somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প: বৃত্তায়ন

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কিছু বিজয় থাকে যা পরাজয়ের লজ্জার চেয়েও ভারি, অঙ্গ হারানোর বেদনার চাইতেও যন্ত্রণাময়। মোতালেব সেটাই যেন মনে মনে ভাবছিলেন। যদিও তার আশপাশের শুভাকাঙ্ক্ষীরা একে একে তার কৃত অর্জনের জন্য নানাভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে, তিনিও হাসি মুখে প্রত্যেকের উদ্দেশ্যেই বিনয় প্রদর্শন করেছেন। তবু মনের কোনো এক গহীন কোণে বসে নীরব তিরস্কারে প্রতিটি পলে তাকে ক্ষত বিক্ষত করে চলেছেন বিলাস বসু।

দীর্ঘকাল ধরে বিলাস বসুর সঙ্গে যে কূটনীতির খেলা খেলে এসেছেন, শেষ মুহূর্তে কে জানতো অতটা সহজে পরাজয় মেনে নেবেন তিনি। বিনা রসিদে, বিনা দলিলে নিজের আজন্ম অধিকারটুকু তুলে দিয়ে যাবেন তার নোংরা হাতে। অথচ এ বিজয় অর্জনের পেছনে কতটা কূটবুদ্ধি আর নিষ্ঠুরতার প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন, সবগুলো সফল হলে বিলাস বসুকে আরো শতবার ত্যাগ করতে হতো ভিটেমাটি। প্রথম প্রথম নানাবিধ ভয় দেখালেও মোটেও যেন পাত্তা দিচ্ছিলেন না বসু। সামান্য ব্রিকফিল্ডের কর্মচারী মোতালেব শ্রমিক নেতা হয়ে উঠবার পেছনেও কম অবদান ছিল না তার। কিন্তু ক্ষমতার প্রলোভন মানুষকে কৃতজ্ঞ করবার বদলে কৃতঘ্নে পরিণত করে ফেলে রাতারাতি। ফলে দল ত্যাগ করে বিরোধী দলে নাম লেখানোর কদিন পর থেকেই রাতারাতি তার ক্ষমতার পাল উড়িয়ে দেবার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গোপনে আড়াল করে রাখা ভেতরকার আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে আরম্ভ করেছিল।
স্থানীয় কলেজের লেকচারার কল্যাণী বসু যেমন শিক্ষিত ছিলেন, তেমনই ছিলেন বুদ্ধিমতী। স্বামী বিলাস বসুর উপযুক্ত সহধর্মিণীই ছিলেন বলা যায়। দিনরাত সাহস আর বুদ্ধি দিয়ে আগলে রেখেছিলেন স্বামী-সন্তানকে। আর তিনিই যে স্বামীর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ছিলেন তা বুঝতে পেরেই হয়তো আরো বেশি করে নিবেদিত হয়ে উঠেছিলেন স্বামীর প্রতি। আর সেটাই প্রতিপক্ষের চোখে হয়ে উঠেছিল প্রথম বাধা। তার কোমর ভেঙে দিতে কল্যাণী বসুকে আঘাত করাটাই হবে মোতালেবের প্রথম অর্জন। বিলাস বসু নিশ্চিত যে, সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ব্যাপারটা ঘটিয়েছে মোতালেবই। কিন্তু কাজটা ক্ষমাহীন অপরাধ হলেও তা ঢেকে দিতে পেরেছিল সুচারুভাবেই। আর এমন নিখুঁত কাজ কেবল মোতালেবের পক্ষেই সম্ভব। পার্টির জন্য কোনো অপকর্মের প্রয়োজন হলেই ডাক পড়তো তার। দলের প্রথম সারির নেতাদের চোখে পড়তে সে যেমন মরিয়া ছিল, তেমনই ছিল দুঃসাহসী। আর তাকে পেয়েই উপজেলা থেকে জেলা সদর পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গেই আলাদা একটা মর্যাদা নিয়ে চলাফেরা করতে পারতেন বিলাস বসু।

