somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি খণ্ডিত সেবা চিত্র....

২৩ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি খণ্ডিত সেবা চিত্র....

আমরা সবাই জানি- সিটি করপোরেশন(সিটি চোরকর্পোরেশন নাম হওয়া উচিৎ) এলাকার বাড়ি/ফ্ল্যাট মালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। ২০১৫ সন পর্যন্ত বাড়ি/ফ্ল্যাট মালিক/প্রতিনিধি সিটি কর্পোরেশন অফিসে হাজির হয়ে ট্যাক্স পরিশোধ করতে হতো। চার কোয়ার্টার(প্রতি তিন মাসে এক কোয়ার্টার)। যদি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে এক বছরের আগাম ট্যাক্স পরিশোধ করে তাহলে ১০% রেওয়াত পাওয়া যায়। আবার বছর পার হয়ে গেলে ১০% জরিমানা সহ ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। ট্যাক্স পরিশোধ করতে গেলে ট্যাক্স অফিসার এবং ক্লার্ক নানাবিধ হয়রানি করতো। অজুহাত ছিলো- "রেভিনিউ অফিসার নাই/ ইনস্পেক্টর সাইট ভিজিটে গেছে কাল আসেন/পরশু আসেন...."- ওদের কথামতো কাল/পরশু যেয়ে শুনবেন- "ইনস্পেকটর ছুটিতে গেছে/ ক্লার্কের শাশুড়ি মারা গেছে / অমুকের অসুর হাসপাতালে গেছে...."- আপনি চিল্লাচিল্লি করে কোনো ফল পাবেন না। আসল কাহিনী হলো আপনি ফ্ল্যাট প্রতি কমপক্ষে ২০০/- ধরিয়ে দিলে বলবে- "কাল এসে ট্যাক্স পরিশোধ রিসিট নিয়ে যাবেন"! যদি ৩০০/- ৪০০/- দেন তাহলে সাথে সাথে ট্যাক্স পরিশোধ রিসিট দিয়ে দিবে।

২০১৫ সন থেকে সিটি কর্পোরেশন অফিস থেকে ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ বই সরবরাহ করা হতো। সেই বইয়ের ট্যাক্স ফরম গ্রাহকদের পুরন করে সিটি কর্পোরেশন অফিসে যেয়ে ট্যাক্স এর টাকা নগদ/চেক দিয়ে ডিপোজিট করতে হতো। সমস্যা এখানেও। আপনি যতই নিখুঁত ভাবে, নির্ভুলভাবে ট্যাক্স ফরম পুরন করে নিয়ে যাবেন- ওরা কোনো না কোনো খুঁত বের করে ২/৩ দিন ঘুরাবে। কিন্তু আগের রেইটে বখশিশ এর নামে ঘুষ দিলে কোনো সমস্যা নাই!

আমি ঢাকা উঃ-ডঃ দুই সিটি কর্পোরেশন এরই ট্যাক্স হোল্ডার হলেও শুধু উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর অভিজ্ঞতা বর্ননা করছি। উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর রেভিনিউ অফিস কাওরান বাজারে অবস্থিত। এই অফসের দ্বিতীয় তলায় এলাকা ভিত্তিক গ্রাহকদের জন্য একজন ইনস্পেকটর এর সামনে একটা মাত্র প্লাস্টিকের চেয়ার... এক রুমে ৮ জন ইনস্পেকটর, একজন ক্লার্ক, সিলিং ফ্যান দুইটা। শতশত গ্রাহক অফিস পেরিয়ে বারান্দা-সিড়িতে দাঁড়িয়ে। কোথাও বসার যায়গা নাই। তার উপর গ্রাহকেরা সবাই কমবেশি কর্মব্যস্ত। একটা দিনে অনেক কিছু করতে হয়। আপনি কয়দিন সব কাজ ফেলে সিটি কর্পোরেশন অফিসে দাঁড়িয়ে থাকবেন! অতএব আপনি বাধ্য হয়ে সিটি শুয়ারদের চাহিদা মতো ঘুষ দিয়ে ট্যাক্স পরিশোধ করতে বাধ্য।

উপরে উল্লেখ্য সমস্যা সমাধানের জন্য পৃথিবীর একমাত্র ডিজিটাল দেশ- "ডিজিটাল বাংলাদেশ" এর মশহুর উঃ-দঃ দুই নারদ মহোদয় সারম্বরে উদ্বোধন করেন অনলাইন ট্যাক্স পেমেন্ট সিস্টেম। আমরা সবাই হাফ ছেড়ে নিঃশ্বাস নিতে না নিতেই নাভিশ্বাস!

