somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

আয়ুর্বেদ চিকিৎসা প্রসঙ্গে.....

২৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আয়ুর্বেদ চিকিৎসা প্রসঙ্গে.....

যদিও সর্দি কাশি নেই তবুও গত কয়েক মাস যাবত প্রায়শই অন্যকোনো রকম উপসর্গ ছাড়াই আমার নাক বন্ধ হয়ে যায়! ঘুমানোর সময় সমস্যাটা প্রকট হয়। নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে এক্স-রে, মেক্সরে করিয়ে নাকের ভিতর কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। কয়েক মাস এলার্জির ওষুধ ছাড়াও আরও একগাদা ওষুধ খেয়ে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। নেজাল ড্রপ/স্প্রে ব্যবহার করলে সাময়িক উপশম হলেও কিছুদিন পর আবারও একই সমস্যায় ভুগি!

একজনের পরামর্শে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দেখিয়ে দুই মাস সুস্বাদু ওষুধ খেয়ে উপকার পাইনি। স্বীয়শক্তি বলে বিশিষ্ট চিকিৎসক 'ডক্টর গুগল' ঘেটে যত রকম টোটকা ভেষজ ওষুধ আছে তাও ব্যবহার করেছি। হঠাৎ মনে হলো, "দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর থেকে দুই পা ফেলিয়া!"- আমার ঘরের কাছেই হামদর্দ আয়ুর্বেদ এর বিরাট একটা মনোরম আউটলেট। তাছাড়া ভেষজ ওষুধে আমার আস্থা আছে।
গেলাম ওখানে।

দড়জায় লেখা- "ভিজিট ফি ছাড়া অভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক প্রেশক্রিপন দেওয়া হয়"।
বিশিষ্ট অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মাজহারুল ইসলাম মহোদয় আমার সমস্যা বলতে বললেন... আমি বলতে শুরু করি-"বেশ কয়েক মাস যাবত কদিন পরপরই নাক বন্ধ হয়ে যায়..."- এইটুকু বলা মাত্রই অভিজ্ঞ ডাক্তার সাহেব গড়গড়িয়ে বলে যান- "নাকে কোনো গন্ধ পান না, নাক দিয়ে রক্ত পরে... কাশতে কাশতে বমি উগড়ে আসে- কিন্তু বমি তেমন একটা হয়না... সব সময় জরজর লাগে, কপালে, চোয়ালে ব্যাথা, কান বন্ধ হয়ে যায়... টনসিলাইটিস প্রব্লেম, ঠান্ডায়, রোদ্দুরে ব্যাথা বাড়ে... বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরিয়ে চোখে ঝাপসা দেখেন, ঘুমালে মুখ দিয়ে লালা নিঃসরণ হয়...কোভিড-১৯!"- আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বলি- 'আমার শুধু নাক বন্ধ হয়ে যায়- ঘুমের সমস্যা হয়'।

চেম্বারে আমি ছাড়া কোনো রোগী নাই, ডাক্তার তিনজন, সেলস ম্যান দুইজন, একজন একাউন্ট্যান্ট। ডাক্তার মাজহার সাহেব খুব আন্তরিকতা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত বিষয়াদি (আমার পেশা, কোথায় থাকি, ভাড়া বাড়ি না নিজের বাড়ি, স্ত্রী-সন্তানেরা কে কি করে ইত্যাদি ইত্যাদি) জানলেন....তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন, মুরব্বী, আপনার জন্য "রিতীমত মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে" প্রেসক্রিপশন করা হবে। মেডিক্যাল বোর্ডের জন্য কোনো ফিস নেওয়া হয়না। ইতোমধ্যেই আমি হামদর্দ এর ঔষধের নাম, কার্য্যকরিতা, দাম লেখা একটা বই চেয়ে নিয়ে পড়তে থাকি.........

ডাক্তার মাজহার তার দুইজন 'কম বিশিষ্ট ডাক্তার' নিয়ে আমার জন্য "রীতিমত মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে" ইয়া বড়ো এক প্রেসক্রিপশন করলেন... তিন মাস ওষুধ খেতে হবে... একাউন্ট্যান্ট কম্পিউটারে হিসাব করে 'মুরব্বীর জন্য ৫% ডিসকাউন্ট' দিয়ে ৮,৮৭৬/- দাম বললেন।

আমি ওষুধের প্যাকেটে ওষুধের কার্য্যকারিতা লেখা পড়ে বলি- এসব ওষুধের অনেক গুলোই আমার অসুস্থতার সাথে যায়না। তখন "অভিজ্ঞ ডাক্তার" সাহেবের নির্দেশে জুনিয়র লেডি ডাক্তার জাকিয়া সুলতানা (মেডিক্যাল অফিসার) আমাকে 'ভেষজ মেডিসিন কম্বিনেশন' ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বোঝালেন- কেনো আমাকে পেটভরে এত্তগুলা ওষুধ খেতে হবে.........