মোতালেবেরই ভালো করে জানা আছে কীভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে হয়। কীভাবে অপরাধ দমন বিভাগের হিংস্র আর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত তুখোড় কুকুরগুলোকে বিভ্রান্ত করতে হয়। আর তা জানা ছিল বলেই, চোখের সামনে কল্যাণী বসুর লাঞ্ছিত আর বে-আব্রু ক্ষত বিক্ষত লাশটা দেখতে পেলেও আঙুল তুলতে পারেন নি মোতালেবের দিকে। যদিও এজাহারে তার নাম প্রথমেই ছিল, তবু কুকুরগুলো কেন মোতালেবকে তখনই আক্রমণ করেনি সে অজুহাতে এড়িয়ে গিয়ে ছিলেন থানার ওসি। সরাসরিই তিনি বলে উঠেছিলেন, দেখেন স্যার, একজনের অপরাধের দায় অন্যের ওপর চাপাবেন না, প্লিজ। হতে পারে মোতালেব আপনার পুরোনো শত্রু। কিন্তু এলাকায় তার নামে বড় কোনো অপরাধের প্রমাণ নেই। এমন কি এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যারা আছে, আমি হলপ করে বলতে পারি তাদের সঙ্গে সে জড়িত নয় মোটেই। নয়তো আমরা কোনো না কোনোভাবে টের পেয়ে যেতাম। অবশ্য আপনি এজাহারে তার নাম দিতে চাইলে আমাদের বাধা দেবার সাধ্য নেই। তবে একটাই অনুরোধ, নিশ্চিত না হয়ে তাকে জড়ানো ঠিক হবে না।

বিলাস বসু স্ত্রী হারিয়ে বেশ বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তবু বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছিলেন মোতালেব আর তার দুজন সঙ্গী রাঙ্গা আর বগার কথা। তবে তদন্ত শেষে চার্জশিট দেবার পর আদালতে যখন মামলা উঠলো, তার ঠিক দুদিন আগেই রাস্তায় একটি দুর্ঘটনায় মারা গেল তার একমাত্র সন্তান দেবেশ। বিলাস বসু দেবেশের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, এটাও মোতালেবের কাজ। একটি গাড়ি এসে পেছন থেকে মোটর সাইকেলের আরোহীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চলে গেল আর কেউ ঘটনাটা দেখল না এটা হতেই পারে না। নিশ্চয় আগে তারা অপহরণ করেছিল। তারপর কোনোভাবে মেরে মটর সাইকেল সহ তাকে রাস্তার ঢালে ফেলে গেছে অন্ধকারে। এবারও যথারীতি ঢাকা থেকে তদন্ত দল এলো। তাদের সঙ্গে দুটো প্রশিক্ষিত কুকুরও এলো। কিন্তু যেকে সেই, অপরাধীর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। যদিও অপরাধ বিজ্ঞান নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, অপরাধী তার কৃত কর্মের ছাপ কোথাও না কোথাও ফেলে যাবেই। কিন্তু মোতালেব কী এমন কৌশল আয়ত্ব করে ফেলল যে, অদৃশ্য থেকেই কাজগুলো গুছিয়ে নিচ্ছে অমন সুচারুভাবে?

