সব ধরনের চাটুকারদের বর্জন করুন......
প্রথমেই স্বীকার করছি- প্রসংশা করা আর মোসাহেবী/ চাটুকারী করা একনয়। মোসাহেবী চরিত্র সৃষ্টির শুরু থেকেই ছিলো। হঠাত করেই স্যোশাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে ব্যক্তিস্তুতি, তেলানো পোস্ট! এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়, এধরনের মানসিকতা ব্যক্তিত্বহীনতারই নামান্তর!
ব্লগিং এর নামে ব্যক্তিস্তুতি কিংবা কুৎসা রচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে।
কারও অহেতুক, অতিরিক্ত, কখনও বা অনুপস্থিত গুণাবলির প্রশংসা করে তার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার ব্যক্তিত্বহীন ও নির্লজ্জ প্রয়াসের নাম এটি। বলাবাহুল্য, এ সময় তোষামোদকৃত ব্যক্তির কোনো ব্যর্থতা বা দোষ তোষামোদকারীর দৃষ্টিগোচর হয় না কিংবা স্মরণে এলেও তা উল্লেখ করা হয় না। প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে, বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্নভাবে, স্বনামে-বেনামে এদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে। তবে প্রতিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি, কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, সরকার ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি সাধারণত অধস্তন ব্যক্তির তোষামোদের শিকার হন।
তোষামোদ সাধারণত ক্ষমতা ও অর্থের পিছু নেয়। কারও ক্ষমতা কিংবা অর্থ ফুরালে তোষামোদকারীও আর তার ছায়া মাড়ায় না। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যক্তিবন্দনায় মোসাহেবের কি লাভ তা এখনও ঠাওর করতে পারছিনা। নিশ্চয়ই কোনো না কোনো ভাবে লাভ আছে বলেই চাটুকারিতা শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠান, সমাজ বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যখন এর শিকার হন, তখন তারা আমোদে গদগদ হন। আর নিজের দুর্বলতা, ব্যর্থতা বা অযোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক ও সম্যক ধারণা না থাকার কারণে প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ক্ষতি বয়ে আনেন। সুন্দরের প্রশংসা, ভালো কাজের বাহবা অবশ্যই প্রাপ্য। কিন্তু যখন মানুষের প্রশংসা কিংবা গুণকীর্তন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখনই এটা চাটুকারিতার পর্যায়ে পড়ে।
ব্যক্তিস্তুতি নয়, সামনে বসে গুণকীর্তন নয়, দূরে দাঁড়িয়ে, নিরপেক্ষতার দূরত্বকে সম্মান জানিয়ে আলাপনকে নিয়ে যা বলছি, তা আমাদের সত্যচর্চার নির্ভার অঙ্গ। এ ব্যাপারে আমরা অকপট নিকটদ্রষ্টা। পাশাপাশি নজরদারির আপেসহীন চর্চা আর প্রবক্তাও কম বটে। আলাপনের দক্ষতার বিস্তৃতি কামনা করছি। আশা করব, সবরকমের সৃষ্টিহীন, ধারহীন ধাঁচকে বদলে দিয়ে তাঁর দায়বদ্ধতা বাংলার সৃজনের শক্তিকে অধিকতর মনোহর করে তুলবে। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সত্য-মিথ্যা এবং কপটতার মিশেলে অন্যকে তুষ্ট করার অনৈতিক প্রয়াসকে এক কথায় চাটুকারিতা বলে অভিহিত করা যায়- এই সত্যটা চাটুকারেরা অনুধাবন করবেন।
বর্তমানে আপনি যে কোনো সত্য কথা বলুন, সমালোচিত হবেন, বিরাগভজন হবেন, গালাগাল খাবেন। স্তুতি করুন, অসততা দেখান, পদলেহন করুন সমর্থন পাবেন। এখন প্রভুদের যুগ। তারাই স্তাবক তৈরী করে নেন। কোনটা মানবেন বা মানবেন না তা ঠিক করে দেন। সত্য-মিথ্যার নির্ধারক প্রভুরাই। ভক্তরা তাদের জুতোর ধুলিকণা হয়ে নিজেদের ধন্য করে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


