somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা তো শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে। ভারতে কোটা আমাদের চেয়েও বেশিÑ ৬০ ভাগ।

১৪ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এবারের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রাখা ৩০ শতাংশ কোটা। হেফাজতে ইসলামকে মাঠে নামিয়ে শুধু মাদ্রাসার ছাত্রদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী বানানো গেছে। আর কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ভাবনার শিক্ষার্থীদের অনেককেও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বানিয়ে ফেলা গেছে। বি-শা-ল সাফল্য। আর এই আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষক প্রথম আলো! অনেকেই বলছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রাখা উচিত নয়। এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় লোক পাওয়া যায় না। মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সার্টিফিকেট জোগাড় করে চাকরি পেয়ে যায়... ইত্যাদি ইত্যাদি। এসবই ঠুনকো অজুহাত। মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনের মায়া না করে দেশের জন্য লড়েছেন, শহীদ হয়েছেন। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, তাদের রক্তে আজকে আমরা স্বাধীন দেশে বসে কোটার বিপক্ষে আন্দোলন করতে পারছি। দেশ স্বাধীন না হলে এই শিক্ষার্থীদের পূর্ব পাকিস্তানের কোটার জন্য আন্দোলন করতে হতো। তাই এই দেশটার ওপর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি একটু বেশিই থাকবে। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু তাদের অনেকেই ছিলেন কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমোর, গ্রামের সাধারণ মানুষ। তাদের অনেকই ছিলেন প্রথাগত অর্থে অশিক্ষিত। তাই স্বাথীনতার পর চাইলেও রাষ্ট্র তাদের সবাইকে চাকরি দিতে পারেনি। দেশ স্বাধীন করার মত সাহস থাকলেও, সেই স্বাধীন দেশে কোনো চাকরি করার মতো যোগ্যতা তাদের ছিল না। পরে হয়তো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে নিজের সন্তানকে কষ্টেসৃষ্টে পড়াশোনা করিয়েছেন। এখন সেই সন্তানের পাশে রাষ্ট্র দাঁড়াবে না? অবশ্যই দাঁড়াবে। এটা তো বৈষম্য নয়, এটা ঋণ শোধ। মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট ভুয়া না আসল সেটা যাচাই করার দায়িত্ব পিএসসির বা রাষ্ট্রের। কিন্তু এই অজুহাতে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা যাবে না, তাদের বিপক্ষে রাজপথে স্লোগান দেয়া যাবে না, তাদের কোটা বাতিলের দাবি করা যাবে না। অবশ্যই যাবে না। অবশ্যই আমার ছেলের চেয়ে শাহরিয়ার কবিরের ছেলে এই দেশে বাড়তি সুবিধা পাবে। যারা দেশের জন্য লড়েছে, দেশের কাছে তাদের চাওয়ার কিছু না থাকতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রের উচিত সবসময় তাদের জন্য বাড়তি আসন রাখা। আমি মনে করি আস্তে আস্তে যদি এমন দিন আসে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি দেয়ার মত আর কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না, তখনও এই কোটা বহাল রাখতে হবে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানানোর প্রতীক হিসেবে। শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে স্লোগান শুনে নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধারা কষ্ট পেয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু অভিমান করে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যেন তরুণ প্রজন্মের মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়া না হয়। আমরা তার কষ্ট, তার অভিমান বুঝি। আমি বাচ্চু ভাইসহ সকল মুক্তিযোদ্ধার কাছে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে নতজানু হয়ে ক্শা চাচ্ছি। ওরা ছোট। নিছক ব্যক্তিগত লাভালাভের বিবেচনায় তারা আপনাদের গালি দিয়েছে, আসলে তাদের মুখে স্বাধীনতাবিরোধীরা এই স্লোগান তুলে দিয়েছে। প্লিজ, পারলে আপনাদের ঔদার্য্য দিয়ে তাদের ক্ষমা করে দেবেন। আমরা জানি আপনারা শুধু একটি স্বাধীন দেশের জন্যই লড়েছেন, আর কিছু চাননি। কিন্তু আপনারা চাননি বলেই রাষ্ট্র দেবে না কেন? আপনারা স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন, এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেই ঋণ শোধের।

তবে হ্যাঁ আমি কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাই। কোটার আসনগুলো শূন্য না রেখে পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে তা পূরণ করা হোক। তাহলেই আর বঞ্চনার মানসিকতাটা এত তীব্র হবে না। ধরা যাক কোনো বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি দেয়ার মত কাউকেই পাওয়া গেল না, তাহলে এই ৩০ শতাংশও তো যোগ হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তখন তো তারা পাবে ৭৫ শতাংশ। এই প্রস্তাবের বিপক্ষে যারা তারা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, উন্মুক্ত করে দিলে কোটার শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে পরে অন্যদের নেয়া হয়। এটা তো সিস্টেমের সমস্যা, কোটার সমস্যা নয়। মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা বা দুর্ঘটনার ভয়ে ঘরে বসে থাকা তো কোনো সমাধান নয়। কোটাবিরোধী আন্দোলনের স্পর্শকাতরতা টের পেয়েছি দুদিন আগে এ বিষয়ে টক শো’র অতিথি খুঁজতে গিয়ে। কেউই এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান না। কোটার পক্ষে বললে শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে যাবে, আর বিপক্ষে বললে আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষেই বলতে হবে। ঘরে দেখি আমার ক্লাশ ফাইভে পড়–য়া ছেলেও স্কুল থেকে শুনে এসে কোটার বিপক্ষে তর্ক করে। তবু আমি পুরো ঝূঁকি নিয়েই কোটার পক্ষে আমার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি। সঙ্গে সংখ্যালঘু আর দলিত সম্প্রদায়ের জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছি। দাবি জানাচ্ছি, স্বাধীন দেশে যুদ্ধাপরাধী-স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের সন্তানদের সব ধরনের চাকরির সুযোগ নিষিদ্ধ করা হোক। যারা দেশ চায়নি, তাদের এই দেশে কোনো সুযোগ পাওয়ারও অধিকার নেই।