উপজেলা থেকে জেলা সদর এমন কি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির লোকজনের কাছেও কেমন দ্রুততার সঙ্গে নিজের দক্ষতা তুলে ধরে হাতিয়ে নিয়েছিল, দলের বিশ্বস্ত কর্মী আর এলাকার জনপ্রিয় এমপির নমিনেশনটাও। সেই শোকে নির্বাচনের আগেই স্ট্রোক করে মারা গেলেন আমিরুল মজুমদার। বিরোধী দলের হলেও মজুমদারের সঙ্গে কোনো ব্যাপারে সংঘাত হয়নি বিলাস বসুর। এলাকার জন্য নিবেদিত ছিলেন দুজনেই। যে কারণে সম্পর্কটা নিবিড় না হলেও মন্দত্বে কলুষিত হয়নি। অথচ মোতালেব, কতটা জঘন্য মানসিকতার হলে অতটা নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর হতে পারে মানুষ। ছেলের মৃত্যুর পর যেন মানব জন্মটাকেই ঘৃণা করতে আরম্ভ করেছিলেন বিলাস বসু। শূন্য বাড়িতে একা একা বসে থাকতেন দোতলার বারান্দায় বাইরের দিকে তারও বেশি শূন্য আর নিরাসক্ত দৃষ্টি মেলে। শেষটায় বাড়িতে থাকাটাই তার জন্যে অসহ্য হয়ে উঠছিল দিন দিন। একদিকে স্ত্রী আরেক দিকে একমাত্র সন্তান। দু দুটো শূন্যতা যেন তাকে পিষে মারছিল দুদিক থেকে। তাই আত্মহত্যার আগে একটি উইল করে দিয়ে গেছিলেন মোতালেবের নামে। পুরোনো ভৃত্যকে তার যাবতীয় স্থাবর সম্পদ দান করে দিয়ে গেলেন। আর নগদ টাকা-পয়সা গয়না-গাটি যা ছিল সব দিয়ে গেলেন সুধাময়ী বৃদ্ধাশ্রমকে।

বাড়ি থেকে কয়েকদিন কেউ বের হয়ে না এলে, বাড়ির খানিকটা দূরের চা স্টলের ছেলেটাই প্রথম খেয়াল করে ব্যাপারটা। এলাকার অন্যান্যদের জানায় কদিন ধরে দেখছে না বিলাস বসুকে। কোথাও গেছেন এমনও মনে হচ্ছে না। কৌতূহলী লোকজন ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখেই ব্যাপারটা প্রথম পুলিশকে জানায়। সংবাদ পেয়ে এলাকার এবং আরো দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে। মোতালেবও ছিল সেই দলে সবচেয়ে বড় ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিয়ে। কপট মানুষটা কেঁদে কেঁদে বলছিল, বিলাস বাবু ছিলেন তার মালিক। সে ছিল ভৃত্য। আর এতেই লোকজন জেনে গেল আরেক মহানুভব মোতালেবকে। যে কারণে দানপত্রের সংবাদটা থানা থেকে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মোতালেবের শুভার্থীরা আনন্দ যজ্ঞের আয়োজন করতে উসকে দিয়েছিল মোতালেবকে। কোনোদিক দিয়ে কোনো ত্রুটি রাখে নি সে। বিলাস বসু, কল্যাণী বসু আর দেবেশের শ্রাদ্ধও করিয়েছে জাঁক জমক ভাবে। লোকজনের অনুমান যে, বিলাস বাবুর বিশাল বাগান আর বাড়িটার মূল্যই আছে তিন কোটি টাকার ওপর। অত বড় এক দানের প্রতিদান হিসেবে না হয় খরচ হলো লাখ কয়েক টাকাই।

আত্মপ্রসাদের ঢেকুরের বদলে সন্ধ্যার দিকে রক্ত চাপ বেড়ে যায় মোতালেবের। ডাক্তার আসে। আসে অ্যাম্বুলেন্স। দুদিন হাসপাতালে থেকে ফিরেও আসে। কিন্তু তাকে আর আগের মতো অতটা উচ্ছল আর প্রাণবন্ত মনে হয় না। চেহারার চামড়া যেন ভেতর থেকেই দিনদিন হয়ে উঠছে পুড়ে যাওয়া কড়াই বা হাড়ির তলার মতো। পরিবর্তনটা চোখে পড়লে তার কাছের লোকজন প্রথমেই যে কথাটা বলে, তা হলো, আপনের অত ট্যাকা খাইবো কে? ভালা মতন চিকিৎসা করান।