প্রথমত, 'ভেষজ মেডিসিন কম্বিনেশন' ব্যাখ্যা আমার মনপুত হয়নি।

দ্বিতীয়ত, তিন চিকিৎসকের ভাবসাব দেখে মনে হয়েছে 'যত বেশী ওষুধ বিক্রি তত লাভ'!

তৃতীয়ত, সস্তা চিকিৎসার আশায় ইতোমধ্যেই আমি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে তিন হাজারের বেশী টাকা এবং দুই মাস অপচয় করেছি। আবার এখানেও ঔষধের নামে অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে টাকার শ্রাদ্ধ করার ইচ্ছা নাই।


আমি লিফলেট পড়ে মেডিক্যাল বোর্ডের দেওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে দুইটা ওষুধ সিলেক্ট করে কিনতে চাইলে ওনাদের অনুরোধ/চাপাচাপিতে তিনটা ওষুধ কিনি। প্রতিটি ওষুধের কার্যকারিতা অপরিসীম! বিস্তারিত লিখে সময় নষ্ট না করে সবচাইতে ছোট এবং কম দামের ওষুধটার কার্যকারিতা বর্ণনা করছিঃ-
ষুধের নাম- কুলজম(১.৫ মিগ্রা)। দাম- ৭০/-
নাকের ড্রপ। এই ওষুধের কার্যকারিতাঃ মাথাব্যথা, দাঁতব্যাথা, কানব্যাথা, পোড়া, কফ, কাশি, সর্দি, পোকা, মাকড়ের কামড়, খোসপাঁচড়া, চুলকানি, নাক দিয়ে রক্ত পরা, নিউমোনিয়া, কোমরের ব্যাথা, পেটের অসুখ, কলেরা, প্লেগ ও অন্যান্য মহামারী চিকিৎসায় অব্যর্থ (এভাবেই লিফলেটে লেখা)!


পাপিয়া, শাহেদ, সাবরিনাদের মতো এই প্রতিষ্ঠানের কর্তাদেরও মহামান্যদের সাথে তোলা ছবির ব্যবসা লক্ষণীয়। ওষুধের সাথে "স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন হামদর্দ সমাচার" ফ্রি দিয়েছে- যার প্রথম এবং ব্যাক পেজের ছবি দিলাম....যা দেখেই বুঝতে পারবেন...
হামদর্দের বিজ্ঞাপনঃ-
"হামদর্দ -এর ওষুধ গ্রহণ করুন
কোভিড-১৯ কে জয় করুন।"
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কতভাগ ব্লগার মহা-ডাকাত তারেককে সরকারে দেখতে চায়?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১২



জিয়া মিথ্যা হ্যাঁ/না ভোটে সামরিক এডমিনিষ্ট্রেটর থেকে আইয়ুবের নতো দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলো, ৫% ভোটকে মিথ্যুকেরা ৯৮% বলেছিলো ; আওয়ামী লীগ বাধা দিতে পারেনি। জিয়ার মৃত্যুর পর, বেগম জিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১৯

রাষ্ট্র যখন হত্যার দর্শক
দায়হীন সরকারের শাসনে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে?


দিপু চন্দ্র দাস মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন—
“আমি নবীকে নিয়ে কিছু বলিনি, আমাকে মারবেন না।”
রাষ্ট্র তখন কোথায় ছিল?

আগুনে পুড়তে পুড়তে ছোট্ট আয়েশা চিৎকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটি ডায়াটের গল্প, যেভাবে ওজন কমিয়েছিলাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮


১৬ ডিসেম্বরের খাবার ছিল। উপরের চায়ের ছবিতে ফেসবুকের দুই গ্রুপে দুটো পুরস্কার পেয়েছি প্রতিযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ।

মোবাইলে পোস্ট, ভুল ত্রুটি থাকিতে পারে, মার্জনীয় দৃষ্টিতে রাখবেন।

জব করি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সারাদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

'আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান'

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯



১। মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
আমাদের মহাত্মা গান্ধীর কর্মকান্ড লুথার খুবই পছন্দ করতেন। ১৯৫৫ সালে লুথার বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×