somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

বয়স বাড়লে নিরাশ হবেন না......

২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়স বাড়লে নিরাশ হবেন না......

বয়স বাড়লে অর্থাৎ বুড়ো হলে মানুষ নিজেকে অপাঙ্ক্তেয় মনে করেন। তাকে অন্যরা, এমনকি নিজের ছেলে মেয়েরাও পাত্তা না দেওয়ায় হীনমন্যতায় ভোগেন। বার্ধক্য কি সত্যিই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে? যৌবন তো সত্যিই মূল্যবান। অনেক কিছু করার থাকে।কিন্তু বার্ধক্য কি সত্যিই বৃথা যায়?

** এবার প্রকৃতির দিকে একবার তাকিয়ে দেখা যাকঃ-

ফলের মধ্যে, ডাব যেখানে ১২০ টাকা দাম, শুকনো নারিকেল সেখানে ৮০ টাকা। ডাঁসা পেয়ারা সবাই পছন্দ করে, অনেকেই পাকা পেয়ারা পছন্দ করেন না। কচি শশা সবার পছন্দ, পাকা শশা তেমন কেউ পছন্দ করে না। ঢেঁড়স, লাউ, পটল ইত্যাদি কচি হলে পছন্দ করেন। বুড়ো হলে কেউ তো তাকায়ই না। অর্থাৎ যৌবনের জয়জয়কার।

** আবার দেখুন, যে কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা প্রতি কেজিতে, তা পাকলেই ১০০ টাকা হয়ে যায়। আম, বেল ছাড়াও অনেক ফল পাকলেই মূল্যবান। মাছের বেলায় কম বয়সী মাছ/কম ওজনের কাতলা, রুই মাছের দাম কম। বেশি ওজনের, মানে বেশি বয়সের মাছ হলেই বেশী দাম।

** এবার আসুন মানুষের ক্ষেত্রে। সিনেমার নায়ক নায়িকা কম বয়সী হলে বেশি আকর্ষণীয়। খেলার জগতে কম বয়সীরা বেশি উৎকর্ষতা দেখায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওই পদ থেকে অব্যাহতি নিতে হয় প্রাকৃতিক কারণে। চাকরিতে কম বয়সীদের ঢুকতে হয় এবং বেশী বয়সে চাকুরিতে উচ্চপদে উঠতে পারে। দৈহিক কুশলতার এবং দীর্ঘকাল সার্ভিস প্রাপ্তির জন্য যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় কিন্তু অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বেশী বয়স বিরাট ফ্যাক্টর।

** এবার দেখুন বয়স্ক হলে কি হয়ঃ-
ডাক্তারের যত বয়স বাড়ে, তার চিকিত্সার দক্ষতা ততো বাড়ে একটা সময় পর্যন্ত। শিক্ষকদের ক্ষেত্রে পড়াশোনা বজায় রাখলে, বয়সের সাথে সাথে তার শিক্ষা দানের দক্ষতাও বাড়ে। বয়সের শেষ দিকে এমন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হয়। প্রকৃত সত্যানুসন্ধানীরা বয়স্কদের সাহচর্য পছন্দ করেন। রাজনৈতিক দলের নেতারা বুড়ো হলে কেমন অভিজ্ঞ হয়। কবি সাহিত্যিকদের ক্ষেত্রে তাদের উৎকর্ষতা বাড়তে থাকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে। এই প্রসঙ্গে বলি, রবীন্দ্রনাথ শেষ বয়সে "শেষের কবিতা" রচনা করে যুবক প্রেমিক প্রেমিকাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বয়স্কদের ওকালতি, ব্যবসাতে সফলতার সম্ভাবনা বেশি হয়ে থাকে। এককথায়, মগজের কাজটা বয়স বাড়লে একটা সময় পর্যন্ত ভালো হতে থাকে। অভিজ্ঞতায় পূর্ণ হয়। অবশ্য ব্যক্তিবিশেষের ওপর নির্ভর করে।