কিন্তু সে জানে, জানে হাসপাতালের ডাক্তাররাও যে, তার দেহে কোনো অসুখ এখনো শক্ত ঘাঁটি গাড়তে পারেনি। কেবল মনের ভেতরটাই খচখচ করে সারাদিন। রাতের বেলা চাক্ষুষ করেন ঘরের ভেতর হাঁটা চলা করছে বসু আর তার স্ত্রী-পুত্র। যেন কিছুই হয় নি। বিছানার পাশেই মেঝেতে বসে, সেই পুরোনো দিনের মতোই তিনজনে মিলে ব্রিজ খেলায় মত্ত আর মাঝে মাঝে হিসেব বা উঁকি দিয়ে একে অন্যের কার্ড দেখাদেখি নিয়ে কৃত্রিম ঝগড়া। মোতালেব দু কানে বালিশ চাপা দিয়েও যেন নিষ্কৃতি পায় না তাদের তিনজনের মধুর ঝগড়া থেকে।

বিছানায় ছটফট করতে দেখে বিলকিস বেগম পাশ ফিরে মোতালেবের মুখোমুখি হয়ে বুকে হাত রেখে বলে, অমন করতাছেন ক্যান? শরীর ঠিক আছে তো? নাকি প্রেশার বাড়লো? শিফারে ডাকমু?

-নাহ।
অস্থির কণ্ঠে বলে ওঠেন মোতালেব। ফ্যানটা কি আস্তে চলে?

বিলকিস বেগম ঘরের লালচে রাত-বাতির আলোয় ফ্যানের দিকে তাকিয়ে বলে, নাতো, ঠিকই আছে।

তারপর সে বিছানা থেকে নেমে গিয়ে রেগুলেটর বাড়িয়ে কমিয়ে দেখে যে, ফ্যান সর্বোচ্চ গতিতেই চলছে। বিছানায় ফিরে এসে আবার পাশে শুয়ে পড়ে মোতালেবের দিকে মুখ করে বিলকিস বেগম বলল, পানি খাইবেন? বেশি খারাপ লাগলে উইঠ্যা ছাদে নাইলে বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করেন কিছুক্ষণ। গোসল করলেও পারেন।

-নাহ। বলে বিলকিস বেগমের ওপর একটি হাত রাখেন মোতালেব। আর তাতেই বিলকিস বেগম আগ্রহ ভরে ব্লাউজের হুক ধরে টানাটানি করলে, অস্ফুটে আবার না বলে হাত সরিয়ে নেন তিনি। আজকাল পরিত্যক্ত বস্তা বা অন্য কোনো রঙচটা আসবাবের বেশি কিছু মনে হয় না বিলকিস বেগমকে। যদিও তার বন্ধু বা কাছের মানুষ বাইরে কখনো বিলকিস বেগমকে দেখতে পেলে লালা ঝরায়। কিন্তু মোতালেব তো জানেন বিলকিস বেগমে কিছু অবশিষ্ট নেই। দেহের কোথাও স্পর্শে কোনো অনুভূতি জাগে না তার দেহে। তবু বিলকিস বেগমের চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকে না মোতালেবকে আকৃষ্ট করতে। মোতালেব যেন নিঃস্ব কোনো পাত্র অবহেলায় পড়ে থাকে বিলকিস বেগমের পাশে।