আরেকটি খুবই জটিল এবং বিভ্রান্তিকর বক্তব্য হলো, কোটা আর মেধাবী। মনে হয় কোটা মানেই অমেধাবী। ব্যাপারটি মোটেই তা নয়। কোটা সুবিধা পেতে হলেও তো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের একটি ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করেই আসতে হবে। কোনো মুক্তিযোদ্ধার এসএসসি পাশ ছেলে বা তৃতীয় শ্রেনী পাওয়া উপজাতি কেউ তো আর ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে যাচ্ছে না। বলা উচিত কোটা আর নন কোটা। সবাই তো মেধাবী। নইলে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পান কীভাবে? হয়তো উনিশ আর বিশ। শ্রদ্ধেয় সোহরাব হাসান ভাই প্রথম আলোতে তার কলামে লিখেছেন, ৩৪তম বিসিএস’এর প্রিলিমিনারিতে নাকি মেধাবীরা ৮০ নাম্বার পেয়েও উত্তীর্ণ হননি। আর ৫০ পেয়েও নাকি কোটার সুবিধায় কেউ কেউ উত্তীর্ণ হয়েছেন। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। কারণ পিএসসি প্রিলিমিনারির ফলাফলে উত্তীর্ণদের শুধু রোল নাম্বার প্রকাশ করেছে, প্রাপ্ত নাম্বার প্রকাশ করা হয়নি। তাহলে ৮০ আর ৫০-এর কাল্পনিক হিসাবটা এলো কোত্থেকে? এই হিসাব হলো সেই অশুভ মহলটির বানানো। তারা যেভাবে চাঁদে সাঈদীকে দেখতে পায়, সেভাবেই ৮০ আর ৫০ এর চমকপ্রদ হিসাবে বিভ্রম তৈরি করতে পারে। এই একটা অঙ্ক দিলেই তো সরলপ্রাণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পাশে পাওয়া যায়।

কোটা তো শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে। ভারতে কোটা আমাদের চেয়েও বেশিÑ ৬০ ভাগ। বিশ্বের আরো অনেক দেশেই বাংলাদেশের চেয়ে বেশি কোটা আছে। এমনকি বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও তো কোটা আছে। ভর্তির সময় আপনি কোটা সুবিধা ভোগ করবেন, আর সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর চাকরি ক্ষেত্রে কোটার বিরোধিতা করবেন, এটা তো হওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছে, যেটা নিয়ে এত হইচই, সেটাও তো কোটাই। উন্নত দেশগুলো আমাদের মত গরীব দেশকে এই ধরনের কোটা সুবিধা দেয় বৈষম্য কমাতে। তাই বৈষম্য কমানোটাই কোটা ব্যবস্থার মূল কথা। খেয়াল রাখতে হবে বৈষম্য কমাতে গিয়ে যেন আবার নতুন কোনো বৈষম্য সৃষ্টি না হয়।

আমাদের দেশে জনসংখ্যা বেশি, বঞ্চিত শিক্ষার্থী বেশি, তাই আন্দোলনও হয় দ্রুত। যেমন এবার ৩৪তম বিসিএস’এর প্রিলিমিনারিতে ১ লাখ ৯৫ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। পাশ করেছে মাত্র ১২ হাজার ৩৩ জন। তাই বাকি সবাই তো নিজেদের বঞ্চিত ভেবে রাস্তায় নামতে পারেন। আর আমি নিশ্চিত এখন যদি কোটার পক্ষে-বিপক্ষে গণভোট হলে কোটা বাতিলের পক্ষেই ৯৫ ভাগ লোক ভোট দেবেন। কিন্তু রাষ্ট্র তো আর প্রথম আলো নয়, তাদেরকে ৫ ভাগ হলেও যৌক্তিকভাবে বঞ্চিতদের পাশেই দাড়াতে হবে। এটা ঠিক সরকার বিরোধী আন্দোলন সমর্থন করলে পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়ে। কিন্তু সরকার বিরোধিতার সুবিধা যেন স্বাধীনতাবিরোধীরা পেয়ে না যায়, সে বিষয়টি কি মাথায় রাখবে না প্রিয় প্রথম আলো।

প্রভাষ আমিন: এডিটর, নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট এফেয়ার্
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×