আমরা লক্ষ্য করেছি- অনেকেই বয়স্ক লোকদের অসম্মান করে, তাচ্ছিল্ল করে "বুইড়া" সহ আরও অনেক নোংরা শব্দে অভিহিত করে। এই কুস্বভাবের মূল উতস হচ্ছে- সেইসব পরিবারের সন্তানের মায়েরা বাবা/দাদাকে "বুইড়া" সম্ব্বোধন করে- অর্থাৎ এটা পারিবারিক শিক্ষা।

** প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ ফল আমের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন। মুকুল থেকে আরম্ভ করে পাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন বয়সে সে তার বিভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ। প্রথমে কম বয়সে সে কত ঝড় ঝাপটা সহ্য করে। কিছু অকালে ঝরে পড়ে। আর যারা টিকে যায়, তারা বৃদ্ধ বয়সে সকলের রসনা তৃপ্ত করে। মানুষের বয়সও বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন রকম সেবা, পরিতৃপ্তি হয়ে এই সমাজের নানাবিধ উপকার করে আসছে। অতএব,
বয়স্ক মানেই বুড়ো নয়, আর বুড়ো মানেই ফেলনা নয়।

** অতএব, বুড়ো হলে মন খারাপ করবেন না। সবকিছু না পারলেও অনেক কিছুই করা সম্ভব। অন্ততঃপক্ষে, প্রকৃতি সেই নির্দেশই দেয়। তাই আপনার পছন্দসই কাজের মধ্যে ডুবে থাকলে, সম্ভাবনা তত্ত্ব থেকে বলা যায়, আপনি কিছু না কিছু পাবেনই। অর্থ প্রাপ্তি ছাড়া ও শান্তি প্রাপ্তি ও কম হবে না। আর আপনাকে লোকে খোঁজ করবে। সাহচর্য চাইবে। অকাজের লোককে কেউ খোঁজ করে না- এটাও অনেক বড়ো স্বস্তি।

নিজ অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারি- ৬০ বছর পার হলেই বার্ধক্যের সব আলামত আস্তে আস্তে শুরু হয়। বুড়ো হতে থাকলে নিরাশ হবেন না। মনে আশা রাখবেন। যথাসম্ভব যতটুকু পারেন, পছন্দসই কাজ নিয়ে সময় কাটান। দেখবেন বাজে চিন্তা করার সময় পাবেন না।

শ্রদ্ধেয় ব্লগার খায়রুল আহসান সাহেবের গতকালের একটা কবিতা "জীবন চক্রের স্বাস্থ্য বুলেটিন" পড়ে এই পোস্ট লেখার প্রেরণা পেয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:১০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কতভাগ ব্লগার মহা-ডাকাত তারেককে সরকারে দেখতে চায়?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১২



জিয়া মিথ্যা হ্যাঁ/না ভোটে সামরিক এডমিনিষ্ট্রেটর থেকে আইয়ুবের নতো দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলো, ৫% ভোটকে মিথ্যুকেরা ৯৮% বলেছিলো ; আওয়ামী লীগ বাধা দিতে পারেনি। জিয়ার মৃত্যুর পর, বেগম জিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১৯

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক
দায়হীন সরকারের শাসনে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে?


দিপু চন্দ্র দাস মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন—
“আমি নবীকে নিয়ে কিছু বলিনি, আমাকে মারবেন না।”
রাষ্ট্র তখন কোথায় ছিল?

আগুনে পুড়তে পুড়তে ছোট্ট আয়েশা চিৎকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটি ডায়াটের গল্প, যেভাবে ওজন কমিয়েছিলাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮


১৬ ডিসেম্বরের খাবার ছিল। উপরের চায়ের ছবিতে ফেসবুকের দুই গ্রুপে দুটো পুরস্কার পেয়েছি প্রতিযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ।

মোবাইলে পোস্ট, ভুল ত্রুটি থাকিতে পারে, মার্জনীয় দৃষ্টিতে রাখবেন।

জব করি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সারাদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

'আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান'

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯



১। মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
আমাদের মহাত্মা গান্ধীর কর্মকান্ড লুথার খুবই পছন্দ করতেন। ১৯৫৫ সালে লুথার বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×