স্বামীকে নানাভাবে জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থ বিলকিস বেগমের মাথার তালু পায়ের তালু জ্বলতে আরম্ভ করলে নিঃশব্দে নেমে যায় বিছানা থেকে। রাতবাতি নিভিয়ে দিয়ে কেবল পেটিকোট পরে পায়চারী করে কিছুক্ষণ। শুয়ে শুয়ে অন্ধকারেই আবছা আকৃতির বিলকিস বেগমের অস্থিরতা পর্যবেক্ষণ করে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাশ ফিরে শোন মোতালেব। একটু পর বাথরুমের দরজা খোলা শাওয়ার ছেড়ে পানির নিচে ভিজতে থাকা বিলকিস বেগমের নেতানো যৌবন স্পষ্ট দেখতে পান চোখ না মেলেও। ইদানীং তার অক্ষমতা বা অনিচ্ছার সুযোগে ফের ঘনিষ্ট হতে শুরু করেছে দলের কম বয়সী ছেলেদের সঙ্গে। তিনি বাড়ি না থাকলে পার্টির কাউকে না কাউকে ডাকিয়ে নিয়ে আসে বিলকিস বেগম। কিন্তু চ্যাংড়া ছেলেপেলে কেনই বা ধ্বসে যাওয়া যৌবনের দিকে আকৃষ্ট হবে বিলকিস বেগমের সেদিকে দৃষ্টি নেই। নির্বোধ মহিলা কি আয়নায় নিজেকে দেখে না। আর মেয়েটাও কি গাধা যে তার মায়ের কাজ-কারবার বুঝতে পারে না? তবু মাস দুয়েক আগে দুপুরের দিকে খালি বাড়ি থেকে সতর্ক আর হন্ত-দন্ত হয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহারের ছেলে আফতাবকে। একদিন নিজেই দুজনকে হাতে নাতে ধরে ফেলবার সুযোগ পেয়েও চুপচাপ বেরিয়ে গিয়েছিলেন, যেমন নিঃশব্দে এসেছিলেন। আফতাবের ওপর তার রাগ হয়েছিল ভীষণ। তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার অপরাধে নয়, অপরাধ হচ্ছে তার রুচি হীনতা। বিলকিস বেগমের বিগত যৌবনের প্রতি চোখ পড়বে আরেক প্রায় নিঃস্ব পুরুষের। বিশ-বাইশের ছেলে কোন রুচিতে আগ্রহী হয় এমন পঁয়তাল্লিশ সাতচল্লিশের বুড়ির প্রতি? তার তো আগ্রহ থাকবে তারই বয়সের নয়তো স্কুলের ওপরের ক্লাসের মেয়েদের প্রতি। ঠিক দুদিন পরই আফতাবকে পাওয়া গিয়েছিল রেল লাইনের ওপর দুভাগ হয়ে পড়ে আছে। তাকে কিছু বলতে হয়নি। নিজের অফিসে বসেই খবর পেয়েছিলেন ছেলেটা আত্মহত্যা করেছে। কামরুন নাহারও নিজের মুখেই কথাটা বলেছিল তাকে। মুখে চুক চুক শব্দ করে মোতালেব জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনের পোলা কি হিরোঞ্চি আছিল, নাকি লাভ কেইস?

কামরুন নাহার মাথা নেড়ে বলেছিল, ছেলে আমার ফেরেশতার মতন। এসব এখনো বোঝে না কিছু। মাত্র ইন্টার পাশ করলো কয়দিন আগে। কিন্তু কেন সুসাইড করল এইটাই বুঝলাম না।

মোতালেব হঠাৎ হাসতে গিয়েও গিলে ফেলেছিলেন হাসিটা। আহারে জননী। ছেলেরে পারলে এখনো দুধ খাওয়ায় ব্লাউজ উঠাইয়া। ছাগল মাগি! মনে মনে গালি দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে থো থো করে জানালা দিয়ে বাইরে থুথু ফেলে আবার চেয়ারে ফিরে এসে বলেছিলেন, আপনের বা সাহেবের লগে ঝগড়া হইছিল? মন কষাকষি?

-তাও না। মোতালেব নিশ্চিন্ত মনে কামরুন নাহারকে বাড়ি যেতে বলে চলে গিয়েছিলেন কদম তলা রত্নার কাছে। কয়েকদিন আসতে পারেননি নানা ব্যস্ততায়, তাই খানিকটা অভিমানও যেন জন্ম হয়েছিল তার মনে। কাছে টেনে নিয়ে কোলে বসিয়ে মুহূর্তেই তাকে হাস্যে লাস্যে উচ্ছল করে তুলেছিলেন। তার দিন কয়েক পরই দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মিটিঙে বসে জানলেন এবার নমিনেশন পাবে ফখরুদ্দিন। মোতালেব যেন এলাকায় খেটেখুটে পাশ করিয়ে দেয় তাকে। কিন্তু মোতালেবের কথা হলো ফখরুদ্দিনকে এলাকার মানুষ কেউ চেনে না। হঠাৎ করে তার জন্যে ভোট চাওয়াটা খারাপ দেখাবে। তার সমর্থকরা খেপে যেতে পারে। দলের সমর্থন কমে যেতে পারে। তার চেয়ে এবার সে ভাইস চেয়ারম্যান হোক। এলাকায় পরিচিতি পাক। পরের বার এমপি ইলেকশন করুক।

