"জল-বনের কাব্য" নামক একটা উপন্যাসে শেষ পৃষ্ঠায় "Life is more than petty calculations..." লিখে আমার মা তাঁর নাম, তারিখ লিখে রেখেছেন আমার জন্মের দুই বছর আগে।
আমার মায়ের জীবন নিয়ে কোন ভাবনা চিন্তা ছিলনা, আর তাই কোন মাথাব্যথাও ছিলনা বলেইতো আমাকে জন্ম দিয়ে হারিয়ে গিয়েছে না ফেরার দেশে! তাই মা এবং মা-দিবস নিয়ে আমার কোনো আদিখ্যেতা নাই। আলাদা করে কোন গুরুত্ব আমি মাকে দেইনা!
সেই ছেলে বেলায় যখন একা একা ঘুমাতাম এবং ঘুম ভাংতো তখন ছাড়া আমার মাকে মনে পরতোনা। স্কুলের অন্য বন্ধুরা ওদের মায়ের হাত ধরে স্কুলে আসতো আবার স্কুল থেকে বেড়িয়ে যেতো, ওদের মায়েরা টিফিন খাইয়ে দিতেন- তখনই শুধু মাকে মনে করতাম। যখন পরিক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে রেজাল্ট শীট নিয়ে বাসায় ফিরতাম তখন মাকে মনে করতাম। যখন দেখতাম আমার সহপাঠী বন্ধুরা স্পোর্টসে আমার কাছে হেরে কেউ সেকেন্ড, থার্ড হয়ে ওদের মায়ের কোলে ঝাপিয়ে পরে আদর নিচ্ছে। আর আমি স্পোর্টসের অনেক গুলো ইভেন্টে প্রথম স্থান অধিকার করে অনেক গুলো প্রাইজ হাতে নিয়ে একাকী নির্বাক দাঁড়িয়ে, তখন মাকে খুব মনে করতাম। বুবু ছাড়া কেউ আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলতোনা- "আমার হিমু ভাইয়া, আমার হিমু দ্যা গ্রেট ভাইয়া"!
ছড়া কবিতা আবৃত্তিতে, কোন খেলায় পুরস্কার জিতে কিম্বা হেরে না যাওয়া অবধি মায়ের কথা মনেই পড়তনা আমার। এখনো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, অন্যান্য ইবাদতের সময়, বিগত দিনে একটুখানি সুখের সময় কিম্বা সকল কষ্টের সময় ছাড়া মা'কে আমার মনে পরেনা।
আমার কোন জন্মদিন ছিলনা শুধু একটা মৃত্যুদিন, আমার মায়ের মৃত্যু দিন আছে, যেদিন আমার জন্ম হয়েছিল।
তাই আমার কাছে প্রতিদিন কিম্বা কোনদিনই মা দিবস নয় - শুধু মায়ের মৃত্যু দিনটাই আমার কাছে মায়ের স্মৃতি হয়ে আছে।
আর 'মা' নামের এক কল্পিত ঘ্রাণ প্রিয় সুগন্ধি বুকের গভীরে বসবাস!
তবু অপেক্ষায় আছি -
যদি কোনদিন মা এসে বলে-'বড়ো ভুল হয়ে গেছে খোকা,
চল ঘরে ফিরে যাই'।
"রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগীরা"।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


