দেখতে দেখতে রোজা শেষের পথে। আর হয়তো দুইটি অথবা তিনটি মাত্র। আসছে ঈদ, কত প্রস্তুতি, কি করবো কত চিন্তা ভাবনা। সকাল থেকে উঠে রান্না-বান্না করা, ছেলেকে সময় দেওয়া, আরও কত কি। এখনকার প্রস্তুতি আর সেই ছোটবেলার ঈদের প্রস্তুতির মধ্যে অনেক অনেক তফাৎ। শত ব্যস্ততার মাঝেও মনে পড়ে যায় সেই ছেলেবেলার ঈদের কথা।
আমরা ভাই বোন ছিলাম সাত জন। তবু বাবা-মা শত কষ্টের মধ্যেও আমাদের ইচ্ছে গুলো পুরন করার চেষ্টা করতেন। তারা সবসময় চাইতেন যেন আমরা খুশি হই। ছেলেবেলায় ঈদের আনন্দ ছিল নতুন জামা, বড়দের কাছ থেকে ঈদের সালামী নেওয়া আর ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি। বাবা ঈদগাহ থেকে বাসায় ফেরার আগে নতুন জামা জুতো পরে তাকিয়ে থাকতাম তার আসার পথের দিকে চেয়ে। তারপর বাবা-মা বড় ভাই বোনদের সালাম করে সালামী নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম ঘুরতে । সারাদিন বান্ধবীদের বাসায় বাসায় এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াতাম। বিকাল হলে আমাদের এলাকায় ঈদের মেলা বসতো । বান্ধবীরা মিলে একসাথে মেলায় যেতাম এটা সেটা কত কি কিনতাম। ওটাতেই ছিল কত আনন্দ।
এরপর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসতাম আর তখনই মনটা খুব খারাপ হয়ে যেত। এই বুঝি ঈদের সব আনন্দ শেষ। সারাদিন বাসায় না থাকার জন্য মায়ের কাছে বকুনি খেতে হতো। কিন্তু সেটাতে কোন কর্ণপাত ছিল না।
আর আজ...... ওখান থেকে আমি কত দূরে। সেই আমি আমিই আছি কিন্তু বদলেছে সময়। আমার মনটা সেই দিন গুলিতে গেলেও এই আমি আর সেখানে যেতে পারিনা।
এই সৃত্মিগুলো আজ মনকে খুব পীড়া দেয়। মনটা খারাপ হয়ে যায়। কোথায় সেই আমার সময়? কোথায় সেই আমার বান্ধবীরা? কোথায় সেই আমার ঈদের মেলা? কোথায় সেই আমার মায়ের বকুনী?
শুধু দীর্ঘশ্বাস। কিন্তু আজ আমি আমার সন্তান, পরিবারের সদস্যদের ঈদের আনন্দ দেখে সেই কষ্ট ভুলে যাই। ভুলে থাকতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