মোতালেবের কথাকে গ্রাহ্য করলো না কেউ। অপমানে আর তার স্থানীয় ক্ষমতাকে গুরুত্ব না দেওয়াতে তিনি জানালেন যে, স্বতন্ত্র থেকে ইলেকশন করবেন তিনি। এতে করে আরো চটে উঠলেন সিনিয়র নেতারা। তবু তিনি জানালেন, এলাকা আমার, এখানে আমার কথাই আইন।

রেগে মেগে সেদিন দলীয় মিটিং থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন মোতালেব। একবার মনে করেছিলেন দল পালটে আগের দলেই যোগ দেবেন। কিন্তু ততদিনে সাবেক এক ছাত্র নেতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বলে দলীয় সমর্থনের পাল্লা তার দিকেই ভারি থাকবে বোঝা যায়। দল পালটানো লোকের ওপর ভরসা করবে সে সম্ভাবনাও তিনি দেখতে পান না।

যেদিন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে এলো সেদিন অজ্ঞাত একটি নাম্বার থেকে তাকে জানানো হয়েছিল, সময় হলে যেন সে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে। কিন্তু মোতালেবের কাছে এসব হুমকি ধমকি বাচ্চাদের চেঁচামেচি বলে মনে হয়। তারপর আরো দুদিন একই ব্যাপার ঘটে। তার মেয়ে শিফা এসব শুনে বলেছিল, বাবা, এইসব বাদ দাও। তোমার তো অভাব নাই। আর আমি ডাক্তার হইয়া বের হইলে তো তোমার দুশ্চিন্তাও দূর হইয়া যাবে।

-তুই এইসব বুঝবি না রে মা! আমার গাড়ি চালাইয়া বাঁচছে যেই নুরুদ্দিন, আইজগা হেই তেল্লাচোরাও আমারে ধমক দেয়।

-বাবা, আমার কিন্তু এইবার মনে হইতাছে খুব বেশি খারাপ কিছু হইব।

মোতালেবের মনেও কু ডাকছিল, কিন্তু ব্যাপারটা কতটুকু মন্দ হতে পারে তার কল্পনায় আসেনি। দুপুর বেলা বাড়িতে একা থাকে বিলকিস। কোনো কাজের মানুষ সে রাখেনি ইচ্ছে করেই। আত্মীয়-স্বজনকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো তার পছন্দ নয় বলে তার কাছে কেউ আসে না তেমন একটা। মোতালেব তাই এলাকায় থাকলে প্রতিদিনই দুপুরে চলে আসেন ঘরে। কিন্তু আজ ঘরে ঢুকে কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছিলেন না। অন্যান্য দিন রান্নাঘরে হাড়ি-বাসন বা চামচের শব্দ শোনা যেতো। আজ যেন পুরোপুরিই মৃত্যু পুরী। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে ডাকেন, বিলকিস, বিলকিস বেগম!

কোনো সাড়া নেই। রান্না ঘরের দরজা দিয়ে ভেতরে উঁকি দিতেই দেখতে পান হাত পা ছড়িয়ে মেঝেতে পড়ে আছে বিলকিস। গায়ে একটি সুতো পর্যন্ত নেই। গলায় শক্ত করে গামছা পেঁচানো। কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মোতালেব। মেঝেতে পড়ে থাকা বিলকিসের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার মনে পড়ে কল্যাণী বসুর কথা। যতক্ষণ বেঁচেছিল কল্যাণী হাত-মুখ বাঁধা থাকার ফলে কিছু বলতে না পারলেও দু চোখ দিয়ে ঠিকরে বের হচ্ছিল প্রবল ঘৃণা। এক সময় বিলকিসের নিথর মুখ আর কল্যাণী বসুর নিথর মুখ একাকার হয়ে যায় যেন।

