দেশের কাজে একক সাফল্য বলে কিছু নাই.....
গতকাল ছাত্র আন্দোলনের একজন নেতা গত পনেরো ষোলো বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত দলের প্রতি ইংগিত করে, টিজ করে বলেছেন- "আপনারা ঈদের পর, পূজার পর কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে পারেননি, আমরা পেরেছি"!
কথা সত্য। তবে সেই ব্যার্থতার কারণ, আপনার মতো অনেকেই ছিলেন স্বৈরাচারী সরকারের দোসর সশস্ত্র ছাত্রলীগের সদস্য, গণরুম নামক টর্চার সেলের সদস্য এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান।
একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে। নিষ্ঠুর ও নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদী শাসক শেখ হাসিনা প্রায় ১৬ বছর যাবৎ দোর্দণ্ড প্রতাপে তার স্বৈরশাসন অব্যাহত রাখে। ফলে জনগণের জীবনে নেমে আসে এক দুর্বিষহ অমানিশার ঘোর অন্ধকার। তার অবিচার, অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন, হত্যা, গুম, খুন, সম্পদ লুণ্ঠন, শোষণ, বঞ্চনা ও অধিকার হরণের কাহিনী বিশ্বের যেকোনো বিবেকবান মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও শিহরণ সৃষ্টি করবে। যার প্রথম শিকার বিএনপি। সেই অমানিশার বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়ানো দলটির নাম- বিএনপি। ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনে জামায়াত শিবিরের ত্যাগের কথাও ভুলে যাবেননা।
আপনাদের আন্দোলন ছিলো বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলন। সেখান থেকে এক পর্যায়ে সেই আন্দোলন রুপ নেয় ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে- যার শুরুটা হয়েছিল বিএনপির নেতা কর্মী সমর্থকদের দ্বারা সেই ২০১০ সাল থেকে। আপনারা সেই দলটির ১৬ বছরের ত্যাগ তিতিক্ষা, অসংখ্য প্রাণহানি আর রক্তের উপর ভরসা করেই এক মাসের মধ্যে যে সাফল্য পেয়েছেন- সেখানেও সেই ব্যার্থ দলের সাজানো আন্দোলনের নেতা কর্মী সমর্থকদের নিয়েছেন।
সভ্যতা বিস্মৃত, চিন্তা অবরুদ্ধ, মানুষ অন্ধকারে নিমজ্জিত–এমন এক অবস্থায় আঁধারের বুক চিরে উদয় হয়েছিল শুদ্ধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের নেশায় জীবনবাজী রাখা বিএনপি সমর্থক কয়েকজন তরুণ.....যাদের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গিয়েছে তাদের দৃঢ়তার স্বাক্ষর। জাতীয়তাবাদী সকল সৈনিকের জন্য নুরু-শাওন-আবু সাঈদদের আত্মত্যাগ সাফল্যের অনুপ্রেরণা হোক। বিভেদ নয়, সাম্য ও ঐক্যের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং নাগরিকদের ন্যায় অধিকার প্রতিষ্ঠা করি। অজস্র প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা রক্ষা করে দেশ গড়তে শোক হোক শক্তি।
মনে রাখবেন, দেশের কাজে একক সাফল্য বলে কিছু নাই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