গতবারের ট্যাক্স পরিশোধ রিসিট এবং টাকা দিয়ে কেয়ার টেকারকে পাঠিয়েছিলাম চলতি অর্থ বছরের ট্যাক্স পরিশোধ করতে। পাক্কা চার ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ করার নিয়ম জেনে এসেছে....


অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ করার নিয়মঃ-
সকালে ট্যাক্স অফিসে যেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবেন। নয়টায় অফিস শুরু হলেও সিটি চোরপর্রেশনের কত্তারা এসে পৌঁছবেন সাড়ে দশটা এগারোটা নাগাদ। এসে চা পানি খেয়ে আয়েসি ভংগিতে একজন একজনকে কম্পিউটার থেকে একটা হোল্ডিং আইডি নম্বর দিবেন। সেই নম্বর নিয়ে আর এক টেবিলে যাবেন। সেই টেবিল থেকে আপনাকে একটা ফরম দিবে। সেই ফরম আপনি পুরন করে আর একটা টেবিলে জমা দিবেন। তিনি একজন কম্পিউটার অপারেটর/টাইপিস্ট। তিনি আপনার পুরন করা তথ্যউপাত্ত কম্পিউটারে টাইপ আপনাকে একটা টোকন দিবে। সেই টোকেনে লেখা আছে আপনাকে কোন কোয়ার্টার পর্যন্ত কতো টাকা ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। সেই পরিমাণ টাকা নিয়ে ডাচ্ বাংলা/ মধুমতি ব্যাংকের নির্দিষ্ট বুথে জমা দিয়ে ডিপোজিট স্লিপ নিবেন(কোনো রেভিনিউ অফিসারই ডাচ বাংলা ব্যাংক রেফার করেনা, সবাইকে মধুমতি ব্যাংকে রেফার করে। কারণ, মধুমতি ব্যাংকের মালিক দঃ নারদ)। তবে হ্যাপা কিন্তু ২ কর্মদিবসের!

অতএব, সিস্টেম আপনাকে বাধ্য করবে বিকল্প পথে হাটতে.... সহজ সমাধানঃ ক্লার্কের হাতে ৫০০/- একটা নোট ধরিয়ে দিন(আগে এনালগ সিস্টেমে ২০০/৩০০ টাকা দিলেই হতো, এখন ডিজিটাল সিস্টেমে ৫০০/- দিবেননা কেন?), আপনার কিছুই করা লাগবেনা, ট্যাক্সের টাকাটা ওদের হাতে দিয়ে দিন, ঘন্টা খানিক পরে মানি রিসিট নিয়ে বাসায় ফিরবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কতভাগ ব্লগার মহা-ডাকাত তারেককে সরকারে দেখতে চায়?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১২



জিয়া মিথ্যা হ্যাঁ/না ভোটে সামরিক এডমিনিষ্ট্রেটর থেকে আইয়ুবের নতো দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলো, ৫% ভোটকে মিথ্যুকেরা ৯৮% বলেছিলো ; আওয়ামী লীগ বাধা দিতে পারেনি। জিয়ার মৃত্যুর পর, বেগম জিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১৯

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক
দায়হীন সরকারের শাসনে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে?


দিপু চন্দ্র দাস মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন—
“আমি নবীকে নিয়ে কিছু বলিনি, আমাকে মারবেন না।”
রাষ্ট্র তখন কোথায় ছিল?

আগুনে পুড়তে পুড়তে ছোট্ট আয়েশা চিৎকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটি ডায়াটের গল্প, যেভাবে ওজন কমিয়েছিলাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮


১৬ ডিসেম্বরের খাবার ছিল। উপরের চায়ের ছবিতে ফেসবুকের দুই গ্রুপে দুটো পুরস্কার পেয়েছি প্রতিযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ।

মোবাইলে পোস্ট, ভুল ত্রুটি থাকিতে পারে, মার্জনীয় দৃষ্টিতে রাখবেন।

জব করি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সারাদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

'আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান'

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯



১। মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
আমাদের মহাত্মা গান্ধীর কর্মকান্ড লুথার খুবই পছন্দ করতেন। ১৯৫৫ সালে লুথার বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×