কিছুক্ষণ ঘরময় পায়চারী করেন মোতালেব। আলমারি খুলে গুলি ভর্তি রিভলভার আর শটগানটা বের করে পরখ করেন। তারপর অস্ত্র দুটো জায়গা মতন রেখে দিয়ে আলমারি বন্ধ করে তালা আটকে দিয়ে শান্তভাবেই থানায় ফোন করে জানান বিলকিসের কথা।

মাস দুয়েক পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। পারেনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করতে। কিন্তু একদিন পাশের ইউনিয়নে মিটিং থেকে ফেরার পথে, নুরুদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয় তার। আগে দেখা হলেই সে সালাম দিয়ে খানিকটা কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়াত। কিন্তু সালাম তো দূরের কথা কেমন না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। মনে হচ্ছিল কোনো কারণে হাসি এলেও প্রাণপণে চেপে রেখেছে। নুরুদ্দিনের ঔদ্ধত্য দেখেই কিনা ভেতরে ভেতরে হঠাৎ জেগে উঠলো কুখ্যাত শ্রমিক মোতালেব। একে তো বিলকিসের মৃত্যু অক্ষমতার আগুনে তাকে পোড়াচ্ছিল, নুরুদ্দিন যেন সেই আগুনটাকেই ফের উসকে দিল নিদারুণ ভাবে।

মধ্যরাতে পুরো এলাকা সুনসান নীরবতায় আচ্ছন্ন হয়ে গেলে মোতালেব কোমরে রিভলভার, চাকু আর হাতে শটগান নিয়ে বেরিয়ে আসে। শিফা যাতে একলা ঘরে নিরাপদ থাকে তাই বাইরে থেকে দরজায় তালা দিতে ভুল করে না। নুরুদ্দিনের ঘরে তখনও বাতি জ্বলছিল। তাকে অন্ধকারে দেখতে পেয়ে একটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করে উঠল প্রবল পরাক্রমে। হয়তো হাতে লাঠির মতো শটগানটা দেখতে পেয়েই ভয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া থেকে বিরত ছিল। মোতালেব অন্ধকারে দাঁড়িয়েই শুনতে পান নুরুদ্দিনের স্ত্রী বলছে, বাইরে চোর-ডাকাইত আইলো নি, কুত্তাডা এমন করতাছে ক্যান?

-আরে চোর-ডাকাইতের কথা ছাড়। আমার ঘরের ধারে কাছে আইবো হেই কইলজা কারো নাই। মোতালেবেরও হেই দিন নাই। মাজা ভাঙ্গা সাপের মতন খালি মাথা উঁচাইয়াই রাখছে।

মোতালেবের ইচ্ছে হয় এখনই নুরুদ্দিনের মাথাটা উড়িয়ে দেন হাতের শটগানটার গুলিতে। কিন্তু তাকে অতটা উতলা হওয়া মানায় না। জানতে হবে বিলকিসের গায়ে কে কে হাত দিয়েছিল। হাতের শটগানটা কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে কোমর থেকে চাকুটা বের করে হাতে নিয়ে এগিয়ে যান জানালার দিকে। ঠিক তখনই কুকুরটা আরো ভয়ানক ভাবে চেঁচিয়ে উঠলে নুরুদ্দিনের স্ত্রী জানালা খুলে অন্ধকারে কিছু দেখতে চেষ্টা করে। সে ফাঁকে দেখা যায় বিছানার ওপর হাত পা ছড়িয়ে খালি গায়ে চিত হয়ে শুয়ে আছে নুরুদ্দিন। সময় নষ্ট না করে জানালার পাশ থেকে হাত বাড়িয়ে নুরুদ্দিনের স্ত্রীর চুলে মুঠি করে ধরে জানালার শিকের সঙ্গে টেনে ধরে গলায় চাকুটা দিয়ে আড়াআড়ি একটি টান দেন মাত্র। কাজটা করতে ত্রিশ-চল্লিশ সেকেন্ডও লাগেনি মনে হলো মোতালেবের। বয়স হলেও পেশাদারিত্বের ক্ষিপ্রতা ভুলে যাননি। চুলের মুঠি ছেড়ে দিতেই কাত হয়ে পড়ে যায় নুরুদ্দিনের স্ত্রী। কি হইলো তোমার? বলতে বলতেই হয়তো বিছানা ছাড়ে নুরুদ্দিন। সেই ফাঁকে দরজার দিকে এগিয়ে যান মোতালেব। চাকুটা ফের কোমরে গুঁজে নিয়ে হাতে রিভলভার নিয়ে দরজায়, টোকা দেন।

-কেডায় এত রাইতে?

গলার স্বর বিকৃত করে মোতালেব জানান, থানা থেকে আসছি। আইনের লোক।

নুরুদ্দিন হয়তো স্ত্রীর অবস্থাটা দেখতে পারেনি বা অনুমান করতে পারেনি। তার আগেই দরজায় টোকা পড়েছে। আইনের লোক আমার কাছে কোন কাজ?

বলতে বলতে দরজা খোলে নুরুদ্দিন। আর সঙ্গে সঙ্গেই মোতালেব এক হাতে তার চুল ধরে আর অন্য হাতে মুখের ভেতর চালান করে দেন রিভলভারের নল।

মোতালেবকে দেখে অথবা তার কাঁধের শটগান রিভলভারের নলের মুখে যেন স্তব্ধ হয়ে যায় নুরুদ্দিন। পা দিয়ে দরজাটা ঠেলে বন্ধ করে দিয়ে ঘরের অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় ঠেলে নিয়ে যান নুরুদ্দিনকে। মুখ থেকে রিভলভারের নলটা বের করে গলায় ঠেসে ধরে জিজ্ঞেস করলেন, বিলকিসের গায়ে কে কে হাত দিছিলি?

নুরুদ্দিনের ভালো করে জানা আছে মোতালেবের এই রূপ। হড়বড় করে দশটা নাম বলে সে।

মোতালেব অবাক হয়ে ভাবেন যে, সবগুলো মানুষই তার কাছের লোক। অথচ তারা এমন একটি কাজ করতে পারলো? পৃথিবীটাকে তখনই গুঁড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হয় তার। চাকুটা বের করে নুরুদ্দিনের গলায় পোঁচ দিয়ে বুকের বাঁ দিকেও একটা ঘাই মারেন। আহত অথবা নিহত নুরুদ্দিনের দাঁড়িয়ে থাকবার সামর্থ্য থাকে না।

নিজের হাতে ঘরের বাতিগুলো নিভিয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসতেই কুকুরটা একবার কুঁই করে ওঠে মাত্র। মোতালেব দ্রুত পায়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে পোশাক বদলের কথা ভাবেন। আরো নিষ্ঠুরতার মানসে মনে মনে নুরুদ্দিনের বলা দশটি নাম জপতে থাকেন। মানস চোখে দেখতে পান, একই রাতে এগারোটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কেবল একজন মোতালেবের সংশ্লিষ্টতা কেউ বিশ্বাস করবে না। সেই সুযোগে একশত চৌষট্টি ধারায় জবানবন্দীর সময় তামা তামা করে ফেলবেন এলাকাটাকে।

মনের ভেতর যেন আত্মতৃপ্তির খই ফুটতে থাকে পটপট শব্দে। মোতালেব সন্তর্পণে বাড়ির দরজার সামনে ফিরে আসেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। ব্যস্ত হাতে তালা খুলে ঘরের দরজার একটি কপাট ঠেলতেই তার চোখে পড়ে শিফার কাটা মুণ্ডুটা রাখা আছে সেন্টার টেবিলের ওপর। তখনও তাজা রক্ত চুইয়ে চুইয়ে টেবিলের ওপর থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় গড়িয়ে পড়ছিল মেঝেতে।

(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৯
২৬টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×