেঁটে ঘুরে ভালো লেগেছে, এখানেই এশিয়ার সবচেয়ে বড় সিনেমা হল, উইথ সারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম, হাই ফাই বিষয় হবে, সবাই নাইটো শো দেখবে মনস্থির করেছে, তবে আমার এই প্রস্তাব একদম পছন্দ হচ্ছে না, শালার এত দুর আইস্যা ছবি দেখার কোনো মানে হয় না। দেখা গেলো কেউ কেউ বিরোধি হলেও কেউ কেউ আবার আগ্রহী।
সকালে হাঁটতে গিয়ে দেখেছি এখানের একটা হলে বড়দের ছবি চলছে, এক টিকেটে দুই ছবি, শহরের মাঝখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে এমন রেটেড ছবি চালায় না বাংলাদেশে, বাংলাদেশের বড় হলে অবশ্য একবার 2 বার গিয়ে আমি ও বড়দের ছবি দেখেছি তবে ওগুলোর সামনে প্রাপ্তবয়স্ক তকমা ছিলো না।
মাই সুইট টিচার বলে একটা ছবি দেখতে গিয়েছিলাম একবার, কোনো রকম নিষেধ ছাড়াই 5টাকা দিয়ে 3য় শ্রেনিতে ঢুকে যাওয়া হলো, ওখানে আশে পাশের কয়েক জন বাদ দিয়ে আমরা সবাই 15র নীচে, ছবিও শুরু হলো, ভালোই ছবি, প্রথম কিছুক্ষন কোনো সমস্যা ছিলো না, তবে এর পরে সুইট শিক্ষিকা যখন তার একান্ত পাঠদান শুরু করলো বড় পর্দাজুড়ে তার অতিকার স্তন আর অতিকায় উরু দেখে ততটা উত্তেজনা জাগে নি, আমি হয়তো লজ্জা হয়তো দ্্বিধা যেকোনো কারনেই হোক সেখান থেকে বাইরে বের হয়ে সিগারেট টানতে টানতে বাসায় ফিরলাম। অবশ্য এর পর যদি কোনোদিন বড় পর্দায় বড়দের ছবি দেখতে যাই তবে দুরে বসে দেখবো, প্রথম কয়েকটা সারি থেকে ছবি দেখা নিরর্থক। এখানে দেখার জন্য ছবি বাছাই করার কোনো অর্থ হয় না। এর বদলে অন্য কিছু করা যায়, কি করা যায় জানি না এখনও। বিকাল বেলা সামান্য ঘুরাফেরা হলো, কিসব নিদর্শন দেখলাম গিয়ে, তেমন মনোমুগ্ধকর কিছু ছিলো না মনে হয়, একটা পাগড়ী বানিয়ে সেটা পড়ে ছবি তুললাম কিছু। সবাই পাগড়ি পড়ে ছবি তুলেছি সেদিন বিকালে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



