মানুষ নিয়ে অদ্ভুত খেলা....
আমি আমার একটা ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টিং ইনফো দিয়ে নেই। সেটা হচ্ছে আমি যখন নতুন কোন মানুষের সাথে কোন আলাপে এঙ্গেজ হই বা অংশ নেই। আমি প্রথমে সেই মানুষটাকে, তার চোখে-মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে ”পড়ার” চেষ্টা করি। কিংবা আলাপে অংশ যদি নাও নেই, একজন অপরিচিত পথিক রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে, সেই মানুষটাকে ”পড়ার” চেষ্টা করি। মানুষ দেখে, মানুষের নাম শুনে একটা ধারণা করার অভ্যাস আমার আজন্মের। যেমনঃ কামাল, হুমায়ুন, মামুন, ইসতিয়াক, নুরুল ইসলাম কিম্বা যেকোনো নাম শুনলেই মনে মনে সেই নামের মানুষ সম্পর্কে একটা আধ্যাত্মিক ধারণা কিম্বা অনুমান করি.....
আবার সম্পুর্ণ অচেনা অজানা কোনো মানুষ আমার চোখে পরলে সেই মানুষটার কি নাম হতে পারে, কি পেশায় নিয়োজিত তেমন একটা আন্দাজ, আধ্যাত্মিক ধারণা কিম্বা অনুমান করি.....তারপর আমার অনুমান নিশ্চিত হতে সেইসব মানুষের সাথে কথা বলি....অবাক বিস্ময়- আমার অনুমানের সঠিক পরিসংখ্যান ৬০/৪০!
২৩ জুন আমি সড়ক পথে বরিশাল থেকে ঢাকা ফিরছিলাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ২৩ জুন থেকে ২৬ জুন সকাল পর্যন্ত জাজিরা-মাওয়া ফেরি সার্ভিস সীমিত/নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ফলতঃ রাজধানীর সাথে সড়ক যোগাযোগে দক্ষিনাঞ্চলের সকল যানবাহন দৌলতদিয়া -আরিচা- পাটুরিয়া নির্ভর হয়েছিল। আমাদের গাড়ি সহ কয়েক হাজার গাড়ি এবং যাত্রীরা প্রায় দশ ঘন্টা সড়ক এবং ফেরিঘাটে আটকে পরে। এই বিরক্তিকর অপেক্ষমান সময়টা আমি আমার চোখের সামনের মানুষের নাম পেশা নিয়ে ধারণা করতে থাকি.....
আমি দুই শ্রেণীতে মোট ২২ জন মানুষকে টার্গেট করি। এর মধ্যে প্রথম দশজনের ধর্মীয় লেবাস ছাড়া ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারণ করি। তাদের মধ্যে ৫ জন মুসলিম, ৪ জন হিন্দু এবং একজন খৃষ্টানধর্মালম্বী- এখানে আমার অনুমান শতভাগ সঠিক হয়েছিল। অবশিষ্ট ১২ জনের কল্পিত নামের ৪ জনের নাম সঠিক হয়। একজনের নামের আংশিক (আমি ধারণা করেছিলাম লোকটার নাম বোরহান উদ্দিন হবে কিন্তু লোকটার নাম মাহতাবউদ্দিন) সঠিক হয়েছিল। আর পেশাগত বিষয় আমার ধারণা ৮ জন সঠিক হয়।
সাদা লুংগী পরা এক লোক দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন। কিশোর দুই সন্তান ঝালমুড়ি খেয়েছে। তারপর পেয়ারা খেয়েছে। কিছুক্ষণ পর সিদ্ধ ডিম খেয়েছে... মধ্যবয়সী লোকটা পরিবারের সবাইকে নিয়ে চা খেয়েছে। মনে মনে লোকটার পেশা বলেছিলাম ব্রয়লার মুরগির দোকানী। পরিচিত হয়ে জানলাম সত্যি সত্যিই সে ব্রয়লার মুরগির আড়তদার!
তখনও ভোরের সূর্য উদয় হয়নি। একজন সানগ্লাস পরা ২৪/২৫ বছরের সুঠামদেহী ভদ্রলোক....তার সানগ্লাসের উপর একটা স্টিকার সাটানো- যা তুলে ব্যবহার করেনি....(হয়তো নতুন সানগ্লাস প্রমাণ করতেই)! যদিও সেনা নৌ বিমান বাহিনী, পুলিশ, আনসার, র্যাব সবাই ছোট চুল রাখে...তবুও ছোট চুলের এই ভদ্রলোককে বিজিবি (সাবেক বিডিআর) সন্দেহ করি এবং পরিচিত হয়ে নিশ্চিত হই- তিনি বিজিবি'র সদস্য। তিন বাহিনীর নন কমিশন/জুনিয়র কমিশনদের মধ্যে এয়ারফোর্স সদস্যদের চেনা সহজ। আমার অবজারভেশনে- এয়ারফোর্স সদস্যরা অন্য যেকোনো বাহিনীর সদস্যদের চাইতে স্মার্ট এবং শিক্ষিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:০